Poradaha High School (পোড়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়)
Poradaha High School is the place where you enlighten yourselves, which will show you the right way.
জীবনের হিসাব
– সুকুমার রায়
বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে
মাঝিরে কন , “বলতে পারিস্ সূর্যি কেন ওঠে?
চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?”
বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যাল্ফেলিয়ে হাসে।
বাবু বলেন, “সারা জনম মরলিরে তুই খাটি,
জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি!”
খানিক বাদে কহেন বাবু,”বলত দেখি ভেবে
নদীর ধারা কেম্নে আসে পাহাড় হতে নেবে?
বলত কেন লবনপোরা সাগরভরা পানি?”
মাঝি সে কয়, “আরে মশাই , অত কি আর জানি?”
বাবু বলেন, “এই বয়সে জানিসনেও তাকি?
জীবনটা তোর নেহাৎ খেলো, অষ্ট আনাই ফাকি।”
আবার ভেবে কহেন বাবু, “বলতো ওরে বুড়ো,
কেন এমন নীল দেখা যায় আকাশের ঐ চুড়ো?
বলত দেখি সূর্য চাঁদে গ্রহণ লাগে কেন?”
বৃদ্ধ বলে, “আমায় কেন লজ্জা দেছেন হেন?”
বাবু বলেন, “বলব কি আর, বলব তোরে কি তা,-
দেখছি এখন জীবনটা তোর বারো আনাই বৃথা।”
খানিক বাদে ঝড় উঠেছে, ঢেউ উঠেছে ফুলে,
বাবু দেখেন নৌকাখানি ডুবল বুঝি দুলে।
মাঝিরে কন, “একি আপদ! ওরে ও ভাই মাঝি,
ডুবল নাকি নৌকো এবার ? মরব নাকিআজি?”
মাঝি শুধায়, “সাঁতার জানো? মাথা নাড়েন বাবু”
মুর্খ মাঝি বলে, “মশাই , এখন কেন কাবু?
বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব কারো পিছে,
তোমার দেখি জীবনখানা ষোল আনাই মিছে!
রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।
আগে ওকে বারবার দেখেছি
লালরঙের শাড়িতে
দালিম ফুলের মতো রাঙা;
আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
আঁচল তুলেছে মাথায়
দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।
মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব
ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়
শালবনের নীলাঞ্জনে।
থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;
চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।
হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে
আমাকে করলে নমস্কার।
সমাজবিধির পথ গেল খুলে,
আলাপ করলেম শুরু —
কেমন আছ, কেমন চলছে সংসার
ইত্যাদি।
সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়ে
যেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,
কোনোটা বা দিলেই না।
বুঝিয়ে দিলে হাতের অস্থিরতায় —
কেন এ-সব কথা,
এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।
আমি ছিলেম অন্য বেঞ্চিতে
ওর সাথিদের সঙ্গে।
এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।
মনে হল কম সাহস নয়;
বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।
গাড়ির আওয়াজের আড়ালে
বললে মৃদুস্বরে,
“কিছু মনে কোরো না,
সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।
আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;
দূরে যাবে তুমি,
দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
শুনব তোমার মুখে।
সত্য করে বলবে তো?
আমি বললেম, “বলব।”
বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,
“আমাদের গেছে যে দিন
একেবারেই কি গেছে,
কিছুই কি নেই বাকি।”
একটুকু রইলেম চুপ করে;
তারপর বললেম,
“রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।”
খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।
ও বললে, “থাক্, এখন যাও ও দিকে।”
সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;
আমি চললেম একা।
সবার আমি ছাত্র
– সুনির্মল বসু
আকাশ আমায় শিক্ষা দিল
উদার হতে ভাই রে,
কর্মী হবার মন্ত্র আমি
বায়ুর কাছে পাই রে।
পাহাড় শিখায় তাহার সমান-
হই যেন ভাই মৌন-মহান,
খোলা মাঠের উপদেশে-
দিল-খোলা হই তাই রে।
সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয়
আপন তেজে জ্বলতে,
চাঁদ শিখাল হাসতে মোরে,
মধুর কথা বলতে।
ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর-
অন্তর হোক রত্ন-আকর;
নদীর কাছে শিক্ষা পেলাম
আপন বেগে চলতে।
মাটির কাছে সহিষ্ণুতা
পেলাম আমি শিক্ষা,
আপন কাজে কঠোর হতে
পাষান দিল দীক্ষা।
ঝরনা তাহার সহজ গানে,
গান জাগাল আমার প্রাণে;
শ্যাম বনানী সরসতা
আমায় দিল ভিক্ষা।
বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর,
সবার আমি ছাত্র,
নানান ভাবে নতুন জিনিস
শিখছি দিবারাত্র।
এই পৃথিবীর বিরাট খাতায়,
পাঠ্য যেসব পাতায় পাতায়
শিখছি সে সব কৌতূহলে,
নেই দ্বিধা লেশমাত্র।
আঠারো বছর বয়স
– সুকান্ত ভট্টাচার্য
আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ
স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি,
আঠারো বছর বয়সেই অহরহ
বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি।
আঠারো বছর বয়সের নেই ভয়
পদাঘাতে চায় ভাঙতে পাথর বাধা,
এ বয়সে কেউ মাথা নোয়াবার নয়−
আঠারো বছর বয়স জানে না কাঁদা।
এ বয়স জানে রক্তদানের পুণ্য
বাষ্পের বেগে স্টিমারের মতো চলে,
প্রাণ দেওয়া-নেওয়া ঝুলিটা থাকে না শূন্য
সঁপে আত্মাকে শপথের কোলাহলে।
আঠারো বছর বয়স ভয়ংকর
তাজা তাজা প্রাণে অসহ্য যন্ত্রণা,
এ বয়সে প্রাণ তীব্র আর প্রখর
এ বয়সে কানে আসে কত মন্ত্রণা।
আঠারো বছর বয়স যে দুর্বার
পথে প্রান্তরে ছোটায় বহু তুফান,
দুর্যোগে হাল ঠিকমতো রাখা ভার
ক্ষত-বিক্ষত হয় সহস্র প্রাণ।
আঠারো বছর বয়সে আঘাত আসে
অবিশ্রান্ত; একে একে হয় জড়ো,
এ বয়স কালো লক্ষ দীর্ঘশ্বাসে
এ বয়স কাঁপে বেদনায় থরোথরো।
তবু আঠারোর শুনেছি জয়ধ্বনি,
এ বয়স বাঁচে দুর্যোগে আর ঝড়ে,
বিপদের মুখে এ বয়স অগ্রণী
এ বয়স তবু নতুন কিছু তো করে।
এ বয়স জেনো ভীরু, কাপুরুষ নয়
পথ চলতে এ বয়স যায় না থেমে,
এ বয়সে তাই নেই কোনো সংশয়−
এ দেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে।।
আমার কথা শোন।
– Listen to me. (hear নয়)
এই পেনসিলটা কাট।
- Please sharpen this pencil. (mend নয়)
চাঁদের দিকে তাকাও।
– Look at the moon. (see নয়)
আমি তাকে চোর বলে জানি।
– I knew him to be a thief. (to be বাদ হবে না)
তিনি আমাকে অপেক্ষা করতে বললেন।
– He told me to wait. (said নয়)
পুরষ্কারটা লাভ করা কঠিন।
– The prize is hard to win. (to be নয়)
ব্যাপারটা আমাকে জানানো হয়েছিল।
– I was informed of the matter.
