রিসালাতুল খাইর Risalatul Khair

রিসালাতুল খাইর Risalatul Khair

Share

Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from রিসালাতুল খাইর Risalatul Khair, Educational Research Center, 102, Fatema Mansion, (Chondonpora Mosque Lane) Chandanpura, Sirajuddowla Road, Chittagong.

26/06/2025
Photos from রিসালাতুল খাইর Risalatul Khair's post 18/04/2025
03/04/2025

ধর্মীয় ক্যারিয়ার এবং আর্থিক ভবিষ্যৎ

(ইলমি যোগ্যতা ও জাগতিক প্রয়োজন পূরণ )

দীনী কর্মকান্ড ও ধর্মীয় পেশায় আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং আখেরাতই মুখ্য বিষয়, অর্থ মুখ্য বিষয় নয়। তবে অর্থের প্রাসঙ্গিকতা অনস্বীকার্য।
যে সকল বিষয়ে ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ হলে মাওলানা মৌলবির পেশা আর্থিকভাবেও একটা মাত্রায় সফল হয়, তাও স্মরণ রেখে ছাত্রত্ব গঠন কাম্য---

১. মাদ্রাসার নেছাবে যে সমস্ত কিতাব রয়েছে, সে কিতাবগুলো ভালোভাবে আত্মস্থ করা একটি বুনিয়াদি যোগ্যতা। নেসাবের কিতাব কেন্দ্রিক পরীক্ষাগুলোতে ভালো রেজাল্ট অনেক বড় ক্যারিয়ার।

নেসাবের কিতাব ভালো করে পড়াতে পারলে মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে সফল হওয়া যায়, একাধিক মাদ্রাসায় পড়ানো যায়।

২. যদি কারিকুলামভুক্ত কিতাবাদির যোগ্যতার সাথে সাথে কোন শাস্ত্রীয় বিষয়ে বিশেষ পারদর্শিতা থাকে, যেমন আরবি আদব ভালো জানা, উলুমুল হাদিস ভালো পারা, ফিকহ ফতোয়ায় যোগ্য হওয়া, ইলমুল কেরাতে পারদর্শী হওয়া ইত্যাদি, তাহলে মাদ্রাসা কেন্দ্রিক চাকুরি/খেদমতের পেশায় প্রভূত উন্নতি করা যায়।

৩. সুমধুর তেলাওয়াতের অধিকারী হওয়া। ভালো হাফেজ হলে তো নুরুন আলা নুর। সুললিত কন্ঠে আযান দিতে পারাও একটি ক্যারিয়ার। সঠিকভাবে ওয়াজ করতে পারা বড় যোগ্যতা। এতটুকু যোগ্যতা একজন মানুষের জাগতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য যথেষ্ট।

৪. ইবাদত বন্দেগীর প্রতি মনোযোগ থাকা অনেক বড় যোগ্যতা। যদি কোন আল্লাহওয়ালার সোহবতে থেকে রুহানিয়াত পয়দা করা যায়, তাহলে ইসলাহ ও ইরশাদেরও ক্ষেত্র তৈরি হয়। এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনমানুষ ওলামায়ে কেরামের খেদমতের জন্য এগিয়ে আসে ।

৫. নিজের ভিতর খেদমতের মানসিকতা, দায়িত্বশীলতা ও পরিচালনা দক্ষতা গড়ে তুললে প্রতিষ্ঠান করা যায়। মক্তব, হেফজখানা, এবতেদায়ী বালক/বালিকা মাদ্রাসা ও ইসলামী স্কুল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের সাথে সাথে সম্মানজনক কর্মসংস্থান হয়।

৬. আরবি উর্দুর সাথে সাথে বাংলা ভাষা ভালো জানলে অনুবাদের কাজ ও গ্রন্থ তৈরি করে মহৎ আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়।

