সব প্রত্যাশা পূর্ণতা পায় না —
একজীবনে সবাই সুখী হতে পারে না।
কেউ ক্ষণিকেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে,
কেউ হাজার পেয়েও দুঃখ পুষে।
Psychology & Spirituality - মনোবিজ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতা
From the inner workings of your brain to the outer reaches of human behavior.
প্রিয় এতটা দীর্ঘ সময় ধরে ভালবেসো না,
এতটা সময় একনাগাড়ে এ হাত ধরে রেখো না;
ভালবাসায় বিরতি দিয়ে একটুখানি বাইরে এসো,
শরতের ফুরফুরে হাওয়ায় দীর্ঘনিঃশ্বাসে বুক ভরো-
কিছুটা সময় হাতটা ছেড়ে ফুলকলিটি দেখো,
কিভাবে পূর্ণ পুষ্প হয় যে কলিটি এমন জড়োসড়ো!
সামান্য শব্দের কি দারুণ ক্ষমতা!!
কিছু শব্দ হৃদয় রাঙিয়ে দেয়।
কিছু শব্দ হৃদয় ভেঙে দেয়।
শব্দই কাছে আনে, শব্দই চিরতরে দূরে সরিয়ে দেয়।
কিভাবে নিজেকে ম্যাচিউর প্রমাণ করবো?
#কথা কম বলা নিজেকে ম্যাচিউরড প্রমাণ করার একটি উপায়।
#কারো সাথে বেহুদাই এবং বিনা কারণে ঝগড়ায় লিপ্ত না হওয়া।
#কথা বলুন মেপে মেপে।
#কথা বলার সময় আই কন্ট্রাক্ট করুন।
#বডি ল্যাংগুয়েজ সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া দরকার।
#কথা এবং কাজে মিল থাকা অতীব জরুরী।
#নিজেকে নিজে পরিচালন করার কোয়ালিটি রপ্ত করতে হবে।
আমন্ত্রণ' আর 'নিমন্ত্রণ'-এর মধ্যে পার্থক্য কী?
সুন্দর একটি প্রশ্ন করার জন্য ধন্যবাদ, যদিও প্রশ্নটির উত্তর দেবার জন্য আমাকে অনুরোধ করা হয়নি তবুও আমি এর উত্তর দেবl
ধরুন আমি আপনাকে আমন্ত্রণ জানালাম আমার বাড়িতে, আপনি যথারীতি আমার বাড়িতে আমন্ত্রিত হলেন এবং আমাকে আপনার বাড়ি যাবার জন্য নিমন্ত্রণ করে গেলেন|😊
এবার জেনে নেয়া যাক আমন্ত্রণ এর অর্থ, আমন্ত্রণ 👉আসিবার জন্য অনুরোধ, স্বাগত সম্ভাষণ।
নিমন্ত্রণ 👉 ভোজনার্থ আহ্বান
এবার ধরুন আপনাকে আমি আমন্ত্রণ জানিয়েছি মানে আমার বাড়িতে আসবা জন্য অনুরোধ করলাম, লৌকিকতার জন্য আমি আপনাকে শুধুমাত্র চা পান করতে দিলাম, আপনি হয়তো ভেবেছিলেন আপনার জন্য আমি প্রীতিভোজের ব্যবস্থা করবো তাই আপনি সেই আশাতেই আছেন কিন্তু বাস্তবে তা হলো না, কারণ ওই যে আমি আপনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, যার মানে আমি আপনার ভোজের ব্যবস্থা করবো কী না করবো সেটা আমার পছন্দ l
আর কেউ যদি আপনাকে নিমন্ত্রণ করে তাহলে আপনি কব্জি ডুবিয়ের খাবার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন l
সুতরাং :- প্রস্তুতি নিয়ে আমন্ত্রণ ও নিমন্ত্রনে এ যোগদান করুন না হলে পস্তাতে হবে l
মানসিক বিষন্নতা দিন দিন কেন বেড়ে চলেছে? কাদের এই প্রবণতা বেশি হয়?
বিষন্নতা বা মানসিক অবসাদের কী কী উপসর্গ?
ডিপ্রেশনের প্রধান উপসর্গ হলো, ভালো না লাগা, বা ইংরাজিতে যাকে বলে লো মুড (Low mood)। কিন্তু কারও কারও ডিপ্রেসন না হয়ে খিটখিটে বা রাগের ভাব বেশি হতে পারে। আরো উপসর্গগুলো নিচে দেয়া হলো:
১. বেশিরভাগ সময় মন ভালো না লাগা, বা কারও কারও সব সময় রাগ বা খিটখিটে মেজাজ।
২. ঘুমের অসুবিধা, যেমন, প্রথম রাত্রিতে ঘুম ঠিক এসে যায়, কিন্তু মাঝ রাত্রিতে বা খুব সকালে ঘুম ভেঙে যায়, তারপর যার ঘুম আসে না। আবার ঘুমটা ভাঙা ভাঙাও হতে পারে।
৩. খেতে ইচ্ছা না করা, তার জন্য দেহের ওজন কমে যেতে পারে। আবার কেউ কেউ মন খারাপের জন্য অনেক বেশি খেয়ে বেশ মোটা হয়ে যেতে পারে। তারা আবার বেশি ঘুমায়ও।
৪. আগে যা যা করতে ভালো লাগত তা আর ভালো লাগে না, যেমন গান শোনা, বই পড়া, বা সিনেমায় যাওয়া, বা বেড়াতে যাওয়া ইত্যাদি। এমনকি যৌনকাঙ্ক্ষাও কমে যায়।
৫. নিজেকে গুটিয়ে ফেলে, বন্ধুবান্ধব, বা আত্মীয় স্বজন কারো সাথে মেলামেশা না করা।
৬. কাজে না যাওয়া, বা পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়।
৭. অনেকে বলেন স্মৃতি শক্তি কমে গেছে, কিছু মনে থাকে না, ঠিক মতো মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারেন না। তার জন্য কাজে ভুল হতে পারে। কাজ সম্পূর্ণ করতে অনেক বেশি সময় নিতে পারে।
৮. কেউ কেউ বলেন, যখন ডিপ্রেশনের মাত্রা বেশি হয়, যে বেঁচে থেকে লাভ নেই। মরে যাওয়াই ভাল। এই সময় অনেকে আত্মহত্যা করে ফেলতে পারেন।
৯. আমাদের দেশে ডিপ্রেশন হলে অনেকে বলেন, গা, হাত পা ব্যথা করছে, মাথা ব্যথা সব সময়। যাদের ডিপ্রেসনের সাথে টেনশন থাকে তারা বলেন, বুক ধড়ফড় করছে, গা, হাত পা ঝিন ঝিন করছে, যেন সাংঘাতিক কোনো দুরর্ঘটনা ঘটে যাবে। এক মুহূর্তের জন্য শান্ত থাকতে পারেন না। ভারতবর্ষে বা তার আশপাশের দেশ গুলোতে অবসাদের রোগীরা আরো নানা রকম শারীরিক উপসর্গ যেমন, হজমে গণ্ডগোল, মাসিকে গণ্ডগোল বা মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্ন, ইত্যাদিও হয়। তার জন্য রোগী অনেক সময় চিকিৎসার জন্য জেনারেল ডাক্তারের কাছে যায়।
১০. এমনও দেখা গেছে অবসাদ অবস্থা যখন খুব বেশি হয় তখন রোগী কানে নানা কথা শুনতে পারে (হ্যালুসিনেসন,) যেমন কেউ যেন বলছে, ‘ তোমার বেঁচে থেকে লাভ নেই,এখনই মরে যাও, তুমি অনেক পাপকাজ করেছ, ইত্যাদি। এই সময় রোগী ওই কথাগুলোকে সত্যি মনে করে আর তাতে আত্মহত্যা করার প্রবণতা অনেক বেশি হয়।
ডিপ্রেশন কাদের হয়?
