Jhikargacha Darul Ulum Kamil Madrasah

Jhikargacha Darul Ulum Kamil Madrasah

Education

03/04/2023

"আল্লাহ কি সত্যিই আমাদের ভালোবাসেন"

শাইখ আলী তানতাবী রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন, 'একবার আমার জানতে ইচ্ছা হলো, আল্লাহ কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসেন? আগ্রহ ও কৌতূহল এ জায়গা থেকে আমি এর উত্তর পেতে চাইলাম কুরআন থেকে। কুরআন খুলে দেখতে লাগলাম যে,আল্লাহ কাদের ভালোবাসেন? কী তাদের বৈশিষ্ট্য?

আমি কুরআন খুলে দেখলাম, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা নেককারদের ভালোবাসেন। ভাবলাম, 'আমি কি নেককার বান্দা? মনে হলো, না। তাহলে তো আমি এই তালিকা থেকে বাদ পরলাম ।

তারপর দেখলাম, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন, কিন্তু নিজেকে খুব বেশি ধৈর্যশীল বলে মনে হলো না আমার। ফলে এ তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেলাম।

এরপর দেখলাম আল্লাহ মুজাহিদদের ভালবাসেন, যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে; কিন্তু আমার মতন অলস আর অক্ষম ব্যক্তি এই তালিকায় ওঠার কথা ভাবতেও পারি না। ফলে এখান থেকে ছিটকে গেলাম।

তারপর দেখলাম, আল্লাহ তাদের ভালবাসেন, যারা সৎ কাজে এগিয়ে; কিন্তু নিজের আমল, আর আখলাকের দৈন্যদশা দেখে এই তালিকাতেও নিজেকে ভাবা গেল না।

একপ্রকার হতাশার গ্লানিবোধ নিয়েই আমি কুরআন বন্ধ করে ফেলি। নিজের আমল, তাকওয়া আর ইখলাসের দিকে তাকিয়ে আমি তাতে রাজ্যের ভুল-ভ্রান্তি ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পেলাম না। কিন্তু একটু পরেই আমার মনে হলো, 'হ্যাঁ, আল্লাহ তো তাদেরও ভালবাসেন যারা তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।

মনে হলো, এই একটা বৈশিষ্ট্যই বুঝি আমার জন্য মজুদ আছে এবং আমি তা যখন-তখন নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারি। আমি খুব বেশি পরিমাণ ইস্তেগফার পড়তে থাকি,যাতে করে আমি আল্লাহর সেসব বান্দাদের তালিকাভুক্ত হতে পারি,যারা অধিক পরিমাণে তওবা করে এবং যাদের আল্লাহ ভালোও বাসেন।

আমরা হয়তো-বা নেককার হতে পারলাম না,আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদ হওয়ার সৌভাগ্য হয়তো আমাদের কপালে নেই। অনুপম ধৈর্য্যের অধিকারী কিংবা যারা বেশি ভালো কাজে অগ্রগামী তাদের দলভুক্ত হয়তো হতে পারলাম না; কিন্তু তাই বলে কি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার ভালোবাসার তালিকা থেকে একেবারে বাদ পড়ে যাবো? কখনোই নয়।আল্লাহ প্রিয়ভাজন হওয়ার একটা রাস্তা সদা-সর্বদা খোলা রয়েছে আমাদের জন্য। আর সেই রাস্তা হলো- তাওবার রাস্তা অধিক পরিমাণে তওবা করা। আল্লাহর কাছে নিজের পাপ নিজের ভুল, নিজের অবাধ্যতার জন্য কায়মনোবাক্যে ক্ষমা চাওয়া।

ভুল করেও ভুলের উপর স্থির থাকা এবং সেই ভুলকে যুক্তি-তর্ক দিয়ে জায়েজ বানানোর চেষ্টা করাটা শয়তানের বৈশিষ্ট্য।

অপরদিকে ভুল করার পর তা বুঝতে পারা, তার জন্য অনুতপ্ত হওয়া,তা থেকে বিরত হওয়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া একটা সতেজ, সুন্দর এবং সবুজ অন্তরের প্রমান বহন করে। নিজেদের কৃত ভুল বুঝতে পেরে, তার জন্য অনুতপ্ত হয়ে, গভীর অনুশোচনাসহ আল্লাহর কাছে করজোড়ে ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া।

