Expounding Islam ❶

Expounding Islam ❶

Spreading Islam to all... Official Page for Expounding Islam.

Operating as usual

08/08/2021

পুরুষের বাবরি চুল একটি হারিয়ে যাওয়া সুন্নাহ বেশিরভাগ মানুষই এই সুন্নাহ দেখে দূরে সরে আছে - তাই এই সুন্নাহকে জাগ্রত করতে আমাদের ভাইদের যত্নবান হওয়া উচিৎ - বোনরাও নিজের স্বামী ভাই বাবাকে বাবরি চুল রাখার জন্য তাগিদ দেব - ইন শা আল্লাহ - নিজে এই সুন্নাহ পালন করুন উপরকে উৎসাহিত করুন - আলহামদুলিল্লাহ আমি রেখে দিয়েছি । ❤️
প্রিয় নবী সা. এর চুল যেমন ছিল!
🕳️
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আরব পুরুষদের রীতি ছিল লম্বা চুল রাখা। রাসুল নিজেও লম্বা চুল রাখতেন। তার চুল কখনো কানের মাঝামাঝি, কানের লতি কিংবা দুই কাঁধ পর্যন্ত লম্বা থাকতো। তার চুল কাঁধ ছাড়িয়ে আরো লম্বা হত বলে জানা যায়। [১]
🕳️
কখনো এতদূর অবধি লম্বা হত যে তা বিনুনি/গুচ্ছ করে রাখতেন। তার চাচাতো বোন উম্মে হানী রা. বলেন,
"(মক্কা বিজয়ের সময়) রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন মক্কায় আগমন করলেন তখন তার চুলে চারটি গুচ্ছ বা বিনুনি ছিল" [২]
🕳️
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম বলেন, "তার চুল যখন লম্বা হতো তখন তিনি তা চারটি গুচ্ছে বিভক্ত রাখতেন" [৩]
*আরবীতে চুল জড়িয়ে বা বিনুনি করাকে "গাদীরাহ" বলে। হাদীসে "আরবায়ু গাদায়ের" চারটি গুচ্ছ ভাষাটি ব্যাবহার হয়েছে।
🕳️
ইবনু হাজার আসকালানী বলেন, "অধিকাংশ সময়ে তার চুল এরূপ কাঁধের কাছাকাছি থাকত। কখনো তা আরো লম্বা হতো এবং ঝুলন্ত গুচ্ছে পরিনত হতো। তিনি সেগুলোকে বিনুনি বানিয়ে রাখতেন" তবে কাঁধ অবধি থাকা তার স্বাভাবিকতা ছিল।[৪]
🕳️
হজ্জ বা উমরা ব্যতীত তিনি কখনো মাথার চুল মুন্ডন করেছেন বলে জানা যায় না।[৫]
সেজন্যই এ নিয়ে মতভেদ আছে মুন্ডন করা যাবে কি যাবে না। কোনো কোনো ফকীহ হজ্জ উমরা ছাড়া মাথা মুন্ডন কে মাকরুহ বলেছেন। দু কারনে তাদের মতের পক্ষে এ প্রমান পেশ করেন। প্রথমত, রাসুলুল্লাহ সাঃ নিজে কখনোই হজ্জ উমরা ছাড়া মাথা মুন্ডন করেন নি। দ্বিতীয়ত - বিভিন্ন হাদীস থেকে মাথা মুন্ডন আপত্তিকর বলে জানা যায়। সাহাবীগন ছোট চুল রাখতেন। নেড়া পরিহার করতেন।
🕳️
জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "হজ্জে বা উমরা ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না" (দূর্বল সনদ)[৬]
*দূর্বল হলেও বেশ কয়েক সনদে হাদীসটি উল্লেখ আছে। (তবে হাদীসের বর্ননা সূত্রের কেউ মিথ্যায় অভিযুক্ত নন)। আবু নু'আইমের বর্ণনায় হাদিসটি হলো,
"হজ্জে বা উমরা ছাড়া মাথার চুল ফেলা যাবে না। এছাড়া তা সৃষ্টি বিকৃতি করা বলে গণ্য হবে।"[৭]
🕳️
অন্য হাদীসে জাবির রা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন,
"যে ব্যক্তি (মাথার চুল) মুন্ডন করে, (পোশাক পরিচ্ছদ) ছিড়ে ফেলে বা চিৎকার করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (সহীহ সনদ) [৮]
🕳️
আবূ মূসা আশআরী (রা) থেকে একাধিক গ্রহনযোগ্য সনদে এ অর্থে আরেকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
( তবে এ হাদীসটি মূলত বিপদ মূসিবতে অধৈর্য্য হয়ে এরূপ করতে নিষেধ করা হয়েছে)
🕳️
