Taal Chorcha - তাল চর্চা

Taal Chorcha - তাল চর্চা

Share

A School of Rhythm

Operating as usual

19/02/2024

beginner students of Taal Chorcha - তাল চর্চা

27/01/2024

তবলায় হস্ত সাধন 🥰🥰

13/01/2024

ঝাঁপতাল এর সম থেকে সম লয়কারী

16/12/2023

রুপক তাল এর দ্বিগুন, তিনগুন,চৌগুন লয়কারী।

04/11/2023

তালচর্চা পরিবারের ক্ষুদে শিক্ষার্থী 🥰🥰❤️❤️

27/10/2023

ক্লাস চলাকালীন Taal Chorcha - তাল চর্চা

21/10/2023

তালচর্চার পরিবারের পক্ষ থেকে সকলকে
শারদীয় দূর্গা পূজার শুভেচ্ছা 🙏🙏🙏🙏

14/10/2023

🙏🙏 সকলকে মহালয়ার শুভেচ্ছা এবং প্রণাম 🙏🙏

09/09/2023

তালচর্চার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন 🥰🥰

01/09/2023

Taal Chorcha - তাল চর্চা তালচর্চার শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন 🥰🥰

25/08/2023

Taal Chorcha - তাল চর্চা 🥰🥰

17/07/2023

Taal Chorcha - তাল চর্চা students class time.
beautiful teentaal bayan based kayda.

08/07/2023

💖💖ছোটদের হস্ত সাধন 💖💖

24/06/2023

CLASS TIME AT Taal Chorcha - তাল চর্চা

Photos from Taal Chorcha - তাল চর্চা's post 22/06/2023

আগামীকাল ২৩/০৬/২০২৩ শুক্রবার থিয়েটার ইনিস্টিউট চট্টগ্রাম এ আমরা আছি তবলার লহড়া নিয়ে সন্ধ্যা ৬ টায়। আপনাদের সবার উপস্থিতি কামনা করছি ❤️❤️❤️

Photos from Taal Chorcha - তাল চর্চা's post 23/05/2023

পণ্ডিত রাধাকান্ত নন্দী ছিলেন প্রখ্যাত বাঙালি সংগতিয়া তথা প্রবাদপ্রতিম তবলাবাদক। তবলা ছাড়াও পাখোয়াজ ও নানা যন্ত্র বাদনে সমান পারদর্শী ছিলেন তিনি।

#রাধাকান্ত_নন্দী

#জন্ম
২৩ মে ১৯২৮
বানারিপাড়া বরিশাল, বৃটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)

#মৃত্যু
৩০ নভেম্বর ১৯৮৪ (বয়স ৫৬)
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ

#পেশা
তবলা বাদক

#সন্তান
মানিক নন্দী

#পিতা_মাতা
রোহিনীকান্ত নন্দী (পিতা)

#সংক্ষিপ্ত জীবনী

রাধাকান্ত নন্দীর জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের বরিশালের বানারীপাড়ায়। পিতা রোহিনীকান্ত নন্দী ছিলেন তার সময়কার নামি তবলিয়া ও লয়দার শিল্পী। পিতামহ কালীচরণ ছিলেন কীর্তনীয়া। পিতামহের সাথে ছোটবেলায় গ্রাম পরিক্রমায় নগরকীর্তনে শ্রীখোল বাজাতেন। ছ-বছর বয়সে খোল বাজিয়ে পুরস্কার লাভ করেন। শ্রীখোল বাজাতে বাজাতে তার আগ্রহ আসে তবলায় এবং হাতেখড়ি পিতার কাছে। কলকাতায় এসে আনোখিলাল মিশ্র ও জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের কাছে তালিম নেন। তবলা, পাখোয়াজ সহ নানা যন্ত্র বাদনে পারদর্শী হয়ে ওঠেন।

সিনেমার গান, জলসার আসরে, রেকর্ডের গানে বহু বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গে সংগত করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। মান্না দে'র অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন তিনি। একবার মান্না দে বাংলা গানে অবদান সম্পর্কে বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন, বাংলা গানে দুজনের অবদান ভীষণ রকমের। পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাধাকান্ত নন্দী। পুলকবাবু তাকে দিয়েছেন নানা বিষয়, নানা বৃন্দ। মান্না দে তো সুরের ছন্দের জাদুকর। আর বলতেন - "রাধুবাবুর মতো ওই সুর, তাল বাঁধবে কে? ও হচ্ছে ন্যাচারাল জিনিয়াস।"

একক বাদনেও তার যথেষ্ট নৈপুণ্য ছিল। তবলা বাজাতে তার অনুভূতি ছিল -

" তবলা আমায় বাজায়/ তাই তো আমি বাজি/

তবলাকে মোর দুঃখ দিয়ে/ বাজাতে নয় রাজি।"

রাধাকান্তের গানের গলাও ভালো ছিল। অনামী শিল্পীদের সঙ্গে সঙ্গত করে তাদের উদ্বুদ্ধ করার বিশেষ ক্ষমতা ছিল তার।

১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে নভেম্বর রাধাকান্ত নন্দী ৫৬ বৎসর বয়সে কলকাতায় প্রয়াত হন।

05/05/2023

Class time

28/04/2023

তিনতালের একটি খুব সুন্দর কায়দা।🥰
তালচর্চার এই দুইজন ছাত্র আনন্দ চক্রবর্তী ও শ্রাবন চক্রবর্তী নিজেদের মতো করে বাজানোর চেষ্টা করেছে। আপনারা ওদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। 🥰🙏

08/04/2023

Teen taal two finger kayda
Played by Krishna Das
Composed by Sri Samir Acharjee
Trained by Pritom Acharjee