মনে হয় রোগী মারা যাবে।
– I am afraid the patient will die. (think or hope নয়)
সে কেবল ঘুমাত আর কেছুই করত না।
– He did nothing but sleep.
সে আমাকে মিথ্যাবাদী বলল।
- He called me a liar. (told নয়)
সে কখনও মিথ্যা কথা বলেনা।
– He never tells lies. (speak or says নয়)
সে সত্য কথা বলেছিল।
– He spoke the truth. (said নয়)
রাকিব আমার হাত ধরল।
– Rakib took hold of my hand. (caught নয়)
1. একটু সরে বসবেন কি - Would you mind moving aside?
2. তোমার মন খারপ কেন - What’s bothering you?
3. আমার কি - What of me?
4. তাতে আমার কি – So what of me?
5. নিজেকে কি ভাবো তুমি - What do you think you are?
6. তোমার কাছে কি খুচরা আছে - Do you have change?
7. একটু জোরে বলবে কি - Would you be louder please?
8. আপনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন যে... - Do you mean that…
9. কী চমৎকার ধারণা - What a great idea!
10. কী আপদ রে বাবা - What a nuisance!
11. কী দারুণ আশ্চার্য - What a pleasant surprise!
12. কী লজ্জা - What a shame!
13. কী দারুন সংবাদ – What fantastic news!
14. কী পরিতাপের কথা - What is pity! / How sad!
15. কী সুন্দর - How nice!
16. কী বিরক্তিকর – How annoying!
17. কী হতাশাজনক - How upsetting!
18. কী বাজে বকছো - How absurd!
19. তাই নাকি - Is it?
20. হচ্ছেটা কি এখানে - What’s going on here?
21. একটু জোরে বলবে কি - Would you be louder please?
22. তুমি কোন সাহসে এ কাজ করো - How dare you do so?
23. তোমার সাহস কত - How dare you?
24. কে বলছেন - Who’s speaking?
25. I knew it - আমি এটা জানতাম।
26. You know what I mean - তুমি জানো আমি কি বলতে চাচ্ছি।
কয়েকটি মসলার ইংরেজি ও শুদ্ধ উচ্চারণ!
1. গুড় - JAGGERY (জাগারি)
2. জায়ফল - NUTMEG (নাট-মেগ)
3. জয়িত্রি - MACE (মেইস)
4. এলাচ - CARDAMOM(খাডামাম)
5. দারচিনি - CINNAMON (সিনামাম)
6. লবঙ্গ - CLOVES (ক্লৌভস)
7. ধনিয়া / ধনে - CORIANDER (খরি-আনডা)
8. গোলাপ জল - ROSE WATER (রোউয-ওঠা)
9. জিরা - CUMIN SEED (খিউমিন-সিড)
10. কাজু বাদাম - CASHEW NUT (খ্যাশু-নাট)
11. বিট লবন - BLACK SALT (ব্ল্যাক -সোল্ট)
12. গোল মরিচ - BLACK PEPPER(ব্ল্যাক-ফেপা)
13. কালো জিরা - NIGELLA SEED(নাইজেলা-সিড)
14. জাফরান ইংরেজি - SAFFRON (সাফ-রান)
15. পোস্ত ইংরেজি -POPPY SEED (ফপি-সিড)
16. পেঁয়াজ পাতা ইংরেজি - SCALLION (স্ক্যালি-য়ান)
17. সরিষা - MUSTARD SEED (মাসটাড-সিড)
18. মৌরি - FENNEL SEED (ফেনল-সিড)
19. তেজ পাতা ইংরেজি - BAY LEAF (বেই-লিফ)
20. তিল - SESAME SEED (সেসামি -সিড)
21. হলুদ ইংরেজি - TURMERIC (ঠামারিক)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকা-তুহ!
"তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম।"
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের নেক আ’মল সমুহ কবুল করুন।
আল্লাহুম্মা আ-মীন!
ঈদ মোবারক!
পোড়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এস এস সি ২০২৩ এর বিদায় অনুষ্ঠান আগামী ২৫/০৪/২০২৩ ইং রোজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। সবাই কে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হলো।
এবং প্রবেশপত্র সংগ্রহের জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
আদেশক্রমে
মোঃ আসলাম আলী
প্রধান শিক্ষক
পোড়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
01309-117831
পোড়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এস এস সি ব্যাচ ২০২৩ ছাত্রদের আজ থেকে ২৩ শে মার্চ পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন কার্ড বিতরন করা হবে। দুপুর ১২ টা হতে ২ টা পর্যন্ত।
শুধুমাত্র মানবিক শাখার জন্য প্রযোজ্য।
বিজ্ঞান শাখার তারিখ আগামীতে জানিয়ে দেওয়া হবে।
পোড়াদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ড হতে বৃত্তি পেয়েছে ৩ জন। সবাইকে অভিনন্দন!