৭. প্রতিষ্ঠিত আলেম-ওলামার সাথে সম্পর্ক গড়া এবং সে সম্পর্ককে কন্টিনিউ করা, সম্পর্ককে আস্থার পর্যায়ে উন্নীত করা। এতে ইলমী বেকারত্ব বিদূরিত হয়।

৮. বর্তমানে মক্তবের মুআল্লিম ট্রেনিং অথবা হুফ্ফাজের ট্রেনিং থাকলে প্রাথমিক কর্মক্ষেত্র খুব সহজেই মিলে যায়।

৯. সহিভাবে তাবিজ-তদবির-ঝাড়ফুক করলেও জরুরত পূরণ হয়।

১০. হাতের লেখা সুন্দর হওয়া, ক্যালিগ্রাফির কাজ জানা, সংগীত চর্চা, কম্পিউটারের কাজ জানা। এগুলোও একেকটা ক্যারিয়ার। বর্তমানে এগুলোরও চাহিদা রয়েছে।

১১. সব সময় সবার জন্য উন্নত চরিত্র ও মার্জিত ব্যবহার শেখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আচরণ-উচ্চারণ দেখেই যেন মানুষ মুগ্ধ হয়ে যায়। যে কোনো একটি যোগ্যতার সাথে এই জিনিসটা থাকলে রিজিকের টেনশন করতে হয় না।

১২. বহির বিশ্বের উচ্চতর পড়াশোনা ও ডিগ্রীধারি হওয়া এখন গুরুত্বপূর্ণ। কায়দা মত বহুমুখী সার্টিফিকেট অর্জন করাও দরকার। এতে সরকারি চাকুরীসহ নানা ধরণের কর্মক্ষেত্রের দুয়ার খোলে। ব্যবসা-বাণিজ্যের দুয়ার তো সব সময় সবার জন্য খোলা।

১৩. এই জমানায় নিজ গোত্রে ও প্রতিষ্ঠানে অবাঞ্ছিত হওয়ার মতো কোনো কার্যকলাপে লিপ্ত না হওয়া অনেক বড় ক্রেডিট। এই ক্রেডিট যার আছে, সে কাজে লেগেই যায়।

আমরা যারা ছাত্রত্ব শেষ করছি বা মাঝামাঝি পর্যায়ে আছি, চিন্তা করি-- এই ক্যারিয়ারগুলো আমার ভিতর আছে কি না। কোনটা আছে কোনটা নেই।

অন্যথায় মৌলবিত্ব একটি সম্মানজনক এবং জরুরত পুরা হওয়ার মত বৃত্তি হওয়া সত্ত্বেও আমার জীবনে বেকারত্ব দেখা দিতে পারে। সুতরাং এখনই ভাবতে হবে এবং ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করার প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সহায়।

03/04/2025

শখছে হাকিকি ও শখছে কানুনী
(ওস্তাদ ও প্রতিষ্ঠান)

ঐতিহ্যবাহী ওলামা বাজার মাদ্রাসার মুফতি ও মুহাদ্দিস, সেক্রেটারি ও নাজিমে তালিমাত, ফুফাজি, হযরত মাওলানা আহমদ করিম সাহেব রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর বাড়ির কামরায় সব সময় দেখেছি, সুন্দর ফ্রেমে বাধাই করা একখানি পুরানো সনদপত্র।

এটি মূলত শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর স্বাক্ষরিত ইজাযতনামা।

রাষ্ট্রের প্রতীক বা সর্বোচ্চ ব্যক্তির ছবি যেমন সরকারি অফিসে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সাঁটানো থাকে, তেমনি তিনি মাথার উপর সযতনে সেঁটে রাখতেন সেই ইজাযতনামাটি।

দারুল উলুম দেওবন্দের প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট তিনি সংগ্রহ করেছিলেন কি না, করলেও কতটুকু যত্ন করে রেখেছিলেন সন্দেহ। কিন্তু হযরত মাদানীর এই ইজাযতনামাটি গর্বের ধন হিসেবে তিনি সব সময় আগলে রাখতেন।

