03/09/2024
বাংলা ব্যাকরণে পদ মূলত ২ প্রকার হলেও সাধারণ ভাবে পদ ৫ প্রকার। কিন্তু আধুনিক প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে পদ ৮ প্রকার।
পদ মুলত ২ প্রকার:
সব্যয় পদ
অব্যয় পদ
সব্যয় পদ চার প্রকার:
বিশেষ্য
বিশেষণ
সর্বনাম
ক্রিয়াপদ
সম্মিলিত শ্রেণিবিভাগ:
উভয় মূল মিলিয়ে পদ মুলত ৫ প্রকার। যথা:
বিশেষ্য
বিশেষণ
সর্বনাম
ক্রিয়াপদ
অব্যয়
কিন্তু সাধারণ ব্যাকরণিক শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী অব্যয় পদটি একাধিক ভুমিকা পালন করে।
আধুনিক শ্রেণিবিভাগ
পদান্বয়ী অব্যয় অনুসর্গ রুপে কাজ করে, সমচ্চয়ী অব্যয় পদটি সংযোজক হিসেবে কাজ করে এবং অনন্বয়ী অব্যয় পদটি আবেগবাচক শব্দের ভুমিকা পালন করে। আবার ক্রিয়াবিশেষণকে বিশেষণের একটি অংশ মনে করা হয়। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ আলাদা শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্যতা রাখে। তাই, প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে শব্দ আট প্রকার। যথা:
বিশেষ্য
বিশেষণ
সর্বনাম
ক্রিয়াপদ
ক্রিয়াবিশেষণ
আবেগসূচক পদ
সংযোজক পদ
অনুসর্গ
বিশেষ্য
বিশেষ্য অর্থ নাম। কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য বলে। যেমন, কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, সমষ্টি, কর্ম বা গুণের নাম। উদাহরণস্বরূপ, আলবার্ট আইনস্টাইন, কাজী নজরুল ইসলাম, জোসেফ স্তালিন, বাংলাদেশ, ভারত, ইতালি, নিউইয়র্ক, জানুয়ারি, রমজান, ফাল্গুন, গীতাঞ্জলি, দৈনিক ইত্তেফাক, ধাতু, লোহা, পানি, অক্সিজেন, আদর্শ, মধুরতা, বিশ্বাসী, সরলতা, দেশী, দর্শন, ধর্ম, ইসলাম, ক্যাথলিক, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ভারতীয় জনতা পার্টি, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জনতা, সংঘ, ঝাঁক, লাইব্রেরি, গবেষণাগার, নাট্যশালা, মানুষ, গরু, ছাগল, পাহাড়, নদী, দালান, লবণ, বই, খাতা, পঠন, শয়ন, করানো, পাঠানো – এগুলো বিশেষণ।
সর্বনাম
বিশেষ্যের পরিবর্তে যা ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম বলে। বাক্যের মধ্যে বিশেষ্য যে ভূমিকা পালন করে সর্বনামও একই ভূমিকা পালন করে।[১] উদাহরণস্বরূপ, আমি, তুমি, আমরা, তোমরা, তুই, তোরা, এরা, ওরা, যে, সে, যিনি, তিনি, তাঁর, তাঁরা, সবাই, ওই, কেউ, কি, কোথায়, কীভাবে – এগুলো সর্বনাম।
বিশেষণ
বিশেষণ বিশেষ্য ও সর্বনামকে বিশেষিত করে। উদাহরণস্বরূপ, তাজা মাছ, সাদা গোলাপ, কালো পানি, দুই বিঘা, বেলে মাটি, প্রথম – এগুলো বিশেষণ।
ক্রিয়াপদ
যা দ্বারা কাজ করা বুঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে। ক্রিয়ামূল বা ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হয়ে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়। পক্ষ ও কালভেদে ক্রিয়াপদের রূপভেদ হয়। উদাহরণস্বরূপ, করবে, করলে, করে, শিখতে, ঘুমায়, পড়ছে, দিলেন, লিখছে, খেলছে, করাচ্ছেন, খাওয়ায়, চমকায়, ছটফটিয়ে, মরে যাওয়া, কমে আসা, এগিয়ে চলো, হেসে উঠেছে, দাঁড়িয়ে যাও – এগুলো ক্রিয়াপদ।
ক্রিয়াবিশেষণ
যা ক্রিয়ার ভাব, কাল বা সময়কে বিশেষিত করে তাকে ক্রিয়াবিশেষণ বলে। উদাহরণস্বরূপ, ধীরে বাতাস বায়, লোকটি দ্রুত হাটে, টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ছে, যথাসময়ে সে হাজির হলো, আমার জানা নেই, সে যাবে না, কখনই বা দেখা হবে – এগুলো ক্রিয়াবিশেষণ।
আবেগসূচক পদ
যে শব্দ দ্বারা দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ ইত্যাদি প্রকাশ হয়ে থাকে তাকে আবেগসূচক পদ বলে। এধরনের পদ বাক্যের অন্যান্য পদের সঙ্গে সরাসরি সরাসরি সম্পর্কিত না হয়ে স্বাধীনভাবে বাক্যে বসে। উদাহরণস্বরূপ, হ্যাঁ, বেশ, শাবাশ!, আহ!, ওহ!, ছি ছি!, বাপরে বাপ, আরে, হায় হায়! ওগো – আবেগসূচক পদ।
সংযোজক পদ
সংযোজক পদ দুটি শব্দের মধ্যে সংযোগ ঘটায়।উদাহরণস্বরূপ, ও, এবং, বা, অথবা, আর, না-হয়, না-কি, কিন্তু, তবে, যদি, কারণ, তাই – সংযোজক পদ।
অনুসর্গ
যা কোন শব্দের পরে বসে তাকে অনুসর্গ বলে। উদাহরণস্বরূপ, অবধি, আগে, উপরে, করে, কর্তৃক, ছাড়া, জন্য, তরে, থেকে, দ্বারা, ধরে, নাগাদ, পর্যন্ত, বনাম, ভেতরে, মধ্যে, লেগে, সঙ্গে, হতে – অনুসর্গ।