ভুল হয়ে গেলে তা নিয়ে অন্তর পেরেশানি দেখা দেওয়াটা তাকওয়ার লক্ষণ‌।

তাই কখনো ভুল হয়ে গেলে,কখনও পাপ কাজ হয়ে গেলে, তার জন্য অনুশোচনা করা, কিছু সদকা করা,নফল সালাতে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারলে অবশ্যই আল্লাহ ক্ষমা করবেন।
আর এভাবে করেই আল্লাহর কাছ পর্যন্ত পৌঁছা যাবে ইনশাআল্লাহ

(এবার ভিন্ন কিছু হোক আরিফ আজাদ ভাইয়ের লেখা বই থেকে)

13/03/2023

ইয়াহইয়া ইবনু আবি কাছির رحمه الله বলেন,

রমাদ্বান আগমনের প্রাক্কালে সালাফদের দু'আ ছিল -

اَللَّهُمَّ سَلِّمْنـِيْ إِلَى رَمَضَانَ وَسَلِّمْ لِـيْ رَمَضَانَ وَتَسَلَّمْهُ مِنِيْ مُتَقَبَّلاً.

হে আল্লাহ! রমাদ্বান পর্যন্ত আমাকে সহিহ সালামতে রেখো, রমাদ্বানকে আমার জন্য সহিহ সালামতে রেখো, আর আমার থেকে তা কবুল করো।

- লাতা'ইফুল মা'আরিফ, ১৪৮, ইবনু রজব হাম্বলী رحمه الله

07/02/2023

শনির দশা বা কোনো শুভ-অশুভ/অলক্ষুণে (যেমন লাকি সেভেন, আনলাকি থার্টিন ইত্যাদি) বিশ্বাস করা শির্ক—ঈমানভঙ্গের কারণ!

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘কোনো কিছুকে অশুভ/অলুক্ষণে মনে করা শির্ক।’’ [ইমাম ইবনু মাজাহ, আস-সুনান: ৩৫৩৮; হাদিসটি সহিহ]

আল্লাহর রাসুল অন্যত্র বলেন, ‘‘অশুভ বা অমঙ্গল ভেবে যে কোনোকিছু পরিত্যাগ করলো, সে শির্ক করলো।’’ [ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৭০৪৫; হাদিসটি সহিহ]

শায়খ আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহ.) বলেন, ‘যদি কেউ বিশ্বাস করেন যে, অমুক দিবস, রাত্রি, মাস, তিথি, সময়, বস্তু, দ্রব্য বা ব্যক্তির মধ্যে শুভ বা অশুভ কোন প্রকারের ক্ষমতা বা এরূপ প্রভাব কাটানোর ক্ষমতা আছে, তবে তা শির্ক আকবার (বড় শির্ক, যার মাধ্যমে মানুষ মুশরিক হয়ে যায়) বলে গণ্য হবে। আর যদি এরূপ বিশ্বাস পোষণ না করেন, বরং সুদৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, ভালো-মন্দ, শুভ-অশুভ—সকল কিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ, কিন্তু কথাচ্ছলে এরূপ কিছু বলে ফেলেন, তবুও তা শির্ক আসগার (ছোট শির্ক) বলে গণ্য হবে। (তবে, ব্যক্তি মুশরিক হবে না)।’ [কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা, পৃষ্ঠা: ৩৮৩]

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবিগণের এই সংক্রান্ত ভুল চিন্তার সংশোধন করে দিতেন। যেমন: হাদিসে এসেছে, ‘‘পেঁচা অশুভ নয়।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৫৭০৭] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘‘ভূত-প্রেত বা দৈত্য বলে কিছু নেই।’’ [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ৫৬৮৮]

ঠিক সেভাবে: হস্তরেখা নির্ণয়, রাশিফল বলা, আকিক পাথরের বিশেষ ক্ষমতা, শনি ও মঙ্গল বারকে অপয়া মনে করা, অমাবস্যায় অমঙ্গল ধারণা করা, প্রথম কাস্টমারকে বাকি দিলে ব্যবসা লস হবে ভাবা, যাত্রাপথে হোঁচট খেলে অকল্যাণের আশঙ্কা ইত্যাদি সবই ভিত্তিহীন।

আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘কোন বস্তুকে অশুভ/অলক্ষুণে মনে করা ‘শির্ক’, কোন বস্তুকে অশুভ/অলক্ষুণে মনে করা শির্ক।’’ একথা তিনি ৩ বার বললেন। আমাদের কারো মনে কিছু জাগা স্বাভাবিক, কিন্তু আল্লাহর উপর ভরসা করলে তিনি তা দূর করে দিবেন।’’ [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ৩৯১০; হাদিসটি সহিহ]

মাসিক আল কাউসারের ‘প্রচলিত ভুল’ ফিচারে মাওলানা আবদুল মালেক (হাফিযাহুল্লাহ) লিখেছেন, ‘কোনো মাস, দিন বা রাতকে অশুভ মনে করা, বিশেষ কোনো সময়কে বিশেষ কাজের জন্য অশুভ ও অলক্ষুণে মনে করা—সবই জাহেলিয়াতের কুসংস্কার। এর সাথে মুসলিমের কোনো সম্পর্ক নেই।’ [ডিসেম্বর, ২০১৮ সংখ্যা]

যারা ভুলক্রমে শুভ-অশুভ ইত্যাদি কোনো শির্কি কথা বলে ফেলবে, সে অনুশোচনাবোধ করবে এবং কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হিসেবে পড়বে—

اللَّهُمَّ لَا خَيْرَ إِلَّا خَيْرُكَ، وَلَا طَيْرَ إِلَّا طَيْرُكَ، وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ

[আল্লা-হুম্মা লা খাইরা ইল্লা খায়রুকা, ওয়ালা ত্বয়রা ইল্লা ত্বয়রুকা, ওয়া-লা ইলা-হা গাইরুকা]

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার কল্যাণ ছাড়া কোনো কল্যাণ নেই; আপনার শুভাশুভত্ব ছাড়া কোনো শুভ-অশুভ নেই এবং আপনি ছাড়া কোনো প্রকৃত উপাস্য নেই। [ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ: ৭০৪৫; হাদিসটি সহিহ]

আমাদের উচিত, অন্তত নিজের ফ্যামিলির যেসব সদস্য অজ্ঞতাবশত এরকম ভ্রান্ত আকিদা-বিশ্বাস লালন করছেন, তাদেরকে সতর্ক করা। পাশাপাশি নিজের পরিচিত-অপরিচিত সবার কাছেই এই বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসের ব্যাপারে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়া। তবে তা করতে হবে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও বুদ্ধিমত্তার সাথে।

13/11/2022

অসহায়, দুর্বল মানুষের দুয়া মহান আল্লাহ খুব দ্রুতই কবুল করেন।

আল্লাহ ﷻ বলেছেন, ‘আমার ইজ্জতের কসম! আমি তোমাকে সাহায্য করবই, যদিও কিছু পরে হয়। (হাদিস সম্ভার:২২৪০)

যাদের ওপর অন্যায়ভাবে যুলুম হয়, তাদের দুয়া এবং আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা থাকে না। (বুখারী:২৪৪৮)

যেকোনো বিপদাপদে, অন্যায় হলে, যুলুম হলে, সুন্দর করে অযু করে সালাত আদায় করুন। নিজের সমস্ত ব্যাথা-বেদনা, অভিযোগ অভিমান, চাওয়া না-পাওয়ার কষ্টগুলো আল্লাহর কাছেই বলুন।

নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ সর্বোত্তম বিচারক এবং উত্তম পরিকল্পনাকারী।

© মাহমুদ হাসান

11/11/2022

আমি কোরআনের ৯০ জায়গায় পেয়েছি,আল্লাহ বান্দার রিজিক নির্ধারণ করে রেখেছেন এবং রিজিকের দায়িত্ব নিয়েছেন। কেবল এক জায়গায় পেয়েছে, ❝শয়তান তোমাদের কে অভাব অনটনের ভয় দেখায়❞ [সূরা বাক্বারাহঃ২৬৮]

সত্যবাদিতায় আল্লাহ অতুলনীয়, তাও আমার তার নব্বই (৯০)টি ওয়াদার প্রতি আস্থা রাখতে পারি না। অথচ চরম মিথ্যুক যে শয়তান তার এর কথার উপর গভীর বিশ্বাস রাখি!

~ হাসান বাসরি (রহ.)