CONGRATULATIONS!!! The Future Star, For your Success.❤️👌
মিসেস কাজী নজরুল ইসলাম রচিত কবিতা... ✍️
সাইয়েদুল ইস্তেগফার,
বাংলা উচ্চারণ অর্থ সহ দেয়া হলো।
اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّيْ لالَََهَ إِلاَّ أَنْتَ , خَلَقْتَنِيْ وَأَناَ عَبْدِكَ, وَأَناَ عَلىَ عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَاسْتََطَعْتُ, أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ, أََبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَ أََبُوءُ بِذَنْبِيْ فََاغْفِرْ لِيْ, فَإِنًّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا أنَْتَ.
" আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খলাক্বতানি ওয়ানা আবদিকা ওয়ানা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতা তা'তু আউযুবিকা মিন শাররী মা-ছানাতু আবুউ লাকা বিনি'মাতিকা আলায়্যা ওয়া আবুউ বিযামবী ফাগফিরলী ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুযযুনুবা ইল্লা আনতা"
হে আল্লাহ!একমাত্র আপনিই আমার প্রতিপালক, আপনি ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ (উপাস্য)নেই।
আপনিই আমার রব এবং আমি আপনার বান্দা এবং আমি আপনার (সাথে কৃত)ওয়াদা ও অঙ্গীকারের উপর সাধ্যানুযায়ী অটল ও অবিচল আছি।আমি আমার সকল কৃতকর্মের অনিস্ট হতে আপনার আশ্রয় কামনা করছি এবং আমার উপর আপনার দানক্রিত সকল নিয়ামতের স্বীকারোক্তি করছি এবং আমি আমার সকল গুনাহের স্বীকারোক্তি করছি।সুতরাং আপনি আমার গুনাহ ক্ষমা করুন।কেননা আপনি ব্যতীত গুনাহ মাফ করার ক্ষমতা আর কারো নেই
উৎসঃ বুখারী,২:৯৩৩
A great initiative indeed. 👍❤️🌹
** যে সাত ধরণের লোক কিয়ামতের দিন আরশের নিচে ছায়া পাবে। *
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, মানবতার মুক্তির দূত, সাইয়্যেদুল মুরসালিন খাতামুননাবিয়ীন হযরত মুহাম্মদ (সা:)কে আল্লাহ ছোবাহানাহু তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন- তোমাদের জন্য রাসুলের জীবনীর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।
তাঁর প্রতিটি কথা, কাজ, অনুমোদন, নির্দেশনা, আদেশ, নিষেধ ও উপদেশ দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণের বার্তাবাহী। তিনি গোটা মানব জাতির শিক্ষক। তাঁর সে কালজয়ী আদর্শ ও অমিয়বাণী দ্যুাতি ছড়িয়ে পথপদর্শন করেছে যুগ যুগান্তরে, আলোকিত হয়েছে মানবমন্ডলী।
সাত প্রকারের লোককে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাঁর সুশীতল ছায়াতলে স্থান দেবেন। সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবি হযরত আবুহুরাইরা (রা:) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, সাত ধরণের লোককে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাঁর সুশীতল ছায়াতলে স্থান দেবেন। যে দিন তাঁর ছায়া ব্যতিত আর কোন ছায়াই থাকবেনা। সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তিরা হলেন-
১.ন্যায়বিচারক বা শাসক বা নেতা ।
২.মহান আল্লাহর ইবাদতে মশগুল যুবক।
৩.মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত হৃদয়ের অধিকারী ব্যক্তি।
৪.যে দুই ব্যক্তি শুধু মাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষে পরস্পর বন্ধুত্ব করে ও ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং এজন্যই তারা আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
৫. এমন পুরুষ, যাকে কোন উচ্চ বংশের সুন্দুরী নারী অসৎ কাজের দিকে ডেকেছে; কিন্তু সে জানিয়ে দিয়েছে, আমি আল্লাহকে ভয় করি।
৬. যে ব্যক্তি এত গোপনে দান-খয়রাত করে যে, তার ডান হাত কি করছে বাম হাতও তা জানতে পারেনি এবং
৭. এমন ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিকির করে এবং দু’ চোখ থেকে পানি ঝরে (ক্রন্দন করে) (বুখারী ও মুসলিম)
ইমাম মুহিউদ্দিন ইয়াহইয়া আন-নববী (রহ:) কর্তৃক রচিত, হাফেয মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান অনুদিত রিয়াদুসসালেহীন গ্রন্থ থেকে সংকলিত।
#ইসলামের অতুলনীয় আদর্শ #
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামল। তখন পারস্যের এক প্রদেশের শাসক ছিলো- হরমুজান নামের এক অত্যাচারী রাজা। মুসলমানদের সঙ্গে তার প্রায়ই লড়াই হতো। লড়াইয়ে পরাজিত হলে তিনি বিভিন্ন শর্তে সন্ধি করতেন এবং নিজের রাজ্যে ফিরে যেতেন। পরে আবার সুযোগ পেলেই মুসলমানদের ক্ষতি সাধন করতেন।
তার এমন অনৈতিক নীতির ফলে খলিফা হজরত উমর (রা.) আদেশ দিলেন, হরমুজানকে বন্দী করে তার দরবারে হাজির করতে। ইতোমধ্যে এক যুদ্ধে হরমুজান মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়। খলিফার হুকুম মতে তাকে বন্দী অবস্থায় খলিফার দরবারে হাজির করা হয়।