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদ ভোগেন এমন রোগীর সংখ্যা এমন কিছু কম নয়, এবং বেশির ভাগ রোগীরই চিকিৎসা করা হয় না কারণ তারা বুঝতে পারে না যে তাদের ডিপ্রেশন হয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে সারা বিশ্বে যেকোনো সময় প্রায় দশ কোটি মানুষের ডিপ্রেসন হয়, কিন্তু তার মধ্যে মাত্র এক কোটি রোগী ডাক্তারের কাছে যায় চিকিৎসা করাতে। মানসিক অবসাদের এই অবস্থা নারী পুরুষের মধ্যে প্রায় সমান সংখ্যায় হয়, যদিও পুরুষদের মধ্যে ডিপ্রেশন বেশি হয় বৃদ্ধ অবস্থায়। যেকোনো বয়সে এই মানসিক অবসাদ হতে পারে, এমনকি দশ বছরের কম শিশুদের মধ্যেও। শিশু বা বয়ঃসন্ধিক্ষনে ডিপ্রেসনের উপসর্গগুলো অনেকটা আলাদা হয়।
ডিপ্রেশন বা অবসাদ কিভাবে প্রভাব ফেলতে পারে?
কারও মানসিক অবসাদ হলে তার জীবনে বেশ গভীরভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন—
১. কাজকর্মে অসুবিধা, নানা ভুল করতে পারে, কাজে মন না লাগার জন্য কাজে দেরি হওয়া, কাজে না যাওয়া, ইত্যাদি। কাজ না করার জন্য পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
২. পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারে না। ছেলে মেয়েদের দেখাশোনা ইত্যাদি ঠিকমত করতে পারে না।
৩. বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয় স্বজনের থেকে দূরে সরে যায়।
৪. যদি উঠতি বয়সের সময় এই অবসাদ হয় তখন তারা পড়াশোনায় মন দিতে পারে না, প্রায় রাগ ভাব আব ছটফটে ভাব হয় বা একদম নিস্তেজ ভাব হয়ে যায়। এতে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়তে পারে, সেটা আর কখনো মেকাপ করতে পারে না, যদি না সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করা হয়।
৫. কেউ কেউ আবার নানা ড্রাগ নেয়া শুরু করতে পারে, তখন ডিপ্রেশনের মাত্রা আরো বাড়তে পারে। অনেকে ভাবেন অ্যালকোহল খেলে হয়ত মনের অবসাদের ভাবটা কেটে যাবে। কিন্তু তাতে ডিপ্রেশনের মাত্রা আরো বেশি বেড়ে যায়। এমনকি আত্মহত্যা করার প্রবণতা বেড়ে যায়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে মানসিক অবসাদের জন্য রোগীর জীবনে সব ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলে।
ডিপ্রেশন বা অবসাদ কেন হয়?
দেহের কোনো কারণের জন্য বিষন্নতা হতে পারে কি?
অনেক পরীক্ষায় বা গবেষণায় পাওয়া গেছে যে শারীরিক কিছু পরিবর্তনের জন্য মনের বিষন্নতা আসতে পারে। যেমন—
১. ব্রেনের বা মস্তিষ্কের নানা নিউরোট্রান্সমিটারের পরিবর্তনের জন্য অবসাদ হতে পারে।
নানা নিউরোট্রান্সমিটারের মধ্যে দুটি বিশেষ উল্লেখ যোগ্য, যেমন নর এপিনেফ্রিন( norepinephrine) ও সেরোটোনিন (serotonin)। নিউরোট্রান্সমিটার হলো এক রকমের কেমিক্যাল যেটা সাধারণত নার্ভকোষে সব সময় তৈরি হয়ে চলেছে। যখন নার্ভ এর উত্তেজনা হয় তখন সেটা বাইরে বেরিয়ে এসে অন্য নার্ভকে উত্তেজিত করে, এই ভাবে এক নার্ভ থেকে অন্য নার্ভে যোগাযোগের জন্য আমরা সব অনুভূতি পাই। এই নর এপিনেফ্রিন ( norepinephrine) এর ওপর প্রভাব ফেলে ভেনলাফাক্সিন (Venlafaxine) নামক ঔষধ যেটা ডিপ্রেসনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। সেই জন্য মনে করা হয় নর-এপিনেফ্রিন যে নার্ভকোষের উপর কাজ করে তার বেশি ক্রিয়ার জন্য ডিপ্রেশন হয়।
নার্ভে সেরোটোনিন(serotonin) এর কম হওয়ার জন্য হয়ত ডিপ্রেশন হয়।
কারণ দেখা গেছে ফ্লুওক্সেটিন (Fluoxetine) নামক ডিপ্রেশনের ঔষধ ব্রেনে সেরোটোনিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য মনের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তাই মনে করা হয়, সেরোটোনিন এর পরিমান কমে যাওয়ার জন্য হয়ত এই রোগটা হয়। শেষ কয়েক দশকে আরো কয়েক রকমের সেরোটোনিনের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেগুলো আরো নানা ভাবে মনের উপর প্রভাব ফেলে।
ডোপামিন (Dopamine) আরেক রকমের নিউরোট্রান্সমিটার যেটা কম হওয়ার জন্য হয়ত ডিপ্রেশন হয়। কারণ দেখা গেছে, টাইরোসিন (tyrosine) নামক অ্যামিনো অ্যাসিড, অ্যাম্ফিটামিন (amphetamine), বা বিউপ্রোপিওন (Bupropion) ইত্যাদি ব্রনের মধ্যে ডোপামিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, তার জন্য এই ঔষধগুলোকে ডিপ্রেশনের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার আমরা জানি যে পারকিনসন স্নায়ু রোগের (Parkinson’s disease) কারণ হলো ব্রেনের কিছু স্থানে বা সেন্টারে ডোপামিন কম হওয়া। সেই জন্য অনেক পারকিনসন রোগীর ডিপ্রেসন হয়। উপরের যে নিউরোট্রান্সমিটার গুলো বলা হলো তাছাড়াও আরো নিউরোট্রান্সমিটার আছে যেমন, অ্যসিটাইলকোলিন (Acetylcholine) , গাবা (GABA, Gama Amino Butyric Acid), ইত্যাদি ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে।
২. হরমোনের কম বেশি হওয়ার জন্যও ডিপ্রেসন হতে পারে।
যেমন থাইরয়েড (thyroid hormone ) হরমোন ও গ্রোথ (Growth hormone ) হরমোন কম হলে ডিপ্রেশন হয়। এছাড়া আরো নানা হরমোন আছে যার পরিমাণের কম বেশি হওয়ার জন্য মনে ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, সেগুলো আর বলা হলো না। হরমোন ও নিউরোট্রান্সমিটার কিভাবে কাজ করে,এবং কি ভাবে ডিপ্রেশন হয় এটা খুব জটিল, আর উপরের কারন গুলো খুব সরলভাবে বর্ননা করা হলো।
৩) ব্রেনের আকৃতির পরিবর্তন
ক্যাট স্ক্যান (CAT Scan) বা এম আর আই(MRI) করে ব্রেনে নানা পরিবর্তন পাওয়া গেছে, যেমন ভেন্ট্রিকল বড় হয়েছে, ব্রেনের কিছু জায়গায় নার্ভ শুকিয়ে গেছে, ইত্যাদি সেগুলো আবার সব রোগির ক্ষেত্রে পাওয়া যায়নি। আবার পেট স্ক্যান (PET scan) করে পাওয়া গেছে যে যাদের ডিপ্রেশন হয়েছে তাদের ব্রেনের কিছু কিছু জায়গায় রক্তের চলাচল কমে গেছে। যখন ডিপ্রেশনের থেকে সেরে উঠেছে তখন আবার রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এই সব পরিবর্তন কিছু কিছু ডিপ্রেশনের রোগীর ব্রেনে পাওয়া গেছে, সবার ডিপ্রেশন রোগীর মধ্যে পাওয়া যায়নি।
ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা রোগ কি বংশগত?