11/03/2023

Taal Chorcha - তাল চর্চা class time 🥰🥰🥰

03/02/2023
21/01/2023

#তালচর্চা_পরিবারের_ক্ষুদে_ছাত্রের_ক্লাস_চলাকালীন_
#পরিবেশনা।

25/12/2022

#তালচর্চায়_ভর্তি_চলছে
#আগ্রহী_সকল_শিক্ষার্থীরা_নিমোক্ত_নাম্বারে_যোগাযোগ_করুন।

19/11/2022

হস্ত সাধন প্রনালী প্রশিক্ষন
তালচর্চার কনিষ্ঠ ছাত্র পূর্ণ চক্রবর্তী।
প্রশিক্ষকঃ প্রীতম আচার্য্য।

29/08/2022

Kayda Lesson in Teen Taal for First Level Learners.

30/07/2022

Conga class in handsonic

16/07/2022

Handsonic Class by Pritom Acharjee
Also Rhythm Composed by Pritom Acharjee

Photos from Taal Chorcha - তাল চর্চা's post 21/06/2022

#বিশ্ব_সঙ্গীত_দিবস /

ফরাসী ভাষায় ফেট ডে লা মিউজিক-আর বাংলায় বিশ্ব সংগীত দিবস । ২১ জুন পালিত হয় বিশ্ব সংগীত দিবস ৷বহু বছর ধরেই এই দিনে ঐতিহ্যবাহী মিউজিক ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করছে ফ্রান্স। এভাবে, ১৯৮২ সালে এসে এ ফেস্টিভ্যাল 'ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে'-তে রূপ নেয়। 'গান হতে হবে মুক্ত; সংশয়হীন'- এই স্লোগানকে সামনে রেখেই বিশ্বের ১১০টি দেশ যোগ দেয় এই আন্দোলনে। ১৯ বছরের পথপরিক্রমায় আন্তর্জাতিক মাত্রা পায় এটি। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, স্থানীয়ভাবে অথবা ফরাসি দূতাবাসের সহায়তায় জুনের ২১ তারিখে পালন করা হয় 'ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে'।

#সংগীত_দিবস

#ধরন বিশ্ব সংগীত

#তারিখসমূহ ২১ জুন

#অবস্থান_(সমূহ) ফ্রান্স, আন্তর্জাতিক

#কার্যকাল ১৯৮১-বর্তমান

#প্রতিষ্ঠাতা জোয়েল কোহেন

#ইতিহাস

১৯৮২ সালে ফরাসি মন্ত্রী জ্যাক ল্যাং সর্বপ্রথম বিশ্ব সংগীত দিবস পালনের প্রস্তাব করেন। ১৯৮৫ সালের ২১ জুন প্রথম গোটা ইউরোপ এবং পরে সারা বিশ্ব এই সংগীত দিবস পালন করে। এরপর থেকে দিনটি বিশ্ব সংগীত দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর প্রথম থেকেই আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দিবসটি পালন করে আসছে।

16/06/2022

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (১৬ জুন ১৯২০ - ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯) একজন কিংবদন্তি বাঙালি কণ্ঠসংগীত শিল্পী, সংগীত পরিচালক এবং প্রযোজক ছিলেন। তিনি হিন্দি সংগীত জগতে হেমন্ত কুমার নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি বাংলা, হিন্দি এবং অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছেন। তিনি রবীন্দ্র সংগীতের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পী ছিলেন। তিনি শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য গায়ক বিভাগে দু-বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। এছাড়াও ফিল্মফেয়ার সহ অসংখ্য দেশি ও বিদেশি পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি উপমহাদেশের সবথেকে শ্রেষ্ঠ একজন শিল্পী ছিলেন, বিভিন্ন ঘরানার গানে তিনি শ্রেষ্ঠ ছিলেন। নানামুখী গানে আর কোন শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সমকক্ষ হতে পারেনি।হেমন্ত মুখোপাধ্যায় কে বলা হয় সংগীতের ঈশ্বর।

#প্রারম্ভিক_জীবন

শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্ম তার মাতামহের বাড়ি পবিত্র বারাণসী শহরে। তার মাতামহ ছিলেন একজন শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক। তার পৈতৃক নিবাস ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার জয়নগরে। তার পরিবার কলকাতা শহরে আসে বিশ শতকের প্রথমার্ধে‌। হেমন্ত সেখানে বড়ো হতে থকেন এবং প্রথমে নাসিরুদ্দিন স্কুল এবং পরবর্তীতে ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের, যিনি পরবর্তীকলে বাংলার স্বনামধন্য কবি হয়েছিলেন। ওই সময়কালে বিশিষ্ট লেখক সন্তোষকুমার ঘোষ মহাশয়ের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। ওই সময়ে হেমন্ত ছোটো গল্প লিখতেন, সন্তোষ কুমার কবিতা লিখতেন এবং সুভাষ মুখোপাধ্যায় গান গাইতেন।

ইন্টারমিডিয়েট পাস করে হেমন্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যান। কিন্তু তিনি সংগীতের জন্য আপন শিক্ষা ত্যাগ করেন।তার সাহিত্যিক হওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিছুদিন তিনি দেশ পত্রিকার জন্যে লেখেন। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি সম্পূর্ণভাবে সংগীত জগতে প্রবেশ করেন।

