Bahalal Pur Ram dayal High School

Bahalal Pur Ram dayal High School

Share

BRDHS

Operating as usual

Photos from Bahalal Pur Ram dayal High School's post 25/09/2023

আজ ২৫শে সেপ্টেম্বর
"আরামবাগের গান্ধী "তথা পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেনের
মৃত্যু দিনে জানাই শ্রদ্ধা.

পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেন ১৮৯৭ সালে ১০ই এপ্রিল জন্মগ্রহন করেন। ছাত্রাবস্থায় মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে যোগ দিয়েছিলেন অসহযোগ আন্দোলনে। তারপর থেকেই সমাজ সেবার উদ্দেশ্য নিয়ে গান্ধীজীর আদর্শে কাজ শুরু করেন হুগলীজেলার সবচাইতে পিছিয়ে পড়া অখ্যাত আরামবাগে। তাঁর নিঃস্বার্থ কর্মকাণ্ডের জন্য এই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পরবর্তীকালে বিখ্যাত হন ‘আরামবাগের গান্ধী’ হিসেবে। আজ তাঁর মৃত্যু দিন.
প্রফুল্লচন্দ্র সেন ১৮৯৭ সালের ১০ই এপ্রিল অবিভক্ত বঙ্গের খুলনা জেলার সেনহাটিতে জন্মগ্রহণ করে। দেওঘরের আর.মিত্র. ইন্সটিটিউট থেকে সাফল্যের সঙ্গে মাট্রিক পাশ করে কলকাতায় আসেন এবং স্কটিশ চার্চ কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এরপর তিনি যখন বিলেতে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে থাকেন৷ আবার সেইসময় ১৯২০সালে কলকাতায় কংগ্রেসের অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধী ভাষণ শুণে অনুপ্রাণিত হয়ে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। সমাজসেবার কাজ শুরু করেন হুগলী জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম আরামবাগে।স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য ১৯৩০-১৯৪২ সালের মধ্যে বহুবার কারাবরণ করেন। এমনকি তিনি তাঁর শ্রীরামপুরের বাড়িটি কংগ্রেসের কার্যালয় হিসাবে ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেন। আজীবন অকৃতদার এই মানুষটি খুবই সাধারণ জীবন যাপন করতেন। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে ১৯৪৪এর নির্বাচনে তিনি আরামবাগ অঞ্চল থেকে জয়যুক্ত হন এবং বিরোধী দলের প্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৪৮সালে ডঃবিধানচন্দ্র রায়ের মন্ত্রীসভার খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান৷ এই রাজ্যে রেশনিং ব্যবস্থা তাঁর হাত ধরেই শুরু হয়েছিল ৷ পরবর্তীকালে ডঃবিধানচন্দ্র রায়ের মৃত্যুর পর ১৯৬২সালে তিনিই হন পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় মুখ্যমন্ত্রী। যদিও ১৯৬৭ সালের নির্বাচনে আরামবাগ থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়তে গিয়ে আর এক গান্ধীবাদী নেতা বাংলা কংগ্রেসের প্রার্থী অজয় মুখোপাধ্যায়ের কাছে মাত্র ৮২০ ভোটে পরাজিত হয়৷
মুখ্যমন্ত্রী থাকা কালে বিরোধীরা অনেক কুৎসা রটাতেন ওনার নামে। কলকাতার স্টিফেন হাউসের মালিক প্রফুল্ল সেন। অথচ মৃত্যুর আগের দিন তাকে অবধি চরম দারিদ্রতার মধ্যে কাটাতে হয়েছে।কিছু মানুষের সহযোগিতা না থাকলে হয়তো না খেয়ে থাকতে হতো। খাদ্য সঙ্কটের সময় শ্রী সেন জনপ্রিয়তা হারান। পুষ্টিকর খাদ্য কাঁচা কলা খেতে বলেছিলেন বঙ্গবাসীকে। তা নিয়ে প্রচুর কটাক্ষ হজম করতে হয়েছে। তাই যেদিন নির্বাচনে হেরে যায় সেদিন বাজারে কাঁচা কলার আকাল লেগেছিল। ১৯৯০ সালে ২৫সে সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরন করেন।

03/08/2023

Class 7 History Chapter -4 Important Questions And Answers | ক্লাস সেভেন ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় তুর্কো - আফগান শাসন প্রশ্ন উত্তর | সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় গুরুত্ব পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3

১। আমির ও ওমরাহ কাদের বলা হতো ?

উঃ। দিল্লির সুলতানির ইতিহাসে শাসনকার্যে নিযুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমির বলা হতো। আমিরগণকে একত্রে বলা হতো ওমরাহ।

২.'তুর্কান-ই চিহ্নলগানি' কথার অর্থ কী ?

উঃ। তুর্কান-ই চিহ্নলগানি কথার অর্থ হলো চল্লিশ জন তুর্কি বা চল্লিশজন তুর্কি পরিবার। এরা খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিল।

৩। ইবনবতুতা সম্বন্ধে যা জানো লেখো।

উঃ। সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালে উত্তর আফ্রিকার মরক্কো দেশ থেকে পর্যটক ইবনবতুতা এদেশে এসেছিলেন। তাঁর লেখা ভ্রমণ বিবরণীর নাম কিতাব-উর-রিহলা। এই গ্রন্থটি মহম্মদ বিন তুঘলকের যুগ সম্পর্কে জানার একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র।

৪। 'রুমি' কৌশল কী ?

উঃ। ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপতের প্রথম যুদ্ধে বাবর তুর্কিদের থেকে শেখা এক ধরনের কৌশল ব্যবহার করেছিলেন। একে 'রুমি' কৌশল বলে।

৫। ইলতুৎমিশ কীভাবে মোঙ্গল আক্রমণ থেকে ভারতকে রক্ষা করেন ?

উঃ। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে মোঙ্গল নেতা চেঙ্গিস খান মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ায় ঝড়ের গতিতে আক্রমণ চালান। এর ফলে ভারতেও মোঙ্গল আক্রমণের আভাস তৈরি হয়। ১২২১ খ্রিস্টাব্দ থেকে উত্তর-পশ্চিমে বারবার আক্রমণ ঘটে। ওই আক্রমণের সামনে সিন্ধু নদ ভারতের পশ্চিম সীমান্ত বলে চিহ্নিত হয়। ইলতুৎমিশ। সরাসরি মোঙ্গলদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে দিল্লি সুলতানিকে বাঁচিয়ে দেন।

৬। হাবশি কাদের বলা হয় ?

উঃ। ইলিয়াসশাহি ও হোসেনশাহি শাসনের মাঝে বাংলায় আবিসিনিয় সুলতানরা শাসন করেছিলেন। এরা আফ্রিকার আবিসিনিয়া বা ইথিওপিয়া থেকে এসেছিলেন। বাংলায় এদের হাবশি বলা হয়।

৭। জালালউদ্দিন মহম্মদ শাহ কে ছিলেন ?

উঃ। সুলতান জালালউদ্দিন মহম্মদ শাহ বা 'যদু' ছিলেন জন্মসূত্রে হিন্দু। তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর আমলে বাংলার রাজধানী মালদহের হজরত পান্ডুয়া থেকে গৌড়ে চলে আসে।

৮। বাহমন শাহ সম্বন্ধে যা জানো লেখো।

উঃ। মহম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালে হাসান গঙ্গু ১৩৪৭ খ্রিস্টাব্দে আলাউদ্দিন হাসান বাহমন শাহ নাম নিয়ে দাক্ষিণাত্যে বাহমনি রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি গুলবর্গায় রাজধানী স্থাপন করে নাম দেন আহসনাবাদ। শাসনকার্যের সুবিধার জন্য তিনি তাঁর রাজ্যকে গুলবর্গা, বেরার, বিদর ও দৌলতাবাদ নামে চারটি প্রদেশে ভাগ করেন এবং প্রত্যেক প্রদেশে একজন করে শাসনকর্তা নিয়োগ করেন।

৯। বাহমনি রাজ্যে দেশীয় ও বাইরের অঞ্চল থেকে আসা অভিজাতদের কী বলা হতো?

উঃ। বাহমনি রাজ্যে দেশীয় অভিজাতদের বলা হতো দক্ষিণী। এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা দরবারের অভিজাতদের পরদেশি বলা হতো। অর্থাৎ 'দেশ' বলতে মানুষ তখন নিজের এলাকাটাকেই বুঝত।

১০। মহম্মদ ঘুরির মৃত্যুর পর তাঁর জয় করা অঞ্চলগুলি কাদের অধিকারে আসে?

উঃ। ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ ঘুরির মৃত্যুর পর তাঁর জয় করা অঞ্চলগুলি তাঁর চারজন অনুচরদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। গজনির অধিকার পান তাজউদ্দিন ইয়ালদুজ। মুলতান ও উছ এর শাসক হয়ে বসেন নাসিরউদ্দিন কুবাচা। বাংলাদেশের শাসক হন বখতিয়ার খলজি এবং লাহোর ও দিল্লির অধিকার থাকে কুতুবউদ্দিন আইবকের হাতে।

১১। খিজির খান কীভাবে শাসন চালিয়েছিলেন?

উঃ। সৈয়দ বংশের প্রতিষ্ঠাতা খিজির খান নিজে কখনো সুলতান উপাধি নেননি। তিনি একদিকে তুর্কো-মোঙ্গল শাসকদের প্রতি আনুগত্য জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে তিনি তাঁর পূর্ববর্তী তুঘলক শাসকদের নাম খোদাই করা মুদ্রা তাঁর রাজ্যে চালু রেখেছিলেন। মধ্যযুগের ভারতবর্ষে এইরকম ঘটনা আগে বা পরে কখনো ঘটেনি।

12. আলাউদ্দিন হোসেন শাহ শ্রীচৈতন্য সম্পর্কে কী নির্দেশ দিয়েছিলেন?