10/11/2022

অহেতুক কথা থেকে বেঁচে থাকবেন যেভাবে

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য যা তার জন্য অনর্থক, তা এড়িয়ে যাওয়ায়। (তিরমিজি)

আপনি কি আপনার ইসলাম পালনকে পূর্ণ রূপ দিতে চান?

এই হাদিসটি তা হলে ভালো করে মাথায় গেঁথে নিন। হাদিসটি আপনার আত্মশুদ্ধির মৌলিক নির্দেশিকা। এমনিতে হারাম কাজ ছেড়ে দিলে আর ফরজ কাজগুলো করলেই ইসলাম পালন হয়ে যায়। তবে ইহসানের পর্যায়ে পৌঁছাতে আপনাকে সব সময় আল্লাহর প্রতি হুঁশিয়ার থাকতে হবে। নিজের আচার-আচরণের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, এসবের ওপর নির্ভর করে আল্লাহর সন্তুষ্টি কিংবা অসন্তুষ্টি।

নিজের ইসলাম পালনকে নিখুঁত করার অন্যতম দিক অপ্রয়োজনীয় বিষয় থেকে দূরে থাকা। এর ফলে আপনি অনেক সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে দূরে থাকতে পারবেন। তখন হারাম থেকেও দূরে থাকাও সহজ হবে আপনার জন্য।

অন্যের ব্যাপারে অযথা নাক গলাবেন না। এজন্য অবশ্য শয়তানের বিরুদ্ধে, নিজের স্বভাবজাত কৌতূহলের বিরুদ্ধে ভালোই ঘাম ঝরাতে হবে। অনুরূপ এক হাদিসে নবি বলেছেন, “অনর্থক অপ্রয়োজনীয় পালনের পরিচয়। কথা পরিত্যাগ করা মানুষের উত্তম ইসলাম যারা একাজে ব্যর্থ হয় তাদের ব্যাপারে নবিজি বলেছেন, “মুখের কথা ছাড়া মানুষের মুখ থুবড়ে জাহান্নামে পড়ার আর কারণ আছে?”

ইবনু মাসউদ (রাদ্বি.) বলেছেন, “আমার মুখ সবচেয়ে বেশি সময় বন্দি থাকা দরকার।” লাগামহীন মুখ ছোটানোর বিপদ কী তা সাহাবিগণ খুব ভালো করে জানতেন। উমার ইবনু আবদুল আজিজ (রহ.) পর্যবেক্ষণ করেছেন, “যে-লোক তার কথাকে আমল হিসেবে নেয়, সে কথা বলা কমিয়ে দেবে, শুধু দরকারি কথা বলবে।"

মানুষকে যে তার কথার জন্য জবাবদিহি করতে হবে সেটা অনেকেই জানে না। তারা কথা বলে প্রচুর। শুধু ভালো ভালো ঠিক কথা, সৌজন্যমূলক কথাবার্তা, জ্ঞানগর্ভ কথাই তারা বলে না। তারা অনেক আজেবাজে কথা বলে অনর্থক তর্কে লিপ্ত হয়। নিজেদের মধ্যে গলা উঁচু করে একে অন্যকে দোষারোপ করে। অন্যদের টেক্কা দেওয়ার মনোভাব নিয়ে কথার মধ্যে বিঘ্ন ঘটায়।

এমন আচরণ দূর করার উপায় আল্লাহভীতি। তাঁর সামনে বিব্রত হবার আশঙ্কা। অন্যদেরও এমন ধরনের কথাবার্তা থেকে সতর্ক করতে হবে। সম্ভব হলে বাঁধা দিতে হবে। অন্যথায় এমন আড্ডাখানা থেকে তার প্রস্থান করা উচিত। সুমহান আল্লাহ বলেছেন, অধিকাংশ আলোচনাতে কোনো কল্যাণ নেই: “তাদের অধিকাংশ ব্যক্তিগত আলাপে ভালো কিছু
নেই। ভালো কিছু আছে দান করা, সদাচার আর দুজন মানুষের মাঝে বিবাদ মেটানোয়।”

নবিজি কঠোরভাবে সতর্কতা জারি করেছেন এ কথা বলে, “কোনো মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে যা শুনে তা-ই বিনাবিচারে প্রচার করে বেড়ায়।”

