22/09/2023
G 20 THINQ- THE INDIAN NAVY QUIZ CONTEST এ আমাদের বিদ্যামন্দিরের শিক্ষার্থী শ্রীমান কৌস্তব দেব এবং শ্রীমান দিব্যজ্যোতি দত্ত প্রথম স্তর পার করে দ্বিতীয় স্তরে উঠল। 11741 টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে 1st elimination round পার করে যাওয়া সত্যিই কৃতিত্বের। এইভাবেই এগিয়ে চলুক বিদ্যামন্দির শিক্ষার্থীদের সব রকম বিকাশের আদর্শ সামনে রেখে।
23/05/2023
শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির
*************************
নতুন শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে ।
বিজ্ঞান, বাণিজ্য, কলা- তিন বিভাগেই অসংখ্য বিষয় থেকে শিক্ষার্থী বেছে নিতে পারে তার নিজের বিষয়টি। গত বছর থেকে তাদের কথা ভেবেই নতুন আরও চারটি বিষয় আরও যুক্ত হয়েছে- সংস্কৃত (SNSK), এনভায়রেনমেন্টাল স্টাডিজ(ENVS), নিউট্রিশন(NUTN), কস্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেশন(CSTX)।
সাতটি ল্যাবরেটরি সহ অডিও ভিস্যুয়াল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষাদান, শিক্ষা মূলক ভ্রমণ, খেলাধুলো, সংস্কৃতি চর্চা, সামাজিক দায়িত্ব পালন, কন্যাশ্রী, তরুণের স্বপ্ন, ঐক্যশ্রী, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ , পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপ সহ নানা সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করাই বিদ্যামন্দিরের বৈশিষ্ট্য। শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির সৃষ্টিলগ্ন থেকেই শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের সহায়ক। শিক্ষার্থীদের পরিকল্পনা, তাদের রেজাল্ট, পরিস্থিতির বিচার করে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কেরিয়ার কাউন্সেলিং করার জন্য শিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রদ্ধেয়া শিক্ষক শিক্ষিকারা তাদের বিষয় নির্বাচনে সহায়তা করেন।
এ বছর ছিল শিক্ষার্থীদের আনন্দের আর সাফল্যের। প্রথাগত শিক্ষায় সাফল্যের পাশাপাশি মক পার্লামেন্ট, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা বা প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতায় যেমন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় শিক্ষার্থীরা পুরস্কৃত হয়েছে, তেমনই ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার জাতীয়স্তরের ক্যুইজ প্রতিযোগিতা UGENIUS 2022 তে সাফল্যের সাথে অংশ নিয়েছে। এ বছর থেকে সরকারী শিক্ষানীতি মেনেই শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষামূলক গুণাবলীর যথাযথ বিকাশ, পারস্পরিক সমানুভবতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষার্থীদের চারটি পৃথক হাউস হয়েছে। প্রতি শনিবার শেষ পিরিয়ড শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষামূলক গুণের বিকাশের জন্য আনন্দ পরিসর ক্লাস রূপে নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রদের জন্য দশ কম্পিউটার যুক্ত পৃথক ল্যাবরেটরির ব্যবস্থা হয়েছে যেখানে বিনামূল্যে কম্পিউটার শিখছে ছেলেরা। স্মার্ট ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি CCTV সুরক্ষার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। একটাই লক্ষ্য- কোনোভাবেই যেন পিছিয়ে না থাকে আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীরা।
অবশ্য এই প্রচেষ্টা নতুন নয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির শিক্ষাবিস্তার আর সমাজ গঠনকে তাঁর ব্রত রূপে গ্রহণ করেছে। আসুন, একটু চোখ রাখা যাক যাত্রা শুরুর দিনগুলোয়।
সন ১৯৪৫। ভারতের ইতিহাসের আগুনঝরা দিন। স্বাধীনতার সূর্য ওঠার প্রাকমুহূর্ত। সূর্য ওঠার আগে যেমন রক্তিম আকাশ, তেমনি রাঙা হয়ে উঠেছে ভারতীয় সমাজের প্রায় প্রতিটি কোণ। বঞ্চনা আর বৈষম্যের বিষ ঘনীভবনের ফলে চরম সান্দ্র। বিদ্রোহ, বিপ্লবের তুমুল তুফানে ব্রিটিশ নৌকো টালমাটাল। ভারতের মাটি বীরের জন্ম দেয়। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশরা আদর্শ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ছাত্র সমাজের শিরায় উপশিরায়। ছাত্র সমাজ গর্জে ওঠে। ‘স্পর্ধায় চায় মাথা তোলবার ঝুঁকি’। রাজশক্তি তা মানবেন কেন? ভেঙে গুঁড়িয়ে এই স্পর্ধা আন্দোলনকে সমূলে বিনাশ করতে রাষ্ট্রযন্ত্র প্রয়োগ করেন। কিন্তু ‘ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে’!
