Comments
১ নারি ২০০ কোটি মুসলিমের ঘুম হারাম করে ফেতনা সৃষ্টি করে বিশ্বের অর্ধেক মানুষের শান্তি হরন করেছে যেমন 👉 নূপুর কি নারি-ফেৎনা প্রমান করে নাই (?) নারীর ফেতনা কতো ভয়ঙ্কর আসুন এ বিষয়ে আল্লাহ ও তার রসূল (সঃ) সতর্ক করেছেন (?)
সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্যে। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সঃ) তাঁর পরিবারবর্গ এবং সাহাবাগণের উপর।
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নংঃ-(২৬৭) হাদিস নংঃ-(৩০৮৫-৬) উসামাহ্ ইবনু যায়দ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (সঃ) বলেছেনঃ- আমার (ইন্তেকালের) পরে আমার উম্মাতের পুরুষদের জন্য নারী অপেক্ষা অধিক ফিতনার শঙ্কা আর কিছুতেই রেখে যাইনি! - সহীহ বুখারীঃ- (৫০৯৬), মুসলিমঃ- (২৭৪০), তিরমিযীঃ-(২৭৮০), ইবনু মাজাহঃ- (৩৯৯৮ ও ২৭০১), সহীহ আল জামিঃ-(৫৫৯৭)
সাধারণ ভাবে সকল মানুষ এবং বিশেষভাবে পুরুষ-অবিবাহিত যুবকরা সবচেয়ে বড় যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেঃ- তাহলো নারি- অপরিচিতা মহিলার প্রতি দৃষ্টি প্রদান করা। তারা এই বিপদের সম্মুখীন সকল জায়গাতেই হচ্ছে। হাটে-বাজারে, হাসপাতালে, বিমানবন্দরে, এমন কি পবিত্র জায়গা গুলোতে’ওঃ- এ বিপদ থেকে মুক্ত নয়!
অতঃপর গৃহস্বামী যখন দেখলো যেঃ- তার জামা পেছন দিক থেকে ছিন্ন! তখন সে বললোঃ- নিশ্চয় এটা তোমাদের ছলনা! নিঃসন্দেহে তোমাদের ছলনা খুবই মারাত্নক!
- সূরা ইউসুফ(১২); আয়াতঃ-(২৮)
(নারীর ফেতনার তাফসিরেঃ- এই আয়াতের বর্ননা এসেছে)
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নংঃ- ১৩ হাদিস শরীফ নংঃ- (১৯-১৮) আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ- ঈদুল ফিতর কিংবা কুরবানীর ঈদের দিন রসূল (সঃ) ঈদগাহে গেলেন এবং নারীদের নিকট পৌঁছলেন। অতঃপর তাদের উদ্দেশে বললেনঃ- হে নারী সমাজ! তোমরা দানসদাক্বাহ্ (সাদাকা) করো। কেননা আমাকে অবগত করানো হয়েছে যেঃ-জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী নারী সমাজেরই হবে! এ কথা শুনে তারা বললোঃ- হে আল্লাহর রসূল (সঃ)! এর কারণ কি ? তিনি (সঃ) বললেনঃ- তোমরা অধিক মাত্রায় অভিসম্পাত করে থাকো এবং নিজ স্বামীদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে থাকো। বুদ্ধি ও দীনদারীতে দুর্বল হবার পরও বিচক্ষণ ও সচেতন পুরুষদের বেওকুফ বানিয়ে দেবার জন্য তোমাদের চেয়ে অধিক পারঙ্গম আমি আর কাউকে দেখিনি!
