Bangla 2nd Paper SSC

Bangla 2nd Paper SSC

Share

আসসালামু আলাইকুম। এটি নবম- দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি বিষায়ক একটি পেজ।

Operating as usual

Photos from Bangla 2nd Paper SSC's post 15/10/2024

এইচএসসি ২৪ ব্যাচ,

কিছুক্ষণ পরেই ২৪ ব্যাচের ফলাফল প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। ফলাফল প্রকাশের পর অনেকেই আনন্দে আত্মহারা হলেও অনেকে আবার হতাশায় ভেঙে পড়ে।

শোন ভাই, এই এইচএসসি ফলাফল ভাল না হলেও চিন্তা করিস না! মনে রাখিস, একটা ফলাফল তোর জীবনের সবকিছু নয়। এই একটা পরীক্ষার ফলাফল তোকে সংজ্ঞায়িত করতে পারে না। জীবন অনেক লম্বা, আর তোর সামনে অনেক সুযোগ আছে।

কখনো ভাবছিস? একটা পরীক্ষায় ভাল না করলেই তোর সব স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে? আচ্ছা, একটা কথা বলি, তুই খুব ভালো একটা গেম খেলিস, কিন্তু একবার হেরে গেলে কি আর খেলতে বসবি না? খেলতে থাকবি তো? তাই না?

হতাশ হওয়ার দরকার নেই, কারণ, তুই একা না, তোর মতো অনেকেরই এই ফলাফল ভাল হয় না। এটাকে একটা নতুন সূচনার সুযোগ হিসেবে ধর। ভুলগুলো থেকে শিখ এবং আবার নতুন করে শুরু কর।এখনও অনেক সুযোগ আছে, এই একটা পরীক্ষা তোর সফলতার সব দরজা বন্ধ করে দেয়নি।

তোর ভবিষ্যতের জন্য স্বপ্ন দেখ এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ কর। জীবনে সফল হতে হলে শিক্ষা অর্জন করা খুবই জরুরি। সফলতা একদিনে আসে না। ধৈর্য ধরে সৎপথে কাজ করতে থাক। তুই চাইলে যে কোন কিছু করতে পারবি। নিজের উপর বিশ্বাস রাখ।

সবার জন্য শুভকামনা। নতুন উদ্যমে স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাও। সকলের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।

14/10/2024

জীবনে যা আন্দাজ করি তাই সঠিক হয়, শুধু MCQ আন্দাজ করলেই ভুল হয়! 🙂

03/09/2024

বাংলা ব্যাকরণে পদ মূলত ২ প্রকার হলেও সাধারণ ভাবে পদ ৫ প্রকার। কিন্তু আধুনিক প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে পদ ৮ প্রকার।

পদ মুলত ২ প্রকার:
সব্যয় পদ
অব্যয় পদ

সব্যয় পদ চার প্রকার:
বিশেষ্য
বিশেষণ
সর্বনাম
ক্রিয়াপদ

সম্মিলিত শ্রেণিবিভাগ:
উভয় মূল মিলিয়ে পদ মুলত ৫ প্রকার। যথা:
বিশেষ্য
বিশেষণ
সর্বনাম
ক্রিয়াপদ
অব্যয়

কিন্তু সাধারণ ব্যাকরণিক শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী অব্যয় পদটি একাধিক ভুমিকা পালন করে।

আধুনিক শ্রেণিবিভাগ
পদান্বয়ী অব্যয় অনুসর্গ রুপে কাজ করে, সমচ্চয়ী অব্যয় পদটি সংযোজক হিসেবে কাজ করে এবং অনন্বয়ী অব্যয় পদটি আবেগবাচক শব্দের ভুমিকা পালন করে। আবার ক্রিয়াবিশেষণকে বিশেষণের একটি অংশ মনে করা হয়। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ আলাদা শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্যতা রাখে। তাই, প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে শব্দ আট প্রকার। যথা:

বিশেষ্য
বিশেষণ
সর্বনাম
ক্রিয়াপদ
ক্রিয়াবিশেষণ
আবেগসূচক পদ
সংযোজক পদ
অনুসর্গ

বিশেষ্য
বিশেষ্য অর্থ নাম। কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য বলে। যেমন, কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, সমষ্টি, কর্ম বা গুণের নাম। উদাহরণস্বরূপ, আলবার্ট আইনস্টাইন, কাজী নজরুল ইসলাম, জোসেফ স্তালিন, বাংলাদেশ, ভারত, ইতালি, নিউইয়র্ক, জানুয়ারি, রমজান, ফাল্গুন, গীতাঞ্জলি, দৈনিক ইত্তেফাক, ধাতু, লোহা, পানি, অক্সিজেন, আদর্শ, মধুরতা, বিশ্বাসী, সরলতা, দেশী, দর্শন, ধর্ম, ইসলাম, ক্যাথলিক, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ভারতীয় জনতা পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জনতা, সংঘ, ঝাঁক, লাইব্রেরি, গবেষণাগার, নাট্যশালা, মানুষ, গরু, ছাগল, পাহাড়, নদী, দালান, লবণ, বই, খাতা, পঠন, শয়ন, করানো, পাঠানো – এগুলো বিশেষণ।

সর্বনাম
বিশেষ্যের পরিবর্তে যা ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম বলে। বাক্যের মধ্যে বিশেষ্য যে ভূমিকা পালন করে সর্বনামও একই ভূমিকা পালন করে।[১] উদাহরণস্বরূপ, আমি, তুমি, আমরা, তোমরা, তুই, তোরা, এরা, ওরা, যে, সে, যিনি, তিনি, তাঁর, তাঁরা, সবাই, ওই, কেউ, কি, কোথায়, কীভাবে – এগুলো সর্বনাম।

বিশেষণ
বিশেষণ বিশেষ্য ও সর্বনামকে বিশেষিত করে। উদাহরণস্বরূপ, তাজা মাছ, সাদা গোলাপ, কালো পানি, দুই বিঘা, বেলে মাটি, প্রথম – এগুলো বিশেষণ।

ক্রিয়াপদ
যা দ্বারা কাজ করা বুঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে। ক্রিয়ামূল বা ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হয়ে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়। পক্ষ ও কালভেদে ক্রিয়াপদের রূপভেদ হয়। উদাহরণস্বরূপ, করবে, করলে, করে, শিখতে, ঘুমায়, পড়ছে, দিলেন, লিখছে, খেলছে, করাচ্ছেন, খাওয়ায়, চমকায়, ছটফটিয়ে, মরে যাওয়া, কমে আসা, এগিয়ে চলো, হেসে উঠেছে, দাঁড়িয়ে যাও – এগুলো ক্রিয়াপদ।

ক্রিয়াবিশেষণ
যা ক্রিয়ার ভাব, কাল বা সময়কে বিশেষিত করে তাকে ক্রিয়াবিশেষণ বলে। উদাহরণস্বরূপ, ধীরে বাতাস বায়, লোকটি দ্রুত হাটে, টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ছে, যথাসময়ে সে হাজির হলো, আমার জানা নেই, সে যাবে না, কখনই বা দেখা হবে – এগুলো ক্রিয়াবিশেষণ।

আবেগসূচক পদ
যে শব্দ দ্বারা দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ ইত্যাদি প্রকাশ হয়ে থাকে তাকে আবেগসূচক পদ বলে। এধরনের পদ বাক্যের অন্যান্য পদের সঙ্গে সরাসরি সরাসরি সম্পর্কিত না হয়ে স্বাধীনভাবে বাক্যে বসে। উদাহরণস্বরূপ, হ্যাঁ, বেশ, শাবাশ!, আহ!, ওহ!, ছি ছি!, বাপরে বাপ, আরে, হায় হায়! ওগো – আবেগসূচক পদ।

সংযোজক পদ
সংযোজক পদ দুটি শব্দের মধ্যে সংযোগ ঘটায়।উদাহরণস্বরূপ, ও, এবং, বা, অথবা, আর, না-হয়, না-কি, কিন্তু, তবে, যদি, কারণ, তাই – সংযোজক পদ।

অনুসর্গ
যা কোন শব্দের পরে বসে তাকে অনুসর্গ বলে। উদাহরণস্বরূপ, অবধি, আগে, উপরে, করে, কর্তৃক, ছাড়া, জন্য, তরে, থেকে, দ্বারা, ধরে, নাগাদ, পর্যন্ত, বনাম, ভেতরে, মধ্যে, লেগে, সঙ্গে, হতে – অনুসর্গ।

