কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
01/
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন মাজিদের প্রথম রুকু সূরা ফাতিহার সাত আয়াত I
প্রথম আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার প্রশংসা এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যে সকল জগতের প্রতিপালক, এটা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বর্ণনা দেওয়া হয়েছে I
দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ তাআলার দুটি গুণবাচক নামের উল্লেখ রয়েছে I
তৃতীয় আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যে বিচার দিবসের অধিপতি, এটা বলা হয়েছে I
চতুর্থ আয়াতে আল্লাহ তাআলার কাছে আমাদের সাহায্য চাওয়ার বিষয়টি এবং আমাদের একমাত্র করণীয় তথা শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার ইবাদত করার কথা বর্ণিত হয়েছে I
পঞ্চম আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে আমাদের হেদায়াতের জন্য প্রার্থনা করার শিক্ষা রয়েছে I
ষষ্ঠ আয়াতে আল্লাহ তাআলার নেয়ামতপ্রাপ্ত লোকগুলোর পথের সন্ধান কামনার শিক্ষা রয়েছে I
সপ্তম আয়াতে গজবপ্রাপ্ত এবং পথভ্রষ্ট লোকগুলোর পথ থেকে মুক্তি কামনার শিক্ষা রয়েছে I
কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
02/
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন মাজিদের দুই নং রুকু সূরা বাকারার প্রথম সাত আয়াত I
প্রথম আয়াতে হুরুফে মুকাত্তাআত তথা আলিফ, লাম, মীম তিনটি হরফ উল্লেখ করেছেনI এগুলোর অর্থ ও মর্ম সম্পর্ক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সর্বাধিক অবগত এবং তিনি তার রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে অবগত করেছেন I তবে সাধারণ মানুষ হুরুফে মুকাআত্তাতের অর্থ ও মর্ম সম্পর্কে অবগত নয় I
দ্বিতীয় আয়াতে কুরআন মাজীদ সন্দেহ ও সংশয়ের উর্দ্ধে হওয়ার বিষয়ে দৃঢ় ঘোষনা রয়েছে এবং কুরআন মাজিদ মুত্তাকিদের জন্য প্রথ প্রদর্শনকারী হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছেI
তৃতীয় আয়াতে মুত্তাকিদের তিনটি বৈশিষ্ট্য তথা অদেখা বিষয়ের প্রতি ঈমান, নামাজ প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে I
চতুর্থ আয়াতে মু্ত্তাকিদের আরো তিনটি বৈশিষ্ট্য তথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি অবতীর্ণ কিতাবের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পূর্ববর্তী রাসুলগণের প্রতি অবতীর্ণ কিতাব সমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা এবং আখেরাতের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখার আলাপ রয়েছে I
পঞ্চম আয়াতে পূর্ববর্তী দুই আয়াতে বর্ণিত ছয়টি বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মুত্তাকিগণকে আল্লাহর পক্ষ সঠিক পথের উপর থাকার এবং যথার্থ সফলকাম হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে I
ষষ্ঠ আয়াতে কাফেরদের ঈমান না আনার ব্যাপারে বলা হয়েছে I
সপ্তম আয়াতে হেদায়াত অনুধাবনে কাফেরদের অন্তর বন্ধ হয়ে যাওয়া ও হেদায়াতের আলোচনা শ্রবণের ক্ষেত্রে কাফেরদের কান বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং হেদায়াতের পথ দেখার ক্ষেত্রে তাদের চোখে পর্দা পড়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে I এই আয়াতের শেষে কাফেরদের জন্য কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন I
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআালা আমাকে এবং আপনাকে মুত্তাকীদের ছয়টি গুণ নিজেদের মধ্যে ধারণ করে হেদায়াতের উপর অটল থাকার এবং যথার্থ সফলকাম হওয়ার তাওফিক দান করুন I
কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
03/
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন মাজিদের তৃতীয় রুকুটি সূরা বাকারার আট নং থেকে শুরু হয়ে বিশ নং আয়াতে শেষ হয়েছে I আল্লাহ তাআলা এই রুকুর এক নং আয়াতে বলেছেন, এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা মূলত ঈমানদার নয় I কিন্তু মানুষদেরকে বলে, তারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে I
দুই নং আয়াতে বলা হয়েছে, যারা ঈমানদার না হয়েও নিজেদেরকে ঈমানদার হিসেবে প্রকাশ করে, তারা আল্লাহ ও ঈমানদারদেরকে ধোঁকা দিতে চায় I কিন্তু এতে তারা নিজেদেরকেই ধোঁকা দেয় I
তিন নং আয়াতে আছে, উক্ত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লোকগুলোর অন্তরে ব্যাধি রয়েছে I আল্লাহ তাদের সেই ব্যাধিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন I আর তাদের মিথ্যাচারের দরুণ তাদের জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে I
চার নং আয়াতে রয়েছে, উক্ত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লোকগুলোকে যখন জমিনের বুকে ফাসাদ না করতে বলা হয়, তখন তারা নিজেদেরকে মিমাংশাকারী হিসেবে দাবী করে I
পাঁচ নং আয়াতে ঐ লোকগুলোকে দৃঢ়ভাবে ফাসাদ সৃষ্টিকারী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে I
ছয় নং আয়াতে তাদেরকে ঈমান আনতে বললে, তারা কী উত্তর দেয়, তা বলা হয়েছে I
সাত নং আয়াতে তাদেরকে আসল বেকুপ সাব্যস্ত করা হয়েছে I
আট নং আয়াতে তাদের দ্বিমুখী আচরণ তথা মুমিনদের সাথে দেখা হলে নিজেদেরকে ঈমানদার দাবী করা এবং কাফেরদের সর্দারদের সাথে রাতে একান্তে মিলিত হয়ে নিজেদেরকে কাফেরদের সঙ্গী দাবী করার কথা এবং মুমিনদের সাথে ঠাট্টা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে I
নয় নং আয়াতে তাদের ঠাট্টার প্রতিউত্তর প্রদান এবং তাদের শাস্তি তথা অহংকার ও অবাধ্যতায় ডুবে থাকার বিষয়ে বলা হয়েছে I
দশ নং আয়াতে তাদের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য তথা হেদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহী ক্রয় এবং এই ব্যবসায় তাদের ব্যর্থতা এবং সর্বোপরি তাদের গোমরাহ হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে I
এগার নং আয়াতে তাদের অবস্থাকে একটি উদাহরণের মাধ্যমে স্পষ্ট করা হয়েছে I বলা হয়েছে, তারা হল ঐ ব্যক্তির মত, যে আগুন জালিয়েছে I আগুন যখন তার চার দিককে আলোকিত করল, তখনই আল্লাহ তাদের আলো নিয়ে গেছেন এবং তাদের অন্ধকারে তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন I ফলে হেদায়াতের পথ দেখতে পায় না I
বার নং আয়াতে বলা হয়েছে, তারা হেদায়াতের আলোচনা শুনার ক্ষেত্রে বধির, হেদায়াতের কথা বলার ক্ষেত্রে বোবা এবং হেদায়াতের রাস্তা দেখার ক্ষেত্রে অন্ধ হওয়ার কারনে তারা হেদায়াতের ফিরে আসবে না I
তের নং আয়াতে আরেকটি উদাহরণের মাধ্যমে তাদের বিষয়টি আরো স্পষ্ট করা হয়েছে I তথা তাদের অবস্থা হল দূর্যোগে পতিত ব্যক্তির মত I এমন দূর্যোগ , যে দূর্যোগে আকাশ থেকে বৃষ্টিতে রয়েছে অন্ধকার, গর্জন ও বিদ্যতচমক I গর্জনের চোটে মৃত্যভয়ে কানে আঙ্গুল দেয় I আর আল্লাহ সকল কাফেরকে পরিবেষ্টনকারী I
চৌদ্দ নং আয়াতে বলা হয়েছে, বিদ্যুত চমক তাদের দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নিতে চায় I বিদ্যুত চমকানোর আলোতে একটু আলোকিত হলে তারা পথ চলে আবার অন্ধকার হয়ে গেলে তারা দাড়িয়ে থাকে I আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করলে তাদের শ্রবনশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিতে পারেন I বস্তুত আল্লাহ তাআলা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী I
কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
04/
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন মাজিদের চতুর্থ রুকু একুশ নং আয়াত থেকে শুরু হয়ে ঊনত্রিশ নং আয়াতে শেষ হয়েছে I