(এ কথা শুনে) নারীরা আরয করলোঃ-হে আল্লাহর রসূল (সঃ)! বুদ্ধি ও দীনের ব্যাপারে আমাদের কী দুর্বলতা রয়েছে ? তিনি (সঃ) বললেনঃ- একজন নারীর সাক্ষ্য কি একজন পুরুষের সাক্ষ্যের অর্ধেক নয় ? তারা বললোঃ- জি হাঁ! তিনি (সঃ) বললেনঃ- এটাই হলো নারীদের বুদ্ধিমত্তার দুর্বলতা। আর নারীরা মাসিক ঋতু অবস্থায় সালাত (নামাজ) আদায় করতে ও সিয়াম পালন করতে পারে না। এটা কি সত্য নয় ? তারা উত্তরে বলেনঃ- হাঁ তা-ই। তিনি (সঃ) বললেনঃ- এটাই হলো তাদের দীনের দুর্বলতা।- সহীহ বুখারীঃ-(৩০৪), মুসলিমঃ- (৮০)
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নংঃ-(৩০৬) হাদিস নংঃ-(৩৫২৪ - ১৫) উক্ত রাবী আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (সঃ) বলেছেনঃ- জাহান্নামীদের মধ্যে দু’টি এমন দল হবে যাদেরকে আমি দেখতে পাবো না কিন্তু তাদের একদল লোকের হাতে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে। যা দিয়ে তারা লোকেদেরকে অনৈতিকভাবে মারধর করবে। আর দ্বিতীয় দলটি হবে ঐ সমস্ত মহিলারাঃ- যারা কাপড় পরবে অথচ উলঙ্গের ন্যায় দেখা যাবে এবং তারা সদিচ্ছায় পুরুষদের’কে আকৃষ্ট করবে!তাদের মাথার চুলের খোঁপাঃ- বুখতী উটের হেলে পড়া কুঁজের ন্যায় হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না এবং জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। যদিও জান্নাতের সুঘ্রাণ দূর-দূরান্ত (৫০০ - ১০০০ বছরের দূর) হতে পাওয়া যাবে! - সহীহ মুসলিমঃ- (২১২৮ ও ১৩২৬), আল জামিঃ-(৩৭৯৯), আত্ তারগীবঃ-(২০৪৪)।
মিশকাতুল মাসাবিহ হাদিস নংঃ-(২৫১৩-৯) উক্ত রাবী আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ- রাসুল (সঃ) বলেছেনঃ- কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়! আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে! তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ- হে আল্লাহর রসূল (সঃ)! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সঃ) বললেনঃ- যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ করো।
সহীহ বুখারীঃ-(৩০০৬), মুসলিমঃ-(১৩৪১), আহমাদঃ-(১৯৩৪), সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ঃ-(২৫২৯), সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বীঃ-(১০১৩৪), সহীহ ইবনু হিব্বানঃ-(৩৭৫৭)।
মিশকাতুল মাসাবিহ হাদিস নংঃ-(২৫১৫-১১),আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সঃ) বলেছেনঃ- কোন মহিলা কোন মাহরাম ব্যতীত একদিন ও এক রাতের পথ’ও সফর করবে না। সহীহ বুখারীঃ-(১০৮৮), মুসলিমঃ-(১৩৩৯), তিরমিযীঃ-(১১৭০), আহমাদঃ-(৭২২২), সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ঃ-(২৫২৬), মুসতাদরাক লিল হাকিমঃ-(১৬১৬), সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বীঃ-(৫৪১০)
মিশকাতুল মাসাবিহ হাদিস নংঃ-(৩১০১-৪) জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (সঃ) বলেছেনঃ- কোনো বিবাহিতা নারীর নিকটে স্বামী অথবা মাহরাম ছাড়া (বিবাহ নিষিদ্ধ যাদের সাথে) কেউ যেন রাত্রি যাপন না করে। - সহীহ মুসলিমঃ-( ২১৭১), সহীহাহ্ঃ-(৩০৮৬)।