উঃ। কবি বৃন্দাবন দাস তাঁর চৈতন্য ভাগবত গ্রন্থে লিখেছেন যে সুলতান হোসেন শাহ গৌড়ে গিয়ে একটি নির্দেশ দেন। তাতে বলা হয় যে, চৈতন্যদেব সবাইকে নিয়ে কীর্তন করুন অথবা একাকী থাকুন তাঁকে যদি কেউ বিরক্ত করে তা সে কাজি বা কোতোয়াল যেই হোন তার প্রাণদণ্ড হবে।

13.‘খুতবা’ কী ?

উঃ। ‘খুতবা’কথাটির সঠিক অর্থ হল ভাষণ। কোনো সুলতানের শাসনকালে মসজিদের ইমাম নমাজের পরে সবার সামনে ওই ভাষণ বা খুতবাটি পাঠ করতেন। এর মধ্য দিয়ে সুলতান যে নিয়ম মেনে শাসক হয়েছেন তা জানান দেওয়া হত।

14. সুলতান রাজিয়া-কে সুলতানা বলা হয় না কেন ?

উঃ। রাজিয়া একজন নারী হলেও তাঁর উপাধি সুলতানা নয় সুলতান। আরবি ভাষায় সুলতানা' শব্দের অর্থ হলো সুলতানের স্ত্রী। কিন্তু রাজিয়া কোনো সুলতানের স্ত্রী ছিলেন না। রাজিয়া তাঁর মুদ্রায় নিজেকে সুলতান বলে দাবি করেছেন। সে যুগের একজন ঐতিহাসিক মিনহাজ-ই সিরাজ রাজিয়াকে সুলতান বলেই উল্লেখ করেছেন।

15. 'তুর্কান-ই চিহ্নলগানি' বা 'বন্দেগান-ই চিহলগানি' কাদের বলা হতো ?

উঃ। বন্দেগান-ই চিহ্নলগানি কথাটির অর্থ হলো চল্লিশ জন বান্দা বা অনুগামী। এই কথাটি দিয়েই ইলতুৎমিশের অনুগত যোদ্ধাদের বোঝানো হতো। এরা ছিল ত্রয়োদশ শতকের সুলতানি শাসনব্যবস্থার প্রধান স্তম্ভ। নামে তুর্কি হলেও এদের সবাই জাতিগত ভাবে তুর্কি ছিলনা এবং সংখ্যায় তারা চল্লিশ জনের অনেক বেশি ছিল। এদের মধ্যে থেকেই গিয়াসউদ্দিন। বলবন পরে সুলতান হয়েছিলেন।

16. সিজদা ও পাইবস কী ?

উঃ। সুলতান গিয়াসউদ্দিন বলবন সুলতানের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রতীকরূপে দুটি প্রথার প্রচলন করেন। প্রথা দুটি হলো 'সিজদা' ও পাইবস'। সিজদার অর্থ হলো সুলতানকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করা। আর সুলতানের পদযুগল চুম্বন করাকে বলা হতো পাইবস ।

17. খলজি বিপ্লব কী ?

উঃ। ১২৯০ খ্রিস্টাব্দে বলবনদের বংশধরদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে জালালউদ্দিন ফিরোজ খলজি সুলতান হন। এই ঘটনাকে ইতিহাসে খলজি বিপ্লব বলা হয়। এর ফলে দিল্লিতে ইলবারি তুর্কিদের ক্ষমতা চলে গিয়ে খলজি তুর্কি ও হিন্দুস্থানীদের শক্তি বৃদ্ধি পায়।

18. ফিরোজ শাহ তুঘলকের সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য কী ছিল?

উঃ। ফিরোজ শাহের সামরিক অভিযানের একটা বড়ো উদ্দেশ্য ছিল দাস জোগাড় করা। সুলতানের ১,৮০০০০ দাস ছিল। তাদের জন্য একটা আলাদা দপ্তর খোলা হয়েছিল। রক্ষীবাহিনী, কারখানা ও বিভিন্ন দপ্তরে নিযুক্ত হয়ে এই দাসেরা বেতন পেত। এভাবে সুলতান একটি অনুগত বাহিনী তৈরি করতে চেয়েছিলেন।

19.পানিপতের প্রথম যুদ্ধে বাবরের কৌশল কী ছিল?

উঃ। ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপতে বাবরের সঙ্গে ইব্রাহিম লোদির যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে বাবর তুর্কিদের থেকে শেখা এক জাতীয় কৌশল ব্যবহার করেছিলেন। এর নাম 'রুমি' কৌশল। বাবরের সৈন্য সংখ্যা লোদিদের তুলনায় কম থাকলেও বাবর ছিলেন যুদ্ধে পটু। যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদির মৃত্যু হয় এবং দিল্লি এবং আগ্রায় মুঘলদের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়।

20. উলেমা কাদের বলা হতো ?

উঃ। আরবি ভাষায় ইলম্‌ মানে হলো জ্ঞান। আলিম মানে হলো জ্ঞানী। ইসলামি শাস্ত্রে যাঁরা বিশেষভাবে জ্ঞানী ছিলেন তাদের আলিম বলা হতো। একের বেশি আলিমকে বলা হতো উলেমা।

21.তুরুস্ক দণ্ড কী?

উঃ। কোনো কোনো হিন্দু রাজারা জিজিয়া করের মতো এক ধরনের কর তাদের মুসলমান প্রজাদের উপর চাপিয়েছিলেন। ওই করকে বলা হতো তুরুষ্কদণ্ড।

⬛ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:তিটা প্রশ্নের মান -5

১। সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক সম্বন্ধে যা জানো লেখো।

উঃ। সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক ইসলামের রীতিনীতি ও উলেমার নির্দেশ অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। তিনি রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার করে 'খরাজ', 'খামস', 'জিজিয়া' ও 'জাকাত'—এই চার ধরনের কর নিতেন। ইসলামীয় রীতি অনুযায়ী যে কর নেওয়া যায় সেগুলি ছাড়া অন্যান্য কর তিনি বাতিল করেন। ফিরোজ শাহ তুঘলক একাধিক জনহিতকর কাজ করেন। তিনি অনেক নতুন নগর, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল ও বাগান তৈরি করেন। দরিদ্রদের অর্থসাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা করা ও বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি দপ্তর খোলেন। যেসব জমিতে চাষ হতো না সেগুলির সংস্কার ও কৃষির উন্নতির জন্য তিনি খাল খনন করে সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটান।

২। হোসেন শাহ সম্বন্ধে কী জানা যায় ?

উঃ। মধ্যযুগের বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন আলাউদ্দিন হোসেন শাহ। তিনি স্বভাবে ছিলেন ভদ্র, বিনয়ী এবং সব ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল। তিনি সম্ভবত শ্রীচৈতন্যদেবের ভক্ত ছিলেন। প্রসিদ্ধ দুই বৈস্নব রূপ ও সনাতনের মধ্যে একজন তাঁর দপ্তরে ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন বলে জানা যায়। সাধারণ মানুষ নাকি হোসেন শাহকে শ্রীকৃষ্ণের অবতার বলে মনে করত। তাঁর শাসনকাল উদারনীতির জন্য বিখ্যাত ছিল। হোসেন শাহের রাজত্বে বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদ হিন্দুদের দেওয়া হতো। তাঁর শাসনকালে বাংলা ভাষায় লেখালেখির চর্চা খুবই উন্নত হয়।

৩। বিদেশি পর্যটকদের বিবরণীতে বিজয়নগর সম্পর্কে কী কী জানা যায় ?

উঃ। বিজয়নগর সাম্রাজ্যে বহু বিদেশি পর্যটক এসেছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন ইতালির পর্যটক নিকোলো কন্টি, পারস্যের দূত আব্দুর রাজ্জাক। পোর্তুগিজ পর্যটক পেজ ও নুনিজ, দুয়ার্তে করবোসা প্রমুখ। এই পর্যটকরা সকলেই বিজয়নগরের সম্পদ দেখে আশ্চর্য হয়েছিলেন। তাঁদের বর্ণনা থেকে জানা গেছে বিজয়নগর শহরটি সাতটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল। জনসাধারণের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষি, জলসেচের সুবন্দোবস্ত ছিল। ভূমি রাজস্বই ছিল রাজ্যের প্রধান আয়, কৃষি ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছিল। পোর্তুগিজদের সঙ্গে বিজয়নগরের ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল। পর্যটক পেজ তাঁর রচনায় বিজয়নগর সম্পর্কে বলেছেন যে নগরটি রোম শহরের মতোই বড়ো ছিল। স্বচ্ছজলের অনেকগুলি খাল শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ছিল। মাঝে মাঝে ছিল দীঘি, রাজপ্রসাদ প্রভৃতি। এই নগরের লোকসংখ্যা অসংখ্য, এ শহরটির মতো এতো সুন্দর খাওয়া পরার ব্যবস্থা পৃথিবীর অন্য কোনো শহরে নেই। তবে পর্যটকরা একথাও বলেছেন যে ধনী ও গরিবদের জীবনযাপনের অনেক তফাৎ সেখানে ছিল।

৪। আলাউদ্দিন খলজির অর্থনৈতিক সংস্কারগুলি কী ছিল ?