#প্রারম্ভিক_সংগীত_কর্মজীবন

১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে হেমন্ত তার বন্ধু সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের প্রভাবে আকাশবাণীতে তার গান রেকর্ডিং করেন। গানের প্রথম লাইন ছিল 'আমার গানেতে এলে নবরূপী চিরন্তনী'। হেমন্ত তার প্রারম্ভিক সংগীত কর্মজীবনে পরামর্শদাতা হিসেবে পেয়েছিলেন বাংলা সংগীতজ্ঞ শৈলেশ দত্তগুপ্তকে। প্রথম জীবনে হেমন্ত বাংলার প্রখ্যাত গায়ক পঙ্কজ মল্লিককে অনুসরণ করতেন। এজন্যে তার ডাকনাম ছিল 'ছোটো পঙ্কজ'। ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে এক দূরদর্শন সাক্ষাৎকারে হেমন্ত উল্লেখ করেছিলেন যে, তিনি উস্তাদ ফৈয়াজ খানের শিষ্য ফণীভূষণ ব্যানার্জির কাছে ধ্রুপদী সংগীতেরও তালিম নিয়েছিলেন, কিন্তু উস্তাদের অসময়ের মৃত্যুতে তার শিক্ষা অসমাপ্ত রয়ে যায়।

১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে কলাম্বিয়ার লেবেলে হেমন্ত তার প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ড প্রকাশ করেন। চলচ্চিত্রের বাইরে রেকর্ডের ওই গানগুলো ছিল 'জানিতে যদি গো তুমি' এবং 'বলো গো বলো মোরে', যেগুলোর কথা নরেশ ভট্টাচার্যের এবং সংগীত শৈলেশ দত্তগুপ্তের। তার পর থেকে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রতি বছর গ্রামোফোন কোম্পানি অফ ইন্ডিয়ার (জিসিআই) জন্যে ধারাবাহিকভাবে চলচ্চিত্রের বাইরে হেমন্তের রেকর্ড প্রকাশিত হোত। তার প্রথম হিন্দি গানগুলো 'কিতনা দুখ ভুলায়া তুমনে' এবং 'ও প্রীত নিভানেওয়ালি' ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে জিসিআইয়ের কলাম্বিয়া লেবেলেই প্রকাশিত হয়েছিল। ওই গানগুলোর সংগীতকার ছিলেন কমল দাশগুপ্ত; কথা লিখেছিলেন ফৈয়াজ হাসমি।

১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা চলচ্চিত্র নিমাই সন্যাস চলচ্চিত্রে হেমন্ত প্রথম গান গেয়েছিলেন। সংগীত দিয়েছিলেন হরিপ্রসন্ন দাস। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে চলচ্চিত্রের বাইরে বাংলা গানে হেমন্ত নিজে প্রথম সুর দিয়েছিলেন 'কথা কোয়োনাকো শুধু শোনো' এবং 'আমার বিরহ আকাশে প্রিয়া' এই দুটি গানে। এগুলোর কথা লিখেছিলেন অমিয় বাগচি। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিত অমরনাথের সংগীত পরিচালনায় তিনি ইরাদা (১৯৪৪ চলচ্চিত্র) চলচ্চিত্রে প্রথম হিন্দি গানগুলো গেয়েছিলেন। হেমন্তকে শীর্ষস্থানীয় রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী হিসেবে ধরা হয়। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে প্রিয় বান্ধবী বাংলা চলচ্চিত্রে তার প্রথম রবীন্দ্র সংগীত রেকর্ড করা হয়েছিল। গানটা ছিল 'পথের শেষ কোথায়'। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দেই তিনি কলাম্বিয়া লেবেলের অধীনে চলচ্চিত্রের বাইরে প্রথম রবীন্দ্র সংগীত রেকর্ড করেন। গানগুলো ছিল 'আমার আর হবে না দেরি' এবং 'কেন পান্থ এ চঞ্চলতা'। তার আগে তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো/আকাশবাণীতে আমার মল্লিকাবনে রেকর্ড করেছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রেকর্ডটা বিস্মৃতিতে চলে গিয়েছে।

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে সংগীত পরিচালক হিসেবে তার প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র ছিল অভিযাত্রী। যদিও ওই সময় অনেক গান রেকর্ড করে হেমন্ত প্রচুর প্রশংসা পেয়েছেন, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি বড়ো বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছিলেন। বাংলায় তার সমসাময়িক পুরুষ সংগীত শিল্পীরা ছিলেন জগন্ময় মিত্র, রবীন মজুমদর, সত্য চৌধুরী, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য্য, সুধীরলাল চক্রবর্তী, বেচু দত্ত এবং তালাৎ মাহমুদ।

#পরিবার

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়রা তিন ভাই এবং এক বোন, নীলিমা। বড়ো ভাই তারাজ্যোতি ছোটো গল্প লিখতেন। ছোটো ভাই অমল মুখোপাধ্যায় কিছু বাংলা চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেছিলেন এবং গানও গেয়েছিলেন, তার গান 'এই পৃথিবীতেই সারাটা জীবন'; নামকরা চলচ্চিত্রগুলো ছিল হসপিটাল এবং অবাক পৃথিবী। তিনি ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের দশকে কিছু গান রেকর্ড করেছিলেন এবং জীবনের অনেকটা পথ একলাই, হেমন্তের এই গানে খুবই স্মরণীয় সুরও দিয়েছিলেন।

১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে হেমন্ত বাংলা সংগীত শিল্পী বেলা মুখোপাধ্যায়ের (মৃত্যু ২৫ জুন ২০০৯), সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে কাশীনাথ বাংলা চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালক পঙ্কজ মল্লিক বেলাকে দিয়ে কিছু জনপ্রিয় গান গাইয়েছিলেন কিন্তু বিবাহের পর বেলা আর সংগীত জগতে প্রবেশ করেননি। তাঁদের দুই সন্তান — পুত্র জয়ন্ত এবং কন্যা রাণু। সীমিত সাফল্য নিয়ে রাণু মুখোপাধ্যায় ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের দশকের শেষে এবং ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের দশকের শুরুর দিকে গান গাইতেন। জয়ন্ত ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের দশকের জনপ্রিয় ভারতীয় অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