দুবা'য়ি নামক এক নিকৃষ্ট অপরাধী ব্যক্তিকে হযরত উমার (রা) শাস্তি প্রদান করেন এবং বলেন,
"তোমাকে যদি মাথা মুন্ডিত অবস্থায় পেতাম তবে আমি যাতে তোমার চক্ষুদ্বয় রয়েছে তা (তোমার মস্তক) তরবারীর আঘাতে কেটে ফেলতাম।" মানে শাস্তি অধিক হতো। [১০]
এ থেকেও বোঝা যায়, সাহাবীগণ মাথা মুন্ডনের অভ্যাস কে আপত্তিকর বলে মনে করতেন। ইমাম আহমাদ ইবনু হানবাল বলেন, প্রথম যুগের সালাফগন মাথা মুন্ডন করা মাকরুহ বলে মনে করতেন।[১০] যদিও তা হারাম বা গুনাহের কাজ ভাবা যাবেনা।
🕳️
মোল্লা আলী কারী বলেন, "চুল দীর্ঘ হওয়া কোনো নিন্দিত বিষয় নয়। কাঁধ ছাপিয়ে পরিমাপের চেয়ে বড় হলে চুল কেটে ফেলতে হবে বলেও কোনো নির্দেশ নেই।" [১১] সুতরাং পুরুষের চুল কাঁধের নীচে চলে গেছে মানেই তিনি গুনাহ করছেন এটি দ্বীনি জ্ঞানে অজ্ঞদের ভাবনা। তবে এটি দারা অহংকার প্রকাশ যেনো না হয়।
🕳️
তবে মনে রাখতে হবে- বড় চুল রাখা পুরুষের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। অনেক ফকিহ দাড়ি বড় হবার আগে চুল বড় করতে বারন করেছেন (তাশাব্বুহ মায়ান নিসওয়ান)। ছোট করে চুল রাখাও জায়েজ। তবে মাথার সব অংশে তা সমান হতে হবে। কোথায় বড় কোথাও ছোট এভাবে কাটা ইসলাম সম্মত নয়।
🕳️
কাতাদাহ (রা) থেকে বর্নিত - তাঁর কাধ ছাপিয়ে বিশাল চুল নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের কাছে জিজ্ঞাসা করলে রাসূল সা.তাঁকে একদিন পর একদিন চুল আঁচড়াতে এবং পরিপাটি করে রাখতে নির্দেশ দেন। [১২]
🕳️
চুলে তেল দেয়া, সুগন্ধি মিশিয়ে তেল দেয়া, পুরুষের জন্য আঁচড়িয়ে পরিপাটি রাখা, মাঝে সিথি করাও সুন্নাহ।[১৩]
🕳️
সুতরাং যাদের দারা সম্ভব রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের দায়েমী এ চুলের সুন্নাতের আমল করতে পারি। কেউ বড় চুল রাখলে, কানের লতি ছাপিয়ে নীচে গেলেই না বুঝে আপত্তিকর বাজে মন্তব্য না করি। আল্লাহ আমাদের বুঝ দান করুন।
বিঃদ্রঃ কোন যৌক্তিক কারনে পিতামাতা যদি সন্তানকে চুল ছোট রাখতে বলেন তা মান্যকরা দায়িত্ব। কারন চুল বড় রাখা একটি সুন্নাহ যায়েদা, পিতামাতার বাধ্য থাকা ফরয। সুতরাং এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবেনা।
🛑 আরো বিস্তারিত জানতে ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহি রচিত "ইসলামে পোশাক পর্দা ও দেহ-সজ্জা" বইটি পড়ে নিতে পারেন।
🕸️
রেফারেন্স:
১-তিরমিযী, আশ শামাইল আল মুহাম্মাদিয়া/৪৭-৫০, আবু দাউদ, আস সুনান ৪/৮১,
আলবানী মুখতাসারুশ শামাইল/ ৩৪-৩৬
২-তিরমিযী, আস সুনান ৪/২৪৬, আবু দাউদ, আস সুনান ৪/৮৩, ইবনু মাজাহ, আস সুনান ২/১১৯৯, ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ৬/৫৭২, ১০/৩৬০, আলবানী, মুখাতাসারুশ শামাইল/৩৫
৩-ইবনুল কাইয়িম, যাদুল মা'আদ ১/১৭০
৪-ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ১০/৩৬০
৫-ইবনুল কাইয়িম, যাদুল মা'আদ ১/১৬৭, শামী সীরাহ শামিয়াহ ৭/৩৪৯-৩৫০
৬- তাবারানী, আল মু'জামুল আউসাত ৯/১৮০
৭-আবু নু'আইম, হিলইয়াতুল আউলিয়া ৮/১৩৯
৮-বুখারী,আস সহীহ ৬/২৭৪৮
৯-ইবনু কুদামা, আল মুগনী ১/৬৫
১০-মোল্লা আলী কারী, মিরকাত ৮/২৪০
১১-মিরকাত ৮/২৪০
১২-নাসায়ী - ৮/১৮৪।
১৩- মুয়াত্তা মালিক- ২/৯৪৯।
© Abdul Hi Muhammad Saifullah