২১শে নভেম্বর, ১৯৪৫। ভবানীপুর। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে ছাত্রমিছিল এগিয়ে চলে ডালহৌসির দিকে। সংরক্ষিত স্থানে পৌঁছে আইন অমান্য করে মিছিল। শুরু হয় ব্রিটিশের দমন পীড়ন। গুলি চলে। রাজপথ রাঙা। লুটিয়ে আছে ভারত মায়ের বীর সন্তান –শহীদ রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯ বছরের তরতাজা প্রাণ!
এমনই বহু আত্মবলিদানে স্বাধীনতার সূর্যোদয়। তবুও চাঁদের গায়ের দাগের মত গভীর ক্ষত আঁকে দেশ ভাগ। বাঁধভাঙা জলের মত উজিয়ে আসা উদ্বাস্তু বাঙালীরা ছেঁড়া শিকড়ে নতুন মাটি দেওয়ার খোঁজে বাসা বাঁধেন এই বাঙলায়। দমদমের অমরপল্লীও তেমনই এক আবাসভূমি।
বাঁচা মানে তো কেবল শ্বাস নেওয়া নয়। বাঁচার মত বাঁচতে হলে শিক্ষা চাই। সেই তাগিদ অনুভব করেন অমরপল্লীর প্রাণপুরুষ শিক্ষানুরাগী স্বর্গীয় জীবন কুমার মজুমদার। সেই তাগিদেই ১৯৫০ সালে অমর শহীদের নামে প্রতিষ্ঠা করেন শহীদ রামেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যামন্দির।
সঠিক কাজে কোনো বাধাই তো বাধা নয়! কাজেই তাঁর এই বিদ্যালয় ক্রমোন্নতির শিখরে ওঠার প্রথম ধাপ ছুঁয়ে ফেলে ১৯৫৩তে। গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড ফ্রি প্রাইমারি রূপে অনুমোদিত হয় শহীদ রামেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যামন্দির।
কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষায় থামলে চলবে কেন? কাজেই ১৯৫৪ সালের ৭ই জানুয়ারী পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে ৯২ জন ছাত্র নিয়ে শুরু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। ক্রমশঃ তাঁর যোগ্য সহযোগী হয়ে ওঠেন র এক উদ্যোগী তরুণ। সকলের শ্রদ্ধেয় স্বর্গীয় রবীন্দ্রনাথ দে। তারপর ক্রম প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৩ র মধ্যে অষ্টমশ্রেণি , দশম শ্রেণির অনুমোদনের ধাপ পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় রূপে অনুমোদিত হয় এই বিদ্যামন্দির।
১৯৫৪ থেকে ২০০০ পর্যন্ত বিদ্যামন্দিরে হাল ধরেছিলেন পরম শ্রদ্ধেয় রবীন্দ্রনাথ দে মহাশয়। দীর্ঘ সময় প্রধানশিক্ষক থেকে যে অগ্রগমনের ধারা তিনি সঞ্চারিত করেছিলেন, বিদ্যামন্দিরের শিরায় উপশিরায় আজও তা অব্যাহত।
বর্তমানে বিভিন্ন বিষয় সম্বলিত কলা-বাণিজ্য-বিজ্ঞান বিভাগে সহশিক্ষামূলক পাঠদানের পাশাপাশি দশম শ্রেণি পর্যন্ত বালক বিভাগের শিক্ষাদান চলে। উন্নত পরীক্ষাগারে হাতে কলমে শিক্ষার পাশাপাশি অডিও-ভিস্যুয়াল এইড ব্যবহারে শিক্ষাদান চলে। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ, মূল্যবোধ, বাস্তবতার নিরিখে প্রশিক্ষিত শিক্ষক মহাশয়দের তত্ত্বাবধানে চলে কেরিয়ার কাউন্সেলিং। নিয়মিত্র পত্রিকা আর প্রাচীরপ্ত্র প্রকাশে যেমন সুকুমার মতি শিক্ষার্থীদের মৌলিক চিন্তনে প্রেরণা যোগানো হয়, তেমনি মনীষীদের স্মরণ অনুষ্ঠান, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দিবস পালন, ক্যুইজ-বিতর্ক-অঙ্কন-আবৃত্তি-সঙ্গীতের আধারে গড়ে তোলার চেষ্টা থাকে শিক্ষার্থীর মনোভূমি –মূল্যবোধ। শারীরশিক্ষার সুশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত যোগাসন,পি.টি., ব্রতচারীর পাশাপাশি ভিন্ন খেলাধুলো চলে। জেলাস্তর থেকে রাজ্যস্তরে বিদ্যামন্দিরের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়, পুরষ্কৃত হয়। প্রধানত ভূ-বিদ্যা বিষয়ের পরিচালনায় নিয়মিত চলে শিক্ষামূলক ভ্রমণ।
নির্মল ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে এই শিক্ষাভূমি ক্রমশঃ হয়ে উঠেছে অঞ্চলের অন্যতম প্রধান শিক্ষাঙ্গন। অগণিত কৃতি অধ্যাপক, শিক্ষক, চিকিৎসক, অভিনেতা, ক্রীড়াবিদের জন্মভূমি এই শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির তার স্বল্প পরিসরেই শিক্ষা অমৃত বিস্তারে আজও অঙ্গীকারবদ্ধ।
17/05/2023
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান, বাণিজ্য, কলা বিভাগে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি
14/04/2023
আজ ভীমরাও রামজি আম্বেদকর এর জন্মদিন। ১৮৯১ সালের আজকের দিনে বর্তমান মধ্য প্রদেশের মোহ' (Mhow) অঞ্চলে তাঁর জন্ম হয়। তিনি ভারতের সংবিধানের খসড়া কার্যনির্বাহক সমিতির সভাপতি ছিলেন। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক বা আরবিআই এর রূপরেখা ও নীতি নির্দেশিকা হিল্টন ইয়ং কমিশনে তাঁর দেওয়া প্রস্তাবনা থেকে তৈরি হয়।
ভারতীয় ব্যবহারশাস্ত্রজ্ঞ (জ্যুরিস্ট), রাজনৈতিক নেতা, বৌদ্ধ আন্দোলনকারী, দার্শনিক, চিন্তাবিদ, নৃতত্ত্ববিদ, ঐতিহাসিক, সুবক্তা, বিশিষ্ট লেখক, অর্থনীতিবিদ, পণ্ডিত, সম্পাদক, রাষ্ট্রবিপ্লবী, বৌদ্ধ পুনর্জাগরণবাদী- এমন বহু সফল পরিচয়ের গন্ডীতেও কোনোভাবে তাঁর কৃতিত্বকে প্রকাশ করা যায় না। ভারতমাতার এই কৃতি সন্তানের জন্মজয়ন্তীতে আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
09/01/2023
শিক্ষার্থী সপ্তাহ উদযাপনের খবর সংবাদ মাধ্যমে। দুটি নিউজ পোর্টালে প্রচারিত হয়েছিল এই সংবাদ। লিঙ্ক দেওয়া হলো। আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন।
শিক্ষার্থী সপ্তাহের হরেক কর্মসূচিতে বর্ণময় হয়ে উঠল দমদমের শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির | | Banglar
নায়ীমুল হক : পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশক্রমে এই মাসের ২ তারিখ থেকে স্কুলে স্কুলে চলছে শিক্ষার্থ....