#সাফল্য_এবং_মুম্বই_যাত্রা

১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের দশকে হেমন্ত ভারতীয় গণনাট্য সংঘ (আইপিটিএ) সংস্থার সক্রিয় সদস্য হয়েছিলেন এবং আর এক আইপিটিএ সদস্য - সংগীত রচয়িতা এবং সংগীতজ্ঞ সলিল চৌধুরির সঙ্গে অনুষঙ্গ শুরু করেছিলেন। আইপিটিএ সংস্থার অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলার দুর্ভিক্ষ এবং এর প্রতিরোধে ব্রিটিশ শাসক ও সম্পদশালী ভারতীয়দের নিষ্ক্রিয়তা।

হেমন্ত ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে সলিল চৌধুরির কথায় ও সুরে চলচ্চিত্রের বাইরে একটা গান গাঁয়ের বধূ রেকর্ড করেন। দু-পিঠের ৭৮ আরপিএম ছ-মিনিটের ওই ডিস্ক রেকর্ডে বাংলার ভিন্ন গতির এক আবেগমথিত প্রচলিত কাঠামোকে নিবদ্ধ করেছিল। এই গান এক উন্নত এবং মমতাময়ী গ্রাম্য নারীর জীবন ও পরিবারকে সরল শান্ত মনোরম করে ফুটিয়ে তুলেছিল এবং বর্ণিত হয়েছিল কীভাবে দুর্ভিক্ষের দৈত্য ও আসন্ন দারিদ্র্যের দ্বারা বিধ্বস্ত হয়েছিল। এই গান হেমন্ত এবং সলিলকে পূর্ব ভারতে এক অভাবনীয় জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল, এককথায়, হেমন্তকে তার সমসাময়িক পুরুষ গায়কদের থেকে এগিয়ে রেখেছিল। পরবর্তী কয়েক বছরে হেমন্ত এবং সলিল জুটি সমাজকে অনেক গান উপহার দিয়েছিল। প্রায় এই সমস্ত গানেই জনপ্রিয়তার প্রমাণ ছিল।

একই সময়কালে হেমন্ত বাংলা চলচ্চিত্রে সুরসৃষ্টির জন্যে বরাত পেতে শুরু করেন। তার মধ্যে কয়েকটা ছিল পরিচালক হেমেন গুপ্তের জন্যে। কয়েক বছর পর হেমেন যখন মুম্বই যান, ফিল্মিস্তান স্টুডিয়োর ব্যানারে তার পরিচালনায় আনন্দমঠ নামে প্রথম হিন্দি চলচ্চিত্রে সুরসৃষ্টির জন্যে হেমন্তকে ডাকেন। ওই ডাকে সড়া দিয়ে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে হেমন্ত মুম্বই পাড়ি দেন এবং ফিল্মিস্তান স্টুডিয়োতে যোগ দেন। আনন্দমঠ (১৯৫২) চলচ্চিত্রের সংগীত মাঝারি সাফল্য পেয়েছিল। সম্ভবত, এই চলচ্চিত্র থেকে খুবই উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া বন্দে মাতরম গানটায় হেমন্ত একটা কুচকাওয়াজের সুরারোপ করেছিলেন। আনন্দমঠ-এর পর শর্ত চলচ্চিত্রের মতো কয়েকটা ফিল্মিস্তান চলচ্চিত্রে হেমন্ত পরবর্তী কয়েক বছরে সুরসৃষ্টি করেছিলেন, যে গানগুলো মাঝারি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। একই সঙ্গে হেমন্ত মুম্বইতে নেপথ্য গায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। অভিনেতা দেব আনন্দের জন্যে নেপথ্য গায়ক হিসেবে তার গান শচীন দেব বর্মন সুরারোপিত জাল ("য়েহ রাত, য়েহ চাঁদনি ফির কাঁহা..."), হাউস নম্বর ৪৪ ("চুপ হ্যায় ধরতি, চুপ হ্যায় চাঁদ সিতারে..."), সোলবা সাল ("হ্যায় আপনা দিল তো আওয়ারা..."), ফান্টুস ("তেরি দুনিয়া মে জীনে সে..."), এবং বাত এক রাত কি ("না তুম হামে জানো...") খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল এবং এভাবে চলতে থাকে। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের দশকে তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের অন্যান্য কয়েকজন নায়কের জন্যে নেপথ্য গায়কের কাজ করেছিলেন; যেমন, প্রদীপ কুমার (নাগিন, ডিটেকটিভ), সুনীল দত্ত (দুনিয়া ঝুঁকতি হ্যায়) এবং ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের দশকের শেষদিকে বিশ্বজিতের জন্যে (বিস সাল বাদ, বিন বাদল বরসাত, কোহরা) এবং ধর্মেন্দ্রের জন্যে (অনুপমা); তিনি এই সমস্ত চলচ্চিত্রের জন্যে সুরসৃষ্টি করেছিলেন।