02/09/2024

ধ্বনিতত্ত্ব ও ধ্বনি পরিবর্তন

ধ্বনিতত্ত্ব(Phonology)

ভাষায় ব্যাবহৃত সকল ধ্বনির আলোচনা, ব্যাবহারবিন্যাস ও উচ্চারণ বিশ্লেষণকে ধ্বনিতত্ত্ব( Phonology) বলে। ভাষা ও বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় এর মাঝে ধ্বনিতত্ত্ব ( phonology) এর আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা।

কোনো ভাষার বাক্-প্রবাহকে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা কিছু মৌলিক ধ্বনি পাই।
বাংলা ভাষার মৌলিক ধ্বনিগুলোকে প্রধান দুইভাগে বিভক্ত করা হয়-
স্বরধ্বনি ও
ব্যঞ্জনধ্বনি

স্বরধ্বনি:
যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি।যেমন- অ, আ, ই, উ ইত্যাদি।

ব্যঞ্জনধ্বনি:
যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় বা ঘর্ষণ তৈরি হয়, তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন- ক, চ, ট, ত, প ইত্যাদি।

বর্ণ:
ধ্বনি নির্দেশক চিহ্নকে বলা হয় বর্ণ। বাংলা ভাষায় দুই ধরনের বর্ণ আছে-

স্বরধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় স্বরবর্ণ। যেমন- অ, আ, ই, উ ইত্যাদি।
ব্যঞ্জনধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় ব্যঞ্জনবর্ণ। যেমন- ক, খ, গ, ঘ ইত্যাদি।

বাংলা বর্ণমালা

বর্ণমালা:
যে কোনো ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সেই ভাষার বর্ণমালা বলা হয়।
বাংলা বর্ণমালায় মোট পঞ্চাশটি বর্ণ রয়েছে।
এখানে স্বরবর্ণ এগারটি।
এবং ব্যঞ্জনবর্ণ ঊনচল্লিশটি।
বিশেষ জ্ঞাতব্য, ঐ, ঔ – এ দুটি দ্বিস্বর বা যৌগিক স্বরধ্বনি চিহ্ন। যেমন- অ + ই = ঐ, অ + উ = ঔ
স্বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ

স্বরবর্ণের দুটি রূপ আছে-

প্রাথমিক বা পূর্ণ রূপ: স্বরবর্ণ যখন নিরপেক্ষ বা স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হয়, তখন এর পূর্ণরূপ লেখা হয়।

সংক্ষিপ্ত স্বর বা কার: স্বরধ্বনি যখন ব্যঞ্জনধ্বনির সাথে সংযুক্ত হয়ে উচ্চারিত হয়, তখন সেটি লেখার সময় সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়। স্বরবর্ণের এই সংক্ষিপ্ত রূপকে কার বলে।

ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ:
ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে বলে ফলা।
সংক্ষিপ্ত রূপে যে ব্যঞ্জন বর্ণটি যুক্ত হয়, তার নামানুসারে ফলার নামকরণ হয়।

বর্গীয় ধ্বনি:
ক থেকে ম পর্যন্ত পঁচিশটি স্পর্শধ্বনিকে উচ্চারণ স্থানের উপর ভিত্তি করে পাঁচটি গুচ্ছ বা বর্গে বিভক্ত করা হয়েছে।
প্রতি গুচ্ছের প্রথম ধ্বনির নামানুসারে সে গুচ্ছের সবগুলো ধ্বনিকে বলা হয় ওই বর্গীয় ধ্বনি।

উচ্চারণের স্থান:
উচ্চারণের স্থানের নামানুসারে ব্যঞ্জনধ্বনিগুলোকে পাঁচভাগে ভাগ করা হয়-

কণ্ঠ্য বা জিহ্বামূলীয়
তালব্য বা অগ্রতালুজাত
মূর্ধন্য বা পশ্চাৎ দন্তমূলীয়
দন্ত্য বা অগ্র দন্ত্যমূলীয়
ওষ্ঠ্য

ধ্বনি উচ্চারণে ব্যবহৃত প্রত্যঙ্গ:
ধ্বনি উচ্চারণের জন্য যেসব প্রত্যঙ্গগুলো ব্যবহৃত হয়- ঠোঁট (ওষ্ঠ ও অধর), দাঁতের পাটি, দন্তমূল, অগ্রদন্তমূল, অগ্রতালু, শক্ত তালু, পশ্চাৎ তালু, নরম তালু, মূর্ধা ইত্যাদি।

পরাশ্রয়ী বর্ণ:
ং, ঃ, ঁ – এই বর্ণগুলো স্বাধীনভাবে স্বতন্ত্র বর্ণ হিসেবে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয় না।
এ বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি অন্য ধ্বনির সঙ্গে মিলিত হয়ে একত্রে উচ্চারিত হয়।
তাই এ বর্ণগুলোকে বলা হয় পরাশ্রয়ী বর্ণ।

নাসিক্য ধ্বনি:
যেসব ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-নিঃসৃত বায়ু মুখবিবর ছাড়াও নাসারন্ধ্র দিয়ে বের হয়, অর্থাৎ উচ্চারণের সময় নাসিকার সাহায্য নিতে হয়, তাদের বলা হয় অনুনাসিক বা নাসিক্য ধ্বনি।
নাসিক্য ধ্বনির বর্ণগুলোকে বলে নাসিক্য বর্ণ। এগুলো হল- ঙ,‌ ঞ, ণ, ন, ম।

যৌগিক স্বর:
পাশাপাশি দুটি স্বরধ্বনি থাকলে দ্রুত উচ্চারণের সময় তা একটি সংযুক্ত স্বরধ্বনি রূপে উচ্চারিত হয়।
এরূপ একসঙ্গে উচ্চারিত দুটি মিলিত স্বরধ্বনিকে যৌগিক স্বর বা দ্বি-স্বর বলা হয়।

বাংলায় পঁচিশটি যৌগিক স্বরধ্বনি আছে।
স্পর্শ ব্যঞ্জন:
ক থেকে ম পর্যন্ত পাঁচটি বর্গের মোট পঁচিশটি ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার সঙ্গে অন্য বাগযন্ত্রের কোনো অংশের কিংবা ওষ্ঠের সঙ্গে অধরের স্পর্শ ঘটে ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বাধা পেয়ে বেরিয়ে যায়। বাধা পেয়ে স্পষ্ট হয় বলে এদের বলা হয় স্পর্শ ব্যঞ্জন বা স্পৃষ্ট ব্যঞ্জনধ্বনি।

উচ্চারণ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী স্পর্শ ব্যঞ্জনধ্বনি দুই ধরনের-
অঘোষ ও
ঘোষ

অঘোষ ধ্বনি :
যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী ‌অনুরণিত হয় না, তাকে অঘোষ ধ্বনি বলে। যেমন- ক, খ, চ, ছ ইত্যাদি।

ঘোষ ধ্বনি:
যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয়, তাকে বলে ঘোষ ধ্বনি। যেমন- গ, ঘ, জ, ঝ ইত্যাদি।

অল্পপ্রাণ ধ্বনি :
যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় বাতাসের চাপের স্বল্পতা থাকে, তাকে অল্পপ্রাণ ধ্বনি বলে। যেমন- ক, গ, চ, জ ইত্যাদি।

মহাপ্রাণ ধ্বনি:
যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় বাতাসের চাপের আধিক্য থাকে, তাকে বলে মহাপ্রাণ ধ্বনি। যেমন- খ, ঘ, ছ, ঝ ইত্যাদি।

উষ্মধ্বনি:
যে ব্যঞ্জনের উচ্চারণে বাতাস মুখবিবরে কোথাও বাধা না পেয়ে কেবল ঘর্ষণপ্রাপ্ত হয় এবং শিশ ধ্বনির সৃষ্টি করে, সেটিকে বলে উষ্মধ্বনি।
এ বর্ণগুলোকে বলা হয় উষ্ম বর্ণ।
শ,ষ,স- এ তিনটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি অঘোষ অল্পপ্রাণ, আর হ ঘোষ মহাপ্রাণ ধ্বনি।

অন্তঃস্থ ধ্বনি:
স্পর্শ বা উষ্ম ধ্বনির মাঝে আছে বলে য,র,ল,ব-এ ধ্বনিগুলোকে অন্তঃস্থ ধ্বনি বলা হয়। আর বর্ণগুলো হলো, অন্তঃস্থ বর্ণ।

ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণ:-
ক-বর্গীয় ধ্বনি:
জিহ্বামূলীয় বা কণ্ঠ্য স্পর্শধ্বনি।

চ-বর্গীয় ধ্বনি:
তালব্য স্পর্শধ্বনি।

ট-বর্গীয় ধ্বনি:
এগুলোর উচ্চারণে জিহ্বা উল্টো হয় বলে এদের নাম দন্তমূলীয় প্রতিবেষ্টিত ধ্বনি। এগুলো ওপরের মাড়ির গোড়ার শক্ত অংশ, অর্থাৎ মূর্ধায় স্পর্শ করে উচ্চারিত হয় বলে, এদের বলা হয় মূর্ধন্য ধ্বনি।

ত-বর্গীয় ধ্বনি:
ত, থ, দ, ধ, ন – এ পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বা সম্মুখে প্রসারিত হয় এবং অগ্রভাগ ওপরের দাঁতের পাটির গোড়ার দিকে স্পর্শ করে। এদের বলা হয় দন্ত্য ধ্বনি।

প-বর্গীয় ধ্বনি :
প, ফ, ব, ভ, ম – এ পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে ওষ্ঠের সঙ্গে অধরের স্পর্শ ঘটে। তাই এদের ওষ্ঠ্যধ্বনি বলে।
য বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি সাধারণত সম্মুখ তালু স্পর্শ করে উচ্চারিত হয়। এজন্য ধ্বনিটিকে বলা হয় তালব্য ধ্বনি।
র বর্ণে জিহ্বাগ্রকে কম্পিত করা হয়। তাই একে কম্পনজাত ধ্বনি বলা হয়।
ল বর্ণে দুই পাশ দিয়ে বায়ু নিঃসৃত হয় বলে একে পার্শ্বিক ধ্বনি বলা হয়।
বাংলা বর্ণমালায় বর্গীয়-ব ও অন্তঃস্থ-ব এর আকৃতিতে কোনো পার্থক্য নাই।
আগে বর্গীয় ও অন্তঃস্থ দুই রকমের ‘ব’ বর্ণের লিখিত রূপ এবং উচ্চারণ আলাদা ছিল। এখন আকৃতি ও উচ্চারণ অভিন্ন বলে ‘অন্তঃস্থ-ব’কে বর্ণমালা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত প্রস্তাবে অন্তস্থ য-ও অন্তঃস্থ ব দুটি অর্ধ্বস্বর, প্রথমটির উচ্চারণ অয় বা ইয় (y) এবং দ্বিতীয়টির উচ্চারণ অব বা অও (w)-র মতো।
ধ্বনির পরিবর্তন (Phonological Change)
ধ্বনির পরিবর্তন ১৬ ভাবে করা যায়।

স্বরাগম
_________
আদি স্বরাগম / Prosthesis :
উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা অন্য কোনো কারণে শব্দের আদিতে স্বরধ্বনি এলে তাকে বলে আদি স্বরাগম। যেমন: স্কুল > ইস্কুল, স্টেশন > ইস্টিশন।

মধ্য স্বরাগম, বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি / Anaptyxis:
সময় সময় উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি আসে। একে বলা হয় মধ্য স্বরাগম বা বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি। যেমন:

অ: রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম, স্বপ্ন > স্বপন, হর্ষ > হরষ।
ই: প্রীতি > পিরীতি, ক্লিপ > কিলিপ, ফিল্ম > ফিলিম

অন্ত্যস্বরাগম / Apotheosis :
কোনো কোনো সময় শব্দের শেষে অতিরিক্ত স্বরধ্বনি আসে। এরূপ স্বরাগমকে বলা হয় অন্ত্যস্বরাগম। যেমন: দিশ > দিশা, পোখত্ > পোক্ত, বেঞ্চ > বেঞ্চি, সত্য > সত্যি।

অপিনিহিতি:
পরের ই-কার আগে উচ্চারিত হলে কিংবা যুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির আগে ই-কার বা উ-কার উচ্চারিত হলে, তাকে অপিনিহিতি বলে। যেমন: আজি > আইজ, সাধু > সাউধ, রাখিয়া > রাইখ্যা, বাক্য > বাইক্য।

অসমীকরণ:
একই স্বরের পুনরাবৃত্তি দূর করার জন্য মাঝখানে যখন স্বরধ্বনি যুক্ত হয়, তখন তাকে বলে অসমীকরণ। যেমন: ধপ + ধপ > ধপাধপ, টপ + টপ > টপাটপ।

স্বরসঙ্গতি:
একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমন: দেশি > দিশি, বিলাতি > বিলিতি, মুলা > মুলো।

প্রগত স্বরসঙ্গতি:
আদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বর পরিবর্তিত হলে তাকে প্রগত স্বরসঙ্গতি বলা হয়। যেমন: মূলা > মূলো, শিকা > শিকে, তুলা > তুলো।

স্বরসঙ্গতি :
অন্ত্যস্বরের কারণে আদ্যস্বর পরিবর্তিত হলে পরাগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন: আখো > আখুয়া > এখো।

মধ্যগত স্বরসঙ্গতি:
আদ্যস্তর ও অন্ত্যস্বর অনুযায়ী মধ্যস্বর পরিবর্তিত হলে মধ্যগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন: বিলাতি > বিলিতি।

ধ্বনির পরিবর্তন:
আদ্য ও অন্ত্য – দুই স্বরই পরস্পর প্রভাবিত হলে অন্যোন্য স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন: মোজা > মুজো।
পূর্বস্বর উ-কার হলে পরবর্তী স্বর ও-কার হয়। যেমন: মুড়া > মুড়ো, চুলা > চুলো।
বিশেষ নিয়মে উড়–নি>উড়নি, এখনি> এখুনি হয়।

সম্প্রকর্ষ :
দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ । যেমন: বসতি > বসইত, জানালা > জান্লা।

আদি স্বরলোপ / Aphesis :
যেমন: অলাবু > লাবু > লাউ, উদ্ধার > উধার > ধার।

মধ্য স্বরলোপ / Syncope:
অগুরু > অগ্রু, সুবর্ণ > স্বর্ণ।

অন্ত্য স্বরলোপ / Apocope :
আশা > আশ, আজি > আজ, চারি > চার (বাংলা), সন্ধ্যা > সঞঝা > সাঁঝ।

ধ্বনি বিপর্যয়:
শব্দের মধ্যে দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন ঘটলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে। যেমন: ইংরেজি বাক্স > বাংলা বাস্ক, জাপানি রিক্সা > বাংলা রিস্কা।

সমীভবন:
শব্দমধ্যস্থ দুটি ভিন্ন ধ্বনি একে অপরের প্রভাবে অল্প-বিস্তর সমতা লাভ করে। এ ব্যাপারকে বলা হয় সমীভবন । যেমন: জন্ম > জম্ম, কাঁদনা > কান্না।

প্রগত সমীভবন:
পূর্ব ধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে। পরবর্তী ধ্বনি পূর্ববর্তী ধ্বনির মতো হয়, একে বলে প্রগত সমীভবন। যেমন: চক্র > চক্ক, পকৃ > পক্ক, পদ্ম > পদ্দ, লগ্ন > লগ্গ।

পরাগত সমীভবন :
পরবর্তী ধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী ধ্বনির পরিবর্তন হয়, একে বলে পরাগত সমীভবন । যেমন: তৎ + জন্য > তজ্জন্য, তৎ + হিত > তদ্ধিত, উৎ + মুখ > উন্মুখ।

অন্যোন্য সমীভবন:
যখন পরস্পরের প্রভাবে দুটো ধ্বনিই পরিবর্তিত হয়, তখন তাকে বলে অন্যোন্য সমীভবন। যেমন: সংস্কৃত-সত্য > প্রাকৃত-সচ্চ, সংস্কৃত-বিদ্যা > প্রাকৃত-বিজ্জা।

দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জন-দ্বিত্ব:
দুটো সমবর্ণের একটির পরিবর্তনকে বিষমীভবন বলে। যেমন: শরীর > শরীল, লাল > নাল।
কখনো কখনো জোর দেওয়ার জন্য শব্দের অন্তর্গত ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়, একে বলে দ্বিত্ব ব্যঞ্জন বা ব্যঞ্জনদ্বিত্ব। যেমন: পাকা > পাক্কা, সকাল > সক্কাল।