এই রুকুর প্রথম আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, হে মানবজাতি, তোমরা তোমাদের রবের এবাদত কর, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন I তাহলে আশা করা যায়, তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারবে I
দুই নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, যিনি তোমাদের জন্য জমিনকে বিছানা স্বরূপ এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ তৈরি করেছেন এবং যিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষন করে তোমাদের জন্য খাদ্য হিসেবে ফল-ফসল তৈরি করেছেন I সুতরাং তোমরা আল্লাহর জন্য কাউকে সমকক্ষ তৈরি করো না I বস্তুত তোমরা এসব জান I
তিন নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা তার বান্দার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন, তাহলে তোমরা তার অনুরূপ একটি সূরা রচনা করে নিয়ে আস I আর আল্লাহ ছাড়া সবার সহযোগিতা নাও I যদি তোমরা সত্যবাদী হও I
চার নং আয়াতে প্রথমে বলা হয়েছে, যদি তোমরা না পারI এরপর বলা হয়েছে, তোমরা তা কক্ষনো পারবে না I সুতরাং ঐ আগুনকে ভয় কর, যে আগুনের জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর I যে আগুন প্রজ্বলিত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য I
পাঁচ নং আয়াতে বলা হয়েছে, যারা ঈমান এনেছে এবং ভাল কাজ করেছে, তাদের জন্য এমন জান্নাত, যার পাদদেশে নদীমালা প্রবাহিত I জান্নাতে সাদৃশ্যপূর্ণ ফলফলাদি দেওয়া হবে এবং জান্নাতে শুদ্ধাচারিনী রমকুলও দেওয়া হবে I আর জান্নাত হবে মুমিনদের জন্য স্থায়ী ঠিকানা I
ষষ্ঠ নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা মশা ও তদুর্ধ্ব প্রাণী দিয়ে উদাহরণ দিতে সংকোচ করেন না I যারা মুমিন, তারা বিশ্বাস করে যে, এমন উদাহরণ আল্লাহর পক্ষ থেকে সঠিক I আর যারা কাফের, তারা এমন উদাহরণের উদ্দেশ্য ও মতলব নিয়ে সন্দেহ করে I এই কুরআনের মাধ্যমে অনেকে হেদায়াতপ্রাপ্ত হয় এবং অনেকে পথভ্রষ্ট হয় I যারা পাপাচারী, মূলত তারাই পথভ্রষ্ট হয় I
সাত নং আয়াতে বলা হয়েছে, ফাসেক তথা পাপাচারী তারা, যারা আল্লাহর সাথে অঙ্গিকারাবদ্ধ চুক্তিকে ছিন্ন করে এবং আল্লাহ যা অবিচ্ছিন্ন রাখতে বলেছেন, তা ছিন্ন করে I মূলত এরাই ক্ষতিগ্রস্ত I
আট নং আয়াতে বলা হয়েছে, মানুষ কিভাবে আল্লাহর সাথে কুফরি করে I অথচ তারা মৃত ছিল I মৃত থেকে তাদেরকে জীবিত করেছেন I আবার তাদেরকে মৃত্যু দান এবং আবার তাদেরকে জীবন দান করবেন I অতপর তার দিকেই সবাইকে প্রত্যাবর্তন করাবেন I
নয় নং আয়াতে বলা হয়েছে, তিনিই সে সত্তা, যিনি জমিনের সব কিছু সৃষ্টি করেছেন I অতপর আকাশের দিকে মনোসংযোগ করে সাত আসমান সৃষ্টি করেছেন I আর আল্লাহ তাআলা সব বিষয়ে অধিক জ্ঞাত I
কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
05/
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন মাজিদের পাঁচ নং রুকু ত্রিশ নং আয়াত থেকে শুরু হয়ে ঊনচল্লিশ নং আয়াতে শেষ হয়েছে I
এই রুকুর এক নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মাবনজাতি সৃষ্টির প্রেক্ষাপট আলোচনা করেছেন I আল্লাহ তাআলা ফেরেস্তাগণকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টির কথা বললেন I তখন ফেরেস্তাগণ জমিনে ফাসাদ ও রক্তপাতের আশংকা জানালেন এবং নিজেদের হামদ সহ তাসবিহ পাঠ এবং আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা কথাও উল্লেখ করলেন I তখন আল্লাহ তাআলা ফেরেস্তাদেরকে তাদের জ্ঞানের সীমাব্ধতার কথা জানালেন I
দুই নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আদমকে সব বস্তুর নাম শেখালেন I সেই বস্তুগুলোকে ফেরেস্তাদের সামনে উপস্থাপন করে তাদেরকে সেগুলোর নাম বলতে বললেন I
তিন নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফেরেসতাগণ নিজেদের অক্ষমতার কথা প্রকাশ করলেন I
চার নং আয়াতে আদমকে বস্তু সমূহের নাম বলতে বললে তিনি বলেন এবং আল্লাহ তাআলা ফেরেসতাগণকে বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, নিশ্চয় আমি আসমান ও জমিনের অদৃশ্যের জ্ঞান রাখি এবং তোমরা যা প্রকাশ কর আর যা গোপন কর, সব জানি I
পাঁচ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তাআলা ফেরেসতাদেরকে বললেন, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সিজদাহ করেছেন I ইবলিস সিজদাহ করতে অস্বীকার করলেন এবং অহংকার করলেন I বস্তুত সে কাফেরদের মধ্য থেকে ছিল I
ছয় নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, আমি বলেছি, হে আদম , তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং তোমরা সেখান থেকে মনভরে যা ইচ্ছা তা খাও I তবে এই গাছটির কাছে যেও না I কেননা এই গাছটির নিকটে গেলে তোমরা জালেম হিসেবে সাব্যস্ত হবে I
সাত নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, কিন্তু শয়তান তাদেরকে সেখান থেকে স্খলন ঘটালেন এবং তারা যেখানে ছিলেন, সেখান থেকে বের করে দিল এবং আমি বলেছি, তোমরা নেমে যাও I তোমরা পরস্পর শত্রু I এবং তোমাদের জন্য পৃথিবীতে রয়েছে, একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থান, একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমরা লাভ খোঁজে নাও I
আট নং আয়াতে বলা হয়েছে, আদম (আ.) তার রবের পক্ষ থেকে কিছু শব্দ শিখলেন এবং আল্লাহ তার উপর সস্তুষ্ট হলেন I নিশ্চয় আল্লাহ তিনি বারবার তাওবা কবুল করেন এবং তিন অসীম দয়ালু I
নয় নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ বলেছেন, তোমরা সবাই সেখান থেকে নেমে যাও I আর যখন আমার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট কোন হেদায়াত আসবে, তখন যারা আমার হেদায়াত অনুসরণ করবে তাদের জন্য পরকালে কোন ভয় থাকবে না এবং ইহকালে তারা চিন্তাগ্রস্তও হবে না I
দশ নং আয়াতে বলা হয়েছে, যারা কুফুরি করবে এবং আমার আয়াত সমূহ অস্বীকার করবে, তারা জাহান্নামী এবং তারা সেখানে স্থায়ী থাকবে I
কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
06/
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন মাজিদের ছয় নং রুকু চল্লিশ নং আয়াত থেকে শুরু হয়ে ছেচল্লিশ নং আয়াতে শেষ হয়েছে I
এক নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলকে তাদেরকে প্রদত্ত নেয়ামত স্বরণ করতে বলেছেন ও আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গিকার পূরণ করলে আল্লাহ তাআলা নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণের কথা বলেছেন I আয়াতের শেষে শুধুমাত্র আল্লাহকেই ভয় করতে নির্দেশ দিয়েছেন I
দুই নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা আল্লাহর অবতীর্ণ অহির প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দিয়েছেন এবং প্রথম অস্বীকারকারী না হওয়ার জন্য হুকুম দিয়েছেন I আল্লাহর আয়াত সমূহকে পার্থিব জীবনের অল্প মূল্য দিয়ে বিক্রয় না করতে বলেছেন I আয়াতের শেষে পূনরায় শুধুমাত্র আল্লাহকেই ভয় করতে নির্দেশ দিয়েছেন I
তিন নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত না করার জন্য হুকুম দিয়েছেন আর জেনেবুঝে সত্যকে গোপন না করতে বলেছেন I
চার নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা নামাজ কায়েম করতে ও জাকাত আদায় করতে এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু করতে নির্দেশ দিয়েছেন I
পাঁচ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তোমরা কি মানুষদেরকে ভাল কাজের নির্দেশ দিয়ে নিজেদেরকে ভুলে যাও ? তোমরা কি চিন্তা কর না ?