#কর্মজীবনে_সাফল্য

১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দশকের মাঝামাঝি হেমন্ত একজন গায়ক ও সুরকার হিসেবে তার অবস্থান মজবুত করেছিলেন। তিনি নিজে গাইতে এবং সুর করতে মূলত পছন্দ করতেন সহজ-সরল মেলডিপ্রধান গান, কেননা বাঙালীর সাঙ্গীতিক অন্তরটি সুরকার ও গায়ক হিসাবে খুব ভালো অনুভব করতেন। বাংলায় তিনি রবীন্দ্র সংগীতের একজন শীর্ষস্থানীয় শিল্পী ছিলেন এবং সম্ভবত পুরুষ গায়কদের মধ্যে খুবই অগ্রগণ্য বিবেচ্য ছিলেন। ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের মার্চে কলকাতায় দেবব্রত বিশ্বাসের (১৯১১-১৯৮০) সম্মানে হেমন্ত এক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন; ওই অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী দেবব্রত বিশ্বাস নিঃসংকোচে বলেছিলেন যে, হেমন্ত হচ্ছে রবীন্দ্র সংগীতকে জনপ্রিয় করে তোলার 'দ্বিতীয় নায়ক', প্রথম জন হলেন কিংবদন্তি পঙ্কজ কুমার মল্লিক। রবীন্দ্রসঙ্গীত আর রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে হেমন্তকুমার তার আত্মকথা "আনন্দধারা" এক জায়গায় লিখেছেন-

" সারা পৃথিবীর গানের সুরকে আয়ত্ত করে নতুন সুর সৃষ্টি করলেন রবীন্দ্রনাথ । সেই সুরের আলপনাকে বাংলা গানে ছিটিয়ে দিলেন । হয়ে গেল এক অপূর্ব সৃষ্টি । সর্বযুগের, সর্বকালের সৃষ্টি । এতবড়ো সুরকার আজও জন্মায়নি কোন দেশে। এই বুড়ো পৃথিবীকে ইচ্ছে হয় জিজ্ঞাসা করি, বয়েস তো অনেক হল। রবীন্দ্রনাথের মতো এমন সর্বতোমুখী প্রতিভা আর দেখেছে একটা ।

মুম্বইতে নেপথ্য গায়নের পাশাপাশি হেমন্ত সুর সৃষ্টিকারীর একটা ঘরানা গড়ে তুলেছিলেন। তিনি নাগিন (১৯৫৪) নাম এক হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্যে সুর সৃষ্টি করেছিলেন, যেটা ওই চলচ্চিত্রে সংগীতের জন্যেই বড়ো সাফল্য এসেছিল। নাগিনের গানগুলো ধারাবাহিকভাবে দু-বছর তালিকা-শীর্ষে অবস্থান করেছিল এবং ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে হেমন্তর মর্যাদাপূর্ণ ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ সংগীত নির্দেশনা পুরস্কার লাভে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে দিয়েছিল। ঠিক ওই বছরই তিনি বাংলা চলচ্চিত্র শাপমোচনের জন্যে সংগীত প্রস্তুত করেন, যেখানে অভিনেতা উত্তম কুমারের জন্যে নেপথ্য কণ্ঠে চারখানা গানও গেয়েছিলেন। এটা নেপথ্য গায়ক-নায়ক হিসেবে হেমন্ত-উত্তম জুটির এক লম্বা মেলবন্ধনের শুরুয়াত ছিল। তারা দুজনে পরবর্তী দশক জুড়ে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ভীষণ জনপ্রিয় গায়ক-নায়ক জুটি ছিলেন।

১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দশকের শেষ দিকে হেমন্ত অসংখ্য বাংলা এবং হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্যে গান গেয়েছিলেন এবং সুর দিয়েছিলেন, অসংখ্য রবীন্দ্র সংগীত এবং চলচ্চিত্রের বাইরের গান রেকর্ড করেছিলেন। যার মধ্যে প্রায় সবই, বিশেষ করে বাংলা গান অত্যধিক জনপ্রিয় হয়েছিল। ওই সময়কালকে তার কর্মজীবনে সাফল্যের শীর্ষবিন্দু হিসেবে ভাবা হয় এবং যেটা মোটামুটি এক দশক স্থায়ী ছিল। তিনি নচিকেতা ঘোষ, রবিন চ্যাটার্জী, সলিল চৌধুরী প্রমুখ বাংলার বিশিষ্ট সংগীত নির্দেশকের সুরে গান গেয়েছেন। বেশ কিছু নামকরা চলচ্চিত্রে হেমন্ত সুর সৃষ্টি করেছেন; তার মধ্যে আছে: বাংলায় হারানো সুর, মরুতীর্থ হিংলাজ, নীল আকাশের নীচে, লুকোচুরি, স্বরলিপি, দীপ জ্বেলে যাই, শেষ পর্যন্ত, কুহক, দুই ভাই, সপ্তপদী এবং হিন্দিতে জাগৃতি, এক হি রাস্তা।

#চলচ্চিত্র_প্রযোজনা

হেমন্ত ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দশকের অন্তিম পর্বে তার নিজের ব্যানারে হেমন্ত-বেলা প্রোডাকশন্স নামে চলচ্চিত্র প্রযোজনা শুরু করেছিলেন। ওই ব্যানারে প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র ছিল স্বনামধন্য মৃণাল সেন পরিচালিত নীল আকাশের নীচে (১৯৫৯)। কাহিনি নেওয়া হয়েছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমিকায় কলকাতার রাস্তার এক চিনা ফেরিওয়ালার পরিশ্রমের যন্ত্রণা থেকে। এই চলচ্চিত্র ভারত সরকার কর্তৃক দেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মান রাষ্ট্রপতির স্বর্ণ পদক লাভ করেছিল। পরের দশকে হেমন্তের প্রযোজনা কোম্পানি নাম পরিবর্তন করে গীতাঞ্জলি প্রোডাকশন্স হয় এবং একের পর এক হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রযোজনা করতে থাকে; যেমন, বিশ সাল বদ, কোহরা, বিবি অওর মকান, ফরার, রাহগির এবং খামোশি - উপর্যুক্ত সব চলচ্চিত্রেই সুর সৃষ্টি করেছেন হেমন্ত। শুধুমাত্র বিশ সাল বাদ এবং খামোশি এগুলোর মধ্যে অধিক বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছিল।

