মানবদেহ থেকে কিভাবে নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশিত হয়?
⭕নাইট্রোজেন ঘঠিত বর্জ্য পদার্থ কি?
সাধারণত আমরা খাবার থেকে যে শক্তি পেয়ে থাকি যেমন-শর্করা,প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদি। এই শক্তিগুলো আমাদের দেহকোষে বিভিন্ন প্রকৃয়ায় বিপাকের(ভাঙ্গন)ফলে বিভিন্ন পদার্থের সৃষ্টি করে। যেমন-
1⃣শর্করা বা কর্বোহাইড্রেট বিপাকের ফলে কার্বনডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয়।
2⃣প্রোটিন বিপাকের ফলে কিটোন বডি এবং
3⃣ফ্যাট বিপাকের ফলে অ্যামোনিয়া, ইউরিয়া,ইউরিক এসিড উৎপন্ন হয়।
আর এই সব উৎপাদিত পদার্থকে নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জ্য পদার্থ বলা হয়। আবার এগুলোকে রেচন পদার্থও বলা হয়।
তবে এটা পয়েন্ট মাথায় রাখতে হবে ;
⏺সকল রেচন পদার্থই বর্জ্য পদার্থ কিন্তু সকল বর্জ্য পদার্থ রেচন পদার্থ নয়।
কেননা, রেচন পদার্থের মধ্যে কার্বনডাই-অক্সাইড, কিটোন বডি, অ্যামোনিয়া,ইউরিয়া,ইউরিক এসিড। এই পদার্থগুলো ছাড়া আরো বিভিন্ন পদার্থ রয়েছে। যেমন-গ্লুকোক, খানিজ লবণ, পানি ইত্যাদি। এই পদার্থগুলো আামাদের দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেই এগুলোকে বর্জ্য পদার্থ বলা যায় না।
❓যদি দেহের জন্য এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে, তাহলে দেহ থেকে নিষ্কাশিত(বেরিয়ে যাওয়া) হয় কেন?
আসলে প্রত্যেকটা কিছুর একটি মাত্রা রয়েছে। যেমনটা ধরুন,আমাদের রক্তের ৫৫ শতাংশ উপাদানই হচ্ছে পানি। এটি রক্তে পানির স্বাভাবিক মাত্রা। যদি কোন কারণে রক্তে ৫৫ শতাংশের বেশি পানি জমা থাকে, তাহলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- নাইট্রোজেনের আধিক্য, কোষের ক্ষতি, রক্ত সংবহনে ব্যর্থতা ইত্যাদি।
সুতরাং, যতই গুরুত্বপূর্ণ পদার্থ হউকনা কেন প্রয়োজন ব্যতীত অতিরিক্ত পদার্থগুলো আমাদের দেহ থেকে নিষ্কাশিত হয়।
⛔আর এই সব রেচন পদার্থ মুত্রের মাধ্যমে আমাদের দেহ থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে।
✔এই পুরো কার্যকলাপটি সম্পন্ন হয়ে থাকে রেচনতন্ত্রের মাধ্যমে।(নিচের ছবিগুলোতে 1⃣নং চিত্রটি হলো রেচন তন্ত্র। ঐখানে রেচনতন্ত্রের বিভিন্ন অংশের নাম চিহ্নিত করা আছে)
🔯মানবদেহের রেচন অঙ্গ হচ্ছে বৃক্ক বা কিডনী।( নিচের ছবিগুলোর 2⃣নং চিত্রটি হচ্ছে কিডনী।এক নজরে কিডনী সংলগ্ন অংশের নাম গুলো জেনে নিই)
🔰কিডনীতে ইউরিনিফেরাস নামক একধরণের নালিকা থাকে। (3⃣নং চিত্রটি হচ্ছে সেই ইউরিনিফেরাস নালিকা। ঐখানকার চিহ্নিত করা বাংলা নামগুলো জেনে নিই)
✳কিডনিতে প্রায় ১০-১২ লক্ষ এই রকম ইউরিনিফেরাস নালিকা রয়েছে।
➡এই ইউরিনিফেরাস নালিকাকে ২ ভাগে বিভক্ত করা হয়:
১.নেফ্রন (নেফ্রন মূত্র তৈরি করে)
২.সংগ্রাহী নালিকা (মূ্ত্র পেলভিসে বহন করে)
নেফ্রনের পেয়ালার মত অংশটি হচ্ছে বোম্যান্স ক্যাপসুল।বোম্যন্স ক্যাপসুলের বুকে কৈশিক জালিকা বা রক্ত জালিকা দিয়ে সৃষ্ট, নেটের মত অংশটির নাম গ্লোমেরুলাস(গ্লোমেরুলাস ছাকনির মতো কাজ করে)।আর বোম্যান্স ক্যাপসুলের অঙ্কীয় দেশ থেকে শুরু করে সংগ্রাহী নালিকা পর্যন্ত যে পেচানো নালিটি রয়েছে ঐটাকে রেনাল টিউব্যুল বলা হয়। এই রেনাল টিউব্যুলকে তিনভাগে বিভক্ত করা হয়:
1.কেন্দ্রীয় পেচানো নালিকা।
2.হেনলি-র লুপ এবং
3.প্রান্তীয় পেচানো নালিকা।
⬆রেনাল টিউব্যুল নালিটি অসংখ্য কৈশিক জালিকা দিয়ে পেচানো থাকে।
ধমনী দিয়ে রক্ত যখন গ্লোমেরুলাসে প্রবেশ করে, তখন গ্লোমেরুলাস রক্তে বিদ্যমান রেচন পদার্থগুলোকে ঠেলানোর মাধ্যমে নেফ্রনে প্রবেশ করায়। প্রবেশ করার সাথে সাথে রক্তগুলো রেচনমুক্ত হয়। এবং পরিশোধিত রক্তগুলি ইফারেন্ট ধমনীর সাহায্যে রক্ত জালিকায় প্রবেশ করতে থাকে। আর রেনাল টিউব্যুলের মাধ্যমে রেচন পদার্থগুলো সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
⭕↖যখন কৈশিক নালিতে রক্ত চলাচল করে আর রেনাল টিউব্যুলে রেচন পদার্থ চলাচল করে তখন কৈশিক নলি রেনাল টিউব্যুল থেকে রেচনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদার্থ (গ্লুকোজ,খনিজ লবণ,পানি)রক্তে ঘাটতি হলে প্রয়োজন মত শোষণ করে নেয়।
⏩পরিশোধিত রক্ত কৈশিক জালিকাপথ শেষ করে রেনাল শিরা দিয়ে বেরিয়ে যায়।
⏪ রেচন পদার্থ রেনাল টিউব্যুল থেকে সংগ্রাহী নালিকায় পৌছায়। আর সংগ্রাহী নালিকা ঐ রেচন পদার্থ পেলভিসে বয়ে এনে দেয় (পেলভিস হচ্ছে ইউরেটারের ফানেল আকৃতির অংশ)।তারপর পেলভিস থেকে ইউরেটারের মাধ্যমে মু্ত্রথলিতে প্রবেশ করে। আর যখন মু্ত্রথলিতে মুত্র চাপ বাড়ে তখন আমাদের মুত্র ত্যাগ করার ইচ্ছে জাগে।
↕এভাবে মনবদেহ থেকে নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জয় পদার্থ নিষ্কাশিত হয়ে থাকে।ধণ্যবাদ।
Written by RI DU AN
Gaining Knowledge
Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Gaining Knowledge, Education, .
Operating as usual
Want your school to be the top-listed School/college?