সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে বাবা-মা'র জন্য অনেক বড় নেয়ামত এবং আমানত। প্রত্যেক বাবা-মা তার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকেন এবং যেকোন মূল্যে একটি ভালো ও মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাকে ভর্তি করে তার জন্য সুশিক্ষা নিশ্চিত করেন। তবে সচেতন বাবা-মা তাদের সন্তানের আখিরাত নিয়ে চিন্তিত থাকেন এবং সন্তানের জন্য দ্বীনি শিক্ষার ব্যবস্থা করেন।
এই জায়গায় এসে অনেক বাবা-মাকে একটু হিমশিম খেতে হয়। নিজেদের দ্বীনি শ
িক্ষার ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকায় এত এত প্রতিষ্ঠানের ভিড়ে কোন প্রতিষ্ঠানটি তাদের সন্তানের জন্য যথোপযুক্ত সেটা তারা বুঝে উঠতে পারেন না। তারা চান, তাদের সন্তান যেন একটি ভালো ব্যবস্থাপনায় বিজ্ঞ উস্তাদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থেকে দ্বীন শিখতে পারে।
কোন প্রতিষ্ঠানটি সন্তানের জন্য উপযুক্ত হবে এটি সহজে নির্ণয় করতে সবচেয়ে কার্যকর ও উপযোগী পদ্ধতি হলো নিজের পরিচিত ভালো পড়াশোনা করেন এমন কোন একজন আলিমের সাথে এই বিষয়ে পরামর্শ করা।
যেই শিক্ষাব্যবস্থায় সন্তানকে পড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী?
আপনার সন্তান এখানে এসে পড়াশোনা করলে সে কী মানসিকতা লালন করবে?
সে কি শুধু তার অভিভাবককে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে জান্নাতে নিতে চেষ্টা করবে?
মাদরাসায় পড়া শেষে সে কি শুধু মসজিদ আর মাদরাসার গন্ডিতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখবে?
মুসলিম জাতির অধঃযাত্রার এই সময়ে তার চিন্তাভাবনা ও ভূমিকা কী থাকবে?
আমার সন্তানের মাঝে সঠিক দীক্ষা ও দ্বীনি ও দা'ওয়াতি চিন্তার প্রসার ঘটানোর জন্য সেই মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কোন সুনির্দিষ্ট ও সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা রয়েছে কী?
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ কোথায় পড়াশোনা করেছেন?
তারা কি কোন বড় আলিমের তত্ত্বাবধানে থেকে নিজেদের জীবন ও যৌবন দাওয়াত ও খিদমতের জন্য উৎসর্গ করেছেন?
আমার সন্তান কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলে উপরোক্ত বিষয়গুলো অর্জনের জন্য কোন্ উস্তাদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকবে...?
এ'জাতীয় প্রশ্নের উত্তর আমার জানা থাকা দরকার। যেই প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থায় নিজের সন্তানকে পড়াতে চাই তার আগাগোড়া সম্পর্কে নিজের জানা থাকা দরকার। এই শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাস ও তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনা সম্পর্কেও অবগত থাকা দরকার।
সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে আমানত। শুধু নিজের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য এবং পার্থিব সামান্য সুখ ও সম্মানের আশায় যেমন নিজের ও সন্তানের দ্বীনি ভবিষ্যৎ নষ্ট করা উচিৎ নয় তেমনই সন্তানকে দ্বীন শেখাবার আশায় তার জন্য সঠিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন না করে কোন চিন্তাভাবনা ছাড়াই কোথাও ভর্তি করাও উচিৎ নয়। ফিৎনার এই সময়ে পার্থিব সচেতনতার চেয়ে দ্বীনি সচেতনতা বড় জরুরী।
গাছ লাগিয়ে যদি ফল আশা করতেই হয় তবে রোপনের পূর্বেই তার জন্য সঠিক ভূমি নির্বাচন ও সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করা চাই।