09/01/2023
শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দিরের শিক্ষার্থী সপ্তাহ উদযাপনের খবর সংবাদমাধ্যমে। দুটি নিউজ পোর্টালে প্রচারিত হয়েছিল এই সংবাদ। লিঙ্ক দেওয়া হলো। আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন
দমদমের শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দিরে শিক্ষার্থী সপ্তাহ উদযাপন
নায়ীমুল হক, কলকাতা, আপনজন: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশক্রমে এই মাসের ২ তারিখ থেকে স্কুলে স্কুলে
05/01/2023
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য শিবির ও নাটকের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো আজ বিদ্যামন্দিরে। সহযোগিতায় দক্ষিণ দমদম পৌরসভা এবং IFTA র সদস্যবৃন্দ। বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব শ্রী দেবাশীষ দত্তের পরিচালনায় নাটকের কর্মশালা শিক্ষার্থীদের যে আনন্দের পাঠ আজ দিল, মনোজগতে তার ছাপ গভীর হবে বলেই বিশ্বাস। এভাবেই সহশিক্ষামূলক কর্মসূচির যথাযথ রূপায়ণ এগিয়ে নিয়ে যাক প্রিয় শিক্ষার্থীদের। শতফুল বিকশিত হোক।
26/12/2022
শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির
*************************
আগামী দোসরা জানুয়ারি থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষের পঠন পাঠন শুরু হতে চলেছে। এ বছর ছিল শিক্ষার্থীদের আনন্দের আর সাফল্যের। প্রথাগত শিক্ষায় সাফল্যের পাশাপাশি মক পার্লামেন্ট, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা বা প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতায় যেমন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় শিক্ষার্থীরা পুরস্কৃত হয়েছে, তেমনই ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার জাতীয়স্তরের ক্যুইজ প্রতিযোগিতা UGENIUS 2022 তে সাফল্যের সাথে অংশ নিয়েছে। এ বছর থেকে সরকারী শিক্ষানীতি মেনেই শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষামূলক গুণাবলীর যথাযথ বিকাশ, পারস্পরিক সমানুভবতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষার্থীদের চারটি পৃথক হাউস হচ্ছে। প্রতি শনিবার শেষ পিরিয়ড শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষামূলক গুণের বিকাশের জন্য আনন্দ পরিসর ক্লাস রূপে নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রদের জন্য দশ কম্পিউটার যুক্ত পৃথক ল্যাবরেটরির ব্যবস্থা হয়েছে যেখানে বিনামূল্যে কম্পিউটার শিখবে ছেলেরা। স্মার্ট ক্লাস নেওয়ার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। একটাই লক্ষ্য- কোনোভাবেই যেন পিছিয়ে না থাকে আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীরা।
অবশ্য এই প্রচেষ্টা নতুন নয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির শিক্ষাবিস্তার আর সমাজ গঠনকে তাঁর ব্রত রূপে গ্রহণ করেছে। আসুন, একটু চোখ রাখা যাক যাত্রা শুরুর দিনগুলোয়।
সন ১৯৪৫। ভারতের ইতিহাসের আগুনঝরা দিন। স্বাধীনতার সূর্য ওঠার প্রাকমুহূর্ত। সূর্য ওঠার আগে যেমন রক্তিম আকাশ, তেমনি রাঙা হয়ে উঠেছে ভারতীয় সমাজের প্রায় প্রতিটি কোণ। বঞ্চনা আর বৈষম্যের বিষ ঘনীভবনের ফলে চরম সান্দ্র। বিদ্রোহ, বিপ্লবের তুমুল তুফানে ব্রিটিশ নৌকো টালমাটাল। ভারতের মাটি বীরের জন্ম দেয়। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশরা আদর্শ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ছাত্র সমাজের শিরায় উপশিরায়। ছাত্র সমাজ গর্জে ওঠে। ‘স্পর্ধায় চায় মাথা তোলবার ঝুঁকি’। রাজশক্তি তা মানবেন কেন? ভেঙে গুঁড়িয়ে এই স্পর্ধা আন্দোলনকে সমূলে বিনাশ করতে রাষ্ট্রযন্ত্র প্রয়োগ করেন। কিন্তু ‘ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে’!
২১শে নভেম্বর, ১৯৪৫। ভবানীপুর। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে ছাত্রমিছিল এগিয়ে চলে ডালহৌসির দিকে। সংরক্ষিত স্থানে পৌঁছে আইন অমান্য করে মিছিল। শুরু হয় ব্রিটিশের দমন পীড়ন। গুলি চলে। রাজপথ রাঙা। লুটিয়ে আছে ভারত মায়ের বীর সন্তান –শহীদ রামেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯ বছরের তরতাজা প্রাণ!