আমাদের কালে প্রাতিষ্ঠানিকতা বিকাশ লাভ করেছে। কিন্তু ব্যক্তি গৌণ হয়ে পড়ছে। এটা ভালো লক্ষণ নয়।

আমরা দেখেছি, হযরত মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব দামাত বারাকাতুহুমের সামনে কোন ছাত্র নিজের পরিচয় দিয়ে যদি বলতো, আমি হাটহাজারী/পটিয়া/ফরিদাবাদ/মালিবাগ মাদ্রাসায় পড়েছি। তখন নির্ঘাত হুজুর জিজ্ঞেস করতেন, নাম বললে ফরিদাবাদ/মালিবাগের অমুক অমুক ওস্তাদ তোমাকে চিনবেন?

অর্থাৎ হুজুরের মতে হাটহাজারী/পটিয়া মাদ্রাসায় প্রকৃত অর্থে সে-ই পড়েছে, যাকে সেখানকার ওস্তাদরা চেনেন, যার প্রতি তারা আস্থা রাখেন এবং যে হাটহাজারী/পটিয়া মাদ্রাসার নেসবত ধারণ করার সাথে সাথে ওখানকার আকাবিরগণের সিফতও ধারণ করে।

অন্যথায় সিফত ছাড়া নিসবত ব্যবহার এক প্রকার প্রতারণা!

যাইহোক, মনে হচ্ছে, বেফাক ও হাইয়াত ইত্যাদি আসার পর আমাদের কওমি মাদ্রাসার ছাকাফাত-সংস্কৃতি থেকেও মহান ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে ইজাযত গ্রহণ, তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি ও তাদের নিসবত গ্রহণের গুরুত্ব উঠে যাচ্ছে।

দ্বীনী ইলমের ক্ষেত্রে সনদ প্রতিষ্ঠানের নয় ব্যক্তির হয়। আমাদের হাদিসের সনদ, তাসাউফের সনদ ব্যক্তি কেন্দ্রিক/সখছে হাকিকি কেন্দ্রিক, সখছে কানুনী বা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক নয়।

এটা ঠিক, প্রতিষ্ঠান আমাদের জন্য অনেক বড় নেয়ামত। এর উসিলায় আমরা ছাত্র পাচ্ছি। ছাত্ররাও এক জায়গায় অনেক ওস্তাদ পেয়ে যাচ্ছে!

তবু ভুলে গেলে চলবে না, প্রতিষ্ঠান আমাদের জরুরত কিন্তু ব্যক্তি আমাদের হাকিকত।

03/04/2025

শিক্ষকতায় আপনি কেন এলেন তা নিজের কাছে স্পষ্ট রাখুন। চাকরি, টাইম-পাস অথবা পার্টটাইম জব হিসেবে নয়, শিক্ষকতাকে একটি মহান সেবা বা মিশন হিসেবে গ্রহণ করুন। তাহলেই আপনি শিক্ষকতায় ভালো করবেন।

'অর্থের বিনিময়ে শিক্ষা' নয়, 'আলোকিত মানুষ গড়ার জন্যে শিক্ষা'- এ নীতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে দাঁড়ান।

ক্লাসে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করুন।

সময়মতো ক্লাসে আসুন। দেরি করে ক্লাসে এসে স্লাইডের মাধ্যমে চটজলদি পড়িয়ে ফাঁকি দেয়ার মানসিকতা পরিহার করুন।

বড় হওয়ার স্বপ্ন ও লক্ষ্য শিক্ষার্থীর মনে এঁকে দিন।
এ লক্ষ্য অর্জনে তার ঘাটতিগুলোকে সহজভাবে নিন। তার যে কিছু অনন্য মেধা, গুণ ও যোগ্যতা আছে তা খুঁজে পেতে তাকে সাহায্য করুন।