ফ্যামিলি স্টাডি, যেসব শিশুদের দত্তক নেয়া হয়েছে তাদেরকে, এবং যমজ ছেলে মেয়েদের বেশ কয়েক বছর লক্ষ্য করার পর জানাগেছে যে, আমাদের এই মুডের (Mood) এর কারন অনেকটা বংশগত। যদি মা বা বাবার কোন একজনের ডিপ্রেসন বা ম্যানিয়া থাকে তাহলে তাদের সন্তানদেরও ওই ডিপ্রেশন বা ম্যানিয়া হওয়ার সম্ভাবনা ১০ থেকে ২৫ শতাংশ। আর যদি পিতা মাতার দুজনেরই মুড প্রবলেম আছে তাহলে সন্তানদের হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুন হয়ে যায়।যমজ( যারা একদম একরকম) এক জনের যদি ডিপ্রেশন বা ম্যানিয়া থাকে তবে অন্য যমজ সন্তানের হওয়ার সম্ভাবনা ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ। যমজ (অথচ একদম একরকম নয়) তাদের একজনের যদি হয় তবে অন্য জনের হওয়ার সম্ভাবনা ১৬ থেকে ৩৫ শতাংশ। সুতরাং এর থেকে বেশ বোঝা যাচ্ছে যে বংশগত কারণ একটা প্রধান কারণ।
ডিপ্রেশন কি সামাজিক কোনো কারণে হয়?
জীবনের ও পারিপার্শিক নানা কারনে মানসিক চাপের জন্য এই বিষন্নতা ভাব আসতে পারে। কেউ কেউ মনে করেন জীবনের নানা ঘাতপ্রতিঘাত ও মানসিক চাপের জন্যই ডিপ্রেসন হয়। আর কেউ কেউ মনে করেন এই মানসিক চাপ ডিপ্রেশন করার জন্য এমনকিছু প্রভাব ফেলে না।
লক্ষ্য করা গেছে যে কোনো শিশু যদি এগারো বছর বয়সের আগে তার মা বাবার একজনকে হারায় তবে তাদের বড় হয়ে বিষন্নতা বা অবসাদ অবস্থা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। এটা প্রায়ই দেখা যায় বিশেষ কোনো ক্ষতি হলে বা বিশষ কিছু হারালে ডিপ্রেশনের আরম্ভ হয়। যেমন নিকট কোনো আত্মীয় স্বজন হারালে বা মৃত্যু হলে, হঠাৎ বেশি টাকার কোনো লোকসান বা হারালে, বা চাকরি হারালে বা অবসর নিলে(বিশেষ করে যদি পরিবার স্বচ্ছল অবস্থায় না হয়), বিবাহ বিচ্ছেদ বা ভালবাসায় বিচ্ছেদ হলে, এমনকি পরীক্ষায় অসফল হলে, ইত্যাদি। কোন কারনে ডিপ্রেশন হবে তা অনেকটা নির্ভর করে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন কারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ত দেয়ার জন্য।
বিশেষ চিন্তার পরিবর্তনে কি ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে?
বিখ্যাত সাইকোলজিস্ট অ্যারন বেক(Aaron Beck)এর মতে, ডিপ্রেশনে ভোগেন সেই সব রোগীদের চিন্তার কিছু পরিবর্তন হয় যেমন:
তারা নিজেদের সম্বন্ধে নেতিবাচক ধারনা থাকে যেমন ভাবে তাদের দ্বারা কিছু হবে না,তারা অপদার্থ ইত্যাদি,
পারিপার্শিক অবস্থা সম্বন্ধে ভাবে যে সেটা ভীষণ এবং অনেককিছু আশা করে তার কাছ থেকে।
ভবিষ্যত সম্বন্ধে ভাবে সব সময় তাদের হার হবে আর তাদের ভুগতে হবে। সেই মনে করা হয় যদি এই ভুল ধারনা গুলো থেরাপি করে ঠিক করা যায় তবে ডিপ্রেশনেরও উপশম হবে।
ডিপ্রেশন কি একটা অসহায় অবস্থা যেটা মানুষ জীবন ধারনের মধ্যে শেখে?
মনে করা হয় যদি কেউ পরের পর খারাপ অবস্থার বা মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে থাকে তবে তাদের মধ্যে এই অবস্থার সৃস্টি হতে পারে। তখন সে ভাবে তার আর এই খারাপ অবস্থার মধ্যেদিয়ে বেরোনোর উপায় নেই, হতাশ হয়ে যায়, সব আত্মবিশ্বাসও হারিয়ে ফেলে।সেই অবস্থাকে ডিপ্রেশন বলা হয়। সুতরাং একে বলা যেতে পারে বার বার আঘাতের জন্য এক অসহায় অবস্থা।
মনে রাখা দরকার কোনো একটা বিশেষ কারনে ডিপ্রেসন হয় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনেকগুলো কারন এক সঙ্গে কাজ করে। আবার আর এক রকমের বিষন্নতা আছে যেটার কোন কারন নেই, সেটাকে বলা হয় মেলানকোলিক ডিপ্রেশন (Melancholic depression). এতে রোগীর মনের মধ্যে একদম আনন্দ থাকে না,অনেক সকালে ঘুম ভেঙ্গে যায়, খাওয়া দাওয়া কম করার জন্য বেশ রোগা হয়ে যায়, আর মনের মধ্যে খুব অনুশোচনা ভাব থাকে(এমনকি খুব ছোট কিছুর জন্যও)। এদের কেউ কেউ আত্মহত্যার করার কথাও বলেন।এদের কোনো কোনো সময় নানা হরমোনের গণ্ডগোল থাকতে পারে।
ডিপ্রেশনের সাথে আর কি কোনো উপসর্গ থাকতে পারে?