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নংঃ-(২৬৮) হাদিস নংঃ-(৩১১৮- ২১) উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন নবী (সঃ) বলেছেনঃ-কোনো পুরুষ অপর (মাহরাম নয় তথা বিবাহ বৈধ এমন) নারীর সাথে নিঃসঙ্গে দেখা হলেইঃ- শয়তান সেখানে তৃতীয় (৩) জন হিসেবে উপস্থিত হয়।- সহীহ তিরমিযীঃ-(১১৭১ ও ২১৬৫)
মিশকাতুল মাসাবিহ হাদিস নংঃ-(২০৩১-২) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রসূল (সঃ) বলেছেনঃ- কোন নারীর উচিত নয় স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ছাড়া নফল সওম পালন করা। ঠিক তেমনই কোন নারীর জন্য স্বামীর অনুমতি ছাড়াঃ- কাউকে তার ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া।
সহীহ বুখারীঃ- (৫১৯৫), মুসলিমঃ- (১০২৬), সহীহ ইবনু হিব্বান (৪১৭০), ইরওয়াঃ-(২০০৪), সহীহ আত্ তারগীবঃ- (১৯৪২), সহীহ আল জামিঃ-(৭৬৪৭)
সহীহ হাদীসে রয়েছেঃ- আল্লাহর চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাশীল কেউ নেই। আর এজন্যই তিনি অশ্লীলতা (যিনা) হারাম করেছেন।- সহীহুল বুখারী- অধ্যায় : নিকাহ, অনুচ্ছেদ : গাইরত, হাদিসঃ-(৪৮১৯)
মিশকাতুল মাসাবিহ পৃষ্ঠা নংঃ- (৪৩৭) হাদিস নংঃ-(৫১৪৫-৯) আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন একদিন রসূল (সঃ) ‘আসরের সালাতের পর আমাদের মাঝে দাঁড়ালেন। কিয়ামত পর্যন্ত যে সব ঘটনা ঘটবেঃ- সেগুলো বর্ণনা করলেন। সে সব কথা যে স্মরণ রাখলো তো রাখলো, আর যে ভুলে গেলো তো ভুলে গেলো। তিনি (সাঃ) যা কিছু বললেনঃ- এতে এ কথাও ছিলো যেঃ দুনিয়াটা একটা মিষ্টি ও সুস্বাদু বস্তু।আল্লাহ তা‘আলা এতে তোমাদেরকে তাঁর প্রতিনিধি বানিয়ে দিলেন তারপর তিনি দেখবেনঃ- তোমরা কিভাবে তা ‘আমল করো। সাবধান! দুনিয়ার মোহ থেকে বাঁচো এবং বাঁচো রমণীদের (নারীর ফেৎনা) থেকে।
তিনি (সঃ) আরও বলেছেনঃ- নিশ্চয়ই এই দুনিয়া হচ্ছে সবুজ-শ্যামল, সুমিষ্ট।আল্লাহ তা’আলা ইহাতে তোমাদেরকে খলীফা (প্রতিনিধি) নিযুক্ত করেছেন এই জন্যই যেঃ- তিনি দেখতে চান তোমরা কি আমল করো। অতএব তোমরা দুনিয়ার ফিতনা হতে বাঁচো এবং মহিলাদের ফিতনা থেকেও বেঁচে থাকো। কেননা বনী ইসরাইলের মধ্যে সর্ব প্রথম যে ফিতনা (বিপদ) দেখা দিয়েছিলো তা ছিলোঃ- মহিলার (নারীর) ফিতনা। - সহীহ মুসলিমঃ- (২৭৪২), তিরমিযীঃ- (২১৯১), ইবনু মাজাহঃ- (৪০০০)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাঃ- নারীদের ফেৎনা থেকে বেঁচে থাকো কারণ তোমরা তাদের কারণে শারী‘আতের নিষিদ্ধ কর্মগুলোতে পতিত হতে পারো এবং তাদের কারণে দুনিয়ার ফিতনায় পতিত হয়ে যাবে। কারণ দুনিয়ার প্রথম ফিতনাহ্ তাদের কারণেই হয়েছে!
আল্লামা ত্বিবী (রহঃ) বলেনঃ- তোমরা তাদের (নারীদের) দিকে ঝুঁকে পড়া থেকে বেঁচে থাকো এবং তাদের কথা গ্রহণ থেকে বেঁচে থাকো। কারণ তাদের জ্ঞান কম এবং তাদের অধিকাংশ কথায় তেমন কোনো কল্যাণ নেই। - শারহে মুসলিম (১৫/১৬ খন্ড) হাদিস নংঃ-(২৭৪২) মিরকাতুল মাফাতীহ।
নিম্নে দৃষ্টি সংযত রাখার কতিপয় উপায় পেশ করা হলো যা উক্ত বিপদজনক ফিতনা থেকে রক্ষা করতে সহায়ক হবে ইন্সাআল্লাহ!