02/06/2021

ইয়ার্কি নিয়ে কিছু কথা...

সম্প্রতি ইয়ার্কি (earki) নামক ফেসবুক পেইজ নিয়ে লেখক ড. শামসুল আরেফিন শক্তি ভাই তার ফেসবুকে একটি পোষ্টের মাধ্যমে এই পেইজ কে রিপোর্ট দিতে বলেছেন।

বিষয় টা এমন না যে আজ থেকেই তারা ধর্ম (ইসলাম বা অন্যান্য) অবমাননা করে পোষ্ট দিয়ে আসছে। এরকমটা অনেক আগে থেকেই।

সম্প্রতি খ্রিস্ট ধর্মকে অবমাননা করে তারা লিখেন,
"মহিলামঠের করিডরে সাইকেল চালাচ্ছে
যাজিকারা (Nun)। তাদের হট্টগোল-শীৎকারে
চারপাশ সরব। মাদার সুপিরিয়র বেরিয়ে এলেন
তার ঘর থেকে এবং শীতলকণ্ঠে বললেন: তোমরা এভাবে চিৎকার করলে কিন্তু সাইকেলগুলোয় সিট বসিয়ে দেবো!"

আসুন দেখি বাইবেল কি বলছে:

“যে কেউ কোন স্ত্রীলোকের দিকে কামনার চোখে তাকায় সে তখনই মনে মনে তার সংগে জেনা করল। তোমার ডান চোখ যদি তোমাকে গুনাহের পথে টানে তবে তা উপড়ে দূরে ফেলে দাও। তোমার সমস্ত শরীর দোজখে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অংশ নষ্ট হওয়া তোমার পক্ষে ভাল। (মথি ৫/২৮-২৯)

কোন পাপ কাজ করার জন্য মূলত তিনটি প্রধান মাধ্যম রয়েছে- এগুলো হলো দেহের কামনা, চোখের লোভ এবং সাংসারিক বিষয়ে অহংকার (১যোহন ২:১৬ পদ)।

বিশ্বের অনেক দেশে ধর্মীয় অবমাননা, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের অবমাননার বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের 'কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম'এর ২০১৭ সালের রিপোর্টে ৭১টি দেশের তালিকা উঠে আসে যেখানে ব্লাসফেমি আইন রয়েছে।

এই আইনের অধীনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

যুক্তরাষ্ট্রের 'লাইব্রেরি অব কংগ্রেস' এর মতে ২০১৭ সালে ৭৭টি দেশের আইনে 'ব্লাসফেমি, ধর্ম অবমাননা, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও অনুরূপ আচরণ'কে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