এর পর বাংলায় ফেরা। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে হেমন্ত পলাতক চলচ্চিত্রের জন্যে সুর সৃষ্টি করেন, যেখানে তিনি পরীক্ষামূলকভাবে বাংলা লোক সংগীত এবং লঘু সংগীতের সংমিশ্রণ ঘটিয়েছিলেন। এটা একটা বড়ো সাফল্যের প্রমাণ দিয়েছিল এবং হেমন্তের সংগীত গ্রন্থনার ধরন ভবিষ্যতের চলচ্চিত্রগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছিল, যেমন, বাঘিনি এবং বালিকা বধূ। বাংলা ছবিদ্বয় মণিহার এবং অদ্বিতীয়া সাংগীতিক এবং বাণিজ্যিক দিক থেকে বড়ো সাফল্য পেয়েছিল, তার সংগীত গ্রন্থনায় লঘু ধ্রুপদী ছোঁয়া ছিল। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনে গ্রামোফোন কোম্পানি অফ ইন্ডিয়া হেমন্তকে দিয়ে এক বড়ো অংশের স্মারক প্রস্তুত করেছিল। এটাও এক বড়ো সাফল্যের মুখ দেখেছিল। হেমন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভ্রমণ সমেত অনেক কনসার্টের জন্যে বহুবার বিদেশে গিয়েছিলেন। সর্বসাকুল্যে ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের দশকে তিনি বাংলার প্রধান পুরুষ গায়ক হিসেবে নিজের জায়গা ধরে রেখেছিলেন এবং হিন্দি চলচ্চিত্রের সংগীতকার ও গায়ক হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন।

১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের দশকে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতিনাট্যগুলোর উদীয়মান এবং প্রধান পুরুষ কণ্ঠ ছিলেন; যেমন, বাল্মিকী প্রতিভা, শ্যামা, শাপমোচন, চিত্রাঙ্গদা এবং চণ্ডালিকা। ওই গীতিনাট্যগুলোতে প্রধান নারী কণ্ঠ হিসেবে থাকতেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯২৪-২০০০) এবং সুচিত্রা মিত্র (১৯২৪-২০১০), তিনি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পীত্রয়ীর অংশ ছিলেন, যাঁরা জনপ্রিয় এবং শ্রদ্ধাষ্পদ ছিলেন। এঁদের বলা হোত 'হেমন্ত-কণিকা-সুচিত্রা' এবং সঙ্গে ছিলেন দেবব্রত বিশ্বাস, এই শিল্পী চতুষ্টয় ধারাবাহিকভাবে রবীন্দ্র গ্রন্থনার বহুশ্রুত প্রদর্শক ছিলেন। অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়, চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, সাগর সেন, সুমিত্রা সেন এবং ঋতু গুহ ছিলেন সেই সময়কার রবীন্দ্র সংগীতের অন্যান্য প্রধান শিল্পী।

#পরবর্তী_কর্মজীবন

১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের দশকে হিন্দি চলচ্চিত্রে হেমন্তর নামমাত্র অবদান ছিল। তিনি তার নিজের প্রডাকশন্সে নিজের মতো সংগীত রচনা করতেন, কিন্তু তার মধ্যে কোনো চলচ্চিত্র কিংবা তার সংগীত সফলতা পায়নি। যাইহোক, বাংলায় তিনি রবীন্দ্র সংগীত, চলচ্চিত্র এবং চলচ্চিত্রের বাইরের গানের বিশিষ্ট শিল্পী ছিলেন। তার সংগীত দশক জুড়ে ধারাবাহিকভাবে জনপ্রিয় ছিল। তার মধ্যে কয়েকটা হলো: যদি জানতে চাও তুমি... (১৯৭২), একগোছা রজনীগন্ধা..., আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা..., সেদিন তোমায় দেখেছিলাম ... (১৯৭৪), খিড়কি থেকে সিংহ দুয়ার... (স্ত্রী, ১৯৭১), কে জানে ক-ঘণ্টা... (সোনার খাঁচা, ১৯৭৪), যেওনা দাঁড়াও বন্ধু... (ফুলেশ্বরী, ১৯৭৫) এবং চলচ্চিত্রের অবস্থা অনুযায়ী সুন্দরভাবে প্রযুক্ত জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীতগুলো। একটা খুব জনপ্রিয় এবং উচ্চাঙ্গের উদাহরণ হলো দাদার কীর্তি (১৯৮০) চলচ্চিত্রে চরণ ধরিতে দিয়োগো আমারে...। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে হেমন্ত তার নিজের প্রযোজিত অনিন্দিতা চলচ্চিত্রে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এটা বক্স অফিসে খুব ভালো ফল দিতে পারেনি। যাইহোক, এর মূল উপজীব্য ছিল দিনের শেষে ঘুমের দেশে... তার এই শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীত। ওই একই বছরে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক কনরাড রুকসের ডাকে হেমন্ত হলিউডে গিয়েছিলেন।