উঃ। রাজকোশের আয় বাড়াতে আলাউদ্দিন খলজি কতকগুলি অর্থনৈতিক সংস্কার করেন। পূর্ববর্তী সুলতানদের প্রচলিত ইকতা প্রথা তিনি বাতিল করেন। ধর্মীয় কারণে দেওয়া নিষ্কর জমি ও সম্পত্তি তিনি ফিরিয়ে নেন। সমস্ত জমি জরিপ করিয়ে রাজস্বের হার বাড়ানো হয়। এর পাশাপাশি সুলতান আলাউদ্দিন সুলতানির খরচ কমানোর চেষ্টা চালান। তিনি গঙ্গা-যমুনার মধ্যবর্তী দোয়াব অঞ্চলের অধিবাসীদের কাছ থেকে উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক অংশ রাজস্ব হিসেবে আদায় করেন। ভূমি রাজস্ব ছাড়াও গৃহকর, গোচারণভূমি কর, জিজিয়া কর প্রভৃতি কর তিনি আদায় করার নির্দেশ দেন। তাঁর অন্যতম অর্থনৈতিক সংস্কার ছিল বাজারদর নিয়ন্ত্রণ। আলাউদ্দিন বাজারের সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ঠিক করে দেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মুদ্রাস্ফীতি রোধ করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা এবং জনগণকে সস্তায় প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ করা। এজন্যে তিনি বিভিন্ন রাজকর্মচারী নিয়োগ করেন। আলাউদ্দিন রেশন ব্যবস্থার প্রচলনও করেন। এইভাবে তিনি অর্থনৈতিক সংস্কার দ্বারা জনকল্যানমূলক কাজ করেন।

5.শাসকের উপাধি সম্পর্কে কী জানা যায় ?

উঃ। রাজা, সম্রাট, সুলতান এইসব শব্দগুলি হলো শাসকের উপাধি। শাসকের ধর্ম ও দেশ এবং শাসন ক্ষমতার হেরফেরে উপাধিগুলির ব্যবহার বদলে যেত। যেমন রাজা হলেন রাজ্যের শাসক, আবার যে রাজা অনেক রাজ্য জয় করে বিরাট অঞ্চলের শাসক হয়েছেন তাকে সম্রাট বলা হতো। সম্রাটের সাম্রাজ্য একটি বিরাট অঞ্চল। একটি সাম্রাজ্যের ভিতরে রাজ্য থাকতেও পারে। রাজা সম্রাটের চেয়ে সম্মান ও ক্ষমতায় ছোটো। সুলতানরা ছিলেন তুর্কি, সেজন্যই রাজা বা সম্রাট উপাধি না নিয়ে সুলতান উপাধি নিতেন।

6। লোদি সুলতানরা কীভাবে নিজেদের শাসনক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

উঃ। লোদি সুলতানদের শাসনকালে দিল্লি সুলতানির আকার অনেকটা ছোটো হয়ে এলেও সুলতানদের ক্ষমতা খানিকটা বেড়েছিল। সুলতান বহলোল লোদি আফগানদের সাবেকি রীতি মেনে অন্যান্য আফগান সর্দারদের সঙ্গে আসন ভাগ করে নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি লোদিদের ক্ষমতাও প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। সেই কারণে পাশের রাজ্য জৌনপুর তিনি দখল করে নেন। পরবর্তী শাসক সিকান্দার লোদি অন্যান্য আফগান সর্দারদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি আফগান সর্দারদের জানান যে, তারা একান্তভাবেই সুলতানের নিয়ন্ত্রণের অধীন। তাদের ভালোমন্দ সুলতানের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করত। এইভাবে সিকান্দার শাহ আফগান সর্দার ও সাধারণ জনগণ উভয়ের ওপরেই তিনি নিজের সার্বভৌমিকতা প্রতিষ্ঠা করেন।

7. দাগ ও হুলিয়া কী

উঃ। সুলতান আলাউদ্দীন খলজির সেনাবাহিনি মূলত পদাতিক ও ঘোড়সওয়ার নিয়ে তৈরি কতো। সুলতান সেনাবাহিনীতে জালিয়াতি বন্ধ করে সংস্কার করার উদ্দেশ্যে 'দাগ' ও হুলিয়া ব্যবস্থা দুটি চালু করেছিলেন। সেনাবাহিনি সমস্ত ঘোড়া পরীক্ষা করে তাদের চিহ্নিত করে 'দাগ' দেওয়া হতো। ফলে ঘোড়া পর্যবেক্ষণের সময় কোনো ঘোড়াকে দুবার পেশ করা বা সতেজ ঘোড়ার বদলে দুর্বল বা খারাপ ঘোড়া পেশা করার জালিয়াতি বন্ধ হয়। হুলিয়া' ব্যবস্থা চালু করার ফলে কোনো অদক্ষ ব্যক্তি নাম ভাঙিয়ে সেনাবাহিনিতে যোগ দিতে বা অন্যের নামে বেতন নিতে পারত না।

8. কে, কেন সুলতানি আদবকায়দা চালু করেছিলেন ?

উঃ। গিয়াসউদ্দিন বলবন বন্দেগান-ই-চিহ্নলগানির সদস্য ছিলেন। পরে তিনি যখন সুলতান হন তখন কেউ যাতে তাঁর অধিকার নিয়ে প্রশ্ন না করতে পারে সেজন্য তিনি দরবারে কতকগুলি নিয়ম চালু করেন। শোনা যায় বলবন দরবারে আসতেন খুব জমকালো পোশাক পরে। কোনো হাসি তামাসা বা হালকা কথা তিনি বরদাস্ত করতেন না। সুলতানকে গম্ভীরভাবে দরবার চালাতে দেখে অতিথিরা ভয় পেত।

9. ইকতা ব্যবস্থা সম্বন্ধে যা জানো লেখো।

উঃ। মধ্য এশিয়ার ইসলামীয় সাম্রাজ্যে সামরিক অভিজাতদের ইকতা দেওয়া হতো। এই ইকতাগুলি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেওয়া হতো। এই ব্যবস্থার উৎপত্তি হয় খ্রিস্টীয় নবম শতকে। সেই সময় রাজকোশে যথেষ্ট পরিমাণে রাজস্ব জমা পড়ছিল না এবং যুদ্ধ করেও তেমন ধনসম্পদ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই সামরিক নেতাদের বেতনের বদলে ইকতা দেওয়া হতে থাকে। একাদশ শতকে সেলজুক তুর্কি সাম্রাজ্যে ইকতা ব্যবস্থার প্রচলন দেখা যায়। অটোমান তুর্কিদের আমলে ইকতা ব্যবস্থার বদলে ‘তিমার’নামে অন্য একটি ব্যবস্থার কথা জানা যায়। দিল্লির সুলতানরা সাম্রাজ্য বিস্তার রাজস্ব সংগ্রহ ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ইকতা ব্যবস্থার নানা রদবদল ঘটিয়ে ছিলেন। একজন ইকতাদার হতে পারতেন একটি গোটা প্রদেশের শাসনকর্তা।

10. জিজিয়া কর কী ?

উঃ। মুসলমান শাসকরা অমুসলমান প্রজাদের থেকে মাথাপিছু একটি কর আদায় করতেন। এর বিনিময়ে অ-মুসলমানদের জীবন, অধিকার ও সম্পত্তির সুরক্ষা দেওয়া হতো। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে আরবের সেনাপতি মহম্মদ বিন কাশিম সিন্ধু প্রদেশে প্রথম জিজিয়া কর চালু করেন। দিল্লি সুলতানিতে ব্রাক্ষ্মণ, নারী, নাবালক ও দাসদের জিজিয়া কর দিতে হতো না। সন্ন্যাসী, অন্ধ ও খোঁড়া ও উন্মাদ ব্যক্তিরা গরিব হলে তাদের জিজিয়া কর দিতে হতো না।

11. একডালা দুর্গটি কীরূপ ছিল।

উঃ। গৌড় থেকে একডালা দুর্গটি খুব দূরে ছিল না। দুর্গটি ঘিরে ছিল গঙ্গার দুই শাখানদী চিরামতি এবং বালিয়া। দুর্গটি প্রায় দুর্ভেদ্য ছিল। ফিরোজ শাহ তুঘলক যখন পান্ডুয়া আক্রমণ করেন, ইলিয়াস শাহ একডালা দুর্গে আশ্রয় নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিরোজ শাহ একডালা দুর্গ দখল করতে পারেন নি। তবে এই দুর্গটির কোনো চিহ্নই আজ আর নেই।

12. রাজা কৃয়দেব রায় সম্পর্কে কী জানা যায় ?

উঃ। বিজয়নগর রাজ্যের তুলুভ বংশের বিখ্যাত শাসক ছিলেন কৃষ্ণদেব রায়। তাঁর রাজত্বকালেই বিজয়নগর রাজ্যের গৌরব বৃদ্ধি পায়। আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসার ছাড়াও শিল্প, সাহিত্য, সংগীত ও দর্শনশাস্ত্রের উন্নতি তাঁর সময়ে লক্ষ করা যায়। কৃয়দেব রায় নিজেও তেলেগু ভাষায় ‘আমুক্তমাল্যদ' গ্রন্থ রচনা করেন। পোর্তুগিজ পর্যটক পেজ রাজা কৃয়দেব রায়ের সময় বিজয়নগর রাজ্য আসেন এবং তিনি রাজার খুব প্রশংসা করেন।

13. দিল্লির সুলতানদের কখন খলিফাদের অনুমোদন দরকার হতো?

উঃ। ইসলাম ধর্ম অনুসারে প্রধান শাসক একজনই তা হলেন খলিফা। ইসলামের আওতায় যত অঞ্চল ছিল, তার মূল শাসক খলিফা। তিনি মুসলমানদের ধর্মগুরুও বটে। ফলে, দিল্লির সুলতানির উপরেও খলিফারই অধিকার ছিল। যেহেতু মুসলিম সম্প্রদায় এক বিশাল অঞ্চল শাসন করতেন, একজন খলিফার পক্ষে সমস্ত অঞ্চল শাসন করা সম্ভব ছিল না। তাই খলিফার অনুমোদন নিয়ে নানান অঞ্চলে নানান ব্যক্তি শাসন করতেন। ভারতবর্ষের মুসলিম শাসকগণ সুলতান নামে পরিচিত ছিলেন। এমনিতে সুলতানরা খলিফাকে যে খুব মেনে চলতেন তা নয়, তবে মাঝেমধ্যেই কে সুলতান হবে, এই নিয়ে গোলমাল লেগে যেত। তখন কে প্রকৃত সুলতান হবেন তা নিয়ে খলিফার অনুমোদন দরকার হত। খলিফার অনুমোদনের একটা সম্মান ছিল, তা বাকিরা নাকচ করতে পারতেন না।

14.সুলতান ইলতুৎমিশের সামনে প্রধান তিনটি সমস্যা কী ছিল?