ব্যঞ্জন বিকৃতি:
শব্দের মধ্যে কোনো কোনো সময় কোনো ব্যঞ্জন পরিবর্তিত হয়ে নতুন ব্যঞ্জনধ্বনি ব্যবহৃত হয়। একে বলে ব্যঞ্জন বিকৃতি। যেমন: কবাট > কপাট, ধোবা > ধোপা, ধাইমা > লাইমা।

ধ্বনিচ্যুতি বা ব্যঞ্জনচ্যুতি:
পাশাপাশি সমউচ্চারণের দুটি ব্যঞ্জনধ্বনি থাকলে তার একটি লোপ পায়। এরূপ লোপকে বলা হয়, ধ্বনিচ্যুতি বা ব্যঞ্জনচ্যুতি। যেমন: বউদিদি > বউদি, বড় দাদা > বড়দা।

অন্তর্হতি:
পদের মধ্যে কোনো ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে বলে অন্তর্হতি। যেমন: ফাল্গুন > ফাগুন, ফলাহার > ফলার, আলাহিদা > আলাদা।

অভিশ্রুতি:
বিপর্যস্ত স্বরধ্বনি পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিলে গেলে এবং তদনুসারে পরবর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে, তাকে বলে অভিশ্রুতি। যেমন: ‘করিয়া’ থেকে অপিনিহিতির ফলে ‘কইরিয়া’ কিংবা বিপর্যয়ের ফলে ‘কইরা’ থেকে অভিশ্রুতিজাত ‘করে’।

02/09/2024

শুদ্ধ বানান ও উচ্চারণ :

শুদ্ধ বানানের নিয়ম ( Rules of Correct Spelling & Grammar)

পদাশ্রিত নির্দেশক ‘টি’ ব্যবহারে ‘ই’ কার হবে। যেমন- লোকটি, কাজটি, ছেলেটি, বইটি ইত্যাদি।
সমাসবদ্ধ পদ একসঙ্গে লিখতে হবে। যেমন- অদৃষ্টপূর্ব, পূর্বপরিচিত, নেশাগ্রস্ত, জ্ঞানসিন্ধু, সংবাদপত্র, সংযতবাক ইত্যাদি।

গুণ, সংখ্যা বা দূরত্ব বাচক বিশেষণ পদ সবসময় আলাদা বসবে। যেমন- এক জন, দুই দিন।

যে প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ বা না উত্তর দেয়া যায় সেক্ষেত্রে ‘কি’ হবে। হ্যাঁ বা না উত্তর দেয়া না গেলে ‘কী’ হবে।

লেখক ও কবি নিজেদের নামের বানান যেভাবে লেখেন বা লিখতেন সেভাবেই লেখা হবে। যেমন- শামসুর রাহমান, হুমায়ূন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, জসীমউদ্‌দীন, মুনীর চৌধুরী।

যে সব তৎসম শব্দে ই বা ঈ এবং উ বা উ উভয়ই শুদ্ধ সেইসব শব্দে কেবল ই বা উ এবং তার কার চিহ্ন ব্যবহৃত হবে। যেমন- পদবি, কিংবদন্তি, খঞ্জনি, চিৎকার, চুল্লি, তরণি, ধমনি, উষা, উর্ণা, পল্লি, ভঙ্গি, মঞ্জরি, লহরি, সরণি ইত্যাদি।

রেফের পর কোথাও ব্যঞ্জন বর্ণের দ্বিত্ব হবে না। যেমন- বার্তা, অর্ধ, অর্থ, সূর্য, সৌন্দর্য, গর্জন, কর্তা, কার্তিক, কার্য, ধর্ম, বার্ধক্য, মূর্ছা,কর্দম, কর্তন ইত্যাদি।

নিশ্চয় অর্থে ব্যবহৃত ই প্রত্যয় শব্দের সঙ্গে কার না বসে পূর্ণবর্ণ বসে। যেমন- আজই।

তৎসম শব্দের বানানে ণ ব্যবহৃত হবে। যেমন- রামায়ণ, নারায়ণ, রমণী।

তৎসম শব্দের বানানে ষ ব্যবহৃত হবে। যেমন- ঋষি, কৃষ্ণ, সুষুপ্ত, কষ্ট।

পারিভাষিক শব্দ অর্থাৎ ইংরেজি ও ইংরেজির মাধ্যমে আগত বিদেশি S বর্ণ বা ধ্বনির জন্য স এবং sh, sion, ssion, tion প্রভৃতি বর্ণগুচ্ছ বা ধ্বনির জন্য শ ব্যবহৃত হবে। যেমন- কমিশন (Commission), এডমিশন (Admission)।

আলি এবং অঞ্জলি প্রত্যয় যুক্ত শব্দে ই কার হবে। যেমন- গীতাঞ্জলি, শ্রদ্ধাঞ্জলি, অর্ঘ্যাঞ্জলি, পুষ্পাঞ্জলি, খেয়ালি, বর্ণালি, রূপালি, গীতালি, মিতালি, হেঁয়ালি ইত্যাদি।

ক্রিয়াপদের বানানের পদান্তে ও-কার উচ্চারিত হলেও লেখা আবশ্যিক নয়। যেমন- করব, বলব, খাব, পড়ব, যাব, নামব, হল ইত্যাদি।

আনো প্রত্যয়ান্ত শব্দের শেষে ও কার যুক্ত করা হবে। যেমন- করানো, বলানো, পড়ানো ইত্যাদি।\


অশুদ্ধ – শুদ্ধ
________________
পুণর্গঠন – পুনর্গঠন
পুণর্বাসন – পুনর্বাসন
মহিয়সী – মহীয়সী
কোস্ট – কোষ্ঠ
শারিরীক – শারীরিক
দুর্বা – দূর্বা
দূর্গা – দুর্গা
পূর্বাহ্ন – পূর্বাহ্ণ
মধ্যাহ্ণ – মধ্যাহ্ন
অপরাহ্ন – অপরাহ্ণ
বিভিষিকা – বিভীষিকা
পিপিলিকা – পিপীলিকা
ব্যার্থ – ব্যর্থ
প্রাতঃরাশ – প্রাতরাশ
লবন – লবণ
ঝর্ণা – ঝরনা
নুতন – নূতন
নুপুর – নূপুর
সুসম – সুষম

উচ্চারণের নিয়ম ( Rules of Pronunciation)

অ-এর উচ্চারণ ( Pronunciation of অ):

শব্দের প্রথম অক্ষরে যদি অ থাকে এবং পরের অক্ষরে যদি ই, উ, বা য-ফলা না থাকে তবে অ এর স্বাভাবিক উচ্চারণ বজায় থাকে। যেমন- কথা, জমাট, পলাশ।

যখন নেতিবাচক বা না-অর্থে ‘অ’ বা ‘অন্’ এবং সহার্থে বা সহিত অর্থে ‘স’ সংযুক্ত হয় কখন অবিকৃত ‘অ’ উচ্চারিত হয়। যেমন: অবিচার(অবিচার্), অনিয়ম(অনিয়ম্), অতুল (অতুল্), সঠিক(শঠিক্), সব্যয় (শব্ ব্যায়্) ইত্যাদি।

আ এর উচ্চারণ (Pronunciation of আ):
শব্দের শুরুতে যুক্ত ব্যঞ্জন জ্ঞ-এর সাথে আ-কার থাকলে আ এর উচ্চারণ অ্যা হয়। যেমন- জ্ঞাত (গ্যাঁতো), জ্ঞান (গ্যাঁন্)।

য-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনের সঙ্গে আ-কার বা আ-ধ্বনির উচ্চারণ প্রায় ক্ষেত্রেই অ্যা হয়। যেমন- খ্যাতি, ব্যাকরণ (ব্যাকরোন্), শ্যালক (শ্যালোক্)।

ঋ এর উচ্চারণ (Pronunciation of ঋ ):
শব্দের গোড়ায় ঋ-বর্ণ থাকলে তার উচ্চারণ রি হয়। যেমন- ঋণ (রিন্), ঋতু (রিতু), ঋষি (রিশি)।