হেমন্ত কনরাড রুকসের সিদ্ধার্থ চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক। তিনি ওই চলচ্চিত্রে নেপথ্য গায়ক হিসেবে ''ও নদীরে...'' (সংগীত এবং কণ্ঠ তার ''নীল আকাশের নীচে'' থেকে) গেয়েছেন। হেমন্ত হলিউডে নেপথ্য গায়ক হিসেবে গান করা প্রথম ভারতীয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার হেমন্তকে মেরিল্যান্ড, বাল্টিমোরের নাগরিকত্ব দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন; তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়া প্রথম ভারতীয় গায়ক। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলার দুজন প্রধান সংগীতকার নচিকেতা ঘোষ এবং রবিন চট্টোপাধ্যায়, যাঁরা ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দশকের প্রথমদিক থেকে হেমন্তের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতেন, তাঁদের জীবনাবসান হয়েছিল। একই সঙ্গে ফুলেশ্বরী, রাগ অনুরাগ, গণদেবতা এবং দাদার কীর্তি ইত্যাদি চলচ্চিত্রে হেমন্ত সংগীত পরিচালনা করায় তাঁকে বাংলার প্রধান সংগীত পরিচালকরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের দশক এবং ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের দশকে সলিল চৌধুরীর সঙ্গে হেমন্ত যেসব কাজ করেছিলেন ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে তার মধ্যে থেকে কিছু পুনরায় রেকর্ড করেছিলেন। এই অ্যালবামের নাম হলো লেজেন্ড অফ গ্লোরি, ভল্যুম ২, হেমন্তের বয়সের ছাপ এবং শ্রান্ত কণ্ঠ সত্ত্বেও রেকর্ডটা ভালো বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছিল।

১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে হৃদাঘাত হয়েছিল, যার ফলে তার কণ্ঠস্বর ক্ষেপণের, বিশেষত তার শ্বাস নিয়ন্ত্রণের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল। তিনি আটের দশকের গোড়ার দিকে ধারাবাহিকভাবে গান রেকর্ড করছিলেন, কিন্তু তার পুরুষালি কণ্ঠে একটু স্বরের তফাত পড়ে। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে হেমন্ত তার সংগীত জীবনের ৫০ বর্ষপূর্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সংবর্ধনা পেয়েছিলেন, এর মধ্যে খুব উল্লেখযোগ্য হলো গ্রামোফোন কোম্পানি অফ ইন্ডিয়া। ওই বছরই হেমন্ত গ্রামোফোন কোম্পানি অফ ইন্ডিয়া থেকে তার শেষ অ্যালবাম প্রকাশ করেন - এটা ছিল চারটে চলচ্চিত্রের বাইরের গান সমৃদ্ধ একটা ৪৫ আরপিএম সমন্বিত সম্প্রসারিত রেকর্ড। পরবর্তী বছরগুলোতে হেমন্ত ছোটোখাটো কোম্পানিগুলো থেকে কিছু চলচ্চিত্রের বাইরের গান রেকর্ড করেছিলেন যারা উঠতি ক্যাসেট-ভিত্তিক সংগীত তৈরি শিল্পের সঙ্গে এঁটে উঠছিল। সেগুলোর মধ্যে অল্প কয়েকটা বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছিল। তিনি তখন মুষ্টিমেয় কিছু চলচ্চিত্র, একট বাংলা এবং একটা হিন্দি দূরদর্শন ধারাবাহিকের জন্যে সংগীত পরিচালনা করেছিলেন। যাইহোক, এই সময়ের মধ্যে তিনি এক প্রতিষ্ঠান, প্রিয় এবং শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন, যিনি ছিলেন নম্র এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ভদ্রলোক। তার মানবধর্মী কার্যকলাপের মধ্যে অঙ্গীভূত ছিল পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় তার নিজের গাঁ বহড়ুতে তার প্রয়াত পিতার স্মরণে একটা হোমিয়োপ্যাথিক হাসপাতাল চালানো। তার সময়কালে তিনি আকাশবাণী, দূরদর্শন (টিভি) এবং চলন্ত অনুষ্ঠান/কনসার্টে নিয়মিত বৈশিষ্ট্যে অবিরত ছিলেন।

১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের দশকের প্রথমদিকে রেকর্ড করা বাচিক শিল্পী গৌরী ঘোষের সঙ্গে এক দূরদর্শন সাক্ষাৎকারে হেমন্তের স্ত্রী বেলা মুখোপাধ্যায় পুনরুল্লেখ করেন যে, তিনি জানতেননা জীবৎকালে হেমন্ত কত সংখ্যক ব্যক্তি এবং পরিবারকে আর্থিক ও অন্যান্যভাবে সাহায্য করেছেন; শুধুমাত্র তার চলে যাওয়ার পরেই সেসব ক্রমশ প্রকাশ পেয়েছিল।

১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে হেমন্ত ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভূষণ পুরস্কারের জন্যে মনোনীত হয়েছিলেন যেটা তিনি বিনীতভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, ইতিমধ্যে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে তিনি একইভাবে পদ্মশ্রী পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেছিলেন। ওই বছরই কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে হেমন্তের সংগীত জীবনের ৫০ বর্ষপূর্তিতে তাঁকে এক রাজকীয় গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল; তার ভক্ত এবং গুণগ্রাহীদের তরফ থেকে আর এক কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকর তাঁকে স্মারক দিয়ে সংবর্ধনা জানান। তার বয়সের ছাপ পড়া গলাতেও তিনি ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে লালন ফকির চলচ্চিত্রে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ পুরুষ গায়কের সম্মান পেয়েছিলেন।

১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার গ্রহণের জন্যে তথা একটা কনসার্টে সংগীত পরিবেশনের তাগিদে হেমন্ত বাংলাদেশের ঢাকা শহরে ভ্রমণ করেছিলেন। ওই সফরের অব্যবহিত পর ফিরেই ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি আর একটা হৃদাঘাত পেয়েছিলেন এবং দক্ষিণ কলকাতার এক নার্সিং হোমে রাত ১১:১৫টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