কারণ শোনা কথাটা মিথ্যে হতে পারে, কিংবা হয়তো অতিরঞ্জিত। অথবা এমনকিছু যা গোপন রাখা উচিত ছিল। এটা এমন এক পাপ যা মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবার জন্য যথেষ্ট। কেউ যদি মুখকে লাগামহীন রাখার পরিণতির ব্যাপারে চিন্তা করে তবে সে এর বিপদ বুঝবে। তাই তার উচিত মুখকে সংবরণ করা। তাওবা ও সৎকর্মে রত থাকা। এর ফলে সে অনর্থক বিষয়ে মন দেওয়ার মতো সময়-সুযোগ পাবে না।

'ইমাম নববির চল্লিশ হাদিসের ব্যাখ্যা' বই থেকে
লেখক : উম্মু মুহাম্মাদ

20/10/2022

"দুনিয়া ও শয়তান হলো তোমার বাইরের শয়তান আর নফস হলো তোমার ভিতরের শয়তান। যে তোমার বুকেই বসবাস করে।"

- ইবনে কাইয়্যিম জাওযী (রহ.)
[বাদায়িউল ফাওয়ায়িহ,৩/২৬]

10/05/2022

** 'কান্তারা' কি জেনে নিন:

⚫ কান্তারা হল একটি চেকপোস্ট। কোনো মানুষের যখন সারাজীবনের হিসাব নিকাশ নেয়ার পর জান্নাতের ফায়সালা পেয়ে যাবে, এবার সে জান্নাতের দিকে ছুটবে।
যেতে যেতে মাঝখানে একটা চেকপোস্ট পড়বে।
সেখানে মানুষের উপর সে যে যুলুম করেছিল!সেটার ফিনিশিং হবে। দুনিয়াতে কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল, কারো থেকে টাকা মেরে দিয়েছিল, কাউকে ওজনে কম দিয়েছিল, কাউকে থাপ্পড় মেরেছিল, কাউকে গালি দিয়েছিল, কাউকে এমন কথা বলেছিল যে তার মাথাটা সবার সামনে নিচু হয়ে গিয়েছিল; মোটকথা, অন্যায়ভাবে মানুষকে কষ্ট দিয়েছে।

মানুষ মানুষের উপর যত যুলুম করেছে। যখন কেউ কান্তারা নামক জায়গাতে পৌঁছবে, তখন সে দেখবেন-তার সমস্ত পাওনাদারেরা সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে!
এবং তারা আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলার কাছে বিচার দিবে যে-
হে আল্লাহ, এই লোকটা আমাকে অন্যায়ভাবে থাপ্পড় মেরেছিল।একজন বলবে যে,আমার টাকা ধার নিয়ে আর দেয়নাই।একজন বলবে, আমার রক্ত বের করে দিয়েছিল।একজন বলবে, আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সমাজে ছোট করে দিয়েছিল, আমি এর বিচার/প্রতিকার পাইনি।

তখন আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা এগুলোর সমাধান করবেন এই স্টেশনটাতে।আল্লাহ তা'আলা বলবেন, এখন তুমি তোমার আমল দিয়ে-তুমি যে তাহাজ্জুদ পড়েছ, দ্বীন চর্চা করেছ, হজ্জ-ওমরা করেছ, সলাত, সিয়ামগুলো করেছ সেগুলোর সাওয়াব গুলো তাদের দিতে থাকো। এভাবে পাওনাদার সবাইকে নিজের আমল দ্বারা পরিশোধ করা হবে। একসময় দেখা যাবে যে তার সব সাওয়াব শেষ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু পাওনাদার এখনো রয়ে গেছে।
তখন আল্লাহ তা'আলা বিচার করবেন যে,যেহেতু দেয়ার কিছুই নেই, এবার তুমি তাদের পাপের বোঝাটা মাথায় নাও; তাহলে ওরা হালকা হবে জান্নাতে চলে যাবে।

তখন এই ব্যক্তি কি করবে? আসলে সে কিন্তু জান্নাতে যাওয়ার সাওয়াব পেয়েছিল। কিন্তু মানুষের উপর যেসব অবিচারগুলো করেছিল তার দেনা-পাওনা পরিশোধ করতে করতে তার সমস্ত সাওয়াব শেষ হয়ে যাবে এবং অন্যদের গুনাহের বোঝা মাথায় নিয়ে নিঃস্ব,অসহায়ের মতো সে জাহান্নামে যাবে!