(১) দৃষ্টি অবনত রাখাঃ- হারাম বা নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ না করার ব্যাপারে আছে পবিত্র কোরআনের বহু আয়াত ও হাদীস। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ- মু’মিনদেরকে বলোঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকেসংযত করে এবং তাদের লজ্জা স্থানের হেফাজত করে, এটা তাদের জন্যে পবিত্রতম; তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ অবিহিত। - সূরা নূর; আয়াতঃ-(৩০)
নবী (সঃ) ওয়া বলেছেনঃ- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা আদম সন্তানের উপর যেনার একটা অংশ অবধারিত করে দিয়েছেন।নিশ্চিতভাবে তা’সে পাবে! সুতরাং চোখের যেনা হলো দৃষ্টি দেয়া। জিহ্বার যেনা হলো কথা বলা আর অন্তরের যেনা হলো মনে মনে কামনা করা! লজ্জা স্থান তা সত্যে পরিণত করে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।অর্থাৎ অতপর লজ্জা স্থানের দ্বারা কেউ সেই অশ্লীলতায় লিপ্ত হয় আবার কেউ তা থেকে বিরত থাকে। (বুখারী মুসলিম)।
সাহাবী জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রা:) বলেন আমি রাসূল (সঃ) কে মহিলার প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ- তুমি তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখো! - (মুসলিম ও আবু দাউদ) রাসূল (সঃ) আলী (রা:) কে লক্ষ্য করে বলেছেনঃ-
হে আলী তুমি অপরিচিতা মহিলার প্রতি বার বার দৃষ্টি ফেলিও নাঃ- কেননা তোমার জন্যে প্রথমবার বৈধ হলেও দ্বিতীয় বার বৈধ নয়! - (তিরমিযী) হাদীসে উল্লেখিত প্রথমবার দৃষ্টি বৈধ হওয়ার
উদ্দেশ্য হলোঃ- অনিচ্ছাকৃত বা হঠাৎ করে যেই দৃষ্টি পড়ে যায় তা ইচ্ছাকৃত দেখা নয়।
(২) আল্লাহ তা’আলার সম্মুখে নিজেকে উপস্থিত রেখে তাঁর নিকট প্রার্থনা করা এবং তাঁর এই কঠিন ফিতনা থেকে নিজেকে বাঁচানো ও হেফাজতে রাখার ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলার নিকট
বার বার সাহায্য প্রার্থনা করা।মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদীসে কুদসীতেএসেছেঃ- হে আমার বান্দাগণ! তোমরা সকলেই পথভ্রষ্ট কিন্তু আমি যাকে হেদায়েত দেইঃ- সে নয়। সুতরাং আমার কাছে হেদায়েত চাওঃ- আমি তোমাদেরকে হেদায়েত দিবো। (মুসলিম)
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ-যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে তখন তাদেরকে বলে দাও: নিশ্চয়ই আমি সন্নিকট বর্তী। কোন আহ্বানকারী যখনই আমাকে আহ্ববান করে তখনই আমি তার আহ্ববানে সাড়া দিয়ে থাকি। সুতরাং তারাও যেন আমার আহ্ববানে সাড়া দেয় এবং আমাকে বিশ্বাস করেঃ-তাহলেই তারা সঠিক পথে চলতে পারবে।- (সূরা বাক্বারা)
রাসূল (সঃ) তাঁর দো’আতে বলতেনঃ- হে আল্লাহ আমাদের অন্তঃকরণে আপনার ভয় দান করুনঃ- যা আমাদের এবং আপনার নিষিদ্ধ পাপকাজের মাঝে প্রতিবন্ধক হবে।
উচ্চারণ: (আল্লাহম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন শাররি সাময়ী, ওয়া মিন র্শারি বাছারী, ওয়া মিন র্শারি লিসানী, ওয়া মিন র্শারি ক্বলবী।)“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আমার কর্ণ, আমার চক্ষু, আমার জিহ্বা এবং আমার অন্তরের অনিষ্ঠ থেকে পরিত্রাণ চাই।” (আবু দাউদ)। আল্লামা-আলবানী অত্র হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন।