ছয় নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা ছবর ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন, ছালাত খুশু অবলম্বণকারীগণ ছাড়া অন্যদের জন্য কঠিন I
বিনয়ীগণ হলেন ঐ সকল লোক, যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের বিশ্বাস রাখে এবং এটাও বিশ্বাস রাখে যে, তাদেরকে তার দিকেই ফিরে যেতে হবে I
কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
07/
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন মাজিদের সাত নং রুকু সাতচল্লিশ নং আয়াত থেকে শুরু হয়ে ঊনষাট নং আয়াতে শেষ হয়েছে I
এই রুকুর এক নং আয়াতে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) ইরশাদ করেন, হে বনি ইসরাইল, তোমরা স্মরণ কর সেই অনুগ্রহের কথা, যা আমি তোমাদেরকে করেছি এবং আরো স্মরণ কর যে, আমি তোমাদেরকে সকল জগতের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি I
দুই নং আয়াতে রয়েছে, এবং তোমরা ভয় কর সেই দিনকে, যেদিন কেউ কারো কোন উপকারে আসবে না এবং কারো সুপারিশও কবুল করা হবে না এবং কারো পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণও গ্রহণ করা হবে না এবং তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না I
তিন নং আয়াতে রয়েছে, আর স্মরণ কর সেই সময়কে, যখন আমি তোমাদেরকে ফেরাউনের লোকদের থেকে মুক্তি দিয়েছি যে, তারা তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি দিত I তারা তোমাদের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা করত আর তোমাদের স্ত্রীদেরকে অব্যাহতি দিত আর তাতে তোমাদের জন্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে পরিক্ষা ছিল I
চার নং আয়াতে রয়েছে, আর তোমরা স্মরণ কর, সেই সময়ের কথা যখন আমি তোমাদের জন্য সাগরকে দ্বিখন্ডিত করেছি I তোমাদেরকে মুক্তি দান করেছি এবং ফেরাউনের লোকদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছি I অথচ তোমরা দেখেছিলে I
পাঁচ নং আয়াতে রয়েছে, সেই সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন আমি মুসার কাছ থেকে চল্লিশ রাতের অঙ্গিকার নিয়েছিলাম অতপর তোমরা তার অনুপস্থিতিতে গোবাছুর নির্মাণ করেছিলে, আর তোমরা ছিলে জালেম I
ছয় নং আয়াতে রয়েছে, আমি তোমাদেরকে তারপরেও ক্ষমা করে দিয়েছিলাম যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা আদায় কর I
সাত নং আয়াতে রয়েছে, স্মরণ কর সেই সময়ের কথা যখন আমি মুসাকে কিতাব ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বিধানকারী নির্দেশনা দান করেছি, যাতে তোমরা সঠিক পথ প্রাপ্ত হয় I
আট নং আয়াতে রয়েছে, আর স্মরণ কর সেই সময়ের কথা যখন মুসা তার জাতিকে বলল, নিশ্চয় তোমরা গোবাছুর নির্মাণ করার মাধ্যমে নিজেদের উপর জুলুম করেছ I সুতরাং তোমরা তোমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে তাওবা কর আর নিজেদের জীবন বিসর্জন দাও I ঐটাই তোমাদের জন্য তোমাদের সৃষ্টিকর্তার নিকট উত্তম তারপর তিনি তোমাদের লক্ষ্য করেছেন I নিশ্চয় তিনি বারবার তিনি তাওবা কবুল কারী, অত্যন্ত মেহেরবান I
নয় নং আয়াতে আয়াতে রয়েছে, আর স্মরণ কর সেই সময়ের কথা , যখন তোমরা বলেছিলে, হে মুসা, আমরা কখনো তোমার প্রতি ইমান আনব না যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আল্লাহকে স্পষ্টভাবে দেখব না I ফলে তোমাদেরকে বিদ্যুত আটক করে ছিল I বস্তুত তোমরা দেখেছিলে I
দশ নং আয়াতে রয়েছে, অতপর আমি তোমাদের মৃত্যুর পর আবার জীবন দান করেছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা আদায় কর I
এগার নং আয়াতে রয়েছে, আর আমি তোমাদেরকে মেঘের মাধ্যমে ছায়া দান করেছি এবং তোমাদেরকে মান্না ও সালওয়া খাদ্য দিয়েছি I তোমরা খাও যা তোমাদেরকে উত্তম রিজিক দেওয়া হয়েছে, তা থেকে I আমি জুলুম করিনি I বরং তারা নিজেরা নিজেদের উপর জুলুম করেছে I
বার নং আয়াতে রয়েছে, যখন আমি বলেছি, তোমরা এই নগরীতে প্রবেশ করে স্বাচ্ছন্দভাবে যা ইচ্ছা খাও এবং দরজা দিয়ে প্রবেশ কর সিজদা দিয়ে আর বল, আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও I আমি তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দিব I আর নেককারদেরকে আরো বাড়িয়ে দি I