তখন খলিফা হজরত উমর (রা.) তাকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘আপনি আমাদের সঙ্গে বারবার বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। আপনার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে আমাদের বারবার যুদ্ধ-বিগ্রহে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। ফলে অসংখ্য মুসলিম সৈন্যকে অযথা প্রাণ দিতে হচ্ছে। তাদের অর্থ-সম্পদ নষ্ট হচ্ছে।
আপনি অনেকের ঘর-বাড়ি আপনি ধ্বংস করেছেন। নিরীহ অনেক লোকের ওপর অন্যায়ভাবে অত্যাচার চালিয়েছেন। আপনাকে আর সুযোগ দেওয়া যায় না। আপনার একমাত্র শাস্তি হলো- মৃত্যুদণ্ড। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পূর্বে আপনার কোনো কথা থাকলে বলতে পারেন।’
হরমুজান ছিলো খুব সূক্ষ্ম ও কূটবুদ্ধিসম্পন্ন লোক। সুযোগ পেয়ে তিনি এক ফন্দি আঁটেন। তিনি বললেন, মহানুভব খলিফাতুল মুসলিমিন! আমার প্রচণ্ড পিপাসা পেয়েছে, দয়া করে আমাকে একটু পানি পান করতে দিন।
খলিফার নির্দেশে তাকে পানি পান করতে দেওয়া হলো। সুচতুর হরমুজান পানির পাত্র হাতে নিয়ে তা পান না করে ভীতু-ভীতু ভাব নিয়ে ডানে-বামে তাকাতে লাগলেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কি হলো, আপনি পানি পান করছেন না কেন? প্রশ্ন শুনে হরমুজান জবাব দিলো- আমিরুল মুমিনিন, আমার ভয় হচ্ছে যে, পানিটুকু পান করার আগেই আমাকে হত্যা করা হবে।
তার কথার প্রেক্ষিতে হজরত উমর (রা.) বললেন, আপনি নির্ভয়ে পানি পান করুন। হাতের পানি পান করার পূর্বে আপনাকে হত্যা করা হবে না। এ ব্যাপারে আপনাকে আমি নিশ্চয়তা দিলাম।
হরমুজান আমিরুল মুমিনিনের এ কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতে থাকা পানির পাত্রটি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললেন, মহামান্য খলিফা! আপনি বলেছেন, হাতের পানিটুকু পান করার আগে আমাকে হত্যা করবেন না। আমি পানি ফেলে দিয়েছি, সে পানি আর পান করবো না। ওয়াদা অনুযায়ী আপনিও আমাকে আর হত্যা করতে পারবেন না।
হরমুজানের এ চালাকির প্রেক্ষিতে মুসলিম সৈন্যরা রেগে গিয়ে বলল, আমিরুল মুমিনিন! আপনি অনুমতি দিন- আমরা এখনই তার এমন অনৈতিক চালাকির শাস্তি দেই।
কিন্তু খলিফা হজরত উমর (রা.) সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, না তা হতে পারে না। মুসলমানের কথার মূল্য অনেক। সুতরাং যে কথা আমি বলে ফেলেছি, যেকোনো মূল্যে আমি তা রক্ষা করবই- ইনশাআল্লাহ।
যেহেতু আমি তাকে বলেছি, তার হাতের পানিটুকু পান করার পূর্বে তাকে আমি হত্যা করবো না, আর সে যখন পানি পান করেনি সুতরাং, বন্দী হরমুজানকে হত্যা করা চলবে না। এ কথা কথা বলে উমর (রা.) হরমুজানকে লক্ষ্য করে বললেন, যান, আপনি মুক্ত। আমার কথার খেলাফ আমি করবো না।
সুবহানাল্লাহ, কথার কি মূল্য। ওয়াদা পালনের কি অপূর্ব নজির। হরমুজান কল্পনাও করতে পারেননি- তিনি এত সহজে মুক্তি লাভ করবেন। রাসূলের প্রিয় সহচর হজরত উমরের মহানুভবতা দেখে তিনি দারুণভাবে প্রভাবিত হলেন। তিনি ভাবলেন, এই যদি হয় ইসলামের আদর্শ; তবে এর থেকে দূরে থাকা হবে আমার জন্যে চরম দুর্ভাগ্যজনক। ইসলামের অতুলনীয় আদর্শে মুগ্ধ হয়ে হরমুজান ইসলাম গ্রহণ করলেন।
এভাবেই যুগে যুগে ইসলামের অতুলনীয় আদর্শে মুগ্ধ হয়ে অসংখ্য মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। বিশ্বব্যাপী ইসলাম ছড়িয়েছে আপন মহিমায়। শক্তির জোরে নয়।
মক্কা শহরের এক অংশে ছোট একটি স্কুলে শিক্ষক ছোট বালকদের ক্লাস নিচ্ছিলেন । ক্লাস শেষে বালকদের হাতে একটি করে খুরমা তুলে দিয়ে খেলার ছলে বললেন তিনি,
- আগামীকাল সকালে তোমরা ক্লাসে আসার আগে যে যার খুরমা- খেজুর কোন একটি গোপন জায়গায় রেখে আসবে যাতে কেউ না দেখে । বুঝতে পেরেছ?
– জ্বী জনাব! বালকদের সমস্বরে জবাবের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো সেদিনের ক্লাস ।
পরেরদিন সকালের কথা । শিক্ষক সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন সবাই নিজ নিজ খুরমা লুকিয়ে এসেছে কি না । সবাই লুকিয়ে এসেছে– শুধু একটি ছেলে ছাড়া । শিক্ষক জানতে চাইলেন,
– তোমার সব বন্ধুরা যেখানে লুকিয়ে রেখে আসতে পেরেছে, তুমি কেন পারলে না খোকা? বালকের ধীর-স্থির উত্তর,
– জনাব, আপনি এমন একটি গোপন জায়গায় খুরমা লুকাতে বলেছেন যাতে কেউ না দেখে । আমার সেরকমের কোন
জায়গা নেই । কিঞ্চিত বিস্ময়ের আওয়াজ উঠলো ক্লাসে!
বালক বলে চলল– "আমি সকাল পর্যন্ত বিছানার নিচে, উঠোনের গর্তে, মায়ের তোষকের কোনা সহ অনেক জায়গায় আমার খুরমা লুকানোর চেষ্টা করেছি । কিন্তু এমন কোন জায়গা খুঁজে পাইনি যেখানে লুকালে আমার সৃষ্টিকর্তা পরম করুণাময় দেখতে পাবেন না । সবকিছুই যে তাঁর সামনে দৃশ্যমান!"
বৃদ্ধ শিক্ষক ছোট বালকটির অসামান্য জ্ঞান ও চিন্তার ধরন দেখে মুগ্ধ হলেন । আনন্দের পানি চোখে নিয়ে ছেলেটিকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরলেন তিনি । তিনি বুঝতে পারলেন, এই ছেলের শিক্ষক হিসেবে পৃথিবীর মানুষ তাঁকে মনে রাখবে চিরদিন ।
সেদিনের সেই ছোট ছেলেটি তার শিক্ষককের কথা সত্যি প্রমান করেছিলেন ।
ছেলেটির নাম ছিল আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস।
সারা পৃথিবী তাঁকে "ইমাম শাফেঈ'য়ী (রহঃ)" নামে জানে!