ডিপ্রেশনের সঙ্গে বেশির ভাগ সময়েই আরো নানা উপসর্গ থাকে, যেমন—
কারো কারো উদ্বিগ্ন ভাব থাকে, যেমন বলে এক জায়গায় স্থির হয়ে থাকতে পারে না। নানা শারীরিক উপসর্গ থাকে যেমন, বুক ধড় ফড় করা, মাথা ঝিম ঝিম করা, অনেকটা প্যানিক অ্যাটাকের মত।
কারো কারো নানা রকম বাতিক থাকে যেমন, ধোয়া ধুয়ি বাতিক, গোনা বাতিক, রোগের বাতিক, নিয়মের বাতিক ইত্যাদি।
এর সঙ্গে কেউ কেউ কানে নানা কথা শুনতে (হ্যালুসিনেসন) পান, যেন কেঊ তাদের নানা দোষারোপ করছে, বা তাদের সমালোচনা করছে ইত্যাদি হতে পারে।
কেউ কেউ নানা ড্রাগ ব্যাবহার করতে পারে, তার জন্য এই ডিপ্রেশন হতে পারে।
কারো যদি কোনো ক্রনিক কোনো রোগ অনেকদিন ধরে থাকে, তবে তাদেরও ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা হতে পারে।
সন্তানপ্রসবের পর ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা ভাব
সন্তানপ্রসবের পর কম বেশি মন থারাপ হওয়া প্রায়ই হয়ে থাকে। সেই অবস্থাটা সাধারনতঃ কয়েক সপ্তাহ থেকে মাস দুয়েকের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। যদি এই বিষন্নতা ভাব খুব বেশি হয়, তখন নিম্নলিখিত উপসর্গগুলো থাকেঃ
মনে ডিপ্রেশনের ভাব, আনন্দফুর্তি লাগে না। সন্তানকে দেখা শোনা পর্য্যন্ত করে না, খাওয়া দাওয়া কম করে বা বন্ধ করে দিতে পারে। ঘুমের অসুবিধা হয়।
#মনে করতে পারে বাচ্চার বা সন্তানের কোনো দারুণ অসুখ করেছে:
এমনকি কোনো কোনো মা আত্মহত্যা পর্য্যন্ত করে ফেলে, বাচ্চাকেও মেরে ফেলতে পারে।এই রকম অবস্থা হলে বাচ্চাকে মায়ের কাছথেকে আলাদা রাখা দরকার ও মায়ের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করা দরকার। কোনো মায়ের সন্তান সম্ভবা হওয়ার আগেই তাদের যদি ডিপ্রেশন থাকে, তাদের ডিপ্রেসনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যাদের আগের ডিপ্রেশন অবস্থা ছিল, কিন্তু সেরে গেছিল, তাদের সেই বিষন্নতা অবস্থা আবার সন্তান হওয়ার পরে হতে পারে।
ডিপ্রেশন ও আত্মহত্যা
আত্মহত্যার একটা বিশেষ কারন হল ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা অবস্থা। সেই জন্য ডিপ্রেশন হলেই বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে এই আত্মহত্যার কথা। প্রচলিত ধারনা আছে যে আত্মহত্যার কথা জিজ্ঞাসা করলে নাকি আত্মহত্যার প্রবনতা বেড়ে যায়। এর কোনো সঠিক প্রমান পাওয়া যায় নি।
কোনো ডিপ্রেশনের রোগীর আত্মহত্যার করার প্রবণতা বাড়ে যদি:
সে পুরুষ হয়, অবিবাহিত বা একা থাকেন বা পত্নিবিয়োগ হয়েছে
ডিপ্রেশনের মাত্রা বেশি হয়, যেমন কানে নানা কথা শুনছেন যে ‘বেচে থেকে কি লাভ, মরে যাওয়াই ভাল ইত্যাদি’। বা বলছেন যে ‘আগে অনেক পাপ করেছেন, বা দুর্নীতি করেছেন তার জন্য ভুগতে হচ্ছে, বা পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে, ইত্যাদি।
বলেন ভবিষ্যতে আর আশা নেই, অসহায় অবস্থা প্রকাশ করছেন সব সময়। বলছেন কেউ তাকে আর ঠিক করতে বা সাহায্য করতে পারবে না।
আত্মহত্যা করার আগে তাঁরা বেশ প্ল্যান করেই করেন। অনেকেই মরার আগে সুইসাইড নোট লিখে রেখে যান।
যারা আগে আত্মহত্যা করতে গিয়ে অসফল হয়েছেন, তারা পরের বার আরও সাংঘাতিক রকমের আত্মহত্যার চেস্টা করেন। সুতরাং এটাও ভুল ধারনা যে যারা একবার আত্মহত্যায় অসফল হয় তারা আর আত্মহত্যার চেষ্টা করে না।
কোনো না কোনো ভাবে আগে কাউকে আত্মহত্যার কথা বলে থাকেন এই সব ডিপ্রেশনের রোগিরা।তাই সব সময় সতর্ক থাকা দরকার।
ডিপ্রেশনের রোগীর অ্যালকোহলের নেশা থাকলে, আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যায়।
ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকার উপায়ঃ
ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা যেহেতু মানসিক ব্যাধি সেহেতু আমাদের উচিত সর্বপ্রথম সেটাকে নিজে থেকেই প্রতিকারের চেষ্টা করা। সেগুলো হতে পারে–
১. বাস্তববাদী লক্ষ্য ঠিক করুন :
ডিপ্রেশন থেকে নিজেকে দূরে রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখা। এজন্য হালকা ধরনের, সহজ, ছোট-খাট, এক বা দুই দিনের লক্ষ্য আমাদের সাহায্য করতে পারে। সেই সাথে একটি যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ দায়িত্ব গ্রহণ। কারণ, কাজে ব্যস্ত থাকলে আমরা নিজেদের অপ্রয়োজনীয় সমস্যার দিকে মনোযোগ কম দিতে পারব। আমাদের যে কোন কারণে মন খারাপ বা ভাল এটা বোঝার জন্যেও সময় দরকার। সেই সময়টা যদি আমারা নিজেদের ব্যস্ত রাখি তাহলে এটি আমাদের ডিপ্রেশন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
“Keep yourself busy if you want to avoid depression. For me, inactivity is the enemy.” — Matt Lucas
২. আপনজন বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো :
বিষন্নতায় একা থাকার চেয়ে বরং তাদের সাথে সময় কাটানো উচিত যাদের সাথে আমাদের থাকতে ভাল লাগে অথবা যাদের সাথে কথা বলে আমরা আরাম পাই। আমাদের এমন অনেক বন্ধুমহলই থাকে যাদের সাথে কখনো মন খারাপ করে থাকা যায় না বরং সেখানে সব সময় হাসি-ঠাট্টা হয়। এমন বন্ধুমহলের সাথে সময় কাটালে তা আমাদের সময় এবং মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। এমনকি বিষণ্ণতার কারণ নিয়েও তাদের সাথে কথা বললে ভালো লাগতে পারে। আপনজনদের সাথে গল্প গুজব করাটিও মন ভালো করার জন্য যথেষ্ট।
৩. ইতিবাচকতা খোঁজা :
ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতার প্রথম শর্তই হচ্ছে সব কিছুর খারাপ দিক চিন্তা করা, নেতিবাচকতা খোঁজা। হয়তোবা, আমরা জানিই যে এই কাজটি আমরা করতে পারব তারপরও শুধুমাত্র বিষণ্ণতার কারণে আমরা তার খারাপ দিকটা ভাবতে শুরু করি।
যা করা উচিত তা হল যত বাধাই থাকুক, যত নেতিবাচক চিন্তা ভাবনাই আসুক আমাদের সবার আগে নিজেদের মাঝে আলো জ্বালাতে হবে। নিজের মধ্যে থেকেই ইতিবাচকতা খুঁজে বের করতে। “এই কাজ শুধুমাত্র আমি ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না।”– এই ইতিবাচকতা আমাদের নিজেদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখতেই হবে। একমাত্র তখনই নেতিবাচকতাকে দূর করা সম্ভব।
“Sometimes your joy is the source of your smile, but sometimes your smile can be the source of your joy.” — Thich Nhat Hanh
৪. ধ্যান বা শরীরচর্চামূলক কাজ করা :
আমরা সবাই জানি যে আমাদের শরীর ও মন পরস্পর সংযুক্ত। তাই আমাদের মনকে ভাল রাখতে হলে অবশ্যই আমাদের একটি সুস্থ শরীর বজায় রেখে চলতে হবে। এজন্য আমাদের দরকার উপযুক্ত খাদ্যের পাশাপাশি ধ্যান বা শরীরচর্চামূলক কাজ করা।