উঃ। ইলতুৎমিশ যখন দিল্লির সুলতান হন তখন তাঁর সামনে তিনটি সমস্যা দেখা দেয়। এগুলি হলঃ (১) সাম্রাজ্যের মধ্যে যারা তাঁকে মানতে চাইছিলেন না অর্থাৎ বিদ্রোহী শক্তিগুলোকে কীভাবে তিনি দমন করতে পারবেন। (২) সেই সময় মধ্য এশিয়ার দুর্ধর্ষ মোঙ্গল শক্তি ছিল একটা বড়ো আতঙ্ক, সব দেশের সব রাজশক্তির কাছেই। তিনি কীভাবে এই মোঙ্গল শক্তিকে মোকাবিলা করবেন, তা ছিল ইলতুৎমিশের কাছে একটা বড়ো সমস্যা। (৩) কীভাবে সুলতানিতে একটা রাজবংশ তৈরি করা যাবে, যাতে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারী গোলমাল ছাড়াই সিংহাসনে বসতে পারবেন ।

15. কারা ছিল সুলতান রাজিয়ার সমর্থক? কারা ছিল তাঁর বিরোধী ?

উঃ। ইলতুৎমিশের সার্থক উত্তরাধিকারী ছিলেন সুলতান রাজিয়া। ইলতুৎমিশের সন্তানদের মধ্যে রাজিয়া ছিলেন যোগ্যতম। ইলতুৎমিশের এক ছেলে অল্প কিছুদিনের জন্যে শাসক হলেও শেষ পর্যন্ত রাজিয়াই ইলতুৎমিশের প্রকৃত উত্তরাধিকারী হতে পেরেছিলেন। রাজিয়ার সুলতান হওয়া নিয়ে সমর্থন ছিল সেনাবাহিনী, অভিজাতদের একাংশ ও দিল্লির সাধারণ লোকেদের। তাঁর বিরুদ্ধে ছিলেন তুর্কি' অভিজাতরা। এছাড়া উলেমা এবং রাজপুত শক্তিও তাঁর শাসনের বিরোধী ছিলেন।

16. আলাউদ্দিন খলজি কীভাবে মোঙ্গল আক্রমণের মোকাবিলা করেন?

উঃ। আলাউদ্দিন খলজির সময়ে দিল্লি দুবার মোঙ্গলদের হাতে আক্রান্ত হয়। সুলতান আলাউদ্দিন খলজি বিরাট এক সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলেন মোঙ্গলদের প্রতিরোধ করার জন্য। সৈনিকদের থাকবার জন্য সিরি নামে এক নতুন শহর তৈরি করা হয়। সেনাবাহিনীকে রসদ জোগানোর জন্যে দোয়াব অঞ্চলের কৃষকদের ওপর বেশি হারে কর চাপানো হয়। দুর্গনির্মাণ, সৈন্যসংগ্রহ ও মূল্যনিয়ন্ত্রণ করে সফলভাবে আলাউদ্দিন মোঙ্গল আক্রমণের মোকাবিলা করেন।

17. ইলিয়াসশাহি এবং হোসেন শাহি আমলে বাংলার সংস্কৃতির পরিচয় দাও।

উঃ। ইলিয়াস শাহি এবং হোসেন শাহির আমলে বাংলার সংস্কৃতির উন্নয়ন হয়েছিল। এই সময়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, স্থাপত্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়। হোসেন শাহের আমলে বাংলা লেখালেখির চর্চা বাড়ে। ইলিয়াসশাহি ও হোসেনশাহি সুলতানরা ছিলেন অন্য ধর্মমত বিষয়েও উদার। সুলতানদের ধর্মীয় উদারতা বাংলায় সব ধর্মের মানুষকে কাছাকাছি আসতে সাহায্য করেছিল। এই সময়েই বাংলায় শ্রীচৈতন্যের নেতৃত্বে ভক্তিবাদের প্রচার শুরু হয়।

18.গিয়াসউদ্দিন বলবনের সময় দিল্লি সুলতানির প্রধান সমস্যা কী ছিল?

উঃ। ১২৬৬ খ্রিস্টাব্দে গিয়াসউদ্দিন বলবন নিজেই সুলতানি হন। সিংহাসনে বসার পর তিনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। বলবন এক শক্তিশালী কেন্দ্ৰীভূত শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। গিয়াসউদ্দিন বলবনের সময়ে দিল্লি সুলতানির প্রধান সমস্যা ছিল ভিতরের বিদ্রোহ। আমির ওমরাহরা ক্ষমতালোভী হয়ে ওঠে। তিনি কঠোরভাবে এই বিদ্রোহগুলিকে দমন করেন। তাদের চল্লিশ চক্র ভেঙে দেন। রাজতন্ত্রের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে তিনি দরবারে সিজদা অর্থাৎ সুলতানের সামনে সাষ্টাঙ্গে নতজানু হওয়া ও পাইবস অর্থাৎ সুলতানের পদযুগল চুম্বন করার প্রথা চালু করেছিলেন। এই প্রথাগুলি চালু করার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অভিজাতদের থেকে সুলতানের ক্ষমতা যে বেশি তা বোঝানো। বলবন সুলতান হয়ে তাবরহিন্দ, সুনাম ও সামানা দুর্গ সুরক্ষিত করেন। বিপাশা নদী বরাবর সৈন্য ঘাঁটি বসান। তিনি নিজে দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকেন।

প্রঃ-শেরশাহের শাসনব্যবস্থায় কী কী মানবিক চিন্তার পরিচয় তুমি পাও তা লেখো।

উঃ। শেরশাহের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, রাজস্ব ব্যবস্থা ও জনহিতকর কাজের সঙ্গে সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ও সম্রাট আকবরের শাসনব্যবস্থার অনেকটা মিল ছিল। শাসন পরিচালনা ও রাজস্ব ব্যবস্থায় শেরশাহ কিছু সংস্কার করেছিলেন। এই সংস্কারগুলি হল: (১) শেরশাহ কৃষককে ‘পাট্টা’ দিতেন। এই পাট্টায়কৃষকের নাম, জমিতে কৃষকের অধিকার, কত রাজস্ব দিতে হবে প্রভৃতি লেখা থাকত। তার বদলেকৃষকেরা রাজস্ব দেওয়ার কথা কবুল করে ‘কবুলিয়ত’ নামে অন্য একটি দলিল রাষ্ট্রকে দিত। (২)যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে শেরশাহ সড়কপথের উন্নতি করেন। তিনি বাংলার সোনার গাঁ থেকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পেশোয়ার পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণ করেন। রাস্তাটির নাম ছিল ‘সড়ক-ই-আজম’। এটি পরবর্তীকালে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড নামে খ্যাত হয়। এ ছাড়াও শেরশাহ আরওকিছু রাজপথ নির্মাণ করেন। (৩) পথিক ও বণিকদের সুবিধার জন্য রাস্তার ধারে ধারে অনেক সরাইখানা তৈরি করা হয়েছিল।(৪) ঘোড়ার মাধ্যমে ডাক যোগাযোগ ব্যবধার উন্নতি করেছিলেন। (৫) দাগ ও হুলিয়া ব‍্যবস্থা চালু করেন।

প্রঃ- সুলহ-ই-কুল কী?

উঃ। মুঘল সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক আদর্শ ছিল মূলত বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সাম্রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে একটি যথার্থই ভারতীয় সাম্রাজ্য গড়ে তোলা। তাই আকবরের প্রশাসনিক আদর্শকে তৈমুরীয়, পারসিক এবং ভারতীয় রাজতন্ত্রের সংমিশ্রণ বলা চলে। এই আদর্শে বাদশাহ ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী শাসন করবেন এবং প্রজাদের প্রতি তাঁর পিতৃসুলভ
ভালোবাসা থাকবে। অর্থাৎ তাঁর শাসন করার অধিকার অন্য কোনো শাসকের থেকে পাওয়া নয়, এই ক্ষমতা তাঁর নিজের। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি তাঁর পক্ষপাত থাকবে না। সকলের প্রতি সহনশীলতা এবং সকলের জন্য শাস্তির
এই পথকেই বলা হয় 'সুলহ-ই-কুল'।)

প্রঃ- মুঘলরা কেন নিজেদের বাদশাহ বলত?

উঃ। বাদশাহ বা পাদশাহ বা পাদিশাহ শব্দগুলি ফারসি। ‘পাদ’ অর্থাৎ প্রভু এবং 'শাহ' মানে শাসক বা রাজা। মুঘলরা সার্বভৌম শাসকের ক্ষেত্রে 'পাদশাহ' অথবা 'বাদশাহ' শব্দটি ব্যবহার করত। আমরা জেনেছি আগে দিল্লির শাসকেরা নিজেদের 'সুলতান' বলতেন। মুঘলরা কিন্তু 'সুলতান' শব্দটি যুবরাজদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেন। 'বাদশাহ' উপাধি ব্যবহার করে মুঘলরা বোঝাতে চাইতেন যে তাদের শাসন করার ক্ষমতা অন্য কারোর অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল

02/08/2023

সপ্তম শ্রেনী 2nd Unit.
প্র:-বর্গি ও শিলাদার কারা ?

উঃ- শিবাজির অশ্বারোহী বাহিনীতে দু-রকমের সেনা ছিল। যথা- (ক) বর্গি: এটি ছিল সরকারি বাহিনী।

(খ) শিলাদার: শিলাদারদের সৈন্য ও অশ্ব নিজেদের জোগাড় করতে হত। তবে তার বিনিময়ে তারা টাকা পেত।

প্রঃ-দাগ ও হুলিয়া কী ?