#উত্তরাধিকার

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় প্রায় দেড়শোটি বাংলা ছবিতে সুর দিয়েছেন, গান গেয়েছেন। তার প্রয়াণের প্রায় দুই দশক পরেও গ্রামোফোন কোম্পানি অফ ইন্ডিয়া প্রত্যেক বছর অন্তত একটা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের অ্যালবাম প্রকাশ করে থাকে, বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা থাকায় তার পুরোনো গানের পুনর্প্রস্তুতকরণ করে। যে গান তিনি রেকর্ড করেছেন, যে সুর তিনি সৃষ্টি করেছেন, এবং অসংখ্য গায়ক বাংলা এবং ভারতে তার গায়কী ধরন অবিরত নকল/অনুকরণ করার ফলে তার উত্তরাধিকার এখনো জীবন্ত!

#পুরস্কার

১৯৭০:পদ্মশ্রী(অস্বীকৃতি)
১৯৮৭:পদ্মভূষণ(অস্বীকৃতি)
১৯৫৬: ফিল্মফেয়ার বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড: নাগিন
১৯৭১: ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট মেল প্লেব্যাক সিঙ্গার: নিমন্ত্রণ
১৯৮৬: ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট মেল প্লেব্যাক সিঙ্গার: লালন ফকির
১৯৬২: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড স্বরলিপি - বিজয়ী
১৯৬৩: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড (হিন্দি); বিস সাল বাদ - বিজয়ী
১৯৬৪: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড পলাতক - বিজয়ী
১৯৬৭: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড মণিহার - বিজয়ী
১৯৬৮: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড বালিকা বধূ - বিজয়ী
১৯৭৫: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড ফুলেশ্বরী - বিজয়ী
১৯৮৬: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড ভালোবাসা ভালোবসা - বিজয়ী
১৯৮৭: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড পথভোলা - বিজয়ী
১৯৮৮: বিএফজেএ বেস্ট মিউজিক ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড আগমন - বিজয়ী
১৯৭২: বিএফজেএ বেস্ট মেল প্লেব্যাক সিঙ্গার অ্যাওয়ার্ড ধন্যি মেয়ে - বিজয়ী
১৯৭৫: বিএফজেএ বেস্ট মেল প্লেব্যাক সিঙ্গার অ্যাওয়ার্ড ফুলেশ্বরী - বিজয়ী
১৯৭৬: বিএফজেএ বেস্ট মেল প্লেব্যাক সিঙ্গার অ্যাওয়ার্ড প্রিয় বান্ধবী - বিজয়ী
১৯৮৫: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সাম্মানিক ডি.লিট
১৯৮৬: সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার
১৯৮৯: মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার
১৯৭১: প্রথম ভারতীয় গায়ক হিসেবে হলিউডের সিনেমায় নেপথ্য কন্ঠ দান ও আমেরিকা সরকার কর্তৃক বাল্টিমোর এর নাগরিকত্ব লাভ
২০১২: বাংলাদেশের স্বাধীনতা মৈত্রী পুরস্কার (মরণোত্তর)

#জনপ্রিয়_গান

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া অসংখ্য গানের মধ্যে জনপ্রিয় কিছু গান:

মাগো ভাবনা কেন
পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহ ভরা কোলে তব মাগো, বলো কবে শীতল হবো
ও নদীরে, একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে
আয় খুকু আয়,আয় খুকু আয়
মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে
ও আকাশ প্রদীপ জ্বেলোনা, ও বাতাস আঁখি মেলোনা
আমি দূর হতে তোমারেই দেখেছি,আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি
এই রাত তোমার আমার, ঐ চাঁদ তোমার আমার…শুধু দুজনে
মেঘ কালো, আঁধার কালো, আর কলঙ্ক যে কালো
রানার ছুটেছে তাই ঝুমঝুম ঘণ্টা বাজছে রাতে
আজ দুজনার দুটি পথ ওগো দুটি দিকে গেছে বেঁকে
আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা,আর কতকাল আমি রব দিশাহারা
বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও,মনের মাঝেতে চিরদিন তাকে ডেকে নিও
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
কেন দূরে থাকো, শুধু আড়াল রাখো
ওলিরও কথা শুনে বকুল হাসে
ছেলে বেলার গল্প শোনার দিনগুলো
আমিও পথের মত হারিয়ে যাবো

Want your school to be the top-listed School/college in Chittagong?

Click here to claim your Sponsored Listing.

Videos (show all)

beginner students of Taal Chorcha - তাল চর্চা
তবলায় হস্ত সাধন 🥰🥰
ঝাঁপতাল এর সম থেকে সম লয়কারী
রুপক তাল এর দ্বিগুন, তিনগুন,চৌগুন লয়কারী।
তালচর্চা পরিবারের ক্ষুদে শিক্ষার্থী 🥰🥰❤️❤️
ক্লাস চলাকালীন Taal Chorcha - তাল চর্চা
🙏🙏 সকলকে মহালয়ার শুভেচ্ছা এবং প্রণাম 🙏🙏
তালচর্চার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন 🥰🥰
Taal Chorcha - তাল চর্চা তালচর্চার শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন 🥰🥰
Taal Chorcha - তাল চর্চা 🥰🥰
Taal Chorcha - তাল চর্চা students class time. beautiful teentaal bayan based kayda.

Location

Category

Telephone

Website

Address

Kb Abdus Sattar Road, Rahamatganj
Chittagong