শাপলা চত্বরে শহীদদের তালিকা দেবে
হেফাজতে ইসলাম
মামলা হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ
ট্রাইবুনালে
—————————————————-
সাক্ষাৎকারের ভিডিও লিংক কমেন্টে…
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক জানিয়েছেন, ২০১৩ সালের ৫ মে সংঘটিত মতিঝিলের শাপলা চত্বর ট্র্যাজেডিতে নিহতদের পরিচয় প্রকাশে তারা একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটির প্রতিবেদন এলেই চূড়ান্ত তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ করবে হেফাজতে ইসলাম। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করবে সংগঠনটি। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের এই যুগ্ম মহাসচিব মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার সঠিকভাবে ধর্মীয় জায়গাগুলো পরিচালনা করতে পারছে না এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা ইসলামকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখে। আর এই বিবেচনায় দেশের বিদ্যমান ইসলামি ও ধর্মভিত্তিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ অবস্থায় দেখার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন মামুনুল হক।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ায় নিজ দফতরে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মাওলানা মামুনুল হক। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি এবং ধর্মীয় ব্যবস্থা নিয়ে সক্রিয়দের সামনের কাতারে অবস্থান তার। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল তিনি গ্রেফতার হন। মুক্তি পান চলতি বছরের মে মাসে।
বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে মাওলানা মামুনুল হক তার গ্রেফতার, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান, বর্তমান রাজনৈতিক প্রশ্ন, বিভিন্ন মতাদর্শিক শ্রেণিবিন্যাস, পাঠ্যপুস্তকে ধর্মীয় প্রসঙ্গ, হিন্দুদের ওপর হামলা, মাজার ভাঙা, ব্যক্তিপর্যায়ের বিচার, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাসহ নানা প্রশ্নে কথা বলেছেন। ২০২১ সালে ঘটে যাওয়া আলোচিত সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টকাণ্ড নিয়েও খোলামেলা কথা বলেছেন মামুনুল হক।
প্রকাশ্য অনুষ্ঠানগুলোতে মামুনুল হকের আলোচনায় থাকে ভাস্কর্য বিষয়টি। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘একটি মুসলিম সমাজে এভাবে ভাস্কর্য বা মূর্তি যে নামেই হোক—স্থাপন করাটা কোনও বিবেচনাতেই যুক্তিসঙ্গত নয়।’
ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎকারে আগামীতে ইসলামিক দলগুলোর সম্ভাব্য ঐক্য ও এর প্রত্যাশা নিয়েও কথা বলেছেন ইসলামিক এই স্কলার। সাক্ষাৎকারের ভিডিও ধারণ করেছেন মো. মাসুম ও মুহূর্তবন্দি করেছেন সাজ্জাদ হোসেন। আজ প্রকাশিত হলো সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব।
বাংলা ট্রিবিউন: ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের আগে জেলখানা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন আপনি। ২০২১ সালের এপ্রিলে আটক হয়েছিলেন একটি বিশেষ ঘটনা কেন্দ্র করে। জেলখানায় লম্বা সময় ধরে আপনি ছিলেন। আমরা দেখেছি এ সময়ে অনেকেই বেরিয়েছেন, মুক্তি পেয়েছেন। কেউ কেউ মুচলেকাও দিয়েছেন রাজনীতি করবেন না বা দূরে থাকবেন। কারাগারের ওই সময়টার কথা যদি বলেন।
মামুনুল হক: আমার গ্রেফতারের প্রেক্ষাপটটা তো সবাই জানেন। মূলত ওই সময়টায় ২০২১-এর মার্চ এবং এপ্রিলে বাংলাদেশে দুটি ইস্যু বেশ আলোচনায় ছিল। প্রথমে আলোচনায় ছিল ভাস্কর্য ইস্যু। এর আগে পদ্মা সেতু এবং সেতুর সঙ্গে যে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের একটা মূর্তি বা ভাস্কর্য স্থাপন করার আয়োজন চলছিল। সেটা নিয়ে স্থানীয়ভাবে আলেম সমাজ ধোলাইপাড় মোড়ে প্রথমে প্রতিবাদ জানায়। বিষয়টা একটা পর্যায়ে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত স্পষ্ট ও বলিষ্ঠভাবে আমরা বলেছিলাম, একটি মুসলিম সমাজে এভাবে ভাস্কর্য বা মূর্তি যে নামেই হোক— স্থাপন করাটা কোনও বিবেচনাতেই যুক্তিসঙ্গত নয়। এভাবে একজন মরহুম ব্যক্তির মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে তিনি পরকালে এর জন্য লজ্জিত হবেন। এছাড়া এই ধরনের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হতেই পারে, এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই দেখা যায় যে ওইসব স্থাপনার ওপর বিরোধী মতের লোকজন ব্যাপক হামলা চালায়, যেটা আমরা ৫ আগস্টের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেখেছি। কিন্তু আমার অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ এবং যৌক্তিক কথাগুলো তৎকালীন সরকার ভালোভাবে নেয়নি। এটা ছিল একটা ইস্যু।
দ্বিতীয় ইস্যু ছিল, ওই সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আয়োজন চলছিল, এখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হলো। যেহেতু নরেন্দ্র মোদির বিষয়টা মুসলমানদের জন্য ধর্মীয়ভাবে এবং মুসলিম জাতির জন্য একটা দুঃখজনক জায়গায় রয়েছে। ১৯৯২-৯৩ সালে বাবরি মসজিদের শহীদকে (ভাঙা) কেন্দ্র করে ভারতে মুসলমানদের ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল, রক্তপাত হয়েছিল—এর জন্য নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করা হয়। প্রতিবাদের জায়গা থেকে আমরা বরং চেয়েছিলাম যে নরেন্দ্র মোদিকে না এনে প্রয়োজনে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানানো হোক। কিন্তু সেই বিষয়টিকেও ভালোভাবে নেয়নি সরকার এবং সেটার জন্য প্রধান ব্যক্তি হিসেবে আমাকে তারা আক্রমণ করে, টার্গেট করে।
বাংলা ট্রিবিউন: তখনই কি আপনি বুঝতে পেরেছিলেন অবস্থানের কারণে সরকারের টার্গেটে পড়ে গেছেন?