উঃ- সেনাবাহিনীতে দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য শেরশাহ অশ্ব বা ঘড়া চিহ্নিতকরণ ও সৈন্যের বিবরণ লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থা করেন। এই দুই ব্যবস্থাই যথাক্রমে দাগ ও হুলিয়া নামে খ্যাত।.

প্রঃকবুলিয়ত ও পাট্টা কী ?

উঃ- শের শাহ রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার করে পাট্টা ও কবুলিয়তপ্রথার প্রবর্তন করেন।

(ক) পাট্টা: যে-দলিলে কৃষকের নাম, জমিতে কৃষকের অধিকার ও রাজস্ব দেওয়ার পরিমাণ প্রভৃতি উল্লেখ



সড়ক-ই-আজম কী ?

উঃ- শের শাহ বাংলার সোনারগাঁ থেকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পেশোয়ার পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণ করেন। এই রাস্তাটির নাম ছিল সড়ক-ই-আজম

নবরত্ন/নওরতন বলতে কী বোঝায় ?

উঃ- আকবরের রাজদরবারে বহুবিশিষ্ট জ্ঞানীগুণী মানুষদের মধ্যে ন-জনকে একত্রে নবরত্ন/নওরতন বলা হত। এঁদের মধ্যে রাজা বীরবল, আবুল ফজল আল্লামি, আবদুল কাদির বদায়ুনি, তানসেন, মানসিংহ, টোডরমল প্রমুখ উল্লেখযোগ্য ছিলেন।

শেরশাহর শাসন ব্যবস্থায় কী কী মানবিক চিন্তার পরিচয় তুমি পাও তা লেখো।

উত্তর: শেরশাহের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, রাজস্ব ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আলাউদ্দিন খলজি ও সম্রাট আকবরের শাসনব্যবস্থার অনেকটা মিল ছিল। তিনি তার রাজ্যের শাসন পরিচালনার জন্য ও রাজস্ব আদায়ের জন্য কিছু সংস্কার করেছিলেন।

i) শেরশাহ তার কৃষকদের পাট্টা দিতেন। এই পাট্টায় কৃষকদের নাম, জমিতে কৃষকদের কতটা, কত রাজস্ব তাদের রাজাকে দিতে হবে প্রকৃতি সব লেখা থাকতো৷ তার বদলে কৃষকরা কবুলিয়াত নামে একটি দলিল রাষ্ট্রকে দিত যাতে রাজস্ব দেওয়ার কথা লেখা থাকতো।

ii) সেনাবাহিনীর উপর তার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য তিনি দাগ ও হুলিয়া নামক দুটি ব্যবস্থা চালু করেন৷

iii) রাজা শেরশাহ বনিক ও পথিকদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য রাস্তার ধারে ধারে অনেক বিশ্রামাগার বা সরাইখানা তৈরি করেছেন৷ তাছাড়া তিনি ডাক হরকরা হিসেবে ঘোড়াকে ব্যবহার করতেন৷

iv) যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করার জন্য তিনি সড়ক পথের উন্নতি করেন৷ তিনি ‘সড়ক–ই–আজম’ নামে একটি রাস্তা নির্মাণ করেছিলেন৷ সেই রাস্তা সোনারগাঁ থেকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পেশোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল৷ যার বর্তমান নাম জিটি রোড৷

দীন-ই ইলাহি' কী?

উত্তর: বাদশাহ আকবর সকল ধর্মের সারবস্তুর সমন্বয় করে একটি ব্যক্তিগত ধর্মমত গড়ে তুলেছিলেন। একেই 'দীন-ই-ইলাহি' বলা হয়। আকবরের ধর্মীয় উদারতা ও বিচক্ষণতায় ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে দীন-ই-ইলাহি উদ্ভব হয়।

‘জাবতি’ কী? বা টোডরমোল ব্যবস্থা কি?

উ:- ভারতবর্ষ ছিল কৃষিনির্ভর দেশ। তাই ভালভাবে শাসন পরিচালনা করতে হলে ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা উপর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। আলাউদ্দিন খলজির আমল থেকেই রাজস্বের পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য জমি জরিপ করার বা মাপার ব্যবস্থা ছিল। পরে শেরশাহর সময়ও জমি মাপা হয়। আকবর নতুন করে জমি জরিপ করান।জমি জরিপের ভিত্তিতে রাজস্ব নির্ধারণ করার পদ্ধতিকে বলা হয় ‘জাবতি’। ‘জাবত’ মানে নির্ধারণ।.

জাবতি কি?

প্রথমে জমি জরিপ করা হত তারপর সেই জমি জরিপের ভিত্তিতে সেই জমির রাজস্ব নির্ধারণ করা হত। এই পদ্ধতিকে বলা হত জাবতি। জাবত কথাটির অর্থ হল নির্ধারণ।

ওয়াতন কথাটির অর্থ কী ছিল?

উঃ। ‘ওয়াতন' কথাটির অর্থ হলো নিজের ভিটে বা এলাকা বা স্বদেশ। যেমন রাজা ভারমল, ভগবদ্ভদাস ও মানসিংহের বংশের ওয়াতন ছিল আধুনিক জয়পুর শহরের কাছে অম্বর বা আমের এলাকা

হুন্ডি কী?

উঃ। তুর্কি শাসকদের আমলে কাগজের ব্যবহার শুরু হলে সরাফরা এক ধরনের কাগজ চালু করে, একে হুন্ডি বলা হত। বণিকরা কোনো এক জায়গায় সরাফকে টাকা জমা দিয়ে হুন্ডি কাগজ কিনে নিয়ে অন্য জায়গায় তা ভাঙিয়ে নিত। এর ফলে বণিকদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় টাকা নিয়ে যাওয়ার খুব সুবিধা হয়েছিল।

মহম্মদ-বিন-তুঘলককে কী ‘পাগলা রাজা বলা যায় ?

উ:- মহম্মদ-বিন-তুঘলককে ঐতিহাসিকরা খামখেয়ালি ও পাগলারাজা বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর কাজকর্মকে তুঘলকি কাণ্ড বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঐতিহাসিকদের মতে, মহম্মদ-বিন-তুঘলক ছিলেন অস্থিরচিত্ত, ধৈর্যহীন ও রাগী মানুষ। তাঁর গৃহীত পরিকল্পনাগুলি সময়োযোগী ছিল কিন্তু তা বাস্তবায়িত করার মানসিকতা সুলতানের না থাকার জন্য পরিকল্পনাগুলি ব্যর্থ হয়। তাই মহম্মদ-বিনতুঘলককে পাগলা রাজা বলা হয়। পক্ষে মত । মহাদ-নিন- তুণী, ছিল মধ্যযুণে এক বিস্ময়কর সুলতান। সাহিত্য শিল্প গণিত দশ সংস্কৃতি প্রভৃতি পেয়ে তিনি অসাধারণ ৮ তি ছিলো কোনো চারিত্রিক কবুত। তাঁকে “পর্শ করতে পারো ধর্মীয় দিক দিয়ে তিনি ছিলে উদার মা, অধিকারী। তার পরিকল্পগুলি ৩|র দূরদশিত। বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়। প্রকৃতপক্ষে মহদণি, তুঘলক ছিলেন পরস্পর বিরোধী গুণের সংমি|| গঠিত মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ সুলতান। তাই তাঁকে কখনো ‘পাগলা রাজা’ বলে অভিহিত করা যায়।মহম্মদ-বিন-তুঘলক তামার প্রতীকী মুখ প্রচলন

i. উদ্দেশ্য: বিশাল সৈন্যবাহিনীর ভরণপোষণ কর। গিয়ে দেবগিরিতে রাজধানী স্থানান্তরকরণ এবং দোয় অঞলে ঋণদান করার ফলে সুলতানি রাজকোশ ও দেউলিয়া হয়ে পড়েছিল। সেজন্য মহম্মদ বিন-তুঘল মুদ্রার ঘাটতির জন্য চিন ও পারস্যের অনুকরণে প্রতী মুদ্রার প্রচলন করেন। মহম্মদ-বিন-তুঘলকের প্রতীকী মূদ্র।

ii. ব্যর্থতা: কিন্তু এই মুদ্রা প্রবর্তন করতে গেলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রইয়োজন ছিল সুলতান করেননি। ফলে দেশে প্রতীকী মুদ্রা ব্যাপকভা জাল হতে শুরু করে। ব্যবসায়ীগণ এই জাল মুদ্রা নি অস্বীকার করে। ব্যাবসাবাণিজ্য প্রায় অচল হয়ে পে শেষে সুলতান বাধ্য হয়ে প্রতীকী মুদ্রার পরিব, পুনরায় সোনা-রুপোর মুদ্রা প্রবর্তন করেন। এইভা তিনি আর একবার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে আলাউদ্দিন খলজির বাজারদর নিয়ন্ত্রণ নীতির উদ্দেশ্য কী ছিল ?

উ:- সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সর্বপ্রথম ভারতে বাজারদর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করেন।

উদ্দেশ্য: আলাউদ্দিনের বাজার দর নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য নিয়ে পণ্ডিতমহলে বিতর্ক রয়েছে।

i.সৈন্যবাহিনীর ভরণপোষণ ও নাগরিকদের স্বল্প -মূল্যে দ্রব্য সরবরাহ: অনেকের মতে, বিশাল সৈন্যবাহিনীর ভরণপোষণ ও দিল্লির নাগরিকদের স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ করার জন্য সুলতান এই নীতি গ্রহণ করেন।

ii. জনকল্যাণের প্রেরণা : নাসিরউদ্দিন চিরাগের মতে, এর পিছনে ছিল সুলতানের জনকল্যাণের প্রেরণা।

উপসংহার: তবে এপ্রসঙ্গে সমকালীন ঐতিহাসিক বারনির ধারণাই বহুল প্রচলিত। সৈন্যবাহিনীর ভরপোষণের জন্য তিনি রাজধানীর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বেঁধে দেন।

◾ বিশদে (১০০-১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও : (পূর্ণমান-৫)

(ক) খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে দিল্লি কেন একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হয়ে উঠেছিল ?