(৩) সকল অবস্থায় আমাদেরকে পর-নারীর প্রতিদৃষ্টি দেয়ার ব্যাপারে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার চেষ্টা করতে হবে: কেননা সর্বাবস্থায়, সর্ব ক্ষেত্রে ও সকল সময় হারামে পতিত হওয়া থেকে দৃষ্টি সংযত রাখা আবশ্যক। সুতরাং বাতিল দ্বারা দলীল সাব্যস্ত করার অধিকার তোমার নেই এবং এই বলেও তুমি নিজেকে পাক বলে দাবী করো না যেঃ- বর্তমানে চলমান কুপ্রথা (পর্দাহীন সামাজিক সকল রিতী-নিতী আচার-অনুষ্ঠান সমূহ) আমাকে এই ভয়াবহ বিপদের প্রতি আহবান করছে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ- আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে ফায়সালা করলেঃ- কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু’মিন নারীর নিজেদের কোন ব্যাপারে অন্য কোন সিদ্ধান্তের ইখতিয়ার থাকবে না। কেউ যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করলেঃ- সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে! - সূরা আহযাবঃ-(৩৬)
(৪) আল্লাহ তা’আলা আমাদের সম্পর্কে অবগত আছেন এবং তাঁর জ্ঞান দ্বারা আমরা.পরিপূর্ণভাবে পরিবেষ্টিত।তাই তাঁর থেকে লজ্জা করা আবশ্যক। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ- আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে কুচিন্তা করেঃ- সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি! আমি তার গ্রীবা স্থিত ধমনী থেকেও অধিকনিকটবর্তী! - সূরা ক্বাফঃ-(১৬)
আল্লাহ তা’আলা আরও বলেনঃ- চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয় তিনি জানেন! - সূরা মু’মিনঃ-(১৯)
রাসূল (সঃ) এরশাদ করেছেনঃ- আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি আল্লাহ তা’আলা থেকে লজ্জা করার জন্যে! যেমন ভাবে তুমি তোমার সম্প্রদায়ের একজন ভাল লোক থেকে লজ্জাবোধ কর।(অত্র হাদীসটি হাসান বিন সুফইয়ান বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম আহমাদ (র:) কিতাবুয যুহুদের মধ্যে উল্লেখ করেছেন ও সহীহ বলেছেন) অতত্রব আল্লাহ তা’আলা থেকে লজ্জা করুন।দৃষ্টিকে অধিক হালকা মনে করে লাগামহীনভাবে ছেড়ে দিবেন না।
(৫) আপনার কান, চোখ এবং দেহের চামড়া ইত্যাদি আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে! এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ-
তারা যখন জাহান্নামের কাছে পৌঁছবে, তখন তাদের কান, চক্ষু, ও ত্বক তাদের কর্ম সম্পর্কে সাক্ষী দিবে! - সূরা ফুসসিলাত, হা মীম সাজদাহঃ-(২০)
সহীহ মুসলিমে আনাস (রা:) হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেনঃ-“একদা আমরা আল্লাহর রাসূল (সঃ) কাছে উপবিষ্ট ছিলাম, তখন তিনি হাসলেন।অতঃপর তিনি বললেনঃ- তোমরা কি জানো আমি কেন হাসলাম ? আনাস (রা:) বলেন আমরা বললামঃ- আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ) ভালো জানেন। রাসূল (সঃ) বললেনঃ- আল্লাহর সামনে বান্দার কথোপকথন শুনে হাসলাম! সে বলবেঃ- হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জুলুম থেকে পরিত্রাণ দিবেন না? রাসূল (সঃ) বললেন আল্লাহ বলবেনঃ- হ্যাঁ অবশ্যই! তখন সে বলবেঃ- আমার বিরুদ্ধে আমার নিজের ভিতর থেকে কোন সাক্ষী ছাড়া অন্য কারও সাক্ষ্য গ্রহণ করবো না। রাসূল (সঃ) বলেন তখন আল্লাহ বলবেনঃ- আজ তোমার বিরুদ্ধে তোমার নিজের আত্মা এবং সম্মানিত লেখকগণই (ফেরেশতা)সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট! অত:পর তার মুখে তালা লাগিয়ে দেয়া হবে এবং তার অঙ্গসমূহকে কথা