মামুনুল হক: না, তখনও আমি বিষয়টা বুঝতে পারিনি। হেফাজতে ইসলাম তখন মূলত মুখ্য ভূমিকায় ছিল। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে এ বিষয়গুলো যেন সুন্দরভাবে হ্যান্ডেল করা হয় সেটা আমরাও চেষ্টা করছিলাম। একটা সময় সরকার হেফাজতে ইসলামকে দমন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এটা আমরা পরবর্তী সরকারের কার্যকলাপ থেকে বুঝতে পারি যে হেফাজতকে যেকোনোভাবে তারা দমন করবে। তো হেফাজতকে দমন করার জন্য হেফাজতের যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ছিলেন তাদের এক-একজনের ব্যাপারে তারা একেকটা পরিকল্পনা তৈরি করে। যেটা আমরা পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছি। আমাদের তৎকালীন মরহুম আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী তাদের দুজনের ব্যাপারে এক ধরনের নির্মম এবং অত্যন্ত মর্মান্তিক কোনও পরিকল্পনা সরকারের ছিল। যেটা পরবর্তীতে তাদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কার্যকর হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
বাংলা ট্রিবিউন: এগুলো আপনারা জানলেন কী করে যে সরকারের এরকম পরিকল্পনা ছিল?
মামুনুল হক: এগুলো অন্যান্য আয়োজন থেকে স্পষ্ট হয়। নূর হোসাইন কাসেমী সাহেবের মৃত্যুর বিষয়টা অনেকটা রহস্যজনক। জুনায়েদ বাবুনগরী সাহেব হুজুরের মৃত্যুটাও রহস্যজনক। কারণ মৃত্যুর দুদিন আগেই সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাকে করোনার টিকা দেওয়া হয়। এরপরই তার স্বাস্থ্যের ভয়ংকর অবনতি ঘটলো এবং একটা পর্যায়ে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন। এ কারণে এ দুটো মৃত্যু আমাদের কাছে রহস্যজনক। এরপরে ওই সময়টাতে বাবুনগরী হুজুর এবং হেফাজতের মুখপাত্রের জায়গাটায় আমি ভূমিকা পালন করছিলাম। তরুণ প্রজন্ম আমার কথায় অনেক বেশি উদ্বেলিত হচ্ছিল। সেই জায়গাটাকে সরকার তার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে।
হেফাজত এবং ইসলামি শক্তিকে দমন করার জন্য এবং ইসলামি শক্তির এই যে উচ্ছ্বাস এবং ইসলামি মুসলিম জনতার— বিশেষ করে মাঠে-ময়দানে যুব প্রজন্মের যেই সরব উপস্থিতি, এটাকে সরকার একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। এটা দমন করার জন্য তারা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে টার্গেট করে। টার্গেটের পর আমাকে হেয় করাসহ জনবিচ্ছিন্ন করার জন্য যা যা করার তা-ই করে। অত্যন্ত নির্লজ্জ এবং ভয়ংকর পরিকল্পনা তারা আমাকে নিয়ে সাজায়। যেটা পরবর্তী ঘটনার ধারাবাহিকতায় আমাদের কাছে স্পষ্ট। এভাবে আমি গ্রেফতার হলাম ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল। ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে আমার ওপর হামলা হয়। ১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল গ্রেফতার করে একের পর এক ধারাবাহিক মামলা হয়।
বাংলা ট্রিবিউন: সোনারগাঁয়ের ওই বিষয়টা নিয়ে আপনি একটু বলবেন? আপনি এখন কী ফিল করেন বা তখনও আপনি কী ফিল করেছিলেন এ ব্যাপারে?
মামুনুল হক: তখনও যেটা বলেছি এখনও সেটাই বলছি। তারা আমাদের ইসলামি নেতৃত্বকে, মানুষের সামনে আমাদের চরিত্র হনন করাটাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাদের আরও কিছু কার্যকলাপ, যেমন—আমাদের একজন সহকর্মী, একজন আলেম মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গ্রেফতার করে। তাকে হাতিরঝিলে নিয়ে গিয়ে ভিন্ন ড্রেসআপ করিয়ে প্যান্ট-শার্ট পরিয়ে হাতে সিগারেট ধরিয়ে দিয়ে অজানা-অপরিচিত একটি মেয়েকে তার কাছে এনে চরিত্র হননের জন্য বিভিন্ন ছবি তুলেছিল। যদিও পরবর্তীতে সেটি আর মিডিয়ার সামনে তারা আনে নাই। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে সেসব ছবি তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার আয়োজন করেছে। অর্থাৎ তাদের পুরো আয়োজনটাই ছিল ইসলামি নেতাদের চরিত্র হনন করা, তাদের ঘায়েল করা। এই ঘায়েল করার মধ্য দিয়ে আমাদের জনবিচ্ছিন্ন করা এবং মাঠপর্যায়ে আমাদের যে জনশক্তি তাদের কোণঠাসা করে দেওয়া, চুপসে দেওয়া—এটা ছিল সরকারের টার্গেট।
বাংলা ট্রিবিউন: বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এত আগুন জ্বালাও-পোড়াও করে একজন সুন্দরী মহিলাকে নিয়ে তিনি বিনোদন করতে গেলেন রিসোর্টে।’ এই যে বিষয়গুলো একেবারে সংসদ পর্যন্ত গেছে, এখন আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মামুনুল হক: পুরো বিষয়টাই ছিল পরিকল্পিত। এই পরিকল্পনার মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন পতিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তার স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী এই নাটকটি প্রযোজনার ভূমিকায় ছিল ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন কর্মকর্তারা। ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষভাবে নারায়ণগঞ্জে উপস্থিত থেকে এ ঘটনাটা পরিচালনা করেছে। তারা আগে থেকেই আমাকে ট্র্যাক (অনুসরণ) করছিল। আমি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যে তাদের সাজানো লোকজনসহ আমার ওপর হামলা এবং পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করে। এই পুরো ঘটনাটিই ডিজিএফআই তত্ত্বাবধায়ন করে।
বাংলা ট্রিবিউন: এখন কি আপনি ব্যবস্থা নেবেন এই বিষয়গুলো নিয়ে? জুনায়েদ বাবুনগরী এবং নূর হোসাইন কাসেমীর মৃত্যু নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেবেন?