# বারসিসা ও একটি সুন্দরী মহিলার কাহিনী┇যেভাবে শয়তান মানুষকে ধোঁকা দেয়। #
বনী ইসরাইলের সময় এক ছোট্ট গ্রামে বারসিসা নামে অত্যন্ত ধার্মিক এক ব্যক্তি ছিল। তাকে সন্ন্যাসী বলা যেতে পারে। সে আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করত এবং বিশ্বাস করত যে ঈসা আলাহিসসালাম আল্লাহর একজন রাসুল।
সেই গ্রামে তিন ভাই ও এক বোন থাকতো । সেই ভাইদের জিহাদের জন্য ডাকা হল । কিন্তু তারা বোনকে একা রেখে যেতে চাইল না। কার কাছে রাখবে চিন্তা করতে লাগলো। গ্রামবাসি বারসিসার কথা বলল। কারণ গ্রামের সবাই বারসিসাকে উত্তম চরিত্রবান হিসাবে জানতো । তো তারা বারসিসার কেছে গেল, যখন তার কাছে তাদের বোনকে রাখতে চাইলে সে রাজি হল না এবং বলল ‘আমি অভিশপ্ত শয়তানের কাছ থেকে পানাহ চাই।’
কারণ সে ভয় করছিল যে সে গুনাহে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে। তখন শয়তান বারসিসার মনে কুমন্ত্রণা (ওয়াসওয়াসা) দিতে আসল। চালাক শয়তান জানতো যে বারসিসার মন খুবই নরম। সে কানে কানে বারসিসাকে বলল – “তারা যদি ভাল কাউকে তাদের বোনের জন্য খুঁজে না পায় এবং খারাপ কারো কাছে মেয়েটিকে রেখে যায় তখন কি হবে ! এই পরিণতি কি তোমার ভুলের জন্য নয়?”
বারসিসা বুঝতে পারেনি যে এটা শয়তানের কুমন্ত্রণা। মানুষের প্রতি দরদের কারনে মেয়েটিকে সে সাহায্য করতে রাজি হল।
সে মেয়েটিকে গির্জার বিপরীতে একটি ঘরে থাকতে দিল। গির্জার সামনে মেয়েটির জন্য খাবার রেখে আসত, মেয়েটি নিজে এসে খাবার নিয়ে যেত। বারসিসার সাথে তার দেখা হত না।
শয়তান বারসিসার কাছে আবার আসল এবং বলল, “তুমি কেন মেয়েটির খাবার তার ঘরের সামনে রেখে আসো না? এর ফলে মেয়েটাকে ঘর থেকে কেউ এতটা পথ একা একা হেঁটে বের হতে বা ফিরে যেতে দেখবে না!”
বারসিসা রাজি হল এবং মেয়েটির ঘরের সামনে খাবার রেখে আসতে শুরু করল। শয়তান এতেও খুশি হল না, সে আবার আসলো এবং কানে কানে বলল – ‘কেন তুমি তার ঘরে ভিতরে খাবার দিয়ে আসো না? ফলে মানুষ তাকে ঘর থেকে একা একা বের হতে আর ঢুকতে দেখত না!’ এবার বারসিসা তার ঘরের মধ্যে খাবার দিয়ে আসতে শুরু করল। শয়তান আবার আসলো এবং বলল – ‘মেয়েটার সাথে তোমার কথা বলা উচিত ,এভাবে একা থাকলে তো সে পাগল হয়ে যাবে’। বারসিসা মেয়েটির কথা চিন্তা করে তার সাথে রুমের আড়ালে কথা বলতে শুরু করল ।
শয়তানের কুমন্ত্রণায় এক সময় তারা একই রুমে কথা বলতে লাগল।
এভাবে শয়তান তার কাজের কঠিন অংশ বাস্তবায়ন করল। এই পর্যায়ে বারসিসা এবং মেয়েটা একে অপরের প্রতি দুর্বল হল এবং এক সময় ব্যভিচারে লিপ্ত হল। মেয়েটি গর্ভবতী হল , একটি বাচ্চা জন্ম দিল। বাচ্চা জন্মের সময় শয়তান বারসিসার কাছে আবার আসল এবং বলল, “এটা তুমি কি করলে? তোমার পাপের প্রমাণ সরিয়ে ফেল, না হলে মেয়েটির ভাইরা ফিরে আসলে তোমাকে খুন করবে!”
বারসিসা বাচ্চাটিকে খুন করল এবং ঐ ঘরের মেঝেতে পুতে ফেলল।
শয়তান এবার বলল , “তুমি এক নারীর সন্তান হত্যা করেছ এবং আশা করছ যে সে এটা কাউকে বলবে না?”
তখন বারসিসা মেয়েটিকেও খুন করল এবং তাকেও ঐ ঘরের মেঝেতে পুতে রাখল। মেয়েটির ভাইরা ফিরে আসলে তাদেরকে একটা মিথ্যা কবর দেখিয়ে বলল “তোমাদের বোন অসুখে মারা গিয়েছে এবং ঐ কবরে দাফন করা হয়েছে”। তারা বারসিসার কথা বিশ্বাস করল।
সেই রাতে শয়তান তিন ভাইকে একই স্বপ্ন দেখাল যে “বারসিসা তোমাদের বোনকে হত্যা করেছে, প্রমান হিসাবে তোমাদের বোন যে ঘরে থাকত তার মেঝে খুঁড়ে দেখতে পারো”। ঘুম ভাঙ্গলে তারা একে অপরকে স্বপ্নের কথা বলল এবং বুঝতে পারল তারা তিনজন একই স্বপ্ন দেখেছে।
যাচাই করার জন্য তারা বারসিসার এলাকায় যেয়ে প্রথমে বারসিসার দেখানো কবর খুঁড়ল, দেখল কিছু নেই, এর পর যে ঘরে তাদের বোন থাকত তারা ঐ ঘরের মেঝে খুঁড়ে তাদের বোনের এবং বাচ্চার লাশ পেল। তারা বারসিসাকে ধরল এবং বলতে বাধ্য করলো আসলে কি হয়েছিল।
তারপর তারা তাকে রাজার কাছে নিয়ে গেলে রাজা তাকে শিরচ্ছেদ করতে আদেশ দিল। যখন বারসিসাকে শিরচ্ছেদ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন শয়তান কাছে আবার আসল। এবার ওয়াসওয়াসা না, মানুষের রূপ নিয়ে সে আসল। এসে বলল, “শুনো বারসিসা, আমি হলাম শয়তান, তোমার এই অবস্থা তোমার নিজের চিন্তায় হয়নি, আমিই করেছি আর একমাত্র আমিই তোমাকে বাঁচাতে পারি যদি তুমি আমার কথা মেনে চল।” বারসিসা বলল, “আমাকে কি করতে হবে?”