কিছু শারীরিকভাবে নিঃসৃত হরমন রয়েছে যেগুলো আমাদের মন ভাল রাখতে ভূমিকা রাখে। এই হরমোনকে বলা হয় “এন্ড্রোফিন”। নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের দেহ থেকে এ হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে। যা মন ভাল রাখতে সাহায্য করে। এজন্য আমার বিষণ্ণতা কমানোর জন্য নিয়মিত সাইকেল চালানো, সাঁতার, ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি-এসব করতে পারি। এতে আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য দুটোই বেশ ভালো থাকবে।
৫. সুস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া :
হাভার্ড মেডিকাল কলেজের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, একটি সুস্বাস্থ্যকর ডায়েট বিষণ্ণতা থেকে উত্তরণে বা মন ভাল রাখতে সাহায্য করে। এমনকি এটাও দেখা গেছে যে কিছু ময়দার আটা জাতীয় খাবার ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
এজন্য বিষণ্ণতা দূরীকরণে আমাদের দৈনন্দিন খাবারের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। ভিটামিন বি, সি, ডি এবং আয়রনযুক্ত খাবার মন ও শরীর ভাল রাখতে সাহায্য করে। এজন্য আমরা নিয়মিত শাক-সবজি, ফলমূল বা ফলের জুস খেতে পারি। সেই সাথে পরিমিত পরিমাণ পানিও পান করতে হবে। ক্যাফেইন এবং মদ জাতীয় পানীয় থেকে দূরে থাকা উত্তম।
৬. পছন্দের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা :
বিষণ্ণতায় আমাদের অপছন্দের বা কঠিন কাজ করতে ইচ্ছা করে না। স্বাভাবিকভাবেই সেই সব কাজে আমাদের মন বসতে চায় না। এমন সময় আমাদের সেই কাজ গুলো করা উচিত যা আমাদের আনন্দ দেয়, কঠিন কাজ হলেও করতে ভাল লাগে।
পুরানো সেই সব কাজ যা একসময় করা হত এবং ভালোও লাগতো কিন্তু এখন করা হয় না এসব কাজও আমরা করতে পারি। এই কাজগুলো হতে পারে, ঘুরতে যাওয়া, আড্ডা দেওয়া, বই পড়া, সিনেমা দেখা, গান শোনা, রান্না করা বা যে কোন কাজ যা আপনার ভালো লাগে সেসব কিছুই বিষণ্ণতা দূর করতে সাহায্য করে।
৭. প্রার্থনা :
প্রতিটি মানু্ষই বাঁচে আশার মাধ্যমে। আর এই আশা পূর্ণতা পায় বিশ্বাসের মাধ্যমে। এই বিশ্বাস ধর্মের প্রতি, সৃষ্টিকর্তার প্রতি। সাধারণত মানুষ যখন ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতায় ভোগে তখন তাদের কোন আশার বিঘ্ন ঘটে যার ফলে তারা ধীরে ধীরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে শুরু করে। এমন সময় সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ, নিজের বিশ্বাসকে শক্ত করার মাধ্যমে মানুষ শক্তি খুঁজে পায়।
সাইকোলজিস্টদের মতে, বিষণ্ণতায় নিজ নিজ ধর্মের প্রার্থনা মন ভালো করতে এবং শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
” Once you choose hope, anything is possible.” — Christopher Reeve
৮. প্রকৃতির কাছে যাওয়া :
বর্তমান যুবসমাজ বিষণ্ণতা দূর করতে সবচেয়ে বেশি যে কাজটি করতে পছন্দ করে তা হল স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থেকে বিরতি নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা।
মানু্ষের মনের সাথে প্রকৃতির সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকেই। আবহাওয়ার সামান্য পরির্বতন মানুষের মনে যেভাবে দোলা দেয় সেইভাবে তা বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে। সুন্দর কোন প্রাকৃতিক জায়গায় গিয়ে মানু্ষ চায় সবকিছু কিছুক্ষণের জন্যে ভুলে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে। এইভাবে প্রাকৃতিক জায়গায় ঘুরতে যাওয়াও বিষণ্ণতা কাটাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
৯. ধৈর্য ধারণ :
মানুষ যখন বিষণ্ণতায় থাকে তাদের মধ্যে কাজ করে অস্থিরতা। যেকোন সমস্যার তারা চায় তাৎক্ষণিক বা দ্রুত সমাধান। আর এ সমাধান না পেলে তারা আরো বেশি বিষণ্ণ হয়ে পড়ে।
এই সময় আমাদের সবচেয়ে বেশি যা করা দরকার তা হল ধৈর্য ধারণ। আমাদের মনে বিশ্বাস রাখতে হবে যে সব কিছুর সমাধান আছে এবং সব ঠিক হয়ে যাবে। প্রতিটি কাজের মাঝেই আমাদের বিশ্বাস আর ধৈর্য ধারণ করে আগাতে হবে। আমাদের এতটুকু মাথায় রাখতেই হবে যে, বিষণ্ণতা একবারে যাবে না। ধীরে ধীরে মানসিক শান্তি আসবে। বিষণ্ণতা কমে যাবে।
“A positive attitude gives you power over your circumstances instead of your circumstances having power over you.” — Joyce Meyer
বিষণ্ণতা একটি মানসিক ব্যাধি। বাহিরের যত চিকিৎসা বা পরামর্শই নেওয়া হোক নিজে থেকে সর্বাত্মক চেষ্টাই বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসার প্রাথমিক উপায়। আর এতটুকু মনে রাখতে হবে যে,
” Ring the bells that still can ring. Forget your perfect offering. There is a crack, a crack in everything. That’s how the light gets in.”
মুল প্রশ্নঃ কাউকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরে তা যদি রক্ষা করা না যায়, সেইক্ষেত্রে কী করা উচিত?
উত্তরঃ কাউকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে ভাবতে তা রক্ষা করা করা সম্ভব কি না, সেটা যেক্ষেত্রেই হোক না কেন।
যদি প্রতিশ্রুতি সত্যিকার অর্থে রক্ষা করা সম্ভব না হয়, যাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাকে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারার কারনটি বলে ক্ষমা চাইতে হবে।বিয়ের প্রতিশ্রুতি এটি একটি বড় প্রতিশ্রুতি, এধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যদি অন্যায় কোন কর্ম সঙ্ঘটিত হয়, তবে তা আরো মারাত্বক।তাই খেয়াল রাখতে হবে কোন প্রতিশ্রুতি যদি প্রতারণার উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে তবে তা ক্ষমার অযোগ্য, তবুও ক্ষমা চাইতে হবে যদি ক্ষতিপুরনের মত বিষয় থাকে তবে করতে হবে।
যে ১০ টি ঔষধ আপনারা সবাই বাসায় রাখবেনঃ-
১. Sergel 20 mg. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে সকালে ও রাতে খালি পেটে খাবেন।
২. viset 50 mg বা Algin 50 mg যে কোন পেট ব্যথ্যা বা মহিলাদের পিরিয়ডের সময় ব্যথ্যা হলে ভরা পেটে খাবেন।
৩. Napa Extra বা Napa Extend জ্বর বা ব্যথ্যা হলে খাবেন।
৪. Ecosprin 75 mg. বুকে চাপ চাপ ব্যথ্যা হলে খাবেন।
৫. Flazyl 400 mg বা Filmet 400 mg.পাতলা পায়খানা বা আমাশয় হলে খাবেন।
৬. Tufnil 200 mg প্রচন্ড মাথা ব্যথ্যা হলে খাবেন।
৭. Rolac 10 mg বা Tory 90 mg দাঁত ব্যথ্যা হলে খাবেন।
৮. Rupa 10 mg বা Fexo 120 mg স্বদি ঠান্ডা, কাশি বা এলার্জি হলে খাবেন।
৯. Emistat 8 mg বমি হলে খাবেন।
১০. Tenoloc 50 mg বা Amdocal 5 mg হঠাৎ প্রেশার বেড়ে গেলে খাবেন।
প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে ঔষধগুলো হাতের কাছে রেখে দিবেন। (প্রয়োজনে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হবেন।)
উল্লেখ্য ব্যথার ঔষধ সব সময় ভরা পেটে খাবেন এবং খাবারের আগে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খেয়ে নেবেন।
ব্যক্তিত্ব বলতে কী বোঝায়?