মামুনুল হক: এটা রাষ্ট্রীয় আয়োজনের বিষয়, ইতোমধ্যে এই বিষয়টা নিয়ে আমি দাবি তুলেছি। আমি মনে করি, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল বিষয়। আমরা আঙুল তুলছি তৎকালীন সময়কার রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের দিকে। আমি মনে করি, এরকম অনেক কেলেঙ্কারির জন্য, যেমন ‘আয়নাঘর কেলেঙ্কারি’তে থাকা সাবেক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করবো আমাদের সঙ্গে যেসব ঘটনা ঘটেছে সেসব ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের বিষয়ে এসব এজেন্সি ব্যবস্থা নেবে।
বাংলা ট্রিবিউন: এ বিষয়ে আপনি উদ্যোগ নেবেন কিনা?
মামুনুল হক: আমাদের উদ্যোগের জায়গাটাও খুব ছোট। আমি ইতোমধ্যে আমার আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। যদিও সেই সময়ই আমি সোনারগাঁ থানায় আমার প্রতিনিধির মাধ্যমে একটি জিডি করেছিলাম। আমার ওপর হামলা হয়েছে, কারা হামলা করেছে তাদের নামসহ। আমরা চেষ্টা করবো, সেই জিডির ভিত্তিতে আবারও নতুন করে মামলা দায়ের করার। সেই প্রক্রিয়াগুলোও আমাদের বিবেচনায় আছে এবং আইনগত দিকগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি।
তারা মনে করেছিল— আমাদের গ্রেফতার করতে গেলে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভেতর থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হতে পারে। তাই সেদিনের নাটক সাজানো হয়। আমাদের চরিত্র হননের মাধ্যমে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিল তারা। অপরদিকে তখন লকডাউন চলছিল। অনেকের ভাষ্যমতে, হেফাজত ডাউনের মধ্য দিয়ে মানুষের মুভমেন্টকে সীমিত করে দিয়ে আমাদের ব্যাপকভাবে অ্যারেস্ট করার একটা উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করলো। এ বিষয়গুলো সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নিজেই তত্ত্বাবধান করলেন। তিনি আমার বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে যে কথাগুলো বললেন তার প্রত্যেকটা কথাই মিথ্যা।
বাংলা ট্রিবিউন: এক্ষেত্রে আপনি আপনার অনুসারীদের উদ্দেশে ব্যক্তিগত ইস্যুতে বা আপনার পরিবার নিয়ে যদি বিষয়টা একটু স্পষ্ট করেন?
মামুনুল হক: আসলে এই বিষয়গুলো খুবই স্পর্শকাতর, ব্যক্তিগত ইস্যু। এগুলো নিয়ে খুব একটা কথা বলতে চাই না। কিন্তু, একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে রাষ্ট্রের এত গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্বে থেকে, আমরা তো খুবই সাধারণ একজন নাগরিক, রাজনৈতিকভাবে উনার প্রতিপক্ষও না, সমপর্যায়ের বা সমমর্যাদারও কেউ না। একটা খুব সাধারণ জায়গা থেকে ধর্মীয় নেতৃত্বের জায়গায় কাজ করি, আমাদের সংগঠনও এত বড় না। কিন্তু এত বড় একজন ব্যক্তি সংসদের মতো জায়গায় দাঁড়িয়ে আমার মতো ব্যক্তিকে নিয়ে আক্রমণাত্মক কথা বলবেন—এতে আসলে তার রুচিবোধ নিয়েই প্রশ্ন জাগে।
বাংলা ট্রিবিউন: স্ত্রীকে নিয়ে এখন আপনি কেমন আছেন?
মামুনুল হক: এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের মধ্যে সমস্যার কিছুই নেই।
বাংলা ট্রিবিউন: ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আক্রমণ হয়। ওই আক্রমণের পর থেকে সেখানে নিহতদের সংখ্যা নিয়ে নানা তথ্য সামনে এসেছে। অধিকার থেকে সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট ৫ ও ৬ মে ৬১ জন নিহতের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। ৫ মে’র ওই ঘটনায় আহত বা নিহতের ঘটনা নিয়ে হেফাজত ইসলামের আসলে কোনও উদ্যোগ নেই কেন?
মামুনুল হক: ৫ মে’র ঘটনা আরেক নির্মম ইতিহাস। ওইদিন যারা ক্ষতিগ্রস্ত বা শহীদ হয়েছেন প্রতিটা পরিবারই ধর্মীয় পরিবার বা ব্যক্তিগুলো অধিকাংশই হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা-মসজিদ, ধর্মীয় পরিবারের সন্তান ছিল তারা। যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যদের থানায় ধরে নিয়ে মামলা করতে বলা হয়েছে এবং সে মামলার এজাহারে আসামি করা হয়েছে হেফাজতের নেতাদের। কিন্তু হেফাজতের নেতাদের নামে শহীদ পরিবারের সদস্যরা মামলা করতে না চাওয়ায় তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে এবং তাদের মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ফেরারি জীবনযাপন করতে হয়েছে। একদিকে তারা স্বজন হারানো, অন্যদিকে স্বজনের দাফন-কাফন পর্যন্ত ঠিকভাবে করতে পারেনি—তাদের মিথ্যা মামলা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। এ কারণে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের ঠিকানায় গিয়ে তাদের পরিবারের কোনও লোকজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
বাংলা ট্রিবিউন: হেফাজত কি আসলে এ বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেবে?
মামুনুল হক: ২০১৩ সালেই হেফাজতের সামর্থ্যের আলোকে নিহতদের তালিকা করা হয়েছে। তবে, তালিকায় কিছু সন্দেহজনক বিষয় দেখা গেছে। যেমন, নিহত অনেকের অফিসিয়াল পরিচয় মেলেনি, তাদের পরিবারের অন্য পরিচয় উদ্ঘাটন করা যায়নি, পরিবারের লোকজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেননা হেফাজতের দায়িত্বশীলরাও তখন ফেরারি, যারা নিহত তাদের পরিবারও ফেরারি—এভাবে তাদের উদ্ধার করে আনাটা সম্ভব হয়নি এবং অনেক লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এ ধরনের যাবতীয় বিষয়ের কারণে একটা স্থির সংখ্যা নির্ণয় করাটা একটু কঠিন। তবে হেফাজতের কাছে যে তালিকা রয়েছে সেটায় নিহতের সংখ্যা ৭০-এর ওপরে। আরেকটা তালিকায় নামের কিছু গরমিলের কারণে ৮১ জনের নাম রয়েছে।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনারা কি তালিকা প্রকাশ করবেন?