শয়তান বলল” আমাকে সেজদা কর আমি তোমাকে রক্ষা করবো” তো বাঁচার জন্য মরিয়া হয়ে বারসিসা শয়তানকে সিজদা করল এবং কাফের হয়ে গেল। সিজদা করার সাথে সাথে শয়তান তাকে বলল – ‘আমি এখন তোমার থেকে মুক্ত। আমি আল্লাহকে ভয় করি যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক’। এই বলে শয়তান সেখান থেকে পালালো , এবং বারসিসার শিরচ্ছেদ করা হল। কেয়ামতের দিন বারসিসাকে যখন জীবিত করা হবে তখন সে শয়তানকে সিজদা করতে করতে উঠে দাঁড়াবে!
দেখুন শয়তান কিভাবে বারসিসাকে ফাঁদে ফেলেছিল। সে এসেছিল বন্ধুর বেশে, ভালো ভালো কথা বলতে আর আপাত:দৃষ্টিতে ভালো কাজে উৎসাহ দিতে, কিন্তু আসলে সে ছিলো সবচেয়ে বড় শত্রু!
আল্লাহ বলেন,
তাদের দৃষ্টান্ত শয়তান যে মানুষকে বলে কুফরি করো। অতঃপর যখন সে কুফরি করে , তখন শয়তান বলে: আমি তোমার থেকে মুক্ত। আমি বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি।
[সুরা হাশর ৫৯:১৬]
ঘটনা থেকে শিক্ষা:
১) শয়তান কখনোই আপনাকে সরাসরি এসে শিরক করতে বলবে না। সে সব সময়ই আপনাকে ভালো ভালো কারণ দেখিয়ে ধোঁকায় ফেলবে, এবং শয়তান আমাদের যে কারো চাইতেই বেশী ধৈর্য্যশীল, তাই সে বার বার ফিরে আসবে। কাজেই আমরা সবসময়ই আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবো শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
২) কখনোই ভাববেন না যে আপনার অনেক জ্ঞান আছে, বিচার-বুদ্ধি আছে, শয়তান কিছুতেই আপনাকে ধোঁকায় ফেলতে পারবে না। বরং, প্রকৃত জ্ঞানীরা শয়তানের ফাঁদে পড়ার ভয় সবচাইতে বেশী করে। এই কারণেই আপনি দেখবেন আলেমদের তাকওয়া (আল্লাহভীতি) সবচাইতে বেশী।
৩) কাহিনীটা নিয়ে চিন্তা করুন। শয়তান যদি প্রথমেই এসে বারসিসাকে বলত – ‘আমাকে সিজদা কর’ – বারসিসা কখনোই তা করতো না। কিন্তু শয়তান তার পরিকল্পনা মাফিক ধীরে ধীরে একটার পর একটা ছোট ছোট ধাপে বারসিসাকে দিয়ে ভুল করিয়ে অবশেষে তাকে এমনভাবে ধ্বংস করে দেয় যে জীবন রক্ষার তাগিদে সে অবশেষে শিরক করে ফেলে, যে পাপ আল্লাহ কিছুতেই ক্ষমা করবেন না।
৪) শেষ কথা, আল্লাহ যা করতে আমাদের নিষেধ করেছেন, তা থেকে আমরা বিরত থাকবো। নিজে থেকে যুক্তি দেয়ার চেষ্টা করব না যে – এটা করলে কি হয়? এ আর এমন কি? আল্লাহ নিষেধ করলে কি হবে দেখতে তো মনে হয় এটা একটা ভালো কাজ! এটা তো ছোট্ট একটা পাপ! না, আল্লাহর যে কোন অবাধ্যতাই পাপের পথে নিয়ে যায়, আপাত:দৃষ্টিতে পাপটা যত ছোটই হোক না কেন, ছোট পাপই বড় পাপের দিকে টানে, বড় পাপ টানে কুফরীর দিকে।
# প্রহারেণ ধনঞ্জয় – জসীম উদ্দীন #
এক কুলীন ব্রাহ্মণ ছিল খুবই গরীব। কোনোরকমে দিন চলে যায়। কোন এক বর্ষাকালে সাত মেয়ের সাত জামাই এসে বসে আছে তার বাড়িতে। বেচারি শ্বশুর আজ বিক্রি করে বউ-এর গয়না, কাল বিক্রি করে পিতলের কলসী। যা মূল্য পায় তাই দিয়ে জামাইদেরকে খাওয়ায়। আষাঢ় মাসের ঘন বর্ষার দিন। দুধে-মাছে খেয়ে জামাইরা আর ফেরার নামও করে না। পাড়ার একজন লোক, গরীব ব্রাহ্মণের অবস্থা দেখে বড়ই দুঃখিত হল। সে এসে শ্বশুরকে বলল, “আপনার জামাইরা যে আজ দশ-বারো দিন ধরে বসে বসে খাচ্ছে, তাদের বাড়ি চলে যেতে বলেন না কেন?”