বলার আদেশ দেয়া হবে! তখন তার অঙ্গসমূহ তার কৃতকর্ম সম্পর্কে বলতে শুরু করবে। রাসূল (সঃ) বলেনঃ- অতঃপর তাকে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাথে কথা বলার,জন্যে ছেড়ে দেয়া হবে। এক পর্যায়ে সে অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে লক্ষ্য করে বলবেঃ- ধ্বংস হও তোমরা। আফসোস! তোমাদের জন্যেই তো,আমি এতো পরিশ্রম করতাম।- (মুসলিম) উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণ হয় যেঃ- যে চক্ষু দ্বারা আপনি হারাম জিনিস দেখে যে সকল মানসিক তৃপ্তি লাভ করছেন তা কাল কিয়ামতে আপনার
বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। অতএব আপনার চক্ষুকে হারামে পতিত হওয়া থেকে বিরত রাখুন।
(৬) স্মরণ করুন ঐ সমস্ত ফেরেশতাদেরকে যারা আপনার প্রতিটি আমলকে সংরক্ষণ করে রাখছে!আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ- সে যে কথাই উচ্চারণ করে তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে।- সূরা ক্বাফঃ-(১৮)
আল্লাহ তা’আলা আরও বলেনঃ- নিশ্চয়ই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্তআছে। সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ। তারা সব জানে যা তোমরা করো।- সূরা ইনফিত্বারঃ-(১০-১২)
(৭) স্মরণ করুন ঐ জমিন কে যার উপরে থেকে আপনি গুনার চর্চা করে চলছেন! মহান আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ- সেদিন (জমিন) তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে।-(সূরাযিলযাল: ৪)
এই আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে রাসূল (সঃ) বলেছেনঃ- জমিন তার গর্ভাস্থিতো বিষয়কে বলে দেয়ার অর্থ হলোঃ- কিয়ামতের দিন মহিলা ও পুরুষ প্রত্যেক বনী আদমের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে যা তার উপরে থেকে করা হয়েছে। জমিন বলবেঃ- উমুক দিন উমুক সময় উমুক কাজ আমার উপর থেকে করেছো।(তিরমিযী)
(৮) বেশী বেশী নফল ইবাদত করুন। কেননা ফরয ইবাদতের পাশাপাশি বেশী-বেশী নফল ইবাদত করলে আল্লাহ তাঁর বান্দার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে হেফাজতে রাখেন। যেমনঃ- হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ- যে ব্যক্তি আমার কোন অলীর সাথে শত্রু“তা পোষণ করবেঃ- আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবো। আমার বান্দা যে সব ইবাদতের মাধ্যমে আমার নৈকট্য হাসিল করে থাকেঃ- তার মধ্যে ঐ ইবাদতের চেয়ে আমার কাছে আর অধিক প্রিয় কোন ইবাদত নেই যা আমি তার উপর ফরজ করেছি। বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে সর্বদা আমার এতটুকু নৈকট্যঅর্জন করতে থাকেঃ- যার কারণে আমি তাকে ভালবাসতে শুরু করি। আমি যখন তাকে ভালবাসতে থাকি তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে শুনে! আমি তার চোখ হয়ে যাই যার মাধ্যমে সে দেখে! আমি তার হাত হয়ে যাই যার মাধ্যমে স্পর্শকরে এবং আমি তার পা হয়ে যাই যার মাধ্যমে সে চলা ফেরা করে! সে যদি আমার কাছে কিছু চায়ঃ- আমি তাকে দিয়ে দেই। সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেঃ- আমি তাকে আশ্রয় প্রদান করি। (বুখারী)
(৯) বিবাহ করা: কেননা বিবাহই হলো কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা এবং উত্তম পন্থা। রাসূল (সঃ) বলেছেনঃ-
হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিবাহ করার শক্তি রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা ইহা চক্ষু এবং লজ্জা স্থানের হেফাযতকারী। আর যে ব্যক্তি বিবাহ করার শক্তি না রাখে সে যেন রোযা রাখে।ইহা তার জন্যে ঢাল স্বরূপ।(বুখারী ও মুসলিম)