ব্যঞ্জনের সঙ্গে ঋ-কার যুক্ত হলে আশ্রয়ী ব্যঞ্জনকে দ্বিত্ব উচ্চারণ করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়,তবে তা দ্বিত্ব না করে আলতোভাবে উচ্চারণ করতে হবে। যেমন- আবৃত্তি(আবৃত্ তি), আকৃষ্ট (আকৃশ্টো)।

এ-এর উচ্চারণ (Pronunciation of এ):
শব্দের গোড়ায় এ বা এ-কারের পর অ বা আ থাকলে এ বা এ-কারের উচ্চারণ অনেক জায়গায় অ্যা হয়। যেমন- এখন (অ্যাখোন্), এমন (অ্যামোন্) বেটা (ব্যাটা)।

শব্দের গোড়ায় এ-কারের পর ‘অঙ’ ধ্বনি (ং, ঙ, ঙ্গ) থাকলে এবং তারপর ই বা উ ধ্বনি থাকলে এ কারের উচ্চারণ অ্যা হয়। যেমন- খেংরা (খ্যাঙরা), লেংড়া (ল্যাঙ্ড়া)। কিন্তু ই বা উ থাকলে এ-এর স্বাভাবিক উচ্চারণ বজায় থাকে। যেমন- খেঙ্ রি, লেঙ্ড়ি।

অন্যান্য উচ্চারণ (Other Pronunciations):

বাংলায় অসংযুক্ত অবস্থায় ণ-এর উচ্চারণ ন-এ মতোই। যেমন- চরণ (চরোন্), অরুণ (ওরুন), তরুণ (তোরুন্)।
ঋ-কার ও র-ফলা যুক্ত শ-এর উচ্চারণ স[S] হয়। যেমন- শৃঙ্গ (সৃঙ্ গো), শৃগাল (সৃগাল্), বিশ্রাম (বিস্স্রাম্)।
চ,ছ,জ,ঝ এর আগে ঞ যুক্ত করলে ন-এর মত উচ্চারণ হয়। যেমন- পঞ্চ (পন্চো), ব্যঞ্জন (ব্যান্ জোন্)।

02/09/2024

সমাস কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?

সমাস কাকে বলে?
অর্থসম্বন্ধ আছে এমন একাধিক শব্দের এক সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি নতুন শব্দ গঠন প্রক্রিয়াকে সমাস বলে।

সমাস দ্বারা দুই বা ততোধিক শব্দের সমন্বয়ে নতুন অর্থবোধক পদ সৃষ্টি হয়।
পদের বিভক্তি লোপ পায়।

সমাস শব্দের অর্থ কি?
সমাস মানে সংক্ষেপ, মিলন, একাধিক পদেরএকপদীকরণ।[বাক্যে শব্দের ব্যবহার কমানোর জন্য সমাস ব্যবহার করা হয়]।

সমাসের প্রতীতি কয়টি?
সমাসের প্রতীতী : ৫ (পাঁচ) প্রকার।

সমস্ত পদ
সমস্যমান পদ
পূর্বপদ
পরপদ
সমাসবাক্য/ব্যাসবাক্য/বিগ্রহবাক্য

সমস্ত পদ : সমাসবদ্ধ বা সমাসনিষ্পনড়ব পদটির নাম সমস্ত পদ।

যেমন : সিংহ চিহ্নিত আসন =সিংহাসন। এখানে ‘সিংহাসন’ সমস্ত পদ।

সমস্যমান পদ : সমাসবদ্ধ পদটির অন্তর্গত পদগুলোকে সমস্যমান পদ বলে।

উপরের উদাহরণে সিংহ, চিহ্নিত, আসন প্রত্যেকটাই আলাদা আলাদা সমস্যমান পদ।

পূর্বপদ ও পরপদ : সমাসযুক্ত পদের প্রথম অংশ-কে পূর্বপদ এবং পরবর্তী অংশ-কে উত্তরপদ বা পরপদ বলে।

যেমন : দেশের সেবা= দেশসেবা। এখানে ‘দেশের’ হল পূর্বপদ এবং ‘সেবা’ হল পরপদ।

সমাসবাক্য/ব্যাসবাক্য/বিগ্রহবাক্য : সমস্ত পদকে ভেঙে যে বাক্যাংশ করা হয়, তার নাম সমাসবাক্য, ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য। যেমন- মুখ চন্দ্রের ন্যায় = মুখচন্দ্র। এখানে ‘মুখ চন্দ্রের ন্যায়’ হল ব্যাসবাক্য বা সমাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য।

সমাস কত প্রকার ও কি কি
সমাস ৬ প্রকার। যথাঃ-

১.দ্বন্দ্ব সমাস

২. কর্মধারয় সমাস

৩. তৎপুরুষ সমাস

৪. বহুব্রীহি সমাস

৫. দ্বিগু সমাস

৬. অব্যয়ীভাব সমাস

১. দ্বন্দ্ব সমাস
যে সমাসে প্রতিটি সমস্যমান পদের অর্থের সমান প্রাধান্য থাকে এবং ব্যাসবাক্যে একটি সংযোজক অব্যয় (কখনো বিয়োজক) দ্বারা যুক্ত থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।

উভয় অংশের অর্থের প্রধান্য (পূর্ণ অর্থ) থাকে ভাই ও বোন = ভাই-বোন। এখানে পূর্বপদ ‘ভাই’ ও পরপদ‘বোন’। ব্যাসবাক্যে ‘ভাই’ ও ‘বোন’ দুজনকেই সমান প্রধান্য দেয়া হয়েছে, দুটোতেই শূন্য বিভক্তি রয়েছে এবং দুটো পদই বিশেষ্য পদ। অর্থাৎ তিনটি শর্তই পূরণ করেছে। তাই এটি দ্বন্দ্ব সমাস। এছাড়াও ব্যাসবাক্যে ‘ও’ রয়েছে।

যেমন- তাল ও তমাল = তাল-তমাল, দোয়াত ও কলম = দোয়াত-কলম।

অলুক দ্বন্দ্ব : সমস্যমান পদের বিভক্তি সমস্ত পদে লোপ পায় না। যেমন: দুধে-ভাতে, জলে-স্থলে, দেশে-বিদেশে, হাতে-কলমে।

একশেষ দ্বন্দ্ব : ব্যাসবাক্যের একাধিক শব্দ একপদে লুপ্ত হয় এবং বহুবচন হয়। যেমন : মানুষ মানুষ মানুষ = বহুমানুষ।

বহুপদী দ্বন্দ্ব : তিন বা বহু পদে দ্বন্দ্ব সমাস যেমন : সাহেব-বিবি-গোলাম, হাত-পা-নাক-মুখ, লাল-নীল-হলুদ ইত্যাদি।

২. কর্মধারয় সমাস
বিশেষণ বা বিশেষণভাবাপন্ন পদের সাথে বিশেষ্য বা বিশেষ্যভাবাপন্ন পদের সমাস হয় এবং পরপদের অর্থই প্রধান রূপে প্রতীয়মান হয়। যেমন : নীল যে পদ্ম = নীলপদ্ম, মহান যে রাজা = মহারাজ।

আগে ধোয়া পরে মোছা = ধোয়ামোছা। (দুটি কৃদন্ত পদের সংযোগ)

যিনি জজ তিনি সাহেব = জজ সাহেব (দুইটি বিশেষ্য পদ একটি ব্যক্তিকে নির্দেশ করে)

সুন্দরী যে লতা = সুন্দরলতা (পূর্বপদে স্ত্রীবাচক → সমস্তপদে পুরুষবাচক)

মহৎ যে জ্ঞান = মহাজ্ঞান (মহৎ ও মহান → মহা)

অধম যে নর = নরাধম (বিশেষ্য আগে এবং বিশেষণ পরে)

কর্মধারয় সমাস ৪ প্রকার

উপমান কর্মধারয়
উপমিত কর্মধারয়
রূপক কর্মধারয়
মধ্যপদলোপী কর্মধারয়
উপমান কর্মধারয়ঃ প্রত্যক্ষ কোন বস্তুর সাথে পরোক্ষ কোনো বস্তুর তুলনা করলে প্রত্যক্ষ বস্তুটিকে উপমেয়, আর যার সাথে তুলনা করা হয়েছে তাকে বলা হয় উপমান। উপমান ও উপমেয়ের একটি সাধারণ ধর্ম থাকবে। যথা- তুষারের ন্যায় শুভ্র = তুষারশুভ্র, অরুণের ন্যায় রাঙা = অরুণরাঙা।