এ সম্পর্কে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "তোমরা কি জানো যে নিঃস্ব, হতভাগা কে?" তখন সাহাবায়ে কেরাম বলেছিল,আমাদের মধ্যে নিঃস্ব,অসহায় বলতে আমরা বুঝি-যার দিনার, দিরহাম/টাকা-পয়সা নাই।
রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বলেছিলেন- "আমার উম্মাতের মধ্যে নিঃস্ব হল-যে ব্যক্তি দুনিয়াতে সলাত, সিয়াম, যাকাত, হজ্জ-ওমরা সবই করেছিল। অথচ দুনিয়াতে কাউকে থাপ্পড় মেরেছে, কাউকে রক্ত বের করে দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো টাকা মেরে দিয়েছে ইত্যাদি। আল্লাহ যেদিন ফায়সালা করবেন, সেদিন তাদের আমল দিয়ে পরিশোধ করবেন আর যখন আমল শেষ হয়ে যাবে তখন তাদের পাপের বোঝাগুলো এই ব্যক্তির মাথায় দেয়া হবে। এবং অসহায়, নিঃস্ব হয়ে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।"

এই ফায়সালাটা যেই জায়গায় হবে সে জায়গাটার নামই "কান্তারা।"

আল্লাহ আমাদের সবাইকে কান্তারার কঠিন পরিস্থিতি থেকে হেফাজত করুন এবং মৃত্যুর আগে দুনিয়াতেই মানুষের দেনা পাওনা যদি কিছু থেকে থাকে আমরা যেন তা পরিশোধ করে নিতে পারি সেই তৌফিক দান করুন। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন, বোঝার তৌফিক দান করুন।আল্লাহ আমাদের সবাইকে মাফ করে দিন। আমীন ইয়া রব্বুল আলামিন।

© শায়খ আব্দুল্লাহ আল বাকী

02/02/2022

প্রতিটা আত্মহত্যার পিছনে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থাকে। শয়তান আত্মহত্যাকারীকে প্ররোচনা দেয়, দেখো, এই পৃথিবীতে তোমার চেয়ে খারাপ পরিস্থিতে আর কেউ নেই , সুতরাং এ পৃথিবীতে না থাকাই ভালো।

বাস্তবতা হলো, আমরা কেউই সবচেয়ে ভালো অথবা খারাপ অবস্থায় নেই। আমি ভাবছি আমি বোধ হয় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি অথচ খোঁজ নিলে দেখা যাবে সারা পৃথিবী দূরে থাক, একটু আশেপাশে তাকালেই আমার থেকেও কষ্টকর জীবনযাপন করছে এমন মানুষের অভাব হবে না। একইভাবে সামাজিক স্ট্যাটাসে আমার চেয়েও ভালো অবস্থায় আছে এমন মানুষ আশেপাশেই রয়েছে।

শয়তান মানুষের নাফসের নিয়ন্ত্রণ নেয় দুই অবস্থায়। যখন পরমানন্দে থাকে তখন শয়তান এই বলে গর্ব সৃষ্টি করে দেখো তোমার চেয়ে ভালো অবস্থায় আর কেউ নেই। শয়তান এভাবে ভালো সময়ে আল্লাহ তায়ালার শুকুর থেকে আমাদের দূরে রাখে। খারাপ সময়েও একইভাবে সবর থেকে সরিয়ে দেয়।

প্রিয় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'মুমিনের অবস্থা কতই না চমৎকার! তার সব অবস্থায়তেই কল্যাণ থাকে । এটি শুধু মুমিনেরই বৈশিষ্ট্য যে, যখন সে আনন্দের উপলক্ষ পায়, আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। ফলে তা হয় তার জন্য কল্যাণবাহী। আর যখন সে কষ্টের সম্মুখীন হয়, তখন সবর করে এবং ধৈর্যে অটল থাকে । ফলে এটিও তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে'।

কেউ যদি উপরোক্ত হাদিসের উপর আমল করে, সে কিভাবে হতাশ হতে পারে? কিভাবে আত্মহত্যার মতো মহাপাপ করতে পারে?

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে শুকুর ও সবরের জীবন দান করুন, শয়তানের চক্রান্ত থেকে হেফাজত করুন, আমিন।

© সাইফুর রহমান

Want your school to be the top-listed School/college?

Website