এক শিক্ষার্থীকে কখনোই অন্য শিক্ষার্থীর সাথে তুলনা করবেন না। প্রত্যেক শিক্ষার্থীই অনন্য। তাদের এ অনন্যতাকে গুরুত্ব দিন। সর্বতোভাবে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করুন।

শিক্ষার্থীদের নাম জানুন ও মনে রাখুন।
'অ্যাই ছেলে/ অ্যাই মেয়ে' কিংবা রোল নম্বর ধরে ডাকবেন না। নাম ধরে ডাকলে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়।

শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পর্কের সীমা বজায় রেখে বন্ধুসুলভ আচরণ করুন। তবে রসিকতা করে নিজের ব্যক্তিত্বকে ক্ষুণ্ণ করবেন না।

বিপরীত লিঙ্গের শিক্ষার্থীদের সাথে কথায়, বডি ল্যাঙ্গুয়েজে শালীন ও মার্জিত আচরণ করুন। শোভন সীমা বজায় রাখুন।

ক্লাস নেয়ার আগে হোমওয়ার্ক করুন, প্রস্তুতি নিন। যে বিষয়ে পড়াচ্ছেন তার আপডেটেড কারিকুলাম সম্পর্কে অবহিত থাকুন।
প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করুন।

প্রতিটি ক্লাস নেয়ার আগে পাঁচ মিনিট চোখ বন্ধ করে মনের পর্দায় দেখুন- ক্লাসে সবাই আপনার পড়ানো বুঝতে পারছে, আপনার সান্নিধ্য তাদেরকে আনন্দিত ও অনুপ্রাণিত করছে, আপনার কথাগুলো তারা মনোযোগ দিয়ে শুনছে, উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। আপনাকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করছে। দেখবেন, বাস্তবেও তা-ই হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের নীতিকথা বলার আগে নিজে তা অনুসরণ করুন। তাহলেই আপনার কথার শুভপ্রভাব তাদের ওপর পড়বে।

কোনো পড়া বোঝানোর সময় শিক্ষার্থীদের মতামত নিন- আসলেই তারা বুঝতে পারছে কিনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিজের বক্তব্যকে আরো সহজ এবং গল্প ও উদাহরণসমৃদ্ধ করুন।

নিজেকে শিক্ষার্থীদের অবস্থানে নিয়ে গিয়ে ধৈর্য সহকারে বোঝানোর চেষ্টা করুন।

কোনো শিক্ষার্থী পড়া বুঝতে না পারলে তাকে গালমন্দ করবেন না। তার ওপর বিরক্তও হবেন না; বরং ক্লাসের পরে সুবিধাজনক সময়ে পড়া বুঝিয়ে দিন। প্রশান্ত থাকুন, তাহলে তার মতো করে তাকে বোঝাতে পারবেন।

নিজের লেখা বই/ নোট পড়তে বাধ্য করবেন না। অন্য লেখকদের বইকে প্রাপ্য সম্মান দিলে আপনার সম্মানও বেড়ে যাবে।

যে বিষয় পড়াচ্ছেন তা কত জটিল/ কঠিন এবং সে-বিষয়ে সাধারণত কেউ ভালো করতে পারে না- এ ধরনের কথা বলে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখাবেন না। শিক্ষক হিসেবে আপনার দেয়া সাহস শিক্ষার্থীদের সে-বিষয়ের প্রতি মনোযোগী করে তুলবে।
আর মনোযোগ যে-কোনো কঠিন বিষয়কে সহজ করে তোলে।

শিক্ষার্থীদের কাছে কোনো শিক্ষককে নিয়ে কটু মন্তব্য করবেন না।
প্রশংসা করতে না পারলে মৌন থাকুন।

কোন শিক্ষকের চেয়ে কোন শিক্ষক ভালো পড়ান/ কে বেশি জনপ্রিয়- এ জাতীয় প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্তিতে ফেলবেন না।