উপমিত কর্মধারয়ঃ সাধারণ গুণের উল্লেখ না করে উপমেয়পদের সাথে উপমানের সমাসকে বলা হয় উপমিত কর্মধারয় সমাস। যেমন : মুখ (উপমেয়) চন্দ্রের (উপমান) ন্যায় = মুখচন্দ্র। পুরুষ (উপমেয়) সিংহের (উপমান) ন্যায় = পুরুষসিংহ।

রূপক কর্মধারয় : উপমান ও উপমেয়ের মধ্যে অভিন্নতা কল্পনা করা হলে রূপক কর্মধারয় সমাস। উপমেয় পদ পূর্বে বসে এবং উপমান পদ পরে বসে এবং সমস্যমান পদে ‘রূপ’ অথবা ‘ই’ যোগ করে ব্যাসবাক্য গঠন করা হয়। যেমন- বিষাদ রূপ সিন্ধু = বিষাদসিন্ধু, মন রূপ মাঝি = মনমাঝি।

মধ্যপদলোপী কর্মধারয় : ব্যাসবাক্যের মধ্যপদের লোপ পায়। যথা- সিংহ চিহ্নিত আসন = সিংহাসন, সাহিত্য বিষয়ক সভা = সাহিত্যসভা, ঘরে আশ্রিত জামাই = ঘরজামাই।

শর্টকাট :

‘উপমান কর্মধারয় সমাস’ হবে সত্য বিষয় হলে [তুষারের ন্যায় শুভ্র = তুষারশুভ্র (বিষয়টা সত্য)]
‘উপমিত কর্মধারয় সমাস’ হবে অসত্য বিষয় হলে [মুখ চন্দ্রের ন্যায় = মুখচন্দ্র (বিষয়টা অসত্য]
৩. তৎপুরুষ সমাস
পূর্বপদের বিভক্তির লোপে এবং পরপদের অর্থ প্রধানভাবে প্রাধান্য পায়। যেমন- বিপদকে আপনড়ব =বিপদাপনড়ব।

বিভিন্ন প্রকার তৎপুরুষ সমাসের উদাহরণ:

নঞ্ তৎপুরুষ সমাস : না বাচক নঞ অব্যয় (না, নেই, নাই, নয়) পূর্বে বসে। যথা- ন আচার = অনাচার, নকাতর = অকাতর, ন লে․কিক = অলে․কিক, নয় ধর্ম = অধর্ম। এরূপ- অনাদর, অস্থির, অসুখ,অনশন, অচেনা, বেতমিজ, অকাল,আকাঁড়া, ইত্যাদি।

উপপদ তৎপুরুষ সমাস : কৃদন্ত পদের সঙ্গে উপপদের সমাস। যেমন- জলে চরে যা = জলচর, জল দেয় যে = জলদ, পঙ্কে জন্মে যা = পঙ্কজ। এরূপ- সত্যবাদী, ইন্দ্রজিৎ ছেলেধরা,পকেটমার, হাড়ভাঙ্গা, মাছিমারা,ঘরপোড়া ইত্যাদি।

দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদের বিভক্তি (কে, রে) ইত্যাদি লোপ পায়। যথা- দুঃখকে প্রাপ্ত = দুঃখপ্রাপ্ত, পদকে আপনড়ব = বিপদাপনড়ব, বইকে পড়া = বই-পড়া। চিরকাল ব্যাপিয়া সুখী = চিরসুখী, ক্ষণকাল ব্যাপীয়া স্থায়ী(ব্যাপ্তি অর্থে) = ক্ষণস্থায়ী।

তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে তৃতীয়া বিভক্তির (দ্বারা,দিয়া, কর্তৃক ইত্যাদি) লোপ পায়। যথা : মধু দিয়ে মাখা = মধুমাখা, জন, দ্বারা আকীর্ণ = জনাকীর্ণ, পুষ্প দিয়া অঞ্জলি = পুষ্পাঞ্জলি, মন দিয়ে গড়া = মনগড়া, শ্রম দ্বারা লব্ধ = শ্রমলব্ধ।

চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে চতুর্থী বিভক্তি (কে, জন্য, নিমিত্ত ইত্যাদি) লোপ পায়। যথা- বসতের নিমিত্ত বাড়ি = বসতবাড়ি, বিয়ের জন্য পাগলা = বিয়েপাগল, তপের নিমিত্ত বন = তপোবন, গুরুকে ভক্তি = গুরুভক্তি.ইত্যাদি।

পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে পঞ্চমী বিভক্তি (হতে,থেকে ইত্যাদি) লোপ পায়। যথা- খাঁচা থেকে ছাড়া =খাঁচাছাড়া, বিলাত হতে ফেরত = বিলাতফেরত, ইতি হতে আদি = ইত্যাদি.

ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে ষষ্ঠী বিভক্তির (র, এর) লোপ পায়। যথা- চায়ের বাগান = চাবাগান, রাজার পুত্র = রাজপুত্র, বিশ্ব বিদ্যার আলয় = বিশ্ববিদ্যালয়, পুষ্পের সে․রভ = পুষ্পসৌরভ।

সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস : পূর্বপদে সপ্তমী বিভক্তি (এ, য়,তে) লোপ পায়। যেমন- রঙ্গে ভরা = রঙ্গভরা, পূর্বে, পূর্বে ভূত = ভূতপূর্ব, পূর্বে অদৃষ্ট = অদৃষ্টপূর্ব।

অলুক তৎপুরুষ সমাস : হাতের পাঁচ, মামার বাড়ি, সাপের পা, মনের মানুষ, কলের গান, ঘিয়ে ভাজা ইত্যাদি। কিন্তু, ভ্রাতার পুত্র =ভ্রাতুষ্পুত্র (নিপাতনে সিদ্ধ)।

৪. বহুব্রীহি সমাস
সমস্যমান পদগুলোর কোনটির অর্থ না বুঝিয়ে, অন্য কোন পদকে বোঝায়। যথা- বহু ব্রীহি (ধান) আছে যার = বহুব্রীহি। আয়ত লোচন যার = আয়তলোচন (স্ত্রী), মহান আত্মা যার= মহাত্মা নীল বসন যার= নীলবসনা, ধীর বুদ্ধি যার = ধীরবুদ্ধি।

বহুব্রীহি সমাসের বিভিন্ন প্রকারভেদ

সমানাধিকরণ বহুব্রীহি : পূর্বপদ বিশেষণ ও পরপদ বিশেষ্য হয়। যেমন- হত হয়েছে শ্রী যার = হতশ্রী, খোশ মেজাজ যার = খোশমেজাজ, দু কান কাটা যার = দু কানকাটা। ইত্যাদি।

ব্যাধিকরণ বহুব্রীহি : পূর্বপদ এবং পরপদ যদি বিশেষণ হয় না। যেমন- আশীতে (দাঁতে) বিষ যার = আশীবিষ, কথা সর্বস্ব যার = কথাসর্বস্ব।

ব্যতিহার বহুব্রীহি : ক্রিয়ার পারস্পরিক অর্থে । যথা : হাতে হাতে যে যুদ্ধ = হাতাহাতি, কানে কানে যে কথা = কানাকানি। এরূপ ভাবে গালাগালি, দেখাদেখি, লাঠালাঠি, চুলাচুলি,কাড়াকাড়ি।

ন্ঞ্ বহুব্রীহি : বে (নাই) হেড যার = বেহেড, না (নাই) চারা (উপায়) যার = নাচার। নি (নাই) ভুল যার = নির্ভুল, ইত্যাদি। এরকম- নিরুপায়, অবুঝ, অকেজো,, বেহুঁশ, বেতার ইত্যাদি।

মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি : বিড়ালের চোখের ন্যায় চোখ যে নারীর = বিড়ালচোখী, হাতে খড়ি দেওয়া হয় যে অনুষ্ঠানে= হাতেখড়ি।

সংখ্যাবাচক বহুব্রীহি : পূর্বপদ সংখ্যাবাচক এবং পরপদ বিশেষ্য হলে এবং সমসÍপদটি বিশেষণ হয়। এ সমাসে সমস্তপদে ‘আ’ ‘ই’ যুক্ত হয়। যথা- দশ গজ পরিমাণ যার = দশগজি, চৌ (চার) চাল যে ঘরের = চৌচালা। এরূপ- একগুয়ে, দোতলা, দোলনা, একতারা, সেতার, ইত্যাদি।