মামুনুল হক: হেফাজতের একটা সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাচাই-বাছাই করে শহীদদের তালিকা করার জন্য। একটা ফাইনাল তালিকা প্রণয়ন করে সেটা জাতির উদ্দেশে তুলে ধরবো আমরা।
বাংলা ট্রিবিউন: তার মানে আমরা বলতে পারি একটা ফাইনাল তালিকা আসবে হেফাজতের পক্ষ থেকে?
মামুনুল হক: ফাইনাল তালিকা হেফাজতের পক্ষ থেকে আসবে ইনশাআল্লাহ।
বাংলা ট্রিবিউন: এই ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে আপনারা কোনও উদ্যোগ নেবেন বিচারের জন্য?
মামুনুল হক: আমরা চেয়েছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যেটি রয়েছে সেখানে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিষয় নিয়ে যাতে একটা মামলা পরিচালিত হয়। সেই মামলার কাগজপত্র তৈরি করাটাও একটা জটিল প্রক্রিয়া। যেহেতু অনেক আগের ঘটনা তাই সেই ঘটনার সাক্ষী-প্রমাণসহ একটা ফাইল তৈরি করাটা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। হেফাজতের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এটার একটা দাবি তোলা হয়েছে। যেন অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে সরকারিভাবেই এটার ব্যবস্থা অর্থাৎ মামলাটা যেন সরকারি ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে করা হয়। আমরা ইতোমধ্যে আশ্বাস পেয়েছি। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন নিয়োগ হয়েছে। সেখান থেকে এ বিষয়ের একটা উদ্যোগ চলছে। সেই সঙ্গে হেফাজতের পক্ষ থেকে ৫ আগস্টের পর পর আমরা একটা ঘোষণা দিয়েছিলাম যেন নিহতদের আপনজন ব্যক্তিগত উদ্যোগে মামলা করেন। সেই মামলার ক্ষেত্রে হেফাজত ইসলাম তাদের যাবতীয় সহযোগিতা দেবে। আইনি সহযোগিতা, মামলার এজাহার তৈরি করাসহ আইনজীবী পাওয়ার ক্ষেত্রেও। আমরা আহ্বান জানাবো যেন নিহতের পরিবারসহ সবার উদ্যোগেই মামলা করেন।
বাংলা ট্রিবিউন: এবার আমরা একটু ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে ফিরে আসি। যখন শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করলো, হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে গেলেন, সেই সময় আপনি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, অধ্যাপক আসিফ নজরুল সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
মামুনুল হক: ঠিক ৫ আগস্ট যখন আমি জোহরের নামাজে দাঁড়াবো তখন একটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে আমার কাছে কল এলো। তাদের পক্ষ থেকে আমাকে জানালো, ‘আপনাকে হয়তো আমন্ত্রণ জানানো হবে, আপনি একটু তৈরি থাকবেন।’ এরপর সেনাপ্রধানের বক্তব্যের একটা শিডিউল করা হলো। তখন আমাকে মুভ করার কথা জানানো হলো। স্বাভাবিকভাবে মুভ করার মতো কোনও ব্যবস্থা ছিল না তখন। ওনারা বললেন, তারা এই মুহূর্তে কোনও গাড়ি পাঠাতে পারবেন না। আমার ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েই রওনা দিতে হবে এবং পথে যদি আমি কোনও সমস্যায় পড়ি সে ক্ষেত্রে সেনাসদর থেকে যোগাযোগ করা হবে।
যেহেতু সেনাবাহিনী সেই সময় মাঠে ছিল, সেভাবেই আমি আমার গাড়ি নিয়ে রওনা করলাম। রাস্তায় ব্যারিকেড থাকলেও সব জায়গায় আর্মিরা আমাদের সহযোগিতা করেছিল। বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে আমরা শেষ পর্যন্ত সেনাসদরে গিয়ে পৌঁছাতে সক্ষম হই। আমি যতক্ষণে পৌঁছাই ততক্ষণে অনেক রাজনৈতিক দলের নেতারা সেখানে উপস্থিত হয়ে গিয়েছেন। আমার পরেও কেউ কেউ সেখানে উপস্থিত হন। তারপর সেখানে আলোচনা হলো। প্রথমে সেনাপ্রধান অনেকটা প্রস্তাব আকারেই পরিস্থিতির বিশ্লেষণ উপস্থাপন করলেন যে ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন, আমি সেই ঘোষণা দেবো এবং এরপরে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে’। ততক্ষণে মিডিয়ায় চলে এসেছে যে সরকারপ্রধান অথবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তখন এই কথাটা সেখানে উপস্থাপন করা হলো তবে সেনাপ্রধান সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করলেন না। এর মধ্যে সবকিছু সেটেল হওয়ার পর সেনাপ্রধান জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়ে ফেললেন।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনাদের সঙ্গে কী আলাপ হলো সেনাপ্রধানের?
মামুনুল হক: আমাদের সঙ্গে এইটুকু আলোচনা হলো যে, ‘আপনারা এই পরিস্থিতিতে দেশকে শান্ত রাখার জন্য সহযোগিতা করবেন’। আমাদের কাছে সেনাপ্রধানের মূল চাওয়াটা ছিল, আমরা সকলে মিলে এই অরাজক পরিস্থিতি থেকে দেশের মানুষকে শান্ত হতে বলি। এটাই ছিল আমাদের কাছ থেকে উনার মূল চাওয়া। সেনাপ্রধানের প্রচারিত বক্তব্যের মধ্যেই তখন এলো এবং তিনি নিজেই আমাদেরকে প্রস্তাব করলেন যে আমরা এখান থেকে যেন বঙ্গভবনে যাই। প্রথমে আমরা বলেছিলাম, বঙ্গভবনে যাওয়া তো আমাদের কাজ না। সেনাপ্রধান নিজে যাবেন বঙ্গভবনে এবং প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টা সমাধান করবেন। পরবর্তীতে আমাদের মধ্যে আলোচনা হলো যে সেনাপ্রধান আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইছেন এবং এই মুহূর্তে তাকে আমাদের সহযোগিতা করা দরকার। তখন আমরা একসঙ্গে গাড়ি বহর নিয়ে সেনানিবাস থেকে বঙ্গভবনে যাই।
বাংলা ট্রিবিউন: আমরা ভিডিওতে দেখেছি জাহাঙ্গীর গেটের সামনে এসে আপনারা সবাইকে শান্ত করছিলেন।
মামুনুল হক: যখন আমরা রওনা হলাম ততক্ষণে তো জনতা রাস্তায় নেমে পড়েছে। জনতার যে ভিড় বা যে উচ্ছ্বাস— তা অতিক্রম করে যাওয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। সবাই আমাদের দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছে এবং ধীরে ধীরে আমাদের যাওয়ার পথ করে দিয়েছে। সেনাপ্রধানসহ সেনাসদস্যরা আমাদের কাছ থেকে এই বিষয়টা প্রত্যাশা করছিলেন আমরা যেন মানুষকে শান্ত করি এবং আশ্বস্ত করি দেশে যেন আর কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হয়। সেনাপ্রধানের এই প্রত্যাশায় আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা যেন এখন দায়িত্ব। দেশকে রক্ষা করা এবং দেশের আর কোনও ক্ষয়ক্ষতি যেন না হয় এই দায়িত্ববোধ থেকেই সেনাপ্রধানসহ আমরা তখন বঙ্গভবনে গেলাম।
বাংলা ট্রিবিউন: বঙ্গভবনে কী হলো?