ব্যক্তিত্ব হচ্ছে লজ্জ্বাশীলতা। যার লজ্জ্বাশীলতা যত বেশী, তার বিবেকবোধ তত তীক্ষ্ণ আর যার বিবেকবোধ যত তীক্ষ্ণ, তার ব্যক্তিত্ব তত বড়। অন্তরে লজ্জ্বাশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সহজ নয়, ছোটবেলা থেকে শিষ্টাচারের মাধ্যমে গড়ে উঠে। সর্বোচ্চ লজ্জ্বাশীলতার সহিত বিবেকবোধ ও ব্যক্তিত্ববান শুধুমাত্র তারাই, যারা তাকওয়া অন্তরে ধারণ করে।
কীভাবে একজনকে সহজে ভোলা যায়?
আমি একটা কথা প্রায়ই বলি, সেটা হচ্ছে নিজেকে ভালোবাসতে হবে। আমরা সবসময়ই অন্যদের নিয়ে ভেবে মনকে এত বেশি ব্যস্ত রাখি যে নিজের জন্য কোনো সময়ই হয়না। এটা করতে পারলে জীবনটা খুব সহজ হয়ে যায়। অন্যদের থেকে এক্সপেকটেশনটা কমে যায়। নিজের উপর অন্যকে নিয়ন্ত্রণ নিতে দেবেন না। তাতে আত্মার শান্তি নষ্ট হয়। তেমনিভাবে আপনিও কাউকে নিয়ন্ত্রণ করতে যাবেন না। আপনাকে নিজেকে ভালোবাসার কিছু উপায় বলে দিচ্ছি -
১. মন খারাপ দূর করতে নিজেকে কিছু গিফট করুন। নতুন কিছু পেলে আমাদের মন ভালো হয়ে যায়। এটা আমার খুব কাজে দেয়। আমি নিজের টাকায় নিজের জন্য কিছু কিনি।
২. বন্ধুদের সাথে কথা বলুন। অবশ্যই সমস্যা নিয়ে না, পূর্বের কোন আনন্দময় সময় নিয়ে আলাপ করুন।
৩. একা ভালো কোনো রেস্টুরেন্টে খেয়ে আসুন।
৪. নতুন কিছু শিখার চেষ্টা করুন। এটাও ব্যস্ত থাকার একটা কৌশল।
৫. পরিবারে সময় দিন। কারো কোনো কাজে হেল্প লাগলে, করুন।
৬. বসে বসে নিজের মনে আসা সারাদিনের খারাপ চিন্তাগুলোর লিস্ট করুন। এবং এগুলোর যৌক্তিকতা কতটুকু তা ভাবুন। তাহলে দেখবেন, অন্যের ভুলগুলো ও ছোট হয়ে আসবে।
৭. বই পড়ুন। সত্যি এটা ১০০% কার্যকরী। বই পড়লে আমরা অন্য জগতে চলে যাই, তখন আর কোনো কিছুই মনে থাকে না। এবং বই শেষ করার পরও অনেক সময় পর্যন্ত এর কাহিনী আমাদের মাথায় ঘুরতে থাকে।
৮. কমেডি ফিল্ম অথবা আর্ট ফিল্ম দেখুন।
এসব কিছুই নিজের মনকে ব্যস্ত রাখার কৌশল। এ কাজ গুলো একান্তই আমার নিজস্ব অভিমত। তবে আমি কোনো এক্সপার্ট নই। কখনো কোন মানুষের কাছ থেকে ১০০% এক্সপেকটেশন রাখা ঠিক না। তাদের জন্য যথেষ্ট স্পেস রাখবেন, তাহলে কষ্ট কম পাবেন।
কিভাবে নিজেকে সম্মানীয় করে তোলা যায়?
#নিঃস্বার্থভাবে অন্যের উপকার করুন।
#কারো কাছ থেকে কোনরূপ প্রত্যাশা করা ছেড়ে দিন।
#হিসাব-নিকাশ করে কথা বলুন।
#যা বলবেন- স্পষ্ট করে বলুন।
#ভণ্ডামো ছেড়ে দিয়ে সত্যের পক্ষে অবস্থান নিন।
#অন্যের প্রতি সহনশীল ও সদয় হোন।
#কাউকে সম্মান দিলে সম্মান কমে না,বরং বাড়ে।সম্মান পেতে হলে,সম্মান দিতে হয়।
#অন্যের সাথে অযথা নিজেকে নিয়ে দাম্ভিকতা করা যাবে না।
#সকল শ্রেণীর মানুষদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে শিখুন।
#অন্যের নামে বিদ্বেষ এবং প্রপাগন্ডা ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।
#মানব বিদ্বেষী কাজকারবার পরিহার করুন।
#মানুষের সাথে অযথা ঝগড়াঝাটি এবং নিষ্ফল তর্কে লিপ্ত হবেন না।
#মানুষকে আন্তরিকভাবে প্রশংসা ও উৎসাহিত করুন।
পর্নোগ্রাফি দেখার আসক্তি ছাড়াব কিভাবে?
বিভিন্ন উৎসের সাহায্য নিয়ে একটা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি। উত্তরটা একটু বড় ধৈর্যসহকারে পড়ুন।
প্রতি দিন কত তরুন যে এই ফাঁদে পা দিচ্ছে।সারা পৃথিবীতে আজ অসংখ্য মানুষ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। এই আসক্তির কারণে অনেক পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসছে। অথচ বেশির ভাগ মানুষই এর ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত নন । আমাদের বর্তমান সমাজ যেখানে শারীরিক সুস্থতা নিয়ে অনেক সচেতনতা সৃষ্টি করছে, সেখানে পর্নোগ্রাফির বিষয়টাতে এমন অসচেতনতা সত্যিই দুঃখজনক।
#একজন former portnstar বলেছেন, p**n Industry তে বেশিরভাগ মানুষ ভাঙা ঘর থেকে আসা, অর্থাৎ যাদের পিতা মাতার divorced হয়েছে, অনেক মেয়েরা যৌন হয়রানির শিকার ।
৯৭ বিলিয়ন ডলার পর্ন industry, যার ১৪ বিলিয়ন ডলার আসে USA থেকে। পর্ন Industry এর ২০১৪ সালের Revenue , Facebook, Amazon, Disney, McDonald's, Google, Microsoft এই সব একেকটি Company এর থেকে বেশি।
#আপনি কি জানেন? সকল Online traffic এর মধ্যে ৩০% পর্ন। সকল search engine এ ২৫% অনুরোধ আসে পর্ন রিলেটেড। Online এ সকল Paid Content এর ভিতর ৬৯% পর্ন Content. ১০ - ১৫ বছরের teenager দের দ্বারা Most searched keyword, p**n.
#এটা দ্বারা বোঝায় খুব কম বয়স থেকে teenager রা কোনা বাধা ছাড়ায় পর্ন Access করতে পারে।
#এটি আপনাকে বিস্মিত করে দিবে, যারা P**n addicted তারা কিভাবে দেখবে একজন নারীকে? এটা জেনে। আপনি কি আপনার স্নেহের মেয়ে কে এইরকম লোকের সাথে বিয়ে দিতে চাইবেন? এটা কেউ চাইবে না, আমি মনে করি।
#২০০৭ সালে, University of Alberta তে একটি জরিপ করা হয়েছিল, ১৩ - ১৪ বছর বয়সী ৪২৯ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের ৯০% ছেলে এবং ৭০ % মেয়ে, online এ s*xual content দেখে। তাদের মধ্যে, ৩৫% ছেলে বলেছে তারা কত বার দেখেছে, তার কোন হিসাব নাই।
Whoever controls the media, controls the mind. (Jim Morrison)
We become what we think about all day long. (Ralph Waldo Emerson)
#যখন আপনি পর্ন দেখবেন, আপনার ব্রেন চিন্তা করবে, you are having s*x. আপনার ব্রেন বুঝতে পারে না, Real s*x এবং পর্ন ভিডিও দেখার মধ্যে পার্থক্য।
#যেমন, কোন ভূতের Movie দেখলে, আমরা অনেক সময় ভয় পেয়ে চমকে উঠি, আর Sad movie দেখলে, আমরা কান্না করি, আমাদের মনকে বিষন্ন করে দেয়।
#আপনি যেটা video তে দেখছেন, আপনার ব্রেন চিন্তা করে, এটি আপনার real লাইফে ঘটতেছে। আপনি যদি এরকম বহু পর্ন scene দেখতে থাকেন, আপনার ব্রেন ভাবে, আপনি অনেক পার্টনার এর সাথে s*x করতেছেন।
#ডোপামিন, নামে একটি হরমোন আছে ব্রেনে, যেটি আপনাকে প্ররোচিত করে কোনকিছু করতে, যা আপনাকে ভাল অনুভব করায়, যেমনঃ Having s*x or Eating food.