নিপাতনে সিদ্ধ : অন্তর্গত অপ যার = অন্তরীপ, দু দিকে অপ যার = দ্বীপ, নরাকারের পশু যে = নরপশু, জীবিত থেকেও যে মৃত = জীবন্মৃত, ইত্যাদি।

৫. দ্বিগু সমাস :
সমাহার (সমষ্টি) বা মিলন অর্থে সংখ্যাবাচক শব্দের সঙ্গে বিশেষ্য পদের সমাস হয় । দ্বিগু সমাসে সমাসনিষ্পনড়ব পদটি বিশেষ্য পদ হয়।

তিন মাথার সমাহার = তেমাথা,

তিন কালের সমাহার = ত্রিকাল,

চৌ․রাস্তার সমাহার= চৌ․রাস্তা,

শত অব্দের সমাহার = শতাব্দী,

ত্রি (তিন) পদের সমাহার = ত্রিপদী

পঞ্চবটের সমাহার- পঞ্চবটী, ইত্যাদি।

এরূপ- ত্রিমোহিনী, , চতুর্ভুজ, তেরনদী, পঞ্চভূত,অষ্টধাতু , সাতসমুদ্র

ইত্যাদি।

৬. অব্যয়ীভাব সমাস
পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পনড়ব সমাসে অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে। যেমনঃ

প্প্রতিচ্ছায়া, প্রতিচ্ছবি, প্রতিবিম্ব – প্রতিনিধি অর্থে (প্রতি)
বিরুদ্ধ পক্ষ = প্রতিপক্ষ, বিরুদ্ধ – প্রতিদ্বন্ধী অর্থে (প্রতি) :
প্রতিকূল, প্রত্যুত্তর – কূল
ক্ষণে ক্ষণে = প্রতিক্ষণে, ক্ষণ ক্ষণ = অনুক্ষণ, হপ্তা হপ্তা
বিরুদ্ধ বাদ = প্রতিবাদ, বিরুদ্ধ কূল = প্রতিকূল। – বিরোধ (প্রতি)
ভাতের অভাব = হা-ভাতে। – অভাব (হা)
ভাবনার অভাব = নির্ভাবনা, জলের অভাব = নির্জল, উৎসাহের অভাব = নিরুৎসাহ। – অভাব (নিঃ = নির)
কণ্ঠের সমীপে = উপকণ্ঠ, কূলের সমীপে = উপকূল। – সামীপ্য (উপ)
উপগ্রহ, উপনদী। – ক্ষুদ্র অর্থে (উপ). ইত্যাদি
সমাস ও সন্ধির মধ্যে পার্থক্যঃ
সমাস অর্থ একাধিক শব্দের মিলন। আর সন্ধি হচ্ছে দুটি ধ্বনির মিলন।

সাদৃশ্যঃ

সমাস ও সন্ধির মধ্যে সাদৃশ্য হচ্ছে বাক্য সীমিত ও সৌন্দর্য সৃষ্টি।

বৈসাদৃশ্যঃ

১। সন্ধি হয় বর্ণের সঙ্গে বর্ণের মিলনে। সমাস হয় পদের সঙ্গে পদের মিলনে।

২। সমাসে অর্থভিত্তিক মিলন হয়। সন্ধিতে উচ্চারনভিত্তিক মিলন হয়।

৩। সন্ধিতে বিভক্তি লোপ পায় না। সমাসে আলোপ সমাস ছাড়া বিভক্তি লোপ পায়।

সমাস চেনার উপায়
অর্থ প্রাধান্যের ভিত্তিতেঃ

সমাস = পূর্বপদের অর্থ প্রাধান্য = পরপদের অর্থ প্রাধান্য

দ্বন্দ্ব = আছে = আছে

কর্মধারয়, তৎপুরুষ, দ্বিগু = নাই = আছে

অব্যয়ীভাব = আছে = নাই

বহুব্রীহি = নাই = নাই

ব্যাসবাক্য দেখে চেনার উপায়ঃ

সমাস হবে = ব্যাসবাক্যে থাকলে

দ্বন্দ্ব সমাস = এবং, ও, আর

কর্মধারয় = যে, যিনি, যেটি

তৎপুরুষ = বিভক্তি লোপ পেলে

দ্বিগু = সমাহার থাকলে

বহুব্রীহি = যার, যাতে

অলুক = বিভক্তি লোপ না পেলে

বাংলা ব্যাকরণের সমাস একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন পরীক্ষায় সমাস থেকে প্রায়ই প্রশ্ন আসে। তাই এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে প্রস্তুতি নিতে হয়।

01/09/2024

কারক ও বিভক্তি

বাংলা ব্যাকরণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক হচ্ছে কারক ও বিভক্তি। চলো আজকে জেনে নেই কারক ও বিভক্তি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ

কারক কাকে বলে?
বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের যে সম্পর্ক তাকে কারক বলে।

কারকের প্রকারভেদ:
কর্তৃকারক
কর্ম কারক
করণ কারক
সম্প্রদান কারক
অপাদান কারক
অধিকরণ কারক


বিভক্তি

বিভক্তি কাকে বলে?
বাক্যস্থিত একটি শব্দের সঙ্গে অন্য শব্দের অন্বয় সাধনের জন্য শব্দের সঙ্গে যে সকল বর্ণ যুক্ত হয় তাদের বিভক্তি বলে।

যেমন: ছাদে বসে মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
বাক্যটিতে ছাদে (ছাদ+এ বিভক্তি), মা (মা+০ বিভক্তি)
শিশুকে (শিশু+কে বিভক্তি), চাঁদ (চাঁদ+০ বিভক্তি) ইত্যাদি পদে বিভিন্ন বিভক্তি যুক্ত হয়েছে।


বাংলা শব্দ বিভক্তি:
০ শূন্য বিভক্তি (অথবা অ বিভক্তি), এ, (য়), তে (এ), কে, রে, র, এরা– এ কয়টিই খাঁটি বাংলা শব্দ বিভক্তি।
এ ছাড়া বিভক্তিস্থানীয় কয়েকটি অব্যয় শব্দও কারক-সম্বন্ধ নির্ণয়ের জন্য বাংলায় প্রচলিত আছে।


বিভক্তির আকৃতি:
একবচন এবং বহুবচন ভেদে বিভক্তির আকৃতিগত পার্থক্য দেখা যায়-

বিভক্তি :
প্রথমা : ০,অ,এ,(য়),তে রা, এরা, গুলো, গণ
দ্বিতীয়া : কে, রে, এরে দিগে, দিগকে, দের
তৃতীয়া: দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক দের, দিয়া, দিগকে দ্বারা, দিগ কর্তৃক
চতুর্থী : দ্বিতীয়ার মতো, জন্য, নিমিত্ত দ্বিতীয়ার মতো
পঞ্চমী : হইতে, থেকে, চেয়ে, হতে দের হইতে, দিগের চেয়ে
ষষ্ঠী : র, এর দিগের, দের, গুলির
সপ্তমী : এ, (য়), তে, এতে দিগে, দিগেতে, গুলিতে


কারকের প্রকারভেদ :

কর্তৃকারক:
বাক্যস্থিত যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে কর্তৃকারক বলে।
যেমন: মেয়েরা ফুল তোলে।

কর্তৃকারকের প্রকারভেদ:
কর্তৃকারক বাক্যের ক্রিয়া সম্পাদনের বৈচিত্র্য বা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী চার প্রকারের হয়ে থাকে।

মুখ্য কর্তা: যে নিজে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে সে মুখ্য কর্তা।
প্রযোজক কর্তা: মূল কর্তা যখন অন্যকে কোনো কাজে নিয়োজিত করে তা সম্পন্ন করায় তখন তাকে প্রযোজক কর্তা বলে।
প্রযোজ্য কর্তা: মূল কর্তার করণীয় কার্য যাকে দিয়ে সম্পাদিত হয় তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে।
ব্যতিহার কর্তা: কোনো বাক্যে যে দুটো কর্তা একত্রে এক জাতীয় ক্রিয়া সম্পাদন করে তাদের ব্যতিহার কর্তা বলে।
বাক্যের বাচ্য বা প্রকাশভঙ্গি অনুসারে কর্তা তিন রকম হতে পারে।