উত্তর। ত্রয়োদশ শতক থেকে দিল্লি একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল আরাবল্লি শৈলশিরার একটি প্রান্ত ও যুমনা নদীবিধৌত সমতলের সংযোগস্থলে। এখানে আরাবল্লির পাথর দিয়ে জমির ঢাল অনুযায়ী সুরক্ষিত দুর্গনির্মাণ করা সহজ ছিল। ফলে উত্তর-পশ্চিম দিকের সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে যে মোঙ্গল আক্রমণ -এর সম্ভাবনা ছিল তা থেকে রাজধানীকে মুক্ত করা সম্ভবপর ছিল। আবার দিল্লি শহরের পাশ দিয়েই প্রবাহিত হয়েছিল যমুনা নদী, যা শহরের পূর্ব দিকে একটি প্রাকৃতিক সীমানা রচনা করেছিল। এ ছাড়া যমুনা নদী ছিল প্রধান জলপথ, তার সাথে সমুদ্রবাণিজ্য বৈদেশিক বাণিজ্য বন্দরগুলি যুক্ত ছিল, যা দিল্লিকে অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্রে পরিণত করেছিল। এই প্রাকৃতিক সীমানা ও অর্থনৈতিক গুরুত্বের কথা মাথায় রেখেই বহু যুগ ধরেই রাজরাজরা ও বণিকবৃন্দ দিল্লি অঞ্চলের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলেন।

ত্রয়োদশ শতকে মহম্মদ ঘুরির সেনাপতি কুতুবউদ্দিন আইবক দিল্লিতে সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। আজ পর্যন্ত মধ্য যুগের দিল্লির সাতটি নাগরিক বসতির চিহ্ন পাওয়া গেছে। দিল্লির প্রশাসনিক গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে মধ্যযুগের সুলতানরা দিল্লিকে ঘিরে তাদের কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। যেমন—কুতুবউদ্দিন আইবকের আমলে, দিল্লি তৈরি হয়েছিল রাজপুত শাসকদের শহর কিলা রাই পিথোরাকে কেন্দ্র করে। এটাই ছিল সুলতানি আমলের প্রথম দিল্লি বা কুতুব দিল্লি। দিল্লি শহরটি যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় ও এটি একটি রাজধানী শহর হওয়ায় বিদেশি পর্যটক ও বণিকদের কাছে শহরটি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে এবং ত্রয়োদশ শতক থেকেই দিল্লিতে বিভিন্ন পর্যটক ও বণিকদের আগমনও উত্তরোত্তর বাড়তে শুরু করে।

16/02/2023

নবম শ্রেণী *প্রথম অধ্যায় *
ফরাসি বিপ্লবে নারীদের ভূমিকা আলোচনা করো -
সূচনা -ফরাসি সম্রাট ষোড়শ লুই ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে স্টেটস জেনারেলের অধিবেশন ডাকে। বুর্জোয়ারা সেখানে তিন সম্প্রদায়ের একত্রে বসা এবং সদস্যদের মাথাপিছু ভোটদানের অধিকার জানায়। অবস্থা হাতের নাগালের বাইরে যেতে দেখে রাজা বাধ্য হয়ে তা মেনে নেয়। কিন্তু এর কিছু দিনের মধ্যেই গোটা দেশ জুড়ে খাদ্যাভাব, মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃতীয় শ্রেণির লোকেরা বিদ্রোহে ঝাপিয়ে পড়ে। এই বিদ্রোহে শুধু পুরুষরা নয়, তাদের পাশাপাশি তৃতীয় শ্রেণির নারীরাও এই বিদ্রোহে সমানভাবে অংশগ্রহণ করে।
-ফরাসি সমাজ ও পরিবারে পুরুষের মতো নারীর সমান
অধিকার থাকলেও ফরাসি বিপ্লবে নারীসমাজ এক
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। বিপ্লবের শুরু থেকে শেষ অবধি নারীরা ছিল পুরুষদের
সঙ্গী, বন্ধু ও বিপ্লবী কাজকর্মের অংশীদার ৷
নিম্নে ফরাসি বিপ্লবে নারীদের ভূমিকা বা অবদান আলোচনা করা হল -

খাদ্যাভাব ঃ ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের দ্বিতীয় ভাগে ফ্রান্সের গ্রামাঞ্চলগুলিতে প্রচণ্ড খাদ্যাভাব সৃষ্টি হয়। খাদ্যের দাবিতে প্যারিসে সাধারণ মানুষ দাঙ্গা-হাঙ্গামা শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ৫ অক্টোবর প্রবল বৃষ্টিপাত উপেক্ষা করে প্রায় ৬ হাজার মহিলা ভার্সাই রাজপ্রাসাদ অভিযান করে। মহিলাদের অভিযানের স্লোগান ছিল 'রুটি চাই'। জাতীয় রক্ষাবাহিনীর ২০ হাজার সদস্য লাফায়েৎ-এর নেতৃত্বে নারীদের এই মিছিল অনুসরণ করতে থাকে।

বিপ্লবী নারীদের দাবি ঃ ফরাসি বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী নারীদের প্রধান দাবি ছিল সস্তায় রুটি সরবরাহ করতে হবে এবং বিপ্লবের তেরঙ্গা পতাকার অবমাননাকারীদের শাস্তি দিতে হবে।

রাজতন্ত্রের শবযাত্রা ঃ ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৬ অক্টোবর আন্দোলনকারী নারীরা ভার্সাই রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করে রক্ষীদের হত্যা করে সমগ্র রাজপরিবারের সদস্যদের বন্দি করে। বন্দি রাজপরিবারকে তারা প্যারিসে আসতে বাধ্য করে। এই ঘটনাকে 'রাজতন্ত্রের শবযাত্রা' বলা হয়।

মূল্যায়ন ঃ ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ফরাসি বিপ্লবে নারীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। বিপ্লবের মাধ্যমে নারীরা কিছু অধিকার লাভ করতে পেরেছিল। সেগুলি হল মা-বাবার অনুমতি ছাড়া বিবাহ করা, রাজনৈতিক ক্লাব গঠন করা এবং অবৈধ সন্তানের স্বীকৃতি লাভ করা ইত্যাদি।
ফরাসি বিপ্লবকালে বিপ্লবী নেতারা নারীদের রাজনৈতিক অধিকার ও যোগ্যতার প্রশ্নে দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে না পারলেও এ সময়ে নারীমুক্তির যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা পরবর্তীকালে নারী সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়।

02/01/2023

দশম শ্রেণী অষ্টম অধ্যায় দু নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
1.স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের অন্তর্গত দেশীয় রাজ্যের সংখ্যা কত ছিল এবং এই রাজ্যগুলির মধ্যে তিনটি বড়ো রাজ্যের নাম লেখো।
উঃ- স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের অন্তর্গত দেশীয় রাজ্যের সংখ্যা ছিল ৫৬২টি। এর মধ্যে তিনটি বড়ো রাজ্য হল জুনাগড়, হায়দরাবাদ ও কাশ্মীর।

2.বক্কানীকরণ’ কী ?
উঃ- সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে থাকা দেশীয় রাজ্যগুলি যদি স্বাধীনতা লাভের পর তাদের স্বতন্ত্র থাকার অধিকার প্রয়োগ করত তবে ভারত ভূখণ্ড ৫০০-র বেশি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রে পরিণত হত। ক্ষমতা হস্তান্তর পর্বে ব্রিটিশ শাসকরা ভারতের এই বক্কানীকরণের ব্যবস্থা করেন।

3.স্বাধীন ভারত সরকারের লৌহ মানব’ বলে কে পরিচিত ছিলেন? তিনি দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে কী নীতি গ্রহণ করেন?
উঃ- স্বাধীন ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ‘লৌহ মানব’ নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ভারত রাষ্ট্রে যোগদানের জন্য দেশীয় রাজাদের ওপর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেন। প্রয়োজনে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও যোষণা করা হয়।

4.নরেন্দ্র মণ্ডল কী?
উঃ- স্বাধীন ভারতের দেশীয় রাজ্যের রাজারা তাদের স্বাতন্ত্র রক্ষার জন্য নরেন্দ্র মণ্ডল’ নামে এক সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সংগঠনের নেতা ছিলেন ভােপালের নবাব।

5.কত বছর পরে এবং কবে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে?

উঃ- প্রায় দীর্ঘ দুশো বছরের ব্রিটিশ শাসনের পর ভারতবর্ষ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা লাভ করে।

6.স্বাধীনতা লাভের পর ভারতকে যেসকল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সমস্যার উল্লেখ করো।

উঃ- স্বাধীনতা লাভের পর ভারতবর্ষ যেসকল সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হল—
(১) দেশীয় রাজ্যগুলির অন্তর্ভুক্তির সমস্যা
(২) শরণার্থী বা উদ্বাস্তু সমস্যা এবং
(৩) ভাষা সমস্যা।

7.অধিকাংশ দেশীয় রাজ্যগুলি ভারতীয় গণপরিষদে যোগ দিয়েছিল কেন?
উঃ- স্বাধীনতা লাভের পর দেশীয় রাজ্যের প্রজারা ভারতে যোগদানের জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে। এই জাতীয়তাবাদী প্রজাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয় উপলব্ধি করে দেশীয় রাজারা ভারতভুক্তিকে অনিবার্য নিয়তি বলে গ্রহণ করেন এবং ভারতীয় গণপরিষদে যোগদান করেন।

8.দেশীয় রাজ্যগুলির মধ্যে নিজেদের স্বাতন্ত্র রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন এমন ছয়টি রাজ্যের নাম লেখো।
উঃ- দেশীয় রাজাদের মধ্যে নিজেদের স্বাতন্ত্র রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন এমন ছয়টি রাজ্য হল হায়দরাবাদ, জুনাগড়, ত্রিপুরা, ময়ূরভঞ্জ, ভোপাল ও মণিপুর।