#যদি দেখেন, আপনার পাশ দিয়ে একটি মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে, যাকে আপনার সুন্দরী বলে মনে হয়। তখন আপনার ভিতর excitement and nervousness কাজ করে, এটা ডোপামিনের কারনে।
#যখন আপনি পর্ন দেখেন, এটা আপনাকে ma******te করতে উৎসাহিত করে, কারন তখন আপনার ব্রেন আরো বেশি ডোপামিন produce করতে চায়।
#কোকেইন, আর হিরোইন গ্রহণ করলে ও, ব্রেনে তৎক্ষনাৎ ডোপামিন ক্ষরণ শুরু হয়, কিন্তু পর্ন, কোকেইন ও হিরোইন এর চেয়ে ধ্বংসাত্মক। মনস্তাত্ত্বিকবিদরা পেয়েছেন, তিনটা condition এ একজন মানুষ addicted ওঠে।
# #প্রবেশযোগ্যতা
# #ক্রয়ক্ষমতা
# #নামহীনতা
#অর্থব্যয় একটা বিরাট বাধা হয়ে দাড়ায়, alcohol ও drug addicted যারা তাদের ক্ষেত্রে। কিন্তু পর্নের ক্ষেত্রে এমন কোন বাধা নেয়। উপরের ৩ টি condition ই পর্নের ক্ষেত্রে সহজেই মিলে।
#প্রথমত, যে কেউ সেকেন্ড এর ভিতর online এ পর্ন দেখতে পারে। (প্রবেশযোগ্যতা)। দ্বিতীয়ত, এটা ফ্রিতে পাওয়া যায়।( ক্রয়ক্ষমতা)। তৃতীয়ত, আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটারে থাকলে, কেউ কখনো জানবে না।( নামহীনতা)
#জেনে রাখবেন, এই কারনের জন্য পর্ন অনেক বেশি ধ্বংসাত্মক। যদি এমন কখনো হয়, সকল ধরনের alcohol ফ্রি, কেউ যত পরিমান পান করুক তার কোন টাকা লাগবে না,মানুষের অবস্থা কি হবে কল্পনা করতে পারেন?
#কিন্তু এখনকার পৃথিবীতে ব্যপারটা পর্নের ক্ষেত্রে সঠিক, এটাতে কোনো age limit নাই, এটাতে কোন টাকা লাগে না, আপনি দেখলে কেউ কখনো এটা জানতে পারবে না।
#আপনাকে যেটা control করছে, সেটা যদি আপনি ত্যাগ করতে না পারেন, you have become less human.
# #ক্ষতিকর প্রভাবঃ
শারীরিক :
#মানব দেহের ওপর পর্নোগ্রাফির অসংখ্য ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে; এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে—স্ত্রীর সাথে যৌন সম্পর্কে অক্ষমতা দেখা দেয়।
#অথচ তিরিশ বছর আগেও ৩৫ বছরের কম বয়সী পুরুষদের মাঝে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (erectile dysfunction) এর কথা শোনাই যেত না; এই সমস্যা হত শুধুমাত্র বার্ধক্যের কারণে।
#কিন্তু বর্তমান সময়ে পর্নোগ্রাফি সহজলভ্য হওয়ায় এমন অবস্থা হয়েছে যে, ১৬ বছরের অনেক যুবকেরাও আজ ইরেক্টাল ডিসফাংশনের শিকার।ঘন ঘন পর্ন দেখার ফলে মস্তিষ্কের গঠন এমন হয়ে যায় যে, যৌন চাহিদা পর্নের ওপর নির্ভরশীল হতে থাকে।
#ফলে একজন পর্ন আসক্ত ব্যক্তি অনেক সময় নিজের স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে উত্তেজনা অনুভব করে না ।আসক্তি বাড়ার সাথে সাথে অন্য আসক্তিকর বস্তুর মতোই আগে দেখা পর্নগুলো তাকে উত্তেজিত করতে পারে না।
#কারণ তার ব্রেইনের ডোপামিন রিসেপ্টরগুলো (dopamine receptors) নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে থাকে। এমন অবস্থায় একজন পর্ন ইউজার আগের উত্তেজনা ফিরে পেতে আরও এক্সট্রিম পর্নের দিকে ঝুঁকতে থাকে।
#আসলে নীল পর্দায় যৌনতার স্বাদ উপভোগ করা পর্ন আসক্ত মানুষগুলো স্ত্রীর প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলতে থাকে। ভার্চুয়াল সেক্স বাস্তব জীবনে সেক্স এর ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এটা কীভাবে স্বাভাবিক হতে পারে একটু ভাবুন।
# #মানসিক :
#বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও একাকিত্ব বর্তমান বিশ্বে আমাদের প্রধান মানসিক সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু আপনি কি জানেন, পর্নোগ্রাফি এ সকল সমস্যার একটি অন্যতম কারণ?