শ্বশুর বলল, “তাহা যদি করি তবে জামাইরা রেগে মেগে বাড়ি গিয়ে আমার মেয়েদের কষ্ট দিবে। সেই জন্যই তো তাদেরকে এতটুকু অযত্ন করতে সাহস পাই না।”
তখন সেই লোকটি শ্বশুরের কানে কানে একটি উপদেশ দিয়ে গেল। পরদিন জামাইদের খাওয়ার সময় পাতে ঘি পড়ল না। তাহা দেখে হরি নামের জামাই রেগে একেবারে অস্থির। সে ভাতের থালা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বলে উঠল, “কি-আজ আমাদের থালায় ঘি পড়ল না, ঘি না খাইয়ে শ্বশুর আমাদেরকে অপমান করলেন। এমন শ্বশুরবাড়ি কে থাকে?” এই বলে সে গাট্টি-বোচকা নিয়ে শ্বশুরবাড়ি হতে চলে গেল।
পরদিন জামাইদের খাওয়ার সময় পাতে মাংস পড়ল না। মাধব নামের জামাই ভাতের থালা ফেলে দিয়ে উঠে দাঁড়াল।
“কি!-শ্বশুরবাড়ি এসেছি বলে অপমানিত হব? কাল খাওয়ার সময় ঘি দিল না, আজ আবার মাংস দিল না। এমন শ্বশুরবাড়ি নাই থাকিলাম।” এই বলে সে ছাতি লাঠি বগলে করে বাড়ি চলে গেল।
পরদিন খাওয়ার সময় মাছ দেওয়া হল না। সেদিন রেগে মধু নামের জামাই চলে গেল। তার পরদিন খাওয়ার সময় মিষ্টান্ন দেওয়া হল না। উহাতে অপমান বোধ করে যাদব নামের জামাই চলে গেল। অপর দিন পাতে ব্যঞ্জন পড়ল না। অক্ষয় নামের জামাই রেগে আগুন হয়ে চলে গেল। বাকী দুই জামাই শ্যাম আর ধনঞ্জয় তবু পড়ে রইল। বাড়িতে গেলে ভাতও তো জুটবে না। না দিয়েছে তরকারি, না দিয়েছে ঘি। এখানে নুন দিয়েও তো পেট ভরে ভাত খাওয়া যাবে!
পরদিন যখন খাওয়ার সময় লবণ দেওয়া হল না, বিনা লবণে ভাত খেতে খেতে থুথু করে শ্যাম নামের জামাই চাদর গলায় দিয়ে বাড়ি চলে গেল। কিন্তু ধনঞ্জয় আর যায় না। শ্বশুর না দিয়েছে লবণ, পেট ভরে ভাত তো দিবে! বাড়িতে গিয়ে ভাতও তো জুটবে না। আর শ্বশুর বাড়িতে টিনের ঘর, ঝড়-বৃষ্টিতে জল পড়ে না। বাড়িতে খড়ের ঘর! ছাউনি খসে পড়েছে। এতটুকু বৃষ্টি পড়লেই মেঝেয় হাঁটুখানেক জল। শ্বশুর বাড়িতে আরাম করে তো রাতে ঘুমান যায়।
পরদিন সেই লোকটি এসে জিজ্ঞাসা করল, “আমার পরামর্শ মতো কাজ করে ফল পেয়েছ তো?”
শ্বশুর বলল, “আপনার পরামর্শমতো কাজ করায় সকল জামাই-ই একে একে চলে গিয়েছে। কিন্তু ধনঞ্জয় নামের জামাই কিছুতেই যায় না।”
লোকটি তখন পরামর্শ দিল, “উহাকে লাঠিপেটা করে তাড়াও।”
কতদিন আর জামাইকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ান যায়! পরদিন শ্বশুর একটি লাঠি দিয়ে মারিয়া ধনঞ্জয়কে তাড়িয়ে দিল। সেই হতে শ্লোক তৈরি হল।
হরি বিনা হরির্যাতি মাংসেন মাধব, মৎস্য বিনা মধুর্যাতি মিষ্টান্ন বিনা যাদব। ব্যঞ্জন বিনা তড়িৎ যাতি ক্রোধদ্দীপ্ত অক্ষয়, লবণ বিনা শ্যাম যাতি প্রহারেণ ধনঞ্জয়।
একদিন একটা যুবক জীবিকার উদ্দেশ্যে, মক্কার গলি দিয়ে হাঁটছিলো। হঠাত চোখে পড়লো, একটা হার পড়ে আছে। আশেপাশে আর কেউ নেই দেখে, হারটা উঠিয়ে নিলো। মালিকের খোঁজে হেরেমে এলো। এমন সময় একটা ঘোষণা গোচরীভূত হলো:
-আমি একটা হার হারিয়েছি। কোনও দয়ালু ভাই পেয়ে থাকলে, আল্লাহর ওয়াস্তে ফিরিয়ে দেবেন।
যুবকটা বললেন: আমি এগিয়ে গেলাম। বললাম:
-আপনার হারটা কেমন, বর্ণনা দিন তো?
বর্ণনা মিলে গেলে, হারটা হস্তান্তর করলাম। আশ্চর্য হয়ে গেলাম, লোকটা হারখানা নিয়ে টু-শব্দও করলো না। সোজা গটগট করে হেঁটে চলে গেলো। সামান্য ধন্যবাদ টুকুও না।
আমি আল্লাহর কাছে বললাম:
-ইয়া আল্লাহ! আমি যদি এই সামান্য কাজটুকু আপনাকে সন্তুষ্ট করার জন্যই করে থাকি, আপনি আমার জন্য এর চেয়েও ভালো প্রতিদান জমা করে রাখুন।
আমীন।
এরপর আমি রুজি-রোজগারের উদ্দেশ্যে, জাহাজে চড়ে বসলাম। তাকদীরের এমনই লিখন, জাহাজ পড়লো ঝড়ের কবলে। পুরো জাহাজ ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয় গেলো। হাতের কাছে যে যা পেলো ওটা ধরেই ভেসে রইলো।
আমিও ভাসতে ভাসতে একটা দ্বীপে গিয়ে উঠলাম। ওখানে দেখলাম একটা মসজিদ। মন খুশি হয়ে উঠলো। মসজিদে গিয়ে নামায আদায় করলাম। আমার তো যাওয়ার আপাতত কোনও জায়গা নেই। ভবঘুরে।
মসজিদে একটা কুরআন শরীফ পেলাম। বসে বসে ওটাই তিলাওয়াত করতে শুরু করলাম।
আমাকে কুরআন খানা পড়তে দেখে সবাই আমাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরলো। অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো:
-আপনি কুরআন পড়তে পারেন?