তের নং আয়াতে রয়েছে, কিন্তু জালেমরা তাদেরকে যা বলা হয়েছে, তা পরিবর্তন করে দিয়েছে I ফলে আমি জালেমদের উপর আসমান থেকে আজাব নাজিল করেছি তাদের অবাধ্যতার কারণে I
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
08/
কুরআন মাজিদের আট নং রুকুটি সূরা বাকারার ষাট ও একষট্টি নং আয়াত নিয়ে গঠিত I
এই রুকুর প্রথম আয়াতে আল্লাহ বলেন, আর যখন মুসা নিজ জাতির জন্য পানি প্রার্থনা করলেন, তখন আমি বললাম, তুমি তোমার লাঠি দিয়ে পাথরের উপর মার I ফলে তার মাধ্যমে বারটা ঝর্ণা প্রবাহিত হল I প্রত্যেক গোত্র নিজেদের পানি পানের স্থানও চিনে নিল I তোমরা আল্লাহর রিজিক হতে খাও এবং পান কর I তবে জমিনে ফাসাদ ছড়িয়ে দিও না I
দ্বিতীয়ে আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, আর যখন তোমরা বলেছিলে, হে মুসা, আমরা এক ধরনের খাবারের উপর ধৈর্য্য ধারণ করতে পারব না I তুমি আমাদের জন্য প্রার্থনা কর এমন বস্তুসামগ্রীর, যা ভূমি উতপাদন করে যেমন তরকারী, কাকড়ী, গম, মসুরী, পেঁয়াজ I তিনি বললেন, তোমরা কি এমন কিছু চাও, যা নিকৃষ্ট, এমন কিছুর পরিবর্তে, যা উতকৃষ্ট I তোমরা কোন শহরে নেমে যাও I কেননা তোমাদের জন্য তোমাদের প্রার্থিত বস্তু সেখানে থাকবে I আর তাদের উপর লাঞ্চনা ও পরমুখাপেক্ষিতা আরোপ করে দেওয়া হল I আর তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে অসন্তুষ্টি নিয়ে ঘুরতে লাগল I এটা এজন্য যে, তারা নাফরমানি করেছে ও তারা সীমালংঘন করেছে I
BFI Institute
সু-শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড।
Operating as usual
بسم الله الرحمن الحيم
বাংলা শেখার যাত্রা
08/
পাঞ্জেরি
ফররুক আহমদ
কবিতার ব্যাখ্যা
ফররুখ আহমদের ‘সাত সাগরের মাঝি' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত ‘পাঞ্জেরী' একটি অত্যন্ত বিখ্যাত কবিতা। ‘পাঞ্জেরী'তে আমরা শুনি এক অবসাদগ্রস্ত নাবিকের ক্লান্ত কণ্ঠস্বর : ‘রাত পোহাবার কত দেরী পাঞ্জেরী?' জাহাজটি সমুদ্র বক্ষে, কিন্তু প্রায় নিশ্চল। কবি একাকী ভুলে দাঁড় টানছেন। তিনি পাঞ্জেরীকে উদ্দেশ্য করে কথা বলছেন। ‘পাঞ্জেরী' অর্থ কান্ডারী যিনি মাস্তুলে বসে দিক-নির্দেশনা দেন। কিন্তু এই কান্ডারী ঘুমিয়ে আছেন। সময় রাত্রি বেলা। পরিবেশ প্রতিকূল। আকাশ মেঘে-ঢাকা, ‘সেতারা, হেলাল এখনো ওঠেনি জেগে'। সম্মুখে কুয়াশা ঘেরা। চারদিকে শূন্যতা বিরাজ করছে। বক্তার হঠাৎ প্রশ্ন, জাহাজের অবস্থান, রাত্রি বেলা, প্রতিকূল পরিবেশ একটি নাটকীয় দৃশ্যের অবতারণা করেছে।
দু'জন চরিত্রের উপস্থিতি আমরা অনুভব করি। একজন দাঁড়ী, যিনি বক্তব্য পেশ করছেন : আর একজন পাঞ্জেরী, তিনি মাস্তুলে বসে আছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ব্যক্তির কোন প্রতিক্রিয়া নেই I কারণ তিনি ঘুমিয়ে আছেন। জাহাজে অন্যকোন নাবিক আছে বলে মনে হয় না। সব কিছু মিলে ক্লান্তি, উৎকণ্ঠা ও হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে। দরিয়ার বুক চিরে সফরের যে উদ্দীপনা, উত্তাল সমুদ্রের মুখোমুখি হওয়ার মধ্যে যে উত্তেজনা এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যে সংকল্প যা অন্যান্য দরিয়া সম্পর্কিত কবিতায় সাধারণত আমরা দেখেছি তা ‘পাঞ্জেরী'তে অনুপস্থিত। সব উৎসাহ নিভে গেছে। কখন রঙিন উসার উদয় হবে তার জন্য তিনি প্রহর গুণছেন।
প্রত্যেক স্তবকের শুরুতে ‘রাত পোহাবার কত দেরী পাঞ্জেরী?' এবং শেষে ‘তুমি মাস্তুলে আমি দাঁড় টানি ভুলে' এই চরণগুলোর পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। এই পুনরাবৃত্তি বক্তার বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থার, তার গভীর হতাশার বহিঃপ্রকাশ, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। আবেগ যখন গভীর হয়, তখন নিজের অজান্তে মানুষ পুনরাবৃত্তি করে। তাছাড়া, এ ধরনের মানসিক অবস্থা প্রলম্বিত হয় এবং সেটা গভীর হতে গভীরতর স্তরে নেমে যায়। বিপর্যয় আরো ভয়ঙ্কর রূপে প্রতিভাত হয়। আলোচ্য কবিতার দ্বিতীয় স্তবকে আমরা সেটাই লক্ষ্য করি :
‘দীঘল রাতের শ্রান্ত সফর শেষে ‘
কোন দরিয়ার কালো দিগন্তে আমরা পড়েছি এসে?