ক্লাসে কম পড়িয়ে নিজের কোচিং বা ব্যাচে পড়তে প্রলুব্ধ করা বা বাধ্য করা থেকে বিরত থাকুন।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের চক্রান্তে জড়াবেন না। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদেরকে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন নিতে প্রলুব্ধও করবেন না। অন্যায় করা আর অন্যায়ে ইন্ধন দেয়া-দুটোই অপরাধ।

কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে বলুন- এর উত্তর আপনি পরে জেনে জানাবেন। এতে আপনার জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে। ভুল উত্তর দেয়া/ গোঁজামিল দেয়া বা এরকম প্রশ্ন কেন করেছে ভেবে রাগান্বিত হওয়া থেকে বিরত থাকুন।

ভালো রেজাল্টধারীদের প্রতি সুনজর দিতে গিয়ে যারা অপেক্ষাকৃত কম ভালো করছে, তাদের প্রতি অমনোযোগী হবেন না। আপনার একটু সহযোগিতা ও চেষ্টা তাদেরকেও এগিয়ে নেবে।

ব্যক্তিগত রোষের কারণে কোনো শিক্ষার্থীকে কম নম্বর দেয়ার মতো অন্যায় করবেন না। এ ব্যাপারে সচেতন ও সংযত থাকুন। আসলে ক্ষমা সর্বোত্তম গুণ এবং স্রষ্টা ক্ষমাশীলকে পছন্দ করেন।

দীর্ঘদিন কোনো শিক্ষার্থী আপনার ক্লাসে অনুপস্থিত অথবা অনিয়মিত থাকলে নিজ উদ্যোগে তার ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করুন।

জন্মদিনে কেক, ফাস্ট ফুড, চকলেট স্কুলে আনতে উদ্বুদ্ধ না করে শিক্ষার্থীদের গাছ লাগানো, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বা যে-কোনো সৎকর্মে অনুপ্রাণিত করুন।

শিক্ষার্থীদেরকে অপদার্থ, নালায়েক, মূর্খ, বোকা- এ জাতীয় নেতিবাচক কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। ইতিবাচক কথার মাধ্যমে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করুন।

বকাঝকা ও গালিগালাজের মাধ্যমে মানসিক অত্যাচার কিংবা শারীরিক শাস্তি আসলে শিক্ষক হিসেবে আপনার পরাজয়কেই প্রমাণিত করে। তাই অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মনোভাব বুঝে সংশোধনের জন্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।

কথা শোনে না, পড়তে চায় না, অমনোযোগী-শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে এভাবে ঢালাও অনুযোগ না করে তাদের প্রতি সমমর্মী হোন, তাদেরকে মনোযোগী করে তোলার কৌশলগুলো নিয়ে ভাবুন ও পদক্ষেপ নিন।

জনপ্রিয় শিক্ষক হওয়ার বাসনা থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে ব্যক্তিগত ফোনালাপ বা তথাকথিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সাথে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে সচেতনভাবে বিরত থাকুন।

ক্লাস চলাকালে মোবাইলে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। ফোন সাইলেন্ট মোডে রাখুন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত অবস্থায় বিনোদনের জন্যে ইন্টারনেট, ফেসবুক অথবা ইউটিউবে ব্যস্ত থাকবেন না।

কোনো শিক্ষার্থী কথা বলতে এলে ধৈর্য ধরে তার কথা শুনুন। সেই মুহূর্তে সম্ভব না হলে বা শিক্ষার্থী পরে কোনো সময় দেখা করতে চাইলে এপয়েন্টমেন্ট দিন।
নিজের রুমের চেয়ে টিচার্স কমনরুমে কথা বলাকে অগ্রাধিকার দিন।

জরুরি নোটিশ বা ডকুমেন্ট আদানপ্রদানের জন্যে 'ফেসবুক গ্রুপ' করতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করবেন না। প্রয়োজনে ই-মেইল করুন।