-জ্বী, পারি।
তারা বললো:
-আমাদের কাছে এই কুরআন কারীম অনেক দিন ধরে পড়ে আছে। আমরা এটা পড়তে পারি না।
আমরা এটাকে পরম যত্নে রেখে দিয়েছি। এক নাবিকের কাছ থেকেই আমরা এটা কিনেছিলাম।
আমাদের এই দ্বীপে, আগে একজন ছিলেন, তিনি এই কুরআন পড়তে পারতেন। ঠিকঠাক করা ছিলো, তিনিই সবাইকে কুরআন শিক্ষা দিবেন। এরপর তিনি হজ্জে গেলেন। আর ফিরে আসেন নি। এখন আপনি আমাদেরকে, আমাদের
সন্তানদেরকে কুরআন শিক্ষা দিন। আমি দ্বীপের বাচ্চাদেরকে কুরআন কারীম শিক্ষা দিতে লাগলাম। তাদেরকে অন্যান্য লেখাপড়াও শেখাতে থাকলাম।
কিছুদিন পর এলাকার মুরুব্বিরা বললেন:
-আমাদের এলাকায় একজন ইয়াতীম মেয়ে আছে। সর্বগুণে গুণান্বিতা। আপনি কি তাকে বিয়ে করতে রাজি হবেন?
-আমার কোনও আপত্তি নেই। আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো। বাসর রাতে স্ত্রীর সাথে আমার প্রথম দেখা। আমি তাকে দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলাম। দেখলাম তার গলায় মক্কায় কুড়িয়ে পাওয়া সেই হার ঝুলছে। জানতে চাইলাম:
-এই হার তোমার কাছে কিভাবে এলো? নববধূ লাজুক মুখে উত্তর দিলো:
-আমার আব্বু সেবার হজে গেলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে হারটা হারিয়ে গেলো। কিন্তু এক মহত ব্যক্তির বদান্যতায় হারটা ফিরে পেলেন। আব্বু সব সময় তার জন্য দু আ করতেন:আর বলতেন
“ইয়া আল্লাহ! আমার মেয়ের জন্য, মক্কার এই মহত ব্যক্তির মতো এমন একজন স্বামী মিলিয়ে দিন”
রানার
– সুকান্ত ভট্টাচার্য
রানার ছুটেছে তাই ঝুম্ঝুম্ ঘন্টা বাজছে রাতে
রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে,
রানার চলেছে, রানার !
রাত্রির পথে পথে চলে কোনো নিষেধ জানে না মানার ।
দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছোটে রানার-
কাজ নিয়েছে সে নতুন খবর আনার।
রানার! রানার!
জানা-অজানার
বোঝা আজ তার কাঁধে,
বোঝাই জাহাজ রানার চলেছে চিঠি আর সংবাদে;
রানার চলেছে, বুঝি ভোর হয় হয়,
আরো জোরে, আরো জোরে হে রানার দু্র্বার দুর্জয়।
তার জীবনের স্বপ্নের মতো পিছে সরে যায় বন,
আরো পথ, আরো পথ – বুঝি লাল হয় ও পূর্ব কোণ ।
অবাক রাতের তারারা, আকাশে মিট্মিট্ করে চায়;
কেমন করে এ রানার সবেগে হরিণের মতো যায় !
কত গ্রাম, কত পথ যায় স’রে স’রে –
শহরে রানার যাবেই পৌঁছে ভোরে;
হাতে লন্ঠন করে ঠন্ঠন্, জোনাকিরা দেয় আলো
মাভৈঃ রানার ! এখনো রাতের কালো ।
এমনি ক’রেই জীবনের বহু বছরকে পিছু ফেলে,
পৃথিবীর বোঝা ক্ষুধিত রানার পৌঁছে দিয়েছে ‘মেলে’।
ক্লান্তশ্বাস ছুঁয়েছে আকাশ, মাটি ভিজে গেছে ঘামে
জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে।
অনেক দুঃখে, বহু বেদনায়, অভিমানে, আনুরাগে,
ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে।
রানার! রানার!
এ বোঝা টানার দিন কবে শেষ হবে?
রাত শেষ হয়ে সূর্য উঠবে কবে?
ঘরেতে অভাব; পৃথিবীটা তাই মনে হয় কালো ধোঁয়া,
পিঠেতে টাকার বোঝা, তবু এই টাকাকে যাবে না ছোঁয়া,
রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছোটে,
দস্যুর ভয়, তারো চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে।
কত চিঠি লেখে লোকে –
কত সুখে, প্রেমে, আবেগে, স্মৃতিতে, কত দুঃখে ও শোকে ।
এর দুঃখের চিঠি পড়বে না জানি কেউ কোনো দিনও,
এর জীবনের দুঃখ কেবল জানবে পথের তৃণ,
এর দুঃখের কথা জানবে না কেউ শহরে ও গ্রামে,
এর কথা ঢাকা পড়ে থাকবেই কালো রাত্রির খামে।
দরদে তারার চোখ কাঁপে মিটিমিটি, –
এ-কে যে ভোরের আকাশ পাঠাবে সহানুভূতির চিঠি –
রানার ! রানার ! কি হবে এ বোঝা বয়ে?
কি হবে ক্ষুধার ক্লান্তিতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে?
রানার ! রানার ! ভোর তো হয়েছে – আকাশ হয়েছে লাল
আলোর স্পর্শে কবে কেটে যাবে এই দুঃখের কাল?
রানার! গ্রামের রানার!
সময় হয়েছে নতুন খবর আনার;
শপথের চিঠি নিয়ে চলো আজ
ভীরুতা পিছনে ফেলে –
পৌঁছে দাও এ নতুন খবর,
অগ্রগতির ‘মেলে’,
দেখা দেবে বুঝি প্রভাত এখুনি –
নেই, দেরি নেই আর,
ছুটে চলো, ছুটে চলো আরো বেগে
দুর্দম, হে রানার ॥
Click here to claim your Sponsored Listing.
Location
Category
Contact the school
Address
Poradaha High School
Kushtia
7031
Bheramara
Kushtia, 7040
It's a sister concern of Proceed Education Family. The school is well decorated.
Islamic University
Kushtia, 7003
অনলাইনের মাধ্যমে কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষার বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান।
Dangmorka Bazar, Bagoan Road, Daulatpur
Kushtia, 7052
We are here to provide quality education. Now we have PRE-KG, KG, ONE, TWO, THREE, FOUR, FIVE & SIX.
Kushtia, 7000
পবিত্র কুর'আন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পরিচালিত, একটি যুগোপযোগী মানসম্মত ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।