একী ঘন-সিয়া জিন্দিগানীর বা'র
তোলে মর্সিয়া ব্যথিত দিলের তুফান-শ্রান্ত খা'ব,
অস্ফূট হ'য়ে ক্রমে ডুবে যায় জীবনের জয়ভেরী।
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
সম্মুখে শুধু অসীম কুয়াশা হেরি।’’
প্রথম স্তবকের বক্তব্য ও আবেগ এখানে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। চিত্রকল্পে পরিবেশের উপস্থাপনা আরো ভয়ঙ্কর রূপ পেয়েছে। ‘দীঘল রাতের শ্রান্ত সফর', ‘কালো দিগন্ত', ‘ঘন-সিয়া জিন্দিগানীর বা'ব', ‘ব্যথিত দিলের তুফান-শ্রান্ত খা'ব, ‘ক্রমে ডুবে যাওয়া জীবনের জয়ভেরী'-এসব চিত্রকল্পে পরিবেশের আতঙ্ক দিলের পেরেশানী, জীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন-সাধ বিলীন হয়ে যাওয়ার ধারণা প্রতিফলিত হয়েছে। প্রথম স্তবকের সঙ্গে দ্বিতীয় স্তবকের যোগসূত্র Logical নয়, Emotional. যুক্তির নয়, আবেগের।
কবিতাটির একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য এই যে, এখানে বক্তার Mood বা মানসিক অবস্থা ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তিত হয়েছে। দ্বিতীয় স্তবকে যে প্রচন্ড হতাশা ব্যক্ত হয়েছে, তৃতীয় স্তবকে সে Mood ভিন্ন মোড় নিয়েছে। বক্তা আত্মমগ্ন থাকেননি, বিপর্যয়ের মধ্য থেকে বেরিযে আসার চেষ্টা করছেন। তিনি নিজের কথা ভুলে গিয়ে বন্দরে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের কথা ভাবছেন। তারা বন্দরে বসে জাহাজের আগমনের অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন। হয়তো কুয়াশায়, জ্যোৎস্না মায়ায় জাহাজের পাল দেখতে পাচ্ছেন। তার অবস্থান থেকে বক্তার এই Sudden fantasy. এই আকস্মিক অবাস্তব ধারণা তার মনস্তত্ত্বের তার কল্পনা শক্তির একটি নাটকীয় উপস্থাপনা বলে অভিহিত করা যায়। সেই সঙ্গে যাত্রীদের প্রতি তার সহানুভূতি উদ্বেলিত হয়ে উঠেছে :
‘আহা পেরেশান মুসাফির দল
দরিয়া কিনারে জাগে তক্দিরে
নিরাশার ছবি এঁকে।’
বন্দরে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ‘মুসাফির' বলে উল্লেখ করা হয়েছে কারণ তারা জাহাজের যাত্রী হয়ে বন্দর থেকে বন্দরে, দেশ থেকে দেশান্তরে উত্তেজনাপূর্ণ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে চায়। কিন্তু জাহাজের দেখা নেই, তাই তারা নিরাশ। বক্তার সঙ্গে তাদের এইখানে মিল। উভয়ই হতাশাগ্রস্ত। জাহাজ বন্দরে না পৌঁছে পথহারা এই দরিয়ার স্রোতে ভেঙ্গে চলেছে, কোথায় যাচ্ছে, কোন সীমাহীন দূরে তা জানা নেই। পরক্ষণে তিনি আবার মুসাফিরদের কথা ভাবছেন :
‘মুসাফির দল ব'সে আছে কূল ঘেরি', আর তিনি ‘ভুলে একাকী দাঁড় টানছেন ‘রাতের ম্লান জুলমাত হেরি।'
এই পর্যায়ে তার চিন্তা আবার মোড় নিয়েছে। কেন এমন হলো তার কারণ তিনি নির্দেশ করছেন :
‘শুধু গাফলতে, শুধু খেয়ালের ভুলে
দরিয়া-অথই ভ্রান্তি নিয়াছি তুলে,
আমাদের ভুলে পানির কিনারে মুসাফির দল বসি'
দেখেছে সভয়ে অস্ত গিয়াছে তাদের সেতারা, শশী;
মোদের খেলায় ধূলায় লুটায়ে পড়ি'
কেঁদেছে তাদের দুর্ভাগ্যের বিস্বাদ শর্বরী।’
এখানে যাত্রীদের অতীত গৌরবের প্রতি ইঙ্গিত আছে। এক সময় তাদের ‘সেতারা, শশী' আকাশে জ্বল জ্বল করতো। কিন্তু তারা সভয়ে সেই ‘সেতারা, শশী' অস্ত যেতে দেখেছে, তাদের দুর্ভাগ্যের রজনী ধূলায় লুটায়ে পড়ে কেঁদেছে। তাদের এই বিপর্যয়ের জন্য বক্তা দু'টি কারণ নির্দেশ করেছেন : ‘গাফলত' ও ‘খেয়ালের ভুল।' এই ‘গাফলত' ও ‘ভুল' যাত্রীদের নয়, মাঝি-মাল্লাদের। এর মধ্যে বক্তা নিজেকেও অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে মনে হয় : ‘আমাদেরই ভুলে পানির কিনারে মুসাফির দল বসি' তাদের ‘সেতারা শশী' অস্ত যেতে দেখেছে; ‘মোদের খেলায়' তাদের ‘বিস্বাদ শর্বরী' ধূলায় লুটিয়ে পড়ে কেঁদেছে। তবে এই কারণগুলোর কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি, শুধু উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র। কি ধরনের গাফলতি করা হয়েছে, কি ভুল করা হয়েছে তা বলা হয়নি। তাই কারণগুলোর মধ্যে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে।
এরপর বক্তা সওদাগরদের কথা বলছেন। স্পষ্টত যাত্রী ও সওদাগরদের মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে। যাত্রীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে দরিয়া কিনারে বসে আছে। সওদাগররা বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিন্তু তাদের ঘরে ঘরে আহাজারী-ক্রন্দন। তারা ব্যবসায়ী, তাদের ব্যবসা ধ্বংস হয়ে গেছে মাঝি-মাল্লাদের উপরোক্ত গাফলতি ও ভুলের জন্য।
এ পর্যায়ে আর একটি Sudden fantasy. বক্তা আগেই উল্লেখ করেছেন যে, তারা কোন কালো দিগন্তে এসে পৌঁছেছেন তা জানেন না। কিন্তু এখন তিনি কিসের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন? যেন তিনি এই আওয়াজের কাছাকাছি এসে পৌঁছেছেন। এ আওয়াজ কিসের তা নিয়ে তার মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে :
ওকি বাতাসের হাহাকার,-ওকি রোণাজারি ক্ষুধিতের!
ওকি দরিয়ার গর্জন,-ওকি বেদনা মজলুমের।!
এখানে যে অলঙ্কার (Figurative Language) ব্যবহার করা হয়েছে তাকে Parallelism বা সমান্তরাল বলা হয়। প্রত্যেক বাক্যের দু'টো অংশ সমান্তরাল অর্থাৎ ব্যাকরণগতভাবে এক : ‘ওকি বাতাসের হাহাকার-ওকি রোণাজারি ক্ষুধিতের।/ওকি দরিয়ার গর্জন-ওকি বেদনা মজলুমের।' এর ফলে একটা Sound Pattern বা ঐক্যতান সৃষ্টি হয়েছে। আবার উভয় অংশের মধ্যে একটা Contrast বা বৈপরিত্য প্রকাশ পেয়েছে। বাতাসের হাহাকার আর ক্ষুধিতের রোণাজারি এক নয়। দরিয়ার গর্জন আর মজলুমের বেদনার মধ্যে তফাৎ আছে। উভয় বাক্যের শেষের অংশটি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। বাতাসের হাহাকার আর দরিয়ার গর্জনের চেয়ে ক্ষুধিতের রোণাজারি ও বেদনা এখানে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। আওয়াজটা ‘ক্ষুধাতুর পাঁজরায় মৃত্যুর জয়ভেরী' কিনা সে অনুমানও বক্তা করছেন। সবগুলো অনুমান সঠিক, কিন্তু এ সবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘বন্দরে কৈফিয়তের তীব্র ভ্রুকুটি।' ‘অগণন ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি।' তাই বক্তা পাঞ্জেরীকে জেগে ওঠার জন্য প্রচন্ড তাগিদ দিচ্ছেন :