#পর্ন দর্শকরা স্বাভাবিকভাবেই চায় তাদের এই আসক্তি গোপন রাখতে। যার ফলে অনিবার্যভাবে তাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তারা ভুগেন নিঃসঙ্গতায়। অন্যান্য অনেক মানসিক সমস্যার পথও খুলে যায় তাদের জন্য।
#এ ছাড়াও রিসার্চ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পর্ন ব্যবহারকারীদের মধ্যে নিজের দেহ নিয়ে হীনম্মন্যতা এবং আত্মসম্মানবোধের অভাব দেখা যায়।
# #সম্পর্কঃ
#মানুষ সামাজিক জীব। তাদেরকে যৌন চাহিদা দিয়েই সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু পর্নোগ্রাফির কৃত্রিম যৌনতার মাঝে সেই চাহিদা পূর্ণতা পায় না।
#সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, পর্নোগ্রাফির যৌন বিনোদন শুধুই কৃত্রিম না; বরং তা দম্পত্য জীবনের যৌন সম্পর্ককে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
#রিসার্চে এসেছে কেউ মাত্র একবার পর্নোগ্রাফি দেখলেও তার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা কমে যেতে পারে। এমনকি স্ত্রীকে আগের মত আর আকর্ষণীয় মনে হবে না।
#রিসার্চের মাধ্যমে আমরা আরো জানতে পারি যে, আমেরিকায় শতকরা ৫৬টি ডিভোর্সের একটি অন্যতম কারণ পর্নোগ্রাফি আসক্তি।
#পর্নোগ্রাফি যৌন সম্পর্ককে ভালোবাসা ও সম্পর্কের বন্ধন থেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করে, তা শুধুমাত্র বিকৃত যৌনাচারের সন্ধান দেয়; যা আমাদের বাস্তব জীবন থেকে ভিন্ন।
#জীববিজ্ঞানী গ্যারি উইলসন বলেছেন: “পর্নোগ্রাফি আমাদেরকে যৌন শিক্ষা দেয় না বরং আমাদের যৌন জীবনকে পর্নোগ্রাফি দ্বারা প্রতিস্থাপন করে”।
#এককথায়, পর্ন ভালোবাসার মৃত্যু ঘটায়। পর্নোগ্রাফি কোনভাবেই স্বাস্থকর না। এটি পুরুষদের যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে, মানসিকতা স্বাস্থকে বিপর্যস্ত করে এবং দাম্পত্য সম্পর্কে ভাঙ্গন ঘটায়।
#বর্তমান সময়ে পর্নোগ্রাফি আপামর জনসাধারণের জন্য গুরুতর স্বাস্থ ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে।
# #সমাধানঃ
#সচেতনতাই প্রথম ধাপ, পর্ন আসক্তি দূর করার জন্য এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। এর কুফলগুলো যদি ঠিকমত উপলব্ধি করেন, তাহলে সহজাতভাবেই এর প্রতি আপনার চিন্তাধারায় একটি পরিবর্তন সূচিত হবে।
#আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে, পর্ন আসক্তি একটি মনোসামজিক ব্যধি। এর শারীরীক ও মানসিক কুফল অনেক। স্নায়ুকে ক্রমাগত উত্তেজিত করার মাধ্যমে এটি আপনার রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃদপিন্ডের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করার পাশপাশি হরমোনাল ডিজঅর্ডার ঘটায়।
#এর জন্য আপনাকে মাত্রাতিরিক্ত মাস্টারবেশন করতে হয়, যা পরবর্তীতে আপনার ব্যাপক স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সেই সাথে নৈতিক অবক্ষয় ও মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিষয়টাকেও মাথায় রাখুন। আপনার স্বাভাবিক জীবন ও সামাজিক সম্পর্ক সুরক্ষার তাগিদে তাই এর বিরুদ্ধে সচেতন হোন এখনই।
#পর্নগ্রাফিক উপাদান গুলো সরিয়ে ফেলুন: সেক্সুয়াল যেসব কন্টেন্ট আপনার পিসির হার্ড ড্রাইভ বা ফোনে সংরক্ষিত আছে তা মুছে ফেলুন দৃড়চিত্তে। নইলে হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য উপাদানের আকর্ষণে আবারও আপনি সেই জগতে ফিরে যেতে পারেন।
#ধর্মীয় মূল্যবোধ গড়ে তুলুনঃ আপনি যে ধর্মেরই অনুসারী হোন না কেন, তার মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষা আপনাকে পর্ন আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে অবশ্যই সহায়তা করবে। নামাজ বা প্রার্থণা আপনাকে দেবে আত্নিক পরিশুদ্ধি।
#এছাড়া ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে পারেন নিজের জীবনকে আরো সুসংহত করার তাগিদে। ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের উপদেশ এবং জীবনী থেকেও শিখতে পারবেন, কী করে পাপাসক্তি থেকে প্রত্যাবর্তন করে নির্মল জীবন শুরু করা যায়।
#প্রয়োজনে মানসিক চিকিত্সা নিনঃ আমরা সহসা মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের শরনাপন্ন হতে চাইনা। অথচ পর্ন আসক্তির মত মনোসামাজিক বিপর্যয়ের জন্য মানসিক রোগের ডাক্তাররা আপনাকে দিতে পারেন, সঠিক দিক নির্দেশনা।
#মনে রাখবেন, রাতারাতি এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়। তাই চিকিত্সকের কাছে কাউন্সেলিং নিন। তার পরামর্শ মাফিক জীবন পরিচালনা করতে থাকুন। আশা করা যায়, ধীরে ধীরে আপনি এই কুঅভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন।
#কমিয়ে দিন নেট ব্রাউজিংঃ উইকিপিডিয়ার মতে, 'পর্নোগ্রাফি যৌন আবেগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে যৌনসংক্রান্ত বিষয়বস্তুর প্রতিকৃতি অঙ্কন বা পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা'। বিগত কয়েক দশকে পর্নোগ্রাফি উত্পাদন তথা ভোগ্যপণ্য হিসেবে ভোগকে কেন্দ্র করে একটি বিরাট শিল্প গড়ে উঠেছে।
#বর্তমানে ইন্টারনেট এর প্রধান উত্সস্থল হিসেবে বিবেচিত। তাই ইন্টারনেটে বেশি সময় কাটানো কমিয়ে দিন। প্রয়োজনীয় কাজ সেরে দ্রুত বেরিয়ে আসুন বাস্তব জগতে। সামাজিক মেলামেশা ও কর্ম তত্পরতা বৃদ্ধি করুন। ভার্চুয়াল জগতে সময় অপচয় রোধ করা গেলে পর্ণ অ্যাডিকশন কমানো সম্ভব হবে অনেকাংশে।
#মেতে উঠুন নতুন শখে: যেহেতু পর্ন দেখা ছাড়তে চাচ্ছেন, তাই ঘরে একা একা কম্পিউটার/ল্যাপটপ/ট্যাব বা মোবাইলে সময় কাটানোর চেয়ে মন কে অন্য দিকে ডাইভার্ট করার জন্য নতুন এক বা একাধিক হবি তৈরি করুন। তারপর সেই হবি নিয়ে মেতে উঠুন।
#যখনই পর্ণ দেখতে মন চাইবে, সাথে সাথে উঠে পড়ুন
এবং সেই হবি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন। এটা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। প্রথম দিকে অনেক কঠিন লাগলেও ধীরে ধীরে সহজ হয়ে আসবে।
#হবি হতে পারে বডিবিল্ডিং এর জন্য জীমে জয়েন করা, গিটার, কবিতা আবৃত্তি কিংবা গান শেখা, ফটোগ্রাফি কিংবা পেইন্টিং, বই পড়া, গাড়ি চালানো শেখা, খেলাধুলা কিংবা সাঁতার শেখা কিংবা নতুন বন্ধু তৈরি করা। মোট কথা, নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।
#গড়ে তুলুন পারিবারিক পরিসরঃ পরিবারকে সময় দিন। নির্জনতা ও একাকীত্ব থেকে বেরিয়ে আসুন। পিসি বা ল্যাপটপ রুমের এমন একটা পজিশনে রেখে ইউজ করুন, যেন সেটা রুমে ঢুকলে সবার দৃষ্টিগোচর হয়।
সেইসাথে পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়া কিংবা পিকনিক করাও হতে পারে ভালো অল্টারনেটিভ। কাজের দিনগুলোর ফাঁকে এই সুন্দর উদ্যোগগুলো আমাদের পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করার পাশাপাশি সরবরাহ করবে পজেটিভ এনার্জি।
#বদলে ফেলুন সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিঃ পর্ন বলতে যে প্রচন্ড আকর্ষণীয় ও রগরগে যৌনতার প্রদর্শণী আপনার সামনে ভেসে ওঠে, তা সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্য এক বিশাল হুমকি। এখানে নারী সত্ত্বার যে ভয়াবহ অবমাননা করা হয়, তার বিরুদ্ধে আপনার চিন্তা-চেতনাকে জাগ্রত করুন।
#শিশু বা পশুদের ক্ষেত্রে যা করা হয়, তা অসভ্যতা ও বর্বরতার চরম নিদর্শণ। সুতরাং, পর্নকে বিনোদন বা আনন্দায়ক হিসেবে দেখার ট্রেন্ডটাই বদলে ফেলুন।
একে সমাজ-পরিবার ও স্বাভাবিক যৌন জীবনের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করুন এবং সেই অনুপাতে নিজের ভেতরে লড়াই করার মানসিকতা গড়ে তুলুন।