-বাংলাদেশের আইন ও শাস্তি

বাংলাদেশের আইনে বলা হয়েছে,
ধর্ম অবমাননা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

কোন ধর্মীয় স্থানের ক্ষতি সাধন, অসম্মান করা, লিখিত বা মৌখিকভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরি, অসম্মান করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় স্থানে অনধিকার প্রবেশ বা ধর্মীয় বাক্য বা শব্দের বিকৃতি ধর্মীয় অবমাননা বলে গণ্য হবে।

ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২৯৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোন ধর্মীয় স্থান বা সেখানকার কেনা বস্তু ধ্বংস করা, ক্ষতি করা বা অসম্মান করাকে ধর্মীয় অবমাননা হিসাবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

পরবর্তীতে ১৯২৭ সালে একটি সংশোধনীতে ২৯৫ (ক) ধারায় যোগ করা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের কোন নাগরিককে মৌখিক, লিখিতভাবে বা অন্য কোন উপায়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হলে তা ধর্মীয় অবমাননা বলে গণ্য হবে।

এরকম অপরাধের ক্ষেত্রে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
একই আইনের ২৯৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, আইনসঙ্গতভাবে আয়োজিত ধর্মীয় কোন সমাবেশ বা অনুষ্ঠানে কেউ বাধা বা বিশৃঙ্খলার তৈরি করলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। তাহলে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

২৯৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তির ধর্মানুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় কোন স্থানে অনধিকার প্রবেশ করা, মৃতদেহের অসম্মান অথবা শেষকৃত্যানুষ্ঠানে সমস্যা তৈরি করা হলে সেটাও ধর্মীয় অবমাননা বলে গণ্য হবে।

এরকম অপরাধের ক্ষেত্রে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২৯৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ধর্মানুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে কোন বাক্য বা শব্দ বিকৃত করা, এমন অঙ্গভঙ্গি করা যাতে তার ধর্মবিশ্বাস আহত হতে পারে, এমন আচরণ করা হলে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। সেই সঙ্গে জরিমানারও বিধানও রয়েছে।

যেহেতু তাদের ধর্ম অবমাননা টি অনলাইন ভিত্তিক আসুন দেখি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধর্ম অবমাননা করার শাস্তি।

প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধর্মীয় অবমাননা

২০১৮ সালে বাংলাদেশে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হয়েছে, সেখানে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বা ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত করার শাস্তি আরও বাড়ানো হয়েছে।

এই আইনের ২৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যদি কেউ কোন কিছু প্রকাশ, সম্প্রচার, ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কারো ধর্মীয় বিশ্বাস বা মূল্যবোধে আঘাত করেন, তাহলে সেটা একটা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

এ ধরণের অপরাধ করলে অনূর্ধ্ব সাত বছরের কারাদণ্ড এবং অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

তবে কেউ যদি দ্বিতীয়বার একই ধরণের অপরাধ করেন, তাহলে তার অনূর্ধ্ব ১০ বছরের কারাদণ্ড, ২০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

বাকস্বাধীনতা ও ধর্ম অবমাননা

ইউরোপের বেশকিছু দেশেও ব্লাসফেমি আইনে মামলা হওয়ার নজির:
❑ ডেনমার্ক - কোরআন পুরানোর একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করায় ২০১৭ সালে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনে অভিযোগ আনা হয়।

❑ ফিনল্যান্ড - ইসলাম বিষয়ে একটি ব্লগ পোস্টে অবমাননাকর মন্তব্য করায় ২০০৯ সালে এক ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়।

❑ জার্মানি - কোরআন,পবিত্র কোরআন' লেখা টয়লেট পেপার বিলি করায় ২০০৬ সালে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

❑ জার্মানি - গাড়িতে খ্রিস্টান বিরোধী স্টিকার লাগানোর দায়ে ২০১৬ সালে এক ব্যক্তিকে ৫০০ ইউরো জরিমানা করা হয়।

❑ আয়ারল্যান্ড - টিভি অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ কমেডিয়ান স্টিফেন ফ্রাই'য়ের মন্তব্যের কারণে অভিযোগ আনা হলে তদন্ত চলে তাঁর বিরুদ্ধে।