মামুনুল হক: বঙ্গভবনেও এই কথা হলো— দ্রুত আমরা রাজনৈতিক নেতারা যেন মানুষের সামনে, মিডিয়াতে আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করি। সবাইকে যেন শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। আমরা যারা আছি এই পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধানসহ রাষ্ট্রপতিকে আমরা সহযোগিতা করছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হচ্ছে। সে সময় জরুরি কিছু ইস্যু ছিল, যেমন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ মানুষ যাতে আশ্বস্ত হয় সে সকল বিষয় যেন আমাদের মুখ থেকে আসে। এটা তারা আমাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করছিলেন। সেজন্য আমরা মিটিংটা দ্রুত সংক্ষিপ্ত করে মিডিয়াতে বক্তব্য দিলাম।
বাংলা ট্রিবিউন: যে সময়টাতে আপনারা বঙ্গভবন থেকে মিটিং করে বের হয়ে এলেন, তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কারা আসবেন, কে দায়িত্ব পাবেন— এ ব্যাপারে কি কোনও আলোচনা হয়েছিল?
মামুনুল হক: না, এমন কোনও আলোচনা হয়নি। সেখানে এতটুকু কথা হয়েছিল যে খুব শিগগিরই রাষ্ট্রপতি একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করবেন। তবে, আমরা তখন এতটুকু বলেছিলাম, অন্তর্বর্তীকালীন যে সরকার গঠন হবে সেখানে যেন সকলের অংশগ্রহণ হয়। সকলে যেন এই সরকারকে স্বাগত জানাতে পারে, সে ধরনের একটা পরিবেশ যেন হয়। ইতোপূর্বে আমরা কোনও সরকারে আলেম সমাজের পক্ষ থেকে ইসলামি জনতার কোনও প্রতিনিধি দেখতে পাইনি। এবারই আমি প্রথম খুবই বোল্ডলি বলেছিলাম যে আমাদের যেন প্রতিনিধি সেখানে থাকে। তাহলে আমাদের কথা জনগণ ভালোভাবে নেবে, শুনবে।
Jamia Rohimia Arabia Madrasah
Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Jamia Rohimia Arabia Madrasah, College & University, Dhaka, Jatrabari.
Operating as usual
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
শিক্ষা কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক সংস্কার ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান এবং সুনির্দিষ্ট দাবি উপস্থাপন করতে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে করে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’। বুধবার বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘আকরাম খাঁ’ হলে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট লেখক ও এক্টিভিস্ট মাওলানা সাইমুম সাদির সঞ্চালনায় লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন বিশিষ্ট আলেম ও তাকওয়া মসজিদের খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার কালিকুলাম এবং পাঠ্যপুস্তককে ক্রমান্বয়ে ইসলামবিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক রূপদান করেন। এনজিও এবং বহিঃশক্তির প্রেসক্রিপশনে তৈরি এই কারিকুলাম ছিল দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি বিরোধী। ‘অখণ্ড ভারতের’ মতো চরম সাম্প্রদায়িক বয়ানে লেখা হয়েছিল ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক। ফলে, ;বাংলার স্বর্ণযুগ’ হিসেবে খ্যাত ‘সুলতানী আমল’ ছিল চরমভাবে উপেক্ষিত। ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ এবং ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ বইতে ছিল , যৌনবিকৃতি, অবাধ মেলামেশা-সহ পশ্চিমা সংস্কৃতির ভয়াল অনুপ্রবেশ। যার ফলে অভিভাকদের চরম শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়ায় আওয়ামী যুগের বিতর্কিত শিক্ষাব্যবস্থা।
শহীদের রক্তে পাওয়া গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গণমানুষের মূল্যবোধের প্রতিফলন থাকবে, সেটাই ছিল কাঙ্ক্ষিত। কিন্তু চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষী মহল ও সমকামিতার প্রকাশ্য সমর্থকদের নিয়ে গঠিত সমন্বয়-কমিটি ইসলামপন্থী জনতাকে চরম হতাশ করে৷
এই কমিটিতে ইসলামপন্থী জনতার কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না, অথচ এই বিপ্লবে ইসলামপন্থীরা সরাসরি অংশ নিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। আরও বিস্ময়কর দিক হলো, ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট রেজিম জঘন্য এলজি মতবাদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছিল। আর এই সাবজেক্ট সংশোধনের দায়িত্ব দেওয়া হয় ড. সামিনা লুৎফার মতো চিহ্নিত এলজি এবং so মাকা মিতার সমর্থকদের। অপরদিকে ইসলাম শিক্ষা বইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্বঘোষিত হাদিস অস্বীকারকারী ও চরম বিতর্কিত ব্যক্তি আবু সাইদ খানকে৷ এ বিষয়গুলো জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ও দুঃখের সঞ্চার করে।
সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করে, বিগত রেজিমের সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ছিল ইসলাম বিদ্বেষীরা। গণ মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন সরকারকে বিপাকে ফেলতে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে তারা পরিকল্পিতভাবেই এসব করছে।