পিকনিক/ বনভোজন/ আনন্দভ্রমণ/ শিক্ষাসফরে খেয়াল রাখুন- ছাত্রছাত্রীরা চোখের আড়াল হচ্ছে কিনা। সচেতন থাকুন- আনন্দের উন্মাদনায় যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।

শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেকে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করুন।

03/04/2025

হজরত থানভির নিকট এক যুবক এলো। সে এসে বলল, 'আমি আমার যৌবনের উত্তেজনাকে কনট্রোল করতে পারছি না। আমার দ্বারা গুনাহ হয়ে যায়। আমাকে পরামর্শ দিন।' যুবকের কথা শেষ হতে না হতেই, পাশে থাকা খানকাহতে আসা এক মৌলভি বলল,
তুমি রোজা রাখো। ঠিক হয়ে যাবে।

এ কথা শুনে যুবক বলল, 'রোজা রাখলে আমার উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।' যুবকের কথা শেষ হওয়ার পর থানভি সে-ই মৌলভির দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বললেন,
'এবার পরবর্তী টিট্রমেন্ট দাও।' মৌলভি তখন খামোশ।

হজরত থানভি রাহিমাহুল্লাহ তখন যুবককে বললেন,
'তুমি টানা কয়দিন রোজা রেখেছো? যতদিন রেখেছো, তার দ্বিগুণ রাখো।৷ এরপর দেখো কী হয়!'

ইসলাহি ব্যাপারে হজরত থানভির মেজাজই ছিল মুনশিয়ানা। তার নিকট বাইআত হওয়াই ছিল চ্যালেঞ্জিং, সেখানে ইজাজত বা খেলাফত পাওয়া তো আরও কঠিন। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন, থানভির নতুন কিছু ইসলাহি পন্থা দেখে। তিনি ইসলাহকে সহজ করতে বাইআত হওয়া আবশ্যক করেননি। বাইআত না হয়েও শুধুমাত্র ইসলাহি মুরুব্বি হিসেবে মেনে চলার পথ তিনি তৈরি করেছেন। পাশাপাশি তিনিই সম্ভবত ইজাজত বা খেলাফতের নতুন একটি পথও আবিষ্কার করেছেন।
তা হচ্ছে,
ক. বাইআত করার ইজাজত
খ. মুজাজে সোহবতের ইজাজত

মুজাজে সোহবতের অর্থ হচ্ছে, বাইআত করতে পারবে না। তবে নিয়মিত মজলিশ করে লোকদের দীনি কথা শোনাতে পারবে। এমনকি মুজাজে সোহবতে স্তরে হজরত থানভি কিছু গ্রাম্য সহজ-সরল লোকদেরকেও ইজাজত দিয়েছেন। তেমনই একজন ছিলেন হাজি সাহেব। তার নামটি স্মরণে আসছে না। মাকতাবাতুল আশরাফের আত্মশুদ্ধির বইতে তার সংক্ষিপ্ত জীবনী লেখা আছে।

আবার অন্যদিকে কারো কারো বাইআতের জন্য দিতেন কঠিন কঠিন শর্ত। এদের মধ্যে সবচেয়ে শিক্ষণীয় ও মজার গল্প আছে জামিয়া আশরাফিয়া লাহোরের প্রতিষ্ঠাতা মুফতি মুহাম্মাদ হাসান অমৃতসরি রহ.-কে নিয়ে। বাইআতের জন্য হজরত থানভি তাকে চারটি শর্ত দিয়েছিলেন। অথচ তিনি তখন পুরোদস্তুর আলেম ছিলেন।