দেখ চেয়ে সূর্য ওঠার কত দেরী, কত দেরী
কবিতাটির কাঠামো একটা সংঘাতকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এই সংঘাত দু'টি দলের মধ্যে। একদিকে যাত্রী ও সওদাগরের দল। অন্যদিকে পাঞ্জেরী ও নাবিক। আমরা দেখেছি যাত্রীরা বন্দরে, পানির কিনারে জাহাজের আগমনের অপেক্ষায় প্রহর গুণছে। তারা হতাশাগ্রস্ত। সওদাগরের ঘরে ঘরে আহাজারী উঠেছে। পক্ষান্তরে, কান্ডারী নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। জাহাজ পথহারা হয়ে নিরুদ্দিষ্টভাবে অতল সাগরের বুকে ভেসে চলেছে। কিন্তু কবিতার শেষে আমরা দেখি ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি। এটা তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। নিষ্ক্রিয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একটা ধূমায়িত অসন্তোষ। নেতা নির্বিকার, ঘুমে অচেতন। আমরা সংঘাতের কথা বলছি। কিন্তু কবিতায় ঠিক সংঘাত দেখানো হয়নি। সংঘাতের পূর্ব লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে তীব্র ভ্রুকুটির মধ্যে রোণাজারী শেষ পর্যন্ত কৈফিয়তের রূপ নিয়েছে। পাঞ্জেরী জেগে না উঠলে তার বিপদ আসন্ন-এই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
এই দুই দলের মধ্যে বক্তার অবস্থান কোথায়? তিনি একজন নাবিক। সম্ভবত তিনি নেতাদের একজন। তিনি এক পর্যায়ে উল্লেখ করেছেন : ‘আমাদের ভুলে পানির কিনারে মুসাফির দল বসি/দেখেছে সভয়ে অস্ত গিয়াছে তাদের সেতারা, শশী।' অতএব যাত্রীদের দুর্দশার জন্য তিনিও দায়ী। কিন্তু তার সঙ্গে পাঞ্জেরী ঘুমালেও তিনি একাকী দাঁড় টেনে চলেছেন এবং ক্ষুধিত মানুষের প্রতি তার সহানুভূতি উদ্বেলিত হয়ে উঠেছে। তিনি শুধু সহানুভূতি প্রকাশ করে ক্ষান্ত হননি, পাঞ্জেরীকে জেগে উঠে দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য জোর তাগিদ দিচ্ছেন।
কবিতাটির বক্তব্য কি? সেটা এক কথায় বলা মুশকিল। তাছাড়া, বক্তব্য ও তার কাব্যিক উপস্থাপনা এক জিনিস নয়। ছন্দ, শব্দ, রূপক, চিত্রকল্প, প্রতীক, নাটকীয়তা এবং বাস্তবতা ও fantasy'র সমন্বয়ে যে অর্থ প্রকাশ পেয়েছে তা সংক্ষেপে ব্যক্ত করা যায় না।
সমুদ্র, জাহাজ, নাবিক-এই চিত্রকল্পগুলো ইতোপূর্বে ফররুখ আহমদের একাধিক কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে। এগুলো শুধু চিত্রকল্প নয়, প্রতীকও বটে। সবগুলো মিলিয়ে বিবেচনা করলে অনুমান করা যায় যে, তিনি একটি জাতির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। আমরা আগেই বলেছি, অন্যান্য দরিয়ার কবিতায় সেই জাতিকে দুঃসাহসিক অভিযাত্রীর প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। কিন্তু ‘পাঞ্জেরী'তে তাদের দুর্দশার, আশা-ভঙ্গের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পেয়েছে। নেতৃত্বের গাফলত ও ভুল তাদের দুর্দশার কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাঞ্জেরী মাস্তুলে বসে ঘুমুচ্ছেন; জাহাজ কোন দিকে যাচ্ছে সে দিকে তার খেয়াল নেই। তাই কবিতার শেষে তাকে প্রচন্ড তাগিদ দিয়ে জেগে ওঠার আহবান জানানো হয়েছে। তিনি না জাগলে এই জাতির দুর্দশার রাত পোহাবে না; নতুন ঊষার উদয় হবে না; তাদের বিরুদ্ধে ক্ষুধিত মানুষের রোষ তীব্র হয়ে উঠবে। তাই পাঞ্জেরীতে জেগে ওঠার প্রচন্ড তাগিদ দিয়ে নাবিকের বক্তব্য শেষ হয়েছে।
এই বক্তব্য সরাসরি নয়, বক্তৃতার ভঙ্গিতে নয়। বিভিন্ন চিত্রকল্প, রূপক, প্রতীকের মাধ্যমে নাটকীয়ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। কবিতার স্তবকগুলো পরস্পরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। তবে এই সম্পর্ক যুক্তির নয়, আবেগের এবং এই আবেগের বিভিন্ন স্তর লক্ষ্য করা যায়। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, হতাশা, গণমানুষের প্রতি সমবেদনা, ক্ষুধিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি, নেতৃত্বের গাফলত ও ভুলের জন্য অনুশোচনা, অবশেষে কান্ডারীকে জাতির প্রতি দায়িত্ব পালনের উদাত্ত আহবান-সবকিছু মিলে ‘পাঞ্জেরী' হয়ে উঠেছে একটি অনবদ্য লিরিক এবং ফররুখ আহমদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা।
(সংগৃহীত ও পরিমার্জিত)
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরআন অধ্যয়ন অভিযাত্রা
08/
কুরআন মাজিদের আট নং রুকুটি সূরা বাকারার ষাট ও একষট্টি নং আয়াত নিয়ে গঠিত I
এই রুকুর প্রথম আয়াতে আল্লাহ বলেন, আর যখন মুসা নিজ জাতির জন্য পানি প্রার্থনা করলেন, তখন আমি বললাম, তুমি তোমার লাঠি দিয়ে পাথরের উপর মার I ফলে তার মাধ্যমে বারটা ঝর্ণা প্রবাহিত হল I প্রত্যেক গোত্র নিজেদের পানি পানের স্থানও চিনে নিল I তোমরা আল্লাহর রিজিক হতে খাও এবং পান কর I তবে জমিনে ফাসাদ ছড়িয়ে দিও না I
দ্বিতীয়ে আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, আর যখন তোমরা বলেছিলে, হে মুসা, আমরা এক ধরনের খাবারের উপর ধৈর্য্য ধারণ করতে পারব না I তুমি আমাদের জন্য প্রার্থনা কর এমন বস্তুসামগ্রীর, যা ভূমি উতপাদন করে যেমন তরকারী, কাকড়ী, গম, মসুরী, পেঁয়াজ I তিনি বললেন, তোমরা কি এমন কিছু চাও, যা নিকৃষ্ট, এমন কিছুর পরিবর্তে, যা উতকৃষ্ট I তোমরা কোন শহরে নেমে যাও I কেননা তোমাদের জন্য তোমাদের প্রার্থিত বস্তু সেখানে থাকবে I আর তাদের উপর লাঞ্চনা ও পরমুখাপেক্ষিতা আরোপ করে দেওয়া হল I আর তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে অসন্তুষ্টি নিয়ে ঘুরতে লাগল I এটা এজন্য যে, তারা নাফরমানি করেছে ও তারা সীমালংঘন করেছে I
ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট শেখার যাত্রা
06/ 03.