এছাড়া, বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান কতৃক ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ‘স্বার্থান্বেষী মৌলবাদী মহল’ আখ্যা দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। তার এই বক্তব্যকে ‘ফ্যাসিবাদি’ এবং ‘ইসলামবিদ্বেষ-প্রসূত’ আচরণ বলে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে সরকারের কাছে তারা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দফাগুলো হলো :
১। পাঠ্যপুস্তক চূড়ান্ত এবং ছাপানোর আগে তা অবশ্যই একদল মার্জিত ও অবিতর্কিত শিক্ষাবিদের দ্বারা পর্যালোচনা করাতে হবে। যারা ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবেদনশীল বিষয়গুলো চিহ্নিত করবেন এবং সংশোধন করবেন। প্রয়োজন হলে স্কলারদের সাথে পরামর্শ করে বাদ দেবেন। এই টীমে অবশ্যই যোগ্য আলিমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
২। পাঠ্যপুস্তকে এমন কোনো ভিনদেশী মতাদর্শ প্রচার করা যাবে না, যা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সাংস্কৃতি এবং ঈমানী মূল্যবোধকে আঘাত করে। বিশেষ করে এলজি আইডিওলজি-সহ ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো কনটেন্ট এই মুসলিম অধ্যুষিত দেশের বইতে থাকা যাবে না।
৩। পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘অখণ্ড ভারতের’ মতো চরম সাম্প্রদায়িক বয়ান বাদ দিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে আনতে হবে। ইতিহাস পাঠে অবশ্যই বাংলার সোনালী যুগ অর্থাৎ সুলতানী আমলের নিরপেক্ষ ইতিহাস ও অবদানের কথা নিশ্চিত করতে হবে, যা পূর্বেকার স্বার্থান্বেষী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিয়েছিল।
৪। কিসের ভিত্তিতে এই সমন্বয় কমিটি এবং সংশোধন ও পরিমার্জন টিম গঠিত হলো ও সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হলো, এবং কেন সেখানে যোগ্য শিক্ষাবিদ ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ নেই, সেটা জাতির কাছে স্পষ্ট করতে হবে।
৫। গণমানুষের চাহিদাকে আমলে নিয়ে আগামী বছরের জন্য নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতিফলন থাকবে।
‘সচেতন নাগরিক সমাজ’ একই সাথে আরও আরেকটি বিষয় যুক্ত করে। তারা বলেন, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের বক্তব্যের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্যকে জনপরিসরে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা এবং ইসলামবিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গণ্য করা হবে।
এরপর প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রফেসর ড. মুখতার আহমেদ, শায়খ আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা রেজাউল করিম আবরার, শরীফ আবু হায়াত অপু এবং ডা. মেহেদি হাসান।
ফিলিস্তিনীদের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে দেওয়া মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বলিষ্ঠ বক্তব্যে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ধন্যবাদ তাকে।
Muhammad ৪৭:৩
ذٰلِكَ بِاَنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوا اتَّبَعُوا الْبَاطِلَ وَاَنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّبَعُوا الْحَقَّ مِنْ رَّبِّهِمْ ؕ كَذٰلِكَ يَضْرِبُ اللّٰهُ لِلنَّاسِ اَمْثَالَهُمْ
তা এজন্য যে, যারা কুফরী করে তারা বাতিলের অনুসরণ করে, আর যারা ঈমান আনে তারা তাদের রবের প্রেরিত হকের অনুসরণ করে। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্য তাদের দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন।
এটা এই জন্য যে, যারা অবিশ্বাস করেছে তারা মিথ্যার অনুসরণ করেছে এবং যারা বিশ্বাস করেছে তারা তাদের প্রতিপালক হতে (আগত) সত্যের অনুসরণ করেছে। এভাবে আল্লাহ মানুষের জন্য তাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
যাতে মানুষ কাফেরদের জন্য বরাদ্দ পরিণাম থেকে দূরে থাকে এবং সেই সরল ও সঠিক পথ অবলম্বন করে; যে পথে চলে ঈমানদারগণ চিরন্তন সফলতা ও সুখ-সমৃদ্ধি লাভে ধন্য হবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেন:যারা নিজেরাও আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং অন্যদেরকেও আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত করেছে, আল্লাহ তা'আলা তাদের আমল নষ্ট করে দিয়েছেন এবং তাদের পুণ্যকর্ম বৃথা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য জায়গায় বলেনঃ
وَ قَدِمْنَاۤ اِلٰى مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنٰهُ هَبَآءً مَّنْثُوْرًا
অর্থাৎ “আমি তাদের কৃতকর্মগুলো বিবেচনা করবো, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করবো।” (২৫:২৩)
মহান আল্লাহ বলেনঃ যারা ঈমান এনেছে আন্তরিকতার সাথে এবং দেহ দ্বারা শরীয়ত মুতাবেক আমল করেছে অর্থাৎ বাহির ও ভিতর উভয়কেই আল্লাহর দিকে ঝুঁকিয়ে দিয়েছে এবং আল্লাহর ঐ অহীকেও মেনে নিয়েছে যা কর্তমানে বিদ্যমান শেষ নবী (সঃ)-এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে। যা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তা'আলার নিকট হতেই আগত এবং যা নিঃসন্দেহে সত্য। আল্লাহ তাআলা তাদের মন্দ কর্মগুলো ক্ষমা করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করবেন। এর দ্বারা জানা যাচ্ছে যে, নবী (সঃ)-এর নবী হওয়ার পর তার উপর এবং কুরআন কারীমের উপরও ঈমান আনা অবশ্য কর্তব্য।