9.ক্ষমতা হস্তান্তরের পর মহারাজা হরি সিং কাশ্মীর সম্পর্কে কী বক্তব্য প্রকাশ করেন?
উঃ- ক্ষমতা হস্তান্তরের পর, শর্তানুযায়ী কাশ্মীরের মহারাজা কাশ্মীর রাজ্যকে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন রাজ্য হিসেবে গণ্য করেন। ভৌগোলিক দিক থেকে কাশ্মীর ছিল ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের সীমান্তে অবস্থিত। সুতরাং, মহারাজা হরি সিং-এর যুক্তি ছিল যে, কাশ্মীর স্বতন্ত্র ও স্বাধীন থাকলে ভারত বা পাকিস্তান কোনো দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সংহতিতে বাধা হবে না।

10.ভারতে ফরাসি উপনিবেশগুলির নাম লেখো।
উঃ- ফরাসি শক্তি বাংলায় চন্দননগর, মাদ্রাজের পণ্ডিচেরী এবং পশ্চিম উপকূলের মাহেতে উপনিবেশ স্থাপন করে।

11.কীভাবে ভারতে বিদেশি শক্তি অধিকৃত অঞ্চল ভারতভুক্ত হয় ?
উঃ- স্বাধীনতা লাভের পর ফরাসি সরকার তাদের উপনিবেশগুলি শান্তিপূর্ণ উপায়ে ভারতকে ফিরিয়ে দেয়, কিন্তু পোর্তুগাল গোয়াসহ অন্য উপনিবেশগুলি ছেড়ে দিতে রাজি ছিল না। শেষপর্যন্ত ভারত সরকার এক সামরিক অভিযানের মাধ্যমে গোয়া দখল করে পোর্তুগিজ শাসনের অবসান ঘটায়। এইভাবে বিদেশি শক্তি অধিকৃত অঞ্চল ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়।

12.আধুনিক ভারত ইতিহাসের বৃহত্তম এবং দুঃখজনক ঘটনা কী?
উঃ-আধুনিক ভারত ইতিহাসের বৃহত্তম এবং দুঃখজনক ঘটনা হল দেশভাগ এবং তার থেকে উদ্ভূত শরণার্থী সমস্যা।

13.কোন্ কোন্ সাহিত্যে উদ্বাস্তু সমস্যার কথা জানা যায়?
উঃ- ভীষ্ম সাহানির ‘তমশ’, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিপাশা’ উপন্যাস, খুশবন্ত সিং-এর ‘এ ট্রেন টু পাকিস্তান’ গ্রন্থ থেকে উদ্বাস্তু সমস্যার কথা জানা যায়।

14.কত খ্রিস্টাব্দে ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং এই চুক্তির প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে কে কে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন? অথবা, ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে কেন নেহরু-লিয়াকত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল
উঃ- ভারত ও পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর (নেহরু ও লিয়াকত আলি খান) মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও কে. সি. নিয়োগী মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন।

15.পূর্ববঙ্গ থেকে আগত শরণার্থীদের কোথায় কোথায় পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল?
উঃ- পূর্ববঙ্গ থেকে আগত শরণার্থীদের দণ্ডকারণ্য ও - আন্দামানে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল।
16.কোথায় কোথায় ও কেন বামপন্থী আন্দোলন জনপ্রিয়তা লাভ করে?
উঃ- উদ্বাস্তু জনগণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেশভাগ ও তাদের দুর্দশার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করে। এই সুযোগ গ্রহণ করে পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় বামপন্থী আন্দোলন জনপ্রিয়তা লাভ করে।

17কবে কবে খাদ্য আন্দোলন হয়েছিল?
উঃ- ১৯৫৯ ও ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দ খাদ্য আন্দোলন হয়েছিল।

18.কার পরামর্শে কে কাশ্মীর সমস্যাকে নিরাপত্তা পরিষদে আন্তর্জাতিক সমস্যারূপে তুলে ধরেন?
উঃ- লর্ড মাউন্টব্যাটেনের পরামর্শে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু কাশ্মীর সমস্যাকে জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে আন্তর্জাতিক সমস্যারূপে তুলে ধরেন।

19.পোর্তুগিজ শক্তি ভারতের পশ্চিম উপকূলের কোন কোন্ স্থান অধিকার করে?
উঃ- মোগল রাজত্বের শেষদিকে পোর্তুগিজ শক্তি ভারতের পশ্চিম উপকূলে গোয়া, দমন ও দিউ অধিকার করে।

20.ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের মতে কত খ্রিস্টাব্দ থেকে কত খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতে উদ্বাস্তু আগমন চলে?
উঃ- ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের মতে, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ভারতে উদ্বাস্তু আগমন শুরু হয় এবং ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। বলা বাহুল্য, পশ্চিমবঙ্গে উদ্বাস্তু আগমনের ধারা আজও বিদ্যমান।

21.পশ্চিমের উদ্বাস্তুরা ভারতের কোথায় কোথায় বসবাস শুরু করে ?
উঃ- পশ্চিমের উদ্বাস্তুরা ভাষাগত নৈকট্যের জন্য হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও দিল্লিতে বসবাস শুরু করে।

22.পূর্ববঙ্গের শরণার্থীরা কোথায় কোথায় আশ্রয় গ্রহণ করে?
উঃ- পূর্ববঙ্গ থেকে আগত শরণার্থীরা ভাষা ও সংস্কৃতিগত কারণে মূলত পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামে আশ্রয় গ্রহণ করে।

23.সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেন পরিচালিত দুটি চলচ্চিত্রের নাম লেখো যাতে উদ্বাস্তু সমস্যাকে তুলে ধরা হয়েছে?
উঃ- সত্যজিৎ রায়ের অশনি সংকেত’ এবং মৃণাল সেনের ‘আকালের সন্ধানে’—চলচ্চিত্রে উদ্বাস্তু সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

24.কোন প্রদেশে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের আন্দোলন শুরু হয় ও এই আন্দোলনের নেতা কে ছিলেন?
উঃ- মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্ত্র অঞলের তেলুগু ভাষাভাষী জনগণ পৃথক অন্ত্র রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অন্ত্রের জনপ্রিয় গান্ধিবাদী নেতা পট্টি শ্রীরামালু। অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং একইসঙ্গে তামিল ভাষাভাষীদের জন্য তামিলনাড়ু রাজ্য গঠিত হয়।

25.কত খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন’ এবং রাজ্য পুনর্গঠন আইন পাস করা হয় ?
উঃ- ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠিত হয় এবং ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে সংসদে ‘রাজ্য পুনর্গঠন আইন পাস করা হয়।

26.রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (১৯৫৩) কেন গঠিত হয়েছিল?
উঃ- ১৯৫০-এর দশকের সূচনা থেকে ভারতের একাধিক প্রদেশে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠনের দাবি জোরালো হতে থাকে। এই অবস্থায় অঙ্গরাজ্যগুলির সীমানা নির্ধারণের নীতি তৈরির উদ্দেশ্যে জওহরলাল নেহরু ফজল আলি, কে.এম. পানির ও হৃদয়নাথ কুরুকে নিয়ে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন করেন।

27.রাজ্য পুনর্গঠন আইন অনুসারে ক-টি রাজ্য এবং ক-টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করাহয়?
উঃ- রাজ্য পুনর্গঠন আইন অনুসারে ১৪টি রাজ্য এবং ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

28.কোন অঞ্চলকে গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয় ?
উঃ- ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইকে (মুম্বাই) গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।

29.কত খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবকে কয়টি ও কী কী অংশে বিভক্ত করা হয়?
উঃ- ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবকে পাঞ্জাবি, হিন্দি ও পাহাড়ি অঞ্চলে বিভক্ত করে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও হিমাচল প্রদেশ রাজ্য গঠিত হয়।

30.ভারতের রাষ্ট্রীয় ও সহকারী রাষ্ট্রীয় ভাষার নাম লেখো।
উঃ- ভারতের রাষ্ট্রীয় ভাষা হিন্দি ও সহকারী রাষ্ট্রীয় ভাষা হল ইংরেজি।

31.এড়া ভারতের আঞ্চলিক ভাষা কয়টি এবং এগুলির মধ্যে যে-কোনো চারটি আঞ্চলিক ভাষার নাম লেখো।
উঃ- ভারতে ২২টি আঞ্চলিক ভাষা আছে। এদের মধ্যে চারটি আঞ্চলিক ভাষা হল—বাংলা, উড়িয়া, তামিল ও তেলুগু।

32.ভারতের স্বাধীনতা আইন কবে কোথায় পাস হয়?
উঃ- ভারতের স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ জুলাই

33.পাকিস্তান কাশ্মীরকে, গ্রহণ করার জন্য কী নীতি গ্রহণ করে?
উঃ- কাশ্মীরের ভৌগোলিক অবস্থান ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের অজুহাতে পাকিস্তান কাশ্মীরকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বলপ্রয়োগের নীতি গ্রহণ করে।

34.কার নেতৃত্বে কাশ্মীরে আপকালীন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়?
উঃ- কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনী যখন মুক্তিযুদ্ধে রত সেই সময় কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স কাশ্মীরের ভারতভুক্তিকে সমর্থন করে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্যে শেখ আবদুল্লাহের নেতৃত্বে কাশ্মীরে একটি আপৎকালীন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

35.আজাদ কাশ্মীর কী?
উঃ- পাকিস্তানের সহায়তায় হানাদার বাহিনী কাশ্মীরের যে যে অংশ অধিকার করে তা আজাদ কাশ্মীর নামে পরিচিত। পাকিস্তান শেখ আবদুল্লাহ সরকারের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাশ্মীরে আজাদ কাশ্মীর সরকার গঠন করে।

36. ভারত ভুক্তির দলিল কি? ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের মূল সমস্যা কি কি?
উঃ-1947 খ্রিস্টাব্দে 15 ই আগস্ট ভারত স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতা লাভের পর ভারত যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা ছিল দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তি সংক্রান্ত সমস্যা।
ভারতে ব্রিটিশ আশ্রিত ও স্বাধীন দেশীয় রাজ্যগুলির সংখ্যা ছিল 562 টি। এই রাজ্যগুলিকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য ভারতভুক্তি দলিল নামে শর্তযুক্ত একটি চুক্তিপত্র তৈরি করেন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল। দেশীয় রাজ্যগুলির ভ্রাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা লভের বিনিময়ে ভারতভুক্তি দলিলে স্বাক্ষর করেন তিনি।
দেশীয় রাজ্যগুলি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ভারত একটি বিশাল শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ভারতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সুদৃঢ় হয়।

37. মুসলিম লীগের প্রখ্যাত সংগ্রাম বলতে কী বোঝো?