ক. HTML & CSS
ওয়েব এক্সেস প্রক্রিয়া
ওয়েব সাইট তৈরির জন্য কোড নিয়ে কাজ শুরুর আগে ওয়েব এক্সেসের বিভিন্ন পদ্ধতি ও টার্মিনলজি সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে I
• ব্রাউজার : যে সফটওয়ার ব্যবহার করে ওয়েবসাইট এক্সেস করা হয়, তাকে ওয়েব ব্রাউজার বলা হয় I যেমন - ফায়ারফক্স, ইন্টার্নেট এক্সপ্লোরার, সাফারি, ক্রোম, অপেরা I
একটি ওয়েব পেইজের দৃশ্য হিসেবে ইউজার তার ব্রাউজারে একটি ওয়েব এড্রেস লিখে I সফটওয়ার ম্যানুফ্যাকচারগুলো প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফিচার সমৃদ্ধ এবং বিভিন্ন ল্যাংগুয়েজের নতুন এডিশনগুলো সাপোর্ট করে ব্রাউজারের এরকম নতুন ভার্সনগুলো রিলিজ দেয় I এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, কম্পিউটারের অনেক মালিক এই ব্রাউজারগুলোর লেটেস্ট ভার্সনগুলো রান করে না I
• ওয়েব সার্ভার : ব্রাউজার যখন কোন ওয়েব পেইজ খোঁজে, তখন রিকুয়েস্টটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি বিশেষ কম্পিউটারের কাছে যায়, ঐ বিশেষ কম্পিউটারকে ওয়েব সার্ভার বলে যা ওয়েব সাইটের হোস্ট I
ওয়েব সার্ভার হল এমন বিশেষ কম্পিউটার, যা সর্বদা ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকে এবং কেউ ওয়েব পেইজের জন্য রিকুয়েস্ট করলে ওয়েব পেইজ পাঠানোর জন্য প্রস্তুত থাকে I
কিছু বড় কোম্পানি নিজেদের ওয়েব সার্ভার রান করে কিন্তু কমন হল বিভিন্ন ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিগুলো নির্ধারিত ফির বিনিময়ে হোস্টিং সার্ভিস প্রদান করে I
• ডিভাইস : মানুষ বিভিন্ন ডিভাইসে ওয়েব সাইট এক্সেস করে I যেমন ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, টেবলেট, মোবাইল-ফোন ইত্যাদি I এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, বিভিন্ন ডিভাইসের স্ক্রিন সাইজ একেক রকম হয় এবং বিভিন্ন ডিভাইস ওয়েবের সাথে দ্রুত কানেক্ট হয় I
• স্ক্রিন রিডার : স্ক্রিন রিডার হল এমন কিছু প্রোগ্রাম যা ইউজারকে কম্পিউটার স্ক্রিনের কনটেন্ট পাঠ করে শুনায় I
খ. JAVASCRIPT
স্ক্রিপ্ট লেখা : কোন স্ক্রিপ্ট লেখার জন্য প্রথমে একটি লক্ষ্য ঠিক করতে হবে এবং ঐ লক্ষ্যটি পূরণে প্রয়োজনীয় কাজগুলোর তালিকা করতে হবে I
মানুষ তেমন বেশি চিন্তা না করে বিভিন্ন লক্ষ্য পূরণ করতে পারে I যেমন কেউ চাইলে বিস্তারিত নির্দেশনা ছাড়া গাড়ি চালাতে, খাবার রান্না করতে ও মোবাইলে কথা বলতে পারে I
কিন্তু এই কাজগুলো কেউ সর্বপ্রথম করলে তাকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে সময় নিয়ে কাজগুলো শিখতে হবে I তেমনিভাবে নতুন কোন স্কিল শিখতে গেলে ঐ স্কিলকে বিভিন্ন ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিয়ে শিখতে হবে I
সুতরাং স্ক্রিপ্ট হল কতগুলো ছোট ছোট নির্দেশনার সিরিজ, যে নির্দেশনাগুলোর প্রত্যেকটি নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য তৈরি করা হয়েছে I এই কারণে কোন স্ক্রিপ্ট লেখা বা তৈরি করা কোন রেসিপি বা ম্যানুয়াল লেখার মত যা কম্পিউটার অনুসরণ করবে I
গ. PHP
Introduction to Dynamic Web Content
যখন কেউ ব্রাউজারের এড্রেস বারের মধ্যে এইচটিটিপি পার্মালিংক সেট করবে, তাহলে ব্রাউজার সার্ভারের আইপি এড্রেস খোঁজবে, ব্রাউজার সার্ভারে হোম পেইজের জন্য একটি রিকুয়েস্ট পাঠাবে, রিকুয়েস্টটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্ভারে পোঁছলে সার্ভার রিকুয়েস্টটি গ্রহণ করে এর হার্ডিস্কে পাঠাবে I তারপর ওয়েভ পেইজটি ব্রাউজারের কাছে ফিরে আসবে এবং ব্রাউজার ওয়েব পেইজটি দেখাবে I
ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত সকল মেশিনের আইপি এড্রেস থাকে I কিন্তু ব্রাউজার ডোমেইন নেইম সার্ভিস তথা ডিএনএস নামের এডিশনাল ইন্টারনেট সার্ভিস কন্সাল্ট করে তার আইপি এড্রেস খুঁজে বের করতে এবং তারপর এটাকে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত হতে ব্যবহার করা হয় I
ঘ. WORDPRESS :
ট্রান্সমিটে এফটিপির মাধ্যমে ফাইল আপলোড
ফাইলগুলো আপলোড হয়ে গেলে ওয়েব ব্রাউজারে সাইট ভিজিট করতে হবে I একটি কনফিগারেশন ফাইল তৈরি করতে হবে রিকুয়েস্টেডিট ইনফরম্যাশনগুলো পূরণ করে ইন্সটলশন কম্প্লিট করে সাবমিট করতে হবে I
ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট শেখার যাত্রা
05/ 02.
ক. HTML & CSS
বইয়ের কাঠামো : তিন ধাপে এই বইয়ে ওয়েব পেইজ তৈরির কাজ শেখানো হবে I প্রথমে এইচটিএমএল নিয়ে আলোচনা হবে, এরপর সিএসএস এবং এরপর প্র্যাক্টিক্যাল I
খ. JAVASCRIPT
স্ক্রিপ্ট এমন কিছু নির্দেশনা নিয়ে গঠিত, যে নির্দেশনাগুলো স্টেপ বাই স্টেপ কোন কম্পিউটার অনুসরণ করতে পারে I
ওয়েব পেইজে ইউজারের আগ্রহের উপর নির্ভর করে ব্রাউজার কোন স্ক্রিপ্টের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করতে পারে I
স্ক্রিপ্টগুলো নিজেদের পারিপার্শিক পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে কোডের বিভিন্ন সেকশন রান করতে পারে I
গ. PHP
Introduction to Dynamic Web Content
এইচটিটিপি ও এইচটিএমএল : বার্নার্স লি এর মৌলিক আলাপ
এইচটিটিপি হল এমন গভার্নিং রিকুয়েস্ট-রেস্পন্স স্ট্যান্ডার্ড কমিউনিকেশন যা কম্পিউটার ইউজারের রানিং ব্রাউজার ও ওয়েব সার্ভারের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে I সার্ভারের কাজ হল ক্লায়েন্টের নিকট থেকে রিকুয়েস্ট গ্রহণ করা এবং অর্থবহ পন্থায় রিপ্লেই দিতে এটেম্প্ট করা I
সাধারণত রিকুয়েস্টিড ওয়েব পেইজের সার্ভিং আপের মাধ্যমে I এই কারণে সার্ভার টার্মটি ব্যবহৃত হয় I কোন সার্ভারের ন্যাচারাল কাউন্টারপার্ট হল একজন ক্লায়েন্ট I এজন্য টার্মটি ওয়েব ব্রাউজার ও ওয়েব ব্রাউজার রানিং কম্পিউটার উভয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় I
ক্লায়েন্ট ও সার্ভারের মাঝে আরো অনেক ডিভাইস থাকতে পারে I যেমন রাউটার, প্রক্সি, গেটওয়ে ইত্যাদি I এই ডিভাইসগুলো এটা নিশ্চিত করে যে, ক্লায়েন্ট ও সার্ভারের মাঝে রিকুয়েস্ট ও রেসপন্স ঠিকমত ট্রান্সফার হচ্ছে I
মূলত তারা এই ইনফরমেশন পাঠানোর জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে I
একটি ওয়েব সার্ভার মান্টিপল কানেকশন হ্যান্ডেল করতে পারে, আর ক্লায়েন্টের সাথে কানেক্ট করতে না পারলে আগত কানেকশন শোনার জন্য সময় দেয় I আর কোন ইনফরমেশন পৌঁছলে, এর রিসিপ্ট কনফার্ম করার জন্য রেনপন্স ব্যাক করে I