হাদীসে এসেছে যে, যে হাঁচি দাতার (يَرْحَمُكَ اللهُ বলে) জবাব দেয়া হয়েছে। সে যেন জবাবদাতার জন্যে বলেঃ يَهْدِيْكُمُ اللهُ وَيَصْلِحُ بَالَكُمْ অর্থাৎ “আল্লাহ তোমাদেরকে হিদায়াত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থা ভাল করুন!” এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ কাফিরদের আমল নষ্ট করে দেয়া এবং মুমিনদের মন্দ কর্মগুলো ক্ষমা করা ও তাদের অবস্থা ভাল করার কারণ এই যে, যারা কুফরী করে তারা তো সত্যকে ছেড়ে মিথ্যার অনুসরণ করে, পক্ষান্তরে যারা ঈমান আনে তারা তাদের প্রতিপালক প্রেরিত সত্যের অনুসরণ করে। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্যে তাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন অর্থাৎ তিনি তাদের পরিণাম বর্ণনা করেন। মহান আল্লাহই এসব ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল জানেন।
মুহাম্মাদ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাম। কুরআনে একটি মাত্র সূরা যা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে। সূরার দ্বিতীয় আয়াতে উল্লেখিত মুহাম্মাদ নাম থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এ সূরাকে সূরা কিতাল ও ‘সূরা আল-লাজিনা কাফারু’ নামেও নামকরণ করা হয়েছে।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : এ সূরাটি মদীনায় অবতীর্ণ, তবে একটি আয়াত ছাড়া; এটি অবতীর্ণ হয় বিদায় হাজ্জ শেষে ফিরে আসার পথে, তখন তিনি মক্কার দিকে বারবার তাকাচ্ছিলেন আর কাঁদছিলেন। আয়াতটি হল :
(وَكَأَيِّنْ مِنْ قَرْيَةٍ هِيَ أَشَدُّ قُوَّةً مِنْ قَرْيَتِكَ)
ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাগরিবের সালাতে এ সূরা পড়তেন। (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, ২/১১৮, সহীহ)।
সূরার শুরুতে কাফির ও মু’মিনদের পরিণতি বর্ণনা করে যুদ্ধের ময়দানে কাফিরদেরকে করায়ত্ত করতে পারলে কী করতে হবে তা বলা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলাকে সাহায্য করলে তবেই আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে সাহায্য করবেন, জান্নাতের উপমা এবং আমলের পূর্বে জ্ঞানার্জন করার নির্দেশ, কোন কাজের ব্যাপারে দৃঢ়মনস্ত হলে কী করণীয়, যারা কুরআন নিয়ে গবেষণা করে না তাদের তিরস্কার, যারা আল্লাহ তা‘আলা ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের অবস্থা এবং সবশেষে দুনিয়ার উপমা ও মানুষ আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য না করলে যে তিনি অন্য জাতি নিয়ে আসবেন যারা তাঁর আনুগত্য করবে ইত্যাদি বিষয় এ সূরাটিতে আলোচিত হয়েছে।
যারা কাফির তাদের সকল আমলের প্রতিদান আল্লাহ তা‘আলা বাতিল করে দিয়েছেন। দুনিয়াতে তারা যত সৎ আমল করেছে যেমন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায়, দরিদ্রদেরকে খাদ্য দান ও প্রতিবেশীকে সহযোগিতা করা ইত্যাদি কিয়ামাতের দিন তাদের কোন উপকারে আসবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(وَقَدِمْنَآ إِلٰي مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنٰهُ هَبَا۬ءً مَّنْثُوْرًا)
“আমি তাদের কৃতকর্মের দিকে অগ্রসর হব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।” (সূরা ফুরকান ২৫ : ২৩)
অর্থাৎ কুফরী অবস্থায় দুনিয়াতে যে সকল সৎ আমল করেছে তার সওয়াব বাতিল করে দেয়া হবে। কেউ কেউ এখানে কাফির দ্বারা কুরাইশদের বুঝিয়েছেন। আবার কেউ আহলে কিতাবদের বুঝিয়েছেন। তবে আয়াতটি ব্যাপক, সকল কাফিরদের জন্যই প্রযোজ্য। কারণ আমল কবূলের পূর্বশর্ত হল স্বচ্ছ ঈমান ও আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য করা। এসব কাফিররা ঈমান আনেনি এবং তাদের সৎ আমলগুলো দুনিয়ার স্বার্থে করে থাকে, আল্লাহ তা‘আলাকে পাওয়ার জন্য নয় এবং আরো কারণ হল তারা বাতিলের অনুসরণ করে, আর যে বাতিলের অনুসরণ করে তার আমলগুলোও বাতিল।
পক্ষান্তরে যারা মু’মিন তাদের অপরাধসমূহ মোচন করে দিয়ে তাদের অবস্থাকে ভাল করে দিবেন। কারণ তারা সত্যের অনুরসণ করে, যারা সত্যের অনুরসণ করে তাদের আমলগুলোও সত্য। মু’মিনরা প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আগত সত্যের অনুসারণ করে বিধায় তিনি তাদের অপরাধ মোচন করে অবস্থা ভাল করে দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
(أَمْ حَسِبَ الَّذِيْنَ اجْتَرَحُوا السَّيِّاٰتِ أَنْ نَّجْعَلَهُمْ كَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لا سَوَا۬ءً مَّحْيَاهُمْ وَمَمَاتُهُمْ ط سَا۬ءَ مَا يَحْكُمُوْنَ)
“যারা খারাপ কাজ করে তারা কি মনে করে যে, আমি জীবন ও মৃত্যুর দিক দিয়ে তাদেরকে সেসব ব্যক্তিদের সমান গণ্য করব যারা ঈমান আনে ও সৎআমল করে? তাদের সিদ্ধান্ত কতই না মন্দ”। (সূরা জাসিয়াহ ৪৫ : ২১)
(وَاٰمَنُوْا بِمَا نُزِّلَ عَلٰي مُحَمَّدٍ)
‘এবং ঈমান এনেছে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে মুহাম্মাদের প্রতি’ ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন : এখানে একটি ব্যাপক বিষয়ের পর বিশেষ বিষয়কে উল্লেখ করা হয়েছে যাকে
عطف خاص علي العام
বলা হয়। যদিও অত্র আয়াতের প্রথমে ঈমান ও সৎ আমলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাতে রাসূলের প্রতি ঈমান আনা শামিল করে তথাপি এখানে বিষেশভাবে উল্লেখ করার কারণ হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগমনের পর তাঁর প্রতি ঈমান আনা ছাড়া ঈমান শুদ্ধ হবে না।
(وَأَصْلَحَ بَالَهُمْ)