উঃ-বড়লাট ওয়াভেল মন্ত্রী মিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী কংগ্রেসকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আহ্বান জানালে সরকার কংগ্রেসের আধিপত্যের সম্ভাবনায় মন্ত্রী মিশনের প্রতি তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে মুসলিম লীগ জিন্নাহর নেতৃত্বে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাক দিয়েছিল 1946 খ্রি: 16 ই আগস্ট । ভারতবর্ষের সর্বত্র তা শান্তিপূর্ণ ভাবে পালিত হলেও ঐদিন কলকাতায় ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও হত্যাকাণ্ড ঘটে।

38.আলিপুর বোমা ষড়যন্ত্র মামলার কি ও গুরুত্ব লেখ?
উঃ-পুলিশ বিপ্লবীদের গোপন ঘাটি মুরারি পুকুর বাগান বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বোমা তৈরীর কারখানা ও বহু তাজা বোমা, অস্ত্রশস্ত্র খুঁজে পায়। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হিসেবে সন্দেহে পুলিশ অরবিন্দ ঘোষ ও তার ভাই বারীন্দ্রকুমার ঘোষ সহ 47 জন বিদ্রোহীকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে 1908 খ্রিস্টাব্দের 21 শে মেয়ে আলিপুর আদালতে মামলা শুরু করে, যা আলিপুর বোমা ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত। এটাই ছিল ভারতীয় বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের প্রথম ষড়যন্ত্র মামলা।

39.কাকে কেন 'লৌহমানব' বলা হয়?
উঃ-স্বাধীন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভ ভাই প্যাটেল কে 'লৌহ মানব ' বা 'ভারতের বিসমার্ক' বলা হয় ।

কারণ:-
ক) তিনি স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব ভি.পি. মেনন ও বড়লাট লর্ড মাউন্টব্যাটেন এর সহযোগিতায় কূটনীতি ও যুদ্ধনীতির মাধ্যমে ভারতের দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতভুক্ত করে ভারতকে রাজনৈতিক সংকটের হাত থেকে মুক্ত।

40. রাজাকার বলতে কী বোঝো?

উঃ-দেশীয় রাজ্য হায়দ্রাবাদে প্রায় 85 শতাংশ ছিল হিন্দু। অথচ হায়দ্রাবাদের শাসক নিজাম ওসমান আলি খান ভারতের অন্তর্ভুক্ত হতে রাজি ছিলেন না। তাই তিনি 'কাশিম রজভি' নামক একজনের নেতৃত্বে উগ্র সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাহিনী গড়ে তোলেন, যা রাজাকার নামে পরিচিত। এই বাহিনী হায়দ্রাবাদের অভ্যন্তরে বসবাসকারী হিন্দু মানুষদের অত্যান্ত অত্যাচার করত এবং হায়দ্রাবাদকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জনমত গঠন করার চেষ্টা করেছিল।

41. কেন দার কমিশন গঠিত হয়েছিল?

স্বাধীনতা লাভের পর ভারত সরকার ভাষাভিত্তিক প্রদেশ গঠনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এস.কে.দারের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠিত হয় যা দার কমিশন নামে পরিচিত। এই কমিশনের উল্লেখযোগ্য দিক হলো-

ক) এই কমিশন তার প্রতিবেদনে ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন এর বিরোধিতা করে এবং আত্মপ্রকাশ করে যে, ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন তাহলে ভারতের জাতীয় ঐক্য বিঘ্নিত হবে।

খ) এই কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে দক্ষিণ ভারতের ভাষাভাষীর মানুষ ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে।

42. কেন নেহেরু-লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?

1950 খ্রিস্টাব্দের 8 ই এপ্রিল নেহেরু লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর কারণ গুলি হল-

ক) 1949 খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের মধ্যেই পূর্ববঙ্গে হিন্দু শরণার্থীর সংখ্যা এবং উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধান বা ত্রাণ ও পুনর্বাসনে পশ্চিমবঙ্গের সংকটজনক পরিস্থিতি দেখা যায়।

খ) 1950 খ্রিস্টাব্দের শুরুতে পাকিস্তান ক্রমশই ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত হতে শুরু করলে পূর্ববঙ্গ থেকে প্রায় প্রত্যেক হিন্দু ভারতে চলে আসতে চাই এবং ভারত থেকে প্রায় 1 লক্ষ মুসলিম পাকিস্তানে চলে যেতে চায়।

গ) এভাবে ভারত ও পাকিস্তানের উদ্বাস্তু সমস্যা জটিল আকার ধারণ করলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকৎ আলীর মধ্যে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে নেহেরু- লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

43.LOC - কি?
ভারত স্বাধীনতা লাভের পর দেশীয় রাজ্য কাশ্মীরে শেখ আব্দুল্লার নেতৃত্বে 'আজাদ কাশ্মীর' গঠিত হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ভারতের অন্তর্গত কাশ্মীরে - পাকিস্তান হস্তক্ষেপ করতে থাকলে যখন ভারত সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের দরাস্ত হন, তখন পাকিস্তান কাশ্মীর গণভোটের দাবি জানান। এই পরিস্থিতিতে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ কাশ্মীরের যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করে ও যুদ্ধরিতী সীমারেখা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নির্ধারণ করে "নিয়ন্ত্রণ রেখা বা LOC" (লাইন অফ কন্ট্রোল)।

44.উদ্বাস্তু / উদবাস্তু কাদের বলা হয়?
দেশভাগ কথাটির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত কথাটি হলো- উদ্বাস্তু/উদবাস্তু। দেশভাগের ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে বা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বা অন্য কোন কারণে যখন নাগরিকরা মাতৃভূমি পরিত্যাগ করে অন্য দেশে আশ্রয় নেয়, তখন তারা উদ্বাস্তু নামে পরিচিত হয়।

45.পেপসু কি?
সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেল ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠনের সময় সংহতি সমস্যার সমাধান করতে ছোট দেশীয় রাজ্যগুলি কে পার্শ্ববর্তী রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করেন। অপেক্ষাকৃত ছোট রাজ্যগুলিকে এক একটি সংঘের অন্তর্ভুক্ত করেন। পাতিয়ালা ও পূর্ব পাঞ্জাব রাষ্ট্রকে নিয়ে গড়ে তোলেন পেপসু।

46.দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো?

ভারতের স্বাধীনতা লাভের প্রাক্কালে ভারতের কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ,জনাগর প্রভৃতি 532 টিরও বেশি রাজ্য ছিল, তা দেশীয় রাজ্য নামে পরিচিত। এর উল্লেখযোগ্য দিক হলো-
ক) এগুলির মধ্যে বেশকিছু রাজ্য স্বাধীন হলেও অধিকাংশ রাজ্য ব্রিটিশ সরকারের প্রতি অনুগত দেখিয়ে প্রজা স্বার্থবিরোধী শাসন ব্যবস্থা চালু রেখেছিল।
খ) এগুলি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের ছোট বা বড় আকারে ছড়িয়ে ছিল।

47.ভারতের স্বাধীনতা আইন কি?

লর্ড মাউন্টব্যাটেনের ভারত বিভাজন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাশ হয় (জুলাই, ১৯৪৭) এ সম্পর্কে যে আইন তৈরি হয় তা ভারতীয় স্বাধীনতা আইন নামে পরিচিত। এই আইনের উল্লেখযোগ্য দিক গুলি হল-
ক) 1947 খ্রিস্টাব্দের 15 ই আগস্ট স্বাধীন রাষ্ট্রের রূপে ভারত ও পাকিস্তান আত্মপ্রকাশ করবে।
খ) দুটি রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট পৃথক এলাকায় স্বতন্ত্র শাসন থাকবে।
গ) ভারতীয় দেশীয় রাজ্য গুলির উপর থেকে ব্রিটিশ সরকারের কর্তৃত্ব অবসান ঘটবে।

48.পট্টি শ্রীরামালু কি কারণে স্মরণীয়?

বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী পট্টি শ্রীরামালু স্মরণীয় হওয়ার কারণ গুলি হল-

প্রথমত, তেলেগু ভাষীদের জন্য পৃথক অন্ধ্র প্রদেশের দাবিতে অমরণ অনশন শুরু করেন তিনি।
দ্বিতীয়ত, ৫৮ দিন অনশনের পর তার মৃত্যু হয় এবং তাঁর মৃত্যুর পর অন্ধপ্রদেশে তিন দিন ধরে পৃথক অন্ধপ্রদেশ দাবিতে দাঙ্গা, বিক্ষোভ, হরতাল পালিত হয়।
তৃতীয়ত, ঘটনা পরম্পরায় কেন্দ্র সরকার তেলেগু ভাষাভাষী অঞ্চল একত্রিত করে স্বতন্ত্র অন্ধপ্রদেশ গঠন করেন। ফলে পট্টি শ্রীরামালু পৃথক অন্ধ্র প্রদেশের উদগাতা নামে পরিচিত হন।
উপরিক্ত কারণের জন্যই তিনি স্মরণীয়।

Want your school to be the top-listed School/college?

Website