রেসপন্স / রিকুয়েস্ট প্রসিডিউর
কোন ওয়েব ব্রাউজারের অন্তর্ভুক্ত রিকুয়েস্ট / রেসপন্স প্রসেস ওয়েব সার্ভারকে কোন ওয়েব পেইজ সেন্ড করতে বলে এবং সার্ভার পেইজটি পাঠায় আর ব্রাউজার তখন পেইজটি দেখায় I
ঘ. WORDPRESS
পিএইচপি মাই এডমিনে ডাটাবেইজ তৈরি
নতুন ডাটাবেইজ ইউজার খোলার অপশন থাকলে সেটা খুলতে হবে I
ইংরেজি শেখার যাত্রা
English learning journey
07/
প্রস্তুতিমূলক পাঠ
I – আমি Me – আমাকে My – আমার Myself – আমি নিজে
We – আমরা Us – আমাদেরকে Our – আমাদের Ourselves – আমরা নিজেরা
You – তুমি, তোমরা You – তোমাকে, তোমাদেরকে Your – তোমার, তোমাদের Yourself – তুমি নিজে,
Yourselves – তোমরা নিজেরা
He /She – সে Him /Her – তাকে His /Her – তার Himself /Herself – সে নিজে
It – এটা It – এটাকে Its – এটার Itself – এটা নিজে
They – তারা Them – তাদেরকে Their – তাদের Themselves – তারা নিজেরা
What – কী, কী কী When – কখন, কখন কখন Where – কোথায়, কোথায় কোথায়
Why – কেন How – কিভাবে, কেমন Who – কে, কে কে, কারা
Whom – কাকে, কাদেরকে Whose – কার, কাদের Which – কোনটি, কোনগুলো
ইংরেজি শেখার যাত্রা
English learning journey
06/
ভূমিকা
আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) এর হামদ ও শুকর আদায় করছি, যিনি আমাকে শিক্ষকতার মত মহান পেশায় যুক্ত থাকার তাওফিক দিয়েছেন I রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এবং উনার পূত-পবিত্র পরিবারবর্গের প্রতি দরুদের হাদিয়া প্রেরণ করছি, যিনি শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন I
শিক্ষকতা-জীবনের প্রথম কর্মস্থল জামিয়া আবু বকর ছিদ্দিক (রা.) এ একটি শ্রেণিতে ইংরেজি শেখানোর দায়িত্ব অর্পিত হয় আমার উপর I দাখিল পরিক্ষার পর এফএম মেথডে স্পোকেন ইংলিশ বিষয়ে কোর্স করেছিলাম I মাদরাসার শিক্ষার্থীদেরকে এফএম মেথডের আলোকে শেখানোর চেষ্টা করেছিলাম I অল্প সময়ে স্বল্প হলেও তারা উপকৃত হওয়ায় আমি শিক্ষক হিসেবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম I
শিক্ষকতার একটি পর্যায়ে তাকদির আমাকে নিয়ে এসেছে আজিজুল উলুম মাদরাসার তাদরিসের আসনে I নতুন সহকর্মীগণ আমাকে অল্প সময়ে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করে আর শিক্ষার্থীরাও আমার প্রতি তাদের মুগ্ধতা প্রকাশ করে I শ্রদ্ধেয় সহকর্মীগণের আন্তরিকতা ও স্নেহের শিক্ষার্থীদের হৃদ্যতার কারণে সকলের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু শেখানোর উদ্যোগ নেওয়ার অনুপ্রেরণা অনুভব করলাম I মাদরাসার পাঠ্যক্রমে ইংরেজি বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে রয়েছে I শ্রদ্ধেয় সহকর্মী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাহেব ও মাওলানা মহিউদ্দিন সাহেবের সাথে শিক্ষার্থীদেরকে ইংরেজি শেখানোর বাপারে পরামর্শ করলে তারা ইতিবাচক সাড়া দেন ও সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন I মহান আল্লাহ উভয়ের আগামীকে মসৃণ ও সাফল্যমণ্ডিত করুক I
মূলত ইংরেজি শেখা ও শেখানোর যাত্রা আরম্ভের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আগ্রহই মূল ভূমিকা রেখেছে I বিশেষ করে আজিজুল উলুম মাদরাসার কিতাব শাখার ষষ্ঠ বর্ষ তথা শাশুমের শিক্ষার্থী আয়েশা ছিদ্দিকা, সুমাইয়া, সায়েমা, মাইমুনা, উর্মি, উম্মে হাবিবা, সাদিয়া ও রিফা শেখার জন্য এগিয়ে না আসলে এবং শেখানোর জন্য আমাকে বাধ্য না করলে হয়ত এই যাত্রায় পথচলা অব্যাহত থাকত না I এজন্য হৃদয়ের গহীন থেকে তাদের জন্য দোয়া ও শুভকামনা I
শেখার সুবিধার্থে দৈনিক নির্ধারিত পড়া শিট আকারে শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়ার চেষ্টা করেছি I
শিটগুলো লেখার ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়েছি Spoken & Written English on FM Method বইটি থেকে I বইটির লেখকের দুনিয়া-আখেরাতের সফলতা কামনা করছি I
শিটগুলো সম্পাদনার ক্ষেত্রে হাফেজ মাওলানা দেলোওয়ার হোসেন সাহেব ও মাওলানা মহিউদ্দিন সাহেবের কাছে বিশেষভাবে ঋণী I আল্লাহ ( সুবহানাহু ওয়া তাআলা ) তাদের সকল খেদমত করুন এবং লেখালেখির জিহাদে মুসার লাঠি হাতে নিয়ে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন I
পরিশেষে কায়মনোবাক্যে মহান রবের দরবারে বিনীত আবেদন করছি যে, এই শিটগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ ( সুবহানাহু ওয়া তাআলা ) আমাদেরকে সর্বোচ্চ উপকৃত হওয়ার তাওফিক দান করুন I
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Location
Category
Contact the school
Telephone
Website
Address
Anowara
Chittagong
Near Halishahar Ahmed Mia City Corporation Girls' High School, Salt-Gola Crossing Road, 38no. Ward, South-Middle Halishahar, Bandar
Chittagong
A place for enlightening yourselves
Chowmoni, Agrabad
Chittagong
An investment in knowledge pays the best interest. – ...
বি. কে টাওয়ার (নিচ তলা), লালচাঁন্দ রোড, গুলজার মোড়, চট্টগ্রাম
Chittagong, 4203
A University Admission Coaching.
Chittagong, 4000
Math,Physics, Biology, Chemistry, Bangla,English, GK,IQ •SSC •HSC •Admission
ROAD NO-07, O. R. NIZAM ROAD. GEC. Circle. CHITTAGONG
Chittagong
STUDY IN -UK.AUSTRALIA.CANADA.EUROPE.ASIA. ALL-UNIVERSITY ADMISSION.
Chittagong, 4200
This page is to serve you with 1.Digital Marketing Course. 2.Basic Computer. 3.Spoken English. 4.Graphics Designing Build a freelancing career with us with confidence and trust.
Chittagong
We provide SOP, Fund Explanation & all other visa documentation services. We ensure the best service.
Halima Mansion, Baraipara, Bhaddarhat, Chattogram
Chittagong
A page with a full package of job notification services of all govt. and private jobs. You will get all job circulars and relevant information regularly. You will also be benefited from this page on your job preparation module.
Road 02, House 01, Block H, Halishahar Housing Estate
Chittagong, 4216
সুপ্ত মেধার বিকাশ ঘটাতে ক্যাডেট ভর্তির সর্ববৃহৎ Coaching Center "Cadet Care Bangladesh"halishar Br.
Hathazari
Chittagong, 4330
ইছাপুর ফয়জিয়া তাজবীদুল কোরআন মাদ্রাসা Isapur Madrasah