‘এবং তাদের অবস্থা ভালো করে দিয়েছেন’ অর্থাৎ মু’মিনদের দীন, দুনিয়া, অন্তর, আমল ও প্রতিদান বৃদ্ধি ও সংশোধন করে ভাল করে দেবেন এবং তাদের সকল অবস্থার উন্নতি সাধন করে দেবেন। কারণ তারা তাদের রবের পক্ষ থেকে আগত সত্যের অনুসরণ করে।
সুতরাং যারা বিশ্বাস করে ঈমান আনার পর অপরাধমূলক কাজ করলে ঈমানের কোন ক্ষতি হবে না যেমন কাফির অবস্থায় ভাল কাজ করলে কোন উপকারে আসবে না তাদের এ বিশ্বাস ভ্রান্ত। বরং ঈমান না আনার কারণে কাফিরদের ভাল আমল গ্রহণযোগ্য হবে না, আর মু’মিনরা ঈমান আনার পর অপরাধমূলক কাজ করলে গুনাহগার হবে। সে গুনাহ ছোটও হতে পারে আবার বড়ও হতে পারে, তবে ছোট গুনাহ ভাল আমলের কারণে ক্ষমা হয়ে যায়, আর বড় গুনাহর জন্য তাওবা করতে হয়। তাওবা না করে মারা গেলে তা আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছাধীন থাকবে, আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দেবেন, অথবা তার অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে জান্নাত দেবেন। ==
কিছু লোক ঘর পোড়ার মধ্যে আলু পোড়া খাইতে আসছে। এদেরকে আর যাই বলা যায় মানুষ বলা যায় না।
এই সংকটের সুযোগ নিয়ে সরকারকে চেপে ধরে যারা দাবি আদায়ের জন্য আজকে রাস্তায় ত্রাণের গাড়ি আটকে আন্দোলন করছেন, তাঁরা জাতির শত্রু।
ফেনীর মত কুমিল্লার #নাঙ্গলকোটের অবস্থাও ভয়াবহ।
একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ার কারনে তেমন একটা মিডিয়ার নজরেও আসছে না।
ফেনীর কাছাকাছি হওয়াতে নাঙ্গলকোট বন্যা পরিস্থিতি একেবারে ভয়াবহ।
ফেনীতে যাওয়ার পথে পারলে নাঙ্গলকোটবাসীকে একটু সাহায্য করুন।
এলাকার সেচ্ছাসেবীরা সাধ্যের বাহিরে কিছুই করতে পারছে না।
প্লিজ কেউ নাঙ্গলকোট সাহায্যে এগিয়ে আসুন,চিলপাড়া ,সাতবাড়িয়া,আদ্রা, জোড্ডা পূ্র্ব, জোড্ডা পশ্চিম সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পানির নীচে তলিয়ে আছে।
এই মূহুর্তে এইসব অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমান বিশুদ্ধ পানি ও শুকনা খাবারের প্রয়োজন।
সাথে চৌদ্দগ্রামের অবস্থাও করুন,সেনা,নৌ কোন বাহিনি এই অঞ্চলে তেমন একটা সাহায্য করছে না।
এই মূহুর্তে সেচ্ছাসেবী ছাড়া এই সকল অঞ্চলে সাহায্য করার কেউ নেই।
ওলামা বাজার থেকে আরাফাত ভাই এর পোষ্টঃ
সোনাগাজীর নাম কোথাও নেই!😭
উদ্ধারকর্মী ত্রাণকর্মী তারা সবাই ফুলগাজী পরশুরাম নোয়াখালী ফেনীর দিকে
লালপুল থেকে সোনাগাজী পর্যন্ত কি যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাতের মধ্যে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা
, কিন্তু সোনাগাজী নিয়ে কোনো নিউজ নাই আল্লাহ রক্ষা করো😭
আমাদের সোনাগাজীতে নৌকা লাগবে,ইস্পিড বোট লাগবে, শুকনা খাবার লাগবে
ফেনীতে যারা আছেন কিছু টিমকে শুকনো খাবার,ইস্পিড বোট নিয়ে সোনাগাজীর দিকে পাঠান। 🙏
আমরা ওলামা বাজার হাজী সেকান্তর মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে
অনেক মানুষ না খেয়ে আছে 🥹💔🤲
ম্যাক্সিমাম হলুদ মিডিয়া আজকে বন্যার পরিস্থিতি তুলে ধরার বিপরীতে বন্যা কোন কারণে হইল এটা তুলে ধরার জন্য ব্যস্ত রয়েছে।
কোন রাজনৈতিক দলের বাঁড়া ভাত খাওয়ার অধিকার নাই। ভাত রান্না করে তারপর খাইতে হয়। একটু ধৈর্য ধারণ করেন।
বর্তমানে ফেনীর আপডেট -
একদিক দিয়ে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার... পানি কমতেছে...
কিন্তু ঐদিকের পানির স্রোতের কারণে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশের এলাকা গুলো ডুবে গিয়েছে।
জয়লস্ককর, সিলোনিয়া দাগনভুঞা ডুবে গিয়েছে।
আর ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ি চলতে পারছে না
ফেনী লেমুয়া ব্রিজ ভেঙে গিয়েছে এবং রাস্তার উপর দিয়ে খুব পারির স্রোত যাচ্ছে ।
তবে খুব দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে সব সেলেব্রিটি ভাইয়েরা শহর থেকে ভিডিও করে আপডেট দিয়ে চলে যাচ্ছে।
এবং যে পরিমাণে মানুষ ঢাকা থেকে স্পিড বোট ও নৌকা নিয়ে আসছে কাজ করার জন্য তারাও কাজ করতে পারছে না, শহর থেকে ঘুরাঘুরি করে চলে যাচ্ছে।
আল্লাহ তায়া’লা আমাদের সবাই কে হেফাজত করুক।
(রাত ১:৪১ মিনিট)
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Location
Category
Telephone
Website
Address
Jatrabari
1362
Jatrabari, 312
দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী। (it's an Arabic University)
Jatrabari, 1236
D.U.C is one of the oldest colleges in Bangladesh. It offers graduation course in majors and Higher Secondary School Certificate (HSC) under Dhaka Board. The college is affiliated with the National University.
Jatrabari
খাত্ত্বাত (সুন্দর হাতের লেখা এবং আর্ট পেইন্টিং ও ক্যালিগ্রাফি)
Mahmudul Haq Khan Plaza, Kadomtoli, Dhaka
Jatrabari, 1362
CCER Polytechnic Institute is technical vocational Education and Training Institute
Vangga Pass Kazla Demea Road 1236
Jatrabari
This is our official page for the students of DMRC....
453, Near Dania College
Jatrabari, 1236
UCC Dania Branch is a University Admission Information and Help Center and Educational Consultant fo
453, Near Dania College
Jatrabari, 1236
A dedicated platform for students aspiring to pass the Bangladesh Civil Service (BCS) examination.