Khedarmara GPS

ছাত্র -ছাত্রী অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ এইটা পড়ুন প্লীজ।https://www.facebook.com/100010985647937/posts/1942019549507548/

খেদারমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে /২০২৩উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট-

কৃতজ্ঞতা স্বীকার
==========
প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২২ এ জেলার বিজ্ঞ বিচারক মন্ডলী আমাকে জেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত করেন। বিচারকমন্ডলীকে আমার অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। কাজের ব্যস্ততায় এ জয়ের কথা প্রায়শঃই ভুলে যাই। তাছাড়া এমন জয়ের আশায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত করার কথা কখনও মনে হয়নি আমার। নিজের ভালোলাগা থেকেই মন থেকে চেষ্টা করি এই যা। নানা রকমের নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহন করি। এ কাজে আমার সহকর্মীদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। সফলাতা অর্জনের শতভাগ কৃতিত্ব তাঁদের ঘাম ঝরা প্রচেষ্টারই ফসল। স্কুলটিকে পরিচ্ছন্ন-পরিপাটি, সাজানো-গোছানো রাখার শতভাগ কৃতিত্ব আমাদের অফিস সহায়ক পুতুলময় চাকমার। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পাঠানো, স্কুল ইউনিফরম পরে পাঠানো, মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করে দেয়া থেকে শুরু করে মোদ্দকথা আদর্শ শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্বে সার্বক্ষণিক লেগে থাকার কৃতিত্ব আমার গুণবান-গুণবতী অভিভাবক-অভিভাবিকাদের। এসএমসি, পিটিএ এর প্রাণখোলা সহযোগিতার কথা নতশিরে স্বীকার করছি। তাই হিসাব করতে গেলে আমার ব্যক্তিগত কৃতিত্বের অংশীদারিত্ব নিতান্তই নগণ্য। আমি শুধুমাত্র একজন সাধারণ সমন্বয়ক। শিকার্থীদের কার কোন বিষয়ে সমস্যা আছে, কিভাবে তা ওভারকাম করা যায়, কোন শিক্ষার্থী নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে না, নিয়মিত পড়া আদায় করতে পারে না তা তার বাবা-মাকে সচেতন করা, তাদের স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ তৈরী করে দেয়া এই যা আমার কাজ বলতে পারি। তাই আমার জেলা শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হয়ে ওঠার গল্পের মুল নায়ক হলেন আমার শিক্ষার্থী, শিক্ষার্থী অভিভাবক, সহকর্মী ও পুতুলময়। তবুও তাঁরা সবাই আমার এই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায় আমাকে নানাভাবে সম্মাণিত করেছে- আমি তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
প্রতিদিনের মত আজও বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক মিলে প্রত্যহিক কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আজ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ হঠাৎ বিদ্যালয়ে এসে বাঘাইছড়ি উপজেলার বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সম্মাণিত নেতৃবৃন্দ আমাকে ফুলের তোরা দিয়ে সম্মান জানিয়ে গেল। এত বড় সম্মাননা আমার অপ্রত্যাশিত ছিল। আমি বিনয়ের সাথে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এসব আমার আগামীতে পথ চলার অনুপ্রেরণা যোগাবে। ধন্যবাদ,সকলকে।

শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন আর সমকালীন ভাবনা
======================
শ্রেষ্ঠত্ব আর কৃতিত্ব শব্দ দু’টি সমগোত্রীয় হলেও এদের অর্থগত ভিন্নতা আছে। কৃতিত্ব যদি এক একটি ধাপ হয় তাহলে শ্রেষ্ঠত্ব কয়েকটি ধাপের সামষ্টিক উচ্চতায় একটি অবস্থান। শিখনের দৃষ্টিকোণ থেকে কৃতিত্ব একটি গাঠনিক প্রক্রিয়া আর শ্রেষ্ঠত্ব একটি পর্যায়ের সামষ্টিক অবস্থা। পেশাগত জীবনে আমরা সবাই যার যার অবস্থান হতে কৃতিত্ব অর্জনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা সবাই যে যার মত কৃতিত্ব অর্জন করে চলেছি। প্রাথমিক শিক্ষা পদক কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষক, অভিভাবক ও বিদ্যোৎসাহীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের স্বীকৃতি প্রদানের সুযোগ করে দিয়েছে। যদিও কৃতিত্ব অর্জনকারী অনেকেই এ লড়াইয়ে সামিল হতে আগ্রহী নন। কেন আগ্রহী নয় সেটার উত্তর বলা আমার জন্য সমীচীন হবে না। শুধু বলবো- এক্ষেত্রে আরও সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা/মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। অনেকে বাছাইয়ের মানদন্ড নিয়ে নানা কথা বলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের হেয় প্রতিপন্ন করতে উৎসাহ বোধ করেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলবো আপনি যোগ্য হলে আসুন যা মানদন্ড আছে তা দিয়েই নিজেকে প্রমাণ করুন। নিজের কৃতিত্ব লুকিয়ে রেখে পরাশ্রীকাতর হয়ে অন্যের শ্রেষ্ঠত্বে ঈর্ষাণ্বিত হওয়া অনুচিত।
তবে অবস্থানগত কারণে প্লেইয়িং লেভেল সবার জন্যে সমান নয়। পার্বত্য অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকার একটি শিশুর সাথে রাজধানীর একটি শিশুর শিক্ষার পরিবেশ এক নয়। প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার হার, আর্থসামাজিক অবস্থা, জনসচেতনতা, অভিভাবকত্ব আর বিভাগীয় শহর বা রাজধানীর প্রেক্ষাপট আকাশ আর পাতালের সাথে তুলনীয়। প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে সমানে সমানে- পিঁপড়ের সাথে পিঁপড়ের, বাঘের সাথে বাঘের; পিঁপড়ের সাথে বাঘের নয়। তাই আপাতঃ দৃষ্টে একজন প্রধান শিক্ষকের সাথে একজন প্রধান শিক্ষকের বা সহকারি শিক্ষকের সাথে সহকারি শিক্ষকের হলেও অবস্থানগত কারণে এর ভেতরে বড় রকমের হিসেবের হেরফের আছে বৈকি! তবুও আমি হতাশাবাদী নই; অতি সমপ্রতি রূপনা, ঋতুপর্ণারা সগৌরবে দেখিয়ে দিলো প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিতরাও হতে পারে দেশ সেরা। তাছাড়া এ অঞ্চল থেকে ও জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ার দৃষ্টান্ত দেখিয়ছিলেন শ্রদ্ধেয় বাদল স্যার, প্রধান শিক্ষক, বনরূপা মডেল সরকারি প্রাঃ বিঃ, রাঙ্গামাটি। বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সহকারি শিক্ষিকার খেতাব ছিনিয়ে নিয়েছিলেন আমার সুপরিচিত সহকর্মী জয়নব আরা বেগম। তাই রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান থেকে যাঁরা প্রতিযোগী হয়ে বিভাগে যাচ্ছেন তাদের সবার প্রতি আমার শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল। সবার আশীর্বাদ, দোয়া বর্ষিত হোক আমাদের প্রতি।