এমনই বহু আত্মবলিদানে স্বাধীনতার সূর্যোদয়। তবুও চাঁদের গায়ের দাগের মত গভীর ক্ষত আঁকে দেশ ভাগ। বাঁধভাঙা জলের মত উজিয়ে আসা উদ্বাস্তু বাঙালীরা ছেঁড়া শিকড়ে নতুন মাটি দেওয়ার খোঁজে বাসা বাঁধেন এই বাঙলায়। দমদমের অমরপল্লীও তেমনই এক আবাসভূমি।
বাঁচা মানে তো কেবল শ্বাস নেওয়া নয়। বাঁচার মত বাঁচতে হলে শিক্ষা চাই। সেই তাগিদ অনুভব করেন অমরপল্লীর প্রাণপুরুষ শিক্ষানুরাগী স্বর্গীয় জীবন কুমার মজুমদার। সেই তাগিদেই ১৯৫০ সালে অমর শহীদের নামে প্রতিষ্ঠা করেন শহীদ রামেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যামন্দির।
সঠিক কাজে কোনো বাধাই তো বাধা নয়! কাজেই তাঁর এই বিদ্যালয় ক্রমোন্নতির শিখরে ওঠার প্রথম ধাপ ছুঁয়ে ফেলে ১৯৫৩তে। গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড ফ্রি প্রাইমারি রূপে অনুমোদিত হয় শহীদ রামেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যামন্দির।
কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষায় থামলে চলবে কেন? কাজেই ১৯৫৪ সালের ৭ই জানুয়ারী পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে ৯২ জন ছাত্র নিয়ে শুরু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। ক্রমশঃ তাঁর যোগ্য সহযোগী হয়ে ওঠেন র এক উদ্যোগী তরুণ। সকলের শ্রদ্ধেয় স্বর্গীয় রবীন্দ্রনাথ দে। তারপর ক্রম প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৩ র মধ্যে অষ্টমশ্রেণি , দশম শ্রেণির অনুমোদনের ধাপ পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় রূপে অনুমোদিত হয় এই বিদ্যামন্দির।
১৯৫৪ থেকে ২০০০ পর্যন্ত বিদ্যামন্দিরে হাল ধরেছিলেন পরম শ্রদ্ধেয় রবীন্দ্রনাথ দে মহাশয়। দীর্ঘ সময় প্রধানশিক্ষক থেকে যে অগ্রগমনের ধারা তিনি সঞ্চারিত করেছিলেন, বিদ্যামন্দিরের শিরায় উপশিরায় আজও তা অব্যাহত।
বর্তমানে বিভিন্ন বিষয় সম্বলিত কলা-বাণিজ্য-বিজ্ঞান বিভাগে সহশিক্ষামূলক পাঠদানের পাশাপাশি দশম শ্রেণি পর্যন্ত বালক বিভাগের শিক্ষাদান চলে। উন্নত পরীক্ষাগারে হাতে কলমে শিক্ষার পাশাপাশি অডিও-ভিস্যুয়াল এইড ব্যবহারে শিক্ষাদান চলে। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ, মূল্যবোধ, বাস্তবতার নিরিখে প্রশিক্ষিত শিক্ষক মহাশয়দের তত্ত্বাবধানে চলে কেরিয়ার কাউন্সেলিং। নিয়মিত্র পত্রিকা আর প্রাচীরপ্ত্র প্রকাশে যেমন সুকুমার মতি শিক্ষার্থীদের মৌলিক চিন্তনে প্রেরণা যোগানো হয়, তেমনি মনীষীদের স্মরণ অনুষ্ঠান, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দিবস পালন, ক্যুইজ-বিতর্ক-অঙ্কন-আবৃত্তি-সঙ্গীতের আধারে গড়ে তোলার চেষ্টা থাকে শিক্ষার্থীর মনোভূমি –মূল্যবোধ। শারীরশিক্ষার সুশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত যোগাসন,পি.টি., ব্রতচারীর পাশাপাশি ভিন্ন খেলাধুলো চলে। জেলাস্তর থেকে রাজ্যস্তরে বিদ্যামন্দিরের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়, পুরষ্কৃত হয়। প্রধানত ভূ-বিদ্যা বিষয়ের পরিচালনায় নিয়মিত চলে শিক্ষামূলক ভ্রমণ।
নির্মল ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে এই শিক্ষাভূমি ক্রমশঃ হয়ে উঠেছে অঞ্চলের অন্যতম প্রধান শিক্ষাঙ্গন। অগণিত কৃতি অধ্যাপক, শিক্ষক, চিকিৎসক, অভিনেতা, ক্রীড়াবিদের জন্মভূমি এই শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দির তার স্বল্প পরিসরেই শিক্ষা অমৃত বিস্তারে আজও অঙ্গীকারবদ্ধ।
13/08/2022
গতকাল থেকে শুরু হয়েছে বিদ্যামন্দিরের দেওয়াল, সিঁড়ি সব কিছুকে রাঙিয়ে নিয়ে শিক্ষা সহায়ক উপকরণ করে নেওয়া। এ এক রঙিন শেখা শেখানোর খেলা। শিক্ষার্থী, শিক্ষক মিলে মিশে এক। পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রদত্ত BaLA প্রজেক্টের কাজ যে এতটা আনন্দ মুহূর্ত দিতে পারে আগে কেউই ভাবিনি।