কর্মবাচ্যের কর্তা (কর্মপদের প্রাধান্যসূচক বাক্যে): পুলিশ দ্বারা চোর ধৃত হয়েছে।
ভাববাচ্যের কর্তা (ক্রিয়ার প্রাধান্যসূচক বাক্যে): আমার যাওয়া হবে না।
কর্ম-কর্তৃবাচ্যের কর্তা (বাক্যে কর্মপদই কর্তৃস্থানীয়): বাঁশি বাজে।

কর্মকারক:
যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে কর্মকারক বলে। কর্ম দুই প্রকার:
মুখ্যকর্ম
গৌণকর্ম

সাধারণত মুখ্যকর্ম বস্তুবাচক ও গৌণকর্ম প্রাণিবাচক হয়ে থাকে।
এছাড়াও সাধারণত কর্মকারকের গৌণকর্মে বিভক্তি যুক্ত হয় আর মুখ্যকর্মে হয় না।

কর্মকারকের প্রকারভেদ:
কর্মকারক ৪ প্রকার:
সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম
প্রযোজক ক্রিয়ার কর্ম
সমধাতুজ কর্ম
উদ্দেশ্য ও বিধেয়

দ্বিকর্মক ক্রিয়ার দুটি পরস্পর অপেক্ষিত কর্মপদ থাকলে প্রধান কর্মটিকে বলা হয় উদ্দেশ্য। কর্ম এবং অপেক্ষিত কর্মটিকে বলা হয় বিধেয় কর্ম।

করণ কারক:
করণ শব্দটির অর্থ যন্ত্র, সহায়ক বা উপায়।
ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, উপকরণ বা সহায়ককেই করণ কারক বলা হয়।

সম্প্রদান কারক:
যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয় তাকে (সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুযায়ী) সম্প্রদান কারক বলে।

অপাদান কারক:
যা থেকে কিছু বিচ্যুত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয় তাকেই অপাদান কারক বলে।

অপাদান কারকের উদাহরণ:
বিচ্যুত গাছ থেকে পাতা পড়ে।
গৃহীত শুক্তি থেকে মুক্তো মেলে।
জাত জমি থেকে ফসল পাই।
বিরত পাপে বিরত হও।
দূরীভূত দেশ থেকে পঙ্গপাল চলে গেছে।
রক্ষিত বিপদ থেকে বাঁচাও।
আরম্ভ সোমবার থেকে পরীক্ষা শুরু।
ভীত বাঘকে ভয় পায় না কে?

অধিকরণ কারক:
ক্রিয়া সম্পাদনের কাল (সময়) এবং আধারকে অধিকরণ কারক বলে। অধিকরণ কারকে সপ্তমী অর্থাৎ এ/য়/তে ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়।

অধিকরণ কারক তিন প্রকার। যথা:

কালাধিকরণ: সময় বুঝালে কালাধিকরণ হবে। যেমন: প্রভাতে সূর্য উঠে।
ভাবাধিকরণ: যদি কোনো ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য অন্য ক্রিয়ার কোনোরূপ ভাবের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে তবে তাকে ভাবাধিকরণ বলে। ভাবাধিকরণে সর্বদাই সপ্তমী বিভক্তির প্রয়োগ হয় বলে একে ভাবে সপ্তমী বলা হয়।

আধারাধিকরণ: আধারাধিকরণ তিন ভাগে বিভক্ত:

১. ঐকদেশিক আধারাধিকরণ: বিশাল স্থানের যে কোনো অংশে ক্রিয়া সংঘটিত হলে তাকে ঐকদেশিক আধারাধিকরণ বলে। উদাহরণ: পুকুরে মাছ আছে (পুকুরের যে কোনো একস্থানে)। সামীপ্য অর্থেও ঐকদেশিক আধারাধিকরণ হয়। উদাহরণ: ঘাটে নৌকা বাঁধা আছে (ঘাটের কাছে)।

২. অভিব্যাপক আধারাধিকরণ: উদ্দিষ্ট বস্তু যদি সমগ্র আধার ব্যাপ্ত করে বিরাজমান থাকে, তবে তাকে অভিব্যাপক আধারাধিকরণ বলে। যেমন: তিলে তৈল আছে। (তিলের সারা অংশব্যাপী।)

৩. বৈষয়িক আধারাধিকরণ: বিষয় বিশেষে বা কোনো বিশেষগুণে কারও কোনো দক্ষতা বা ক্ষমতা থাকলে সেখানে বৈষয়িক আধারাধিকরণ হয়।যেমন: রাকিব অঙ্কে কাঁচা কিন্তু ব্যাকরণে ভালো।


সম্বন্ধ পদ:
ক্রিয়াপদের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে যে নামপদ বাক্যস্থিত অন্য পদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয় তাকে সম্বন্ধ পদ বলে। যেমন: মতিনের ভাই বাড়ি যাবে। এখানে মতিনের সঙ্গে ভাই এর সম্পর্ক আছে কিন্তু যাবে ক্রিয়ার সাথে সম্বন্ধ নাই।

সম্বন্ধ: রাজার রাজ্য, প্রজার জমি
জন্ম-জনক সম্বন্ধ: গাছের ফল, পুকুরের মাছ
কার্যকারণ সম্বন্ধ: অগ্নির উত্তাপ, রোগের কষ্ট
উপাদান সম্বন্ধ: রুপার থালা, সোনার বাটি
গুণ সম্বন্ধ: মধুর মিষ্টতা, নিমের তিক্ততা

সম্বন্ধ পদের প্রকারভেদ:
হেতু সম্বন্ধ: ধনের অহংকার, রূপের দেমাক
ব্যাপ্তি সম্বন্ধ: রোজার ছুটি, শরতের আকাশ
ক্রম সম্বন্ধ: পাঁচের পৃষ্ঠা, সতের ঘর
অংশ সম্বন্ধ: হাতির দাঁত, মাথার চুল
ব্যবসায় সম্বন্ধ: পাটের গুদাম, আদার ব্যাপারী
ভগ্নাংশ সম্বন্ধ: একের তিন, সাতের পাঁচ
কৃতি সম্বন্ধ: নজরুলের অগ্নিবীণা, মাইকেলের মেঘনাদবধ কাব্য
আধার- আধেয়: বাটির দুধ, শিশির ওষুধ
অভেদ সম্বন্ধ: জ্ঞানের আলোক, দুঃখের দহন
উপমান-উপমেয় সম্বন্ধ: ননীর পুতুল, লোহার শরীর
বিশেষণ সম্বন্ধ: সুখের দিন, যৌবনের চাঞ্চল্য
নির্ধারণ সম্বন্ধ: সবার সেরা, সবার ছোট
কারক সম্বন্ধ:
কর্তৃ সম্বন্ধ: রাজার হুকুম।
কর্ম সম্বন্ধ:প্রভুর সেবা, সাধুর দর্শন
কারক সম্বন্ধ: চোখের দেখা, হাতের লাঠি
অপাদান সম্বন্ধ: বাঘের ভয়, বৃষ্টির পানি
অধিকরণ সম্বন্ধ: ক্ষেতের ধান, দেশের লোক

সম্বোধন পদ:
সম্বোধন শব্দটির অর্থ আহ্বান। যাকে সম্বোধন বা আহবান করে কিছু বলা হয় তাকে সম্বোধন পদ বলে। উদাহরণ: ওহে মাঝি, আমাকে পার করো। সুমন, এখানে এসো।
সম্বোধন পদ বাক্যের অংশ। বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সঙ্গে কোনো সম্বন্ধ থাকে না বলে সম্বোধন পদ কারক নয়।

Want your school to be the top-listed School/college?

Videos (show all)

মাত্র ৪ মিনিটের বক্তব্য হয়তো আপনার ধারণা পাল্টে দিতে পারেবক্তা : Al Mamun Rasel
বাংলা বছর নির্ণয়ের উপায় ।।  #বাংলা #বছর নির্ণয় Bangla bosor nirnoyer upor . Bangla bosor ber korar upay #Bangla  #ban...
বাংলা বছর নির্ণয়ের সহজ উপায় । বাংলা সন বের করার উপায়। #বাংলা #bangla #year #banglayear Bangla year ber korar upay , t...
বাংলা বছর নির্ণয়ের সহজ উপায় 💥             Bangla year , #bangla #year #bangladesh #banglayear  Bangla year ber korar t...
আমিন।#SSC #HSC
বন্ধু খুশি 🥱
❤️
🙂........#oc
লিখতে পারব 😴
#best_friend #exam
#GPA 5#Exam#Result
#captain