১। কেরাত সহিহ করতে হবে এবং সার্টিফিকেট নিতে হবে। (হজরত তার এক ছাত্রের মাধ্যমে কেরাত সহিহ করে সার্টিফিকেট নিয়েছিলেন।)
২। দেওবন্দে দাওরা হাদিস পড়তে হবে। (হজরত প্রথম দিকে কিছুটা সালাফি মনোভাবের ছিলেন। এজন্য এ শর্ত থানভি রেখেছেন। তিনি পূরণও করেছেন।)
৩। নিজের হালত জানিয়ে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যার চিঠি আদানপ্রদান করতে হবে।
৪। এটা ছিল সবচেয়ে কঠিন ও মজার। সেটা হচ্ছে, বিবির থেকে নিজের ক্যারেক্টর সার্টিফিকেট নিতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ, তিনি এটাও পূর্ণ করেছিলেন।

সবগুলো শর্ত যখন পূরণ করে বাইআতের আবদার করলেন, তখন থানভি তাকে সরাসরি ইজাজত দিয়ে দিলেন। বললেন, 'ইসলাহ করা ফরজ আর বাইআত হওয়া মুস্তাহাব।' ইসলাহর সম্পর্ক যেহেতু হয়ে গেছে, এখন আসুন মুস্তাহাবও আদায় করি।

বর্তমান সময়ে এ কথা বললেও পোলাপান হাসে। তাই তাদের হালতের অবস্থাও অনলাইনে এলে দেখা যায়। আজকাল তো উস্তাদ ছাত্রকে শাসন করেও পার পায় না। অথচ হজরত থানভি ইসলাহর জন্য যে কঠিন কঠিন মুজাহাদা বড়দের দিয়েছিলেন, তা শুনতেও ভয় লাগে। সেদিন আমি আমার আহলিয়াকে বলেছিলাম, এখন যদি হজরত থানভি বেঁচে থাকতেন, তাহলে তার খানকাহতে রোজ হামলা করত আমাদের অ্যাক্টিভিস্ট ভাইগণ।

বেশি দূরে যেতে হবে না। আজ আমরা যে হাফেজ্জি হুজুর রাহিমাহুল্লাহর নাম শুনে আপ্লুত হয়ে পড়ি, এই হাফেজ্জি হুজুরও ছিলেন হজরত থানভির হাতেগড়া মানুষ। তাকে বলা হয়েছিল, রোজ বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে ফরজ নামাজ শেষে এলান করবে,
'ভাইসব, আমার ভেতর অহংকার আছে। আমার জন্য দোয়া করবেন।'

ভাবতে পারেন, কতটুকু কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং ছিল এ কাজটা। এলাকার বজ্জাত পোলাপান হজরতকে অহংকারী বলে বলে পিছে পিছে চলত। হজরত থানভি রহ. তাকে একদিন বললেন, 'আচ্ছা, মুহাম্মাদুল্লাহ, এই যে আমি তোমাকে এ কাজটা করতে বললাম। তুমি তো আমাকে একবারও এর কারণ জিজ্ঞেস করলে না।'

তখন হাফেজ্জি হুজুর যা বলেছিলেন, তা কমপক্ষে আমাদের কওমিয়ানদের স্মরণে রাখা উচিত। তিনি বলেছিলেন,
'হজরত আপনি হাকিমুল উম্মত (উম্মতের রুহানি ডাক্তার)। আর আমি মারিজুল উম্মত (অসুস্থ উম্মত)। রোগীর কোনো অধিকার কি আছে যে, সে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে প্রশ্ন তুলবে?'

হজরত থানভি রাহিমাহুল্লাহকে নিয়ে বলা ও লেখা শেষ করা কঠিন কাজ। তার গড়া একেকজন ব্যক্তিকে নিয়ে বলতে গেলেও সময় হারিয়ে যাবে সময়ের স্রোতে। তবু বলতে ইচ্ছে করে অনবরত। শোনাতে ইচ্ছে করে, কেমন ছিলেন তারা!

Want your school to be the top-listed School/college in Chittagong?

Click here to claim your Sponsored Listing.

Location

Telephone

Website

Address


102, Fatema Mansion, (Chondonpora Mosque Lane) Chandanpura, Sirajuddowla Road
Chittagong
4203