(১০) বান্দার প্রতি আল্লাহর তা’আলার প্রতিটি নেয়ামতের স্মরণ করা এবং তার উপযুক্ত শুকরিয়া করা! সুতরাং মানুষ চোখকে ভাল ও শরীয়ত সম্মত কাজে ব্যয় করলে এবং হারাম ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকলে এতে তার এই নেয়ামতের শুকরিয়া করা হলো। আর যখন উহাকে হারাম ও নিষিদ্ধ
বস্তুর মধ্যে ছেড়ে দিলো তখন সে এই নেয়ামতের কুফরী করলো এবং অকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলো।
(১১) অধিক হারে আল্লাহ তা’আলার যিকির করা! কেননা যিকিরই হল শয়তান থেকে বেঁচে থাকার কারণ। রাসূল (সঃ) বলেনঃ- আমি তোমাদেরকে আল্লাহর যিকির করার আদেশ দিচ্ছি। কেননা যে আল্লাহর যিকির করে তার উদাহরণ হলো ঐ ব্যক্তির ন্যায় যাকে আক্রমণ করার জন্য শত্রু তার পিছু ধাওয়া করছে আর শত্রু থেকে আত্মরক্ষার জন্যে সে একটি সুরক্ষিত প্রাচীরের মধ্যে আশ্রয় নিলো এবং শত্রুর আক্রমণ থেকে বেঁচে গেলো।এমনভাবে বান্দাকে কোন জিনিস শয়তান থেকে রক্ষা করতে পারে নাঃ- একমাত্র আল্লাহর যিকির ছাড়া। (তিরমিযী)
যখন আপনি এই ফিতনার সম্মুখীন হবেনঃ- তখন আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ করুন। কেননা এই স্মরণ দ্বারা যেন আপনি শয়তানকে বিতাড়িত করতে পারেন এবং তার থেকে মুক্তি লাভ করতে পারেন।আল্লাহর যিকির মানুষের অন্তরকে কুদৃষ্টি থেকে ফিরিয়ে রাখে। বান্দা যখন আল্লাহর যিকির করে তখন এই যিকির তাঁর ভয় ও তাঁর থেকে লজ্জার কারণ হেতু বান্দার কুদৃষ্টির মাঝে এবং আল্লাহর মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়।
(১২) জান্নাতে হুরদের কথা স্মরণ করুন! যেন আপনি হারাম জিনিস থেকে দূরে থেকে অতি সহজেই উহা লাভ করতে পারেন।রাসূল (সঃ) বলেনঃ- জান্নাতের কোন একজন রমণী যদি দুনিয়া বাসীর দিকে একবার উঁকি দিতো তাহলে দুনিয়ার সকল বস্তুকে আলোকিত করে ফেলতো এবং সুঘ্রাণে পরিপূর্ণ হয়ে যেতো, আর তার মাথার ওড়না দুনিয়া এবং উহার মধ্যবর্তী সকল বস্তু হতে অতি উত্তম।- (বুখারী )
আবু হারায়রা (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ- রাসূল (সঃ) বলেছেনঃ- প্রত্যেক পুরুষের জন্যে জান্নাতে দু’জন করে রমণী থাকবে। প্রত্যেক রমণীর জন্যে থাকবে সত্তরটি করে পোশাক! তাঁর সৌন্দর্যের কারণে পোশাকের ভিতর থেকে তাঁর হাড়ের ভিতরের মজ্জা প্রকাশ পাবে! (আহমাদ)
যে হারাম থেকে তার দৃষ্টিকে ফিরিয়ে রাখবে আল্লাহ তা’আলা তার পরিবর্তেঃ- তার চেয়ে অনেক উত্তম জিনিস ব্যবস্থা করে দিবেন। কিন্তু বর্তমান সমাজের অধিকাংশই নগদে বিশ্বাসী!
অনেকে বলবেনঃ- আমি ঘরের বাইরের কোন নারীর দিকে তাকাবোই না মেলা-মেশা’তো বহু দূরের কথা! তাদের বলছিঃ- আপনার ঘরে’ও কিন্তু নারি বাস করেঃ- আপনার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী তারাও কিন্তু নারিঃ- তাদের ফেৎনা হতে বাচঁবেন কিভাবে! নবী (সঃ) ১ বার’ও হাদিসে বলেন নাইঃ- তোমার পরিবারের নারীরা ফেতনার অন্তর্ভূক্ত নয়! বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন ও নিজ পরিবারের দিকে তাকান উত্তর পেয়ে যাবেন। সর্বশেষ যতবড় মুসলিম বা ঈমানদার হোন না কেন ফেৎনা হতে রক্ষার আমল না করলে আপনি ফেৎনা হতে মুক্ত হতে পারবেন না। কারন নবী (সঃ) প্রতিদিন সূরা কাহফের (১ম) ১০ আয়াত ও বিশেষ ফেৎনার দো’আ পাঠ না করে ঘর হতে বের হতেন না। সকল নবী ও রসূলরা দাজ্জ্বালের ফেৎনা হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমল ও দো’আ পাঠ করতেন! আমরা যদি তা অনুসরণ না করি কোন সমস্যা নেইঃ- যদি দাজ্জ্বাল বা ইবলিশের সাথে আমার সু-সম্পর্ক থাকে (?) চলবে -(?)