19/04/2021

জুতো পরিধান করে সালাত আদায় করা একটা ভুলে যাওয়া সুন্নাহ।
এমনকি কিছু মুসলিম যখন কেউকে জুতো পড়ে সালাত আদায় করতে দেখে তখন সেটা তাকে আশ্চর্য লাগে।
এবং কখনও কখনও তাকে আরোপ করে।

জুতা পরিধান করে সালাত পড়ার দলিল সমূহ:
1. "তোমরা জুতা পরিধান করে সালাত পড়ো এবং ইয়াহুদীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করিও না।" (صحيح الجامع)
2. "তোমরা ইয়াহুদীদের বিরোধিতা করো কেননা তারা জুতা পরিধান করে সালাত পড়ে না নাই বা মুজা পরিধান করে" (اخرجه ابو داود وابن حبان في صحيحه)
3. "এবং হযরত আনাস কে
জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুতো পরিধান করিয়া কি সালাত আদায় করিতেন? তিনি বলেন : হ্যাঁ " (اخرجه البخاري ومسلم وغيرهما)
4. "ইবনে আবি আউস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমার দাদু কখনো কখনো সালাত আদায় করতেন এবং সালাত অবস্থাতেই তিনি আমার দিকে ইশারা করতেন এবং আমি তাকে তার জুতো দিতাম এবং তিনি বলতেন যে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে জুতা পরিধান করিয়া সালাত আদায় করতে দেখেছি" (ابن ماجه)

14/04/2021


01/04/2021

- শহীদের চিঠি -
বিয়ের রাতেই ময়দানের ডাক এল। বাসর-রুসমত হলো না। রুশ বোমারুবিমানের হামলায় শহীদ হয়ে গেলেন। শেষ মুহূর্তে সাথীদের হাতে একটা চিঠি দিয়ে বললেন: আমার স্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিও।
স্ত্রী অশ্রুসজল চোখে চিঠিটা খুলে দেখল, তাতে লেখা: নাদিয়া, তুমি আমার খেলার সাথী ছিলে। পর্দা করার পর থেকে আর দেখা হয় নি আমাদের। কথাও হয় নি। তবু আমার মনে হতো, বিয়েটা তোমার সাথেই হোক। তুমি চাইতে কি না জানি না। জানতে পারি নি। যখন থেকে ময়দানের মেহনতে যোগ দিয়েছি, ভেতরের স্বপ্নটাকে জোর করেই বের করে দিয়েছিলাম। কিন্তু শীআরা ‘আবু বাকর’ নামের কারণে আব্বুকে শহীদ করে দিল। মাকে সান্ত্বনা দিতে বাড়ি এলাম। তিনি বললেন, তোমার সঙ্গে আমার বিয়ের কথাবার্তা চলছে। চাচা-চাচিরও খুব ইচ্ছে, তোমার বিয়েটা আমার সাথেই হোক। আমি এককথায় প্রত্যাখ্যান করলাম। কারণ আমি যে ‘ইস্তিশহাদী’ জামাতে নাম লিখিয়েছি!
তুমি প্রশ্ন করতে পারো: তবে কেন বিয়ে করলেন?
নাদিয়া, রাগ কোরো না। আমি চিন্তা করেছি কি জানো, হাদীসে আছে: একজন শহীদ সত্তরজনের জন্যে সুপারিশ করতে পারবে। আমি দুনিয়াতে তোমায় কিছু দিতে পারব না। কিন্তু আখিরাতে তোমার নামে সুপারিশ করতে পারব, যদি আল্লাহ আমার শাহাদাত কবুল করেন।

~ মাওলানা আতীক উল্লাহ (হাফিজাহুল্লাহ)

15/03/2021

আড়ং-এর ইসলামবিদ্বেষ নতুন কিছু নয়।
কিছুদিন আগেও করোনার প্রকোপ যখন খুব বেশী ছিলো, তখন এক বোনকে আড়ং-এ ডুকতে দেওয়া হয়নি তার নিকাব থাকার কারণে। তাদের দাবি সে নিকাব খুলে মাস্ক পড়বে। অথচ দুইটা প্রায় একই। বরং নিকাবই বেশি প্রটেকটিভ।
সম্প্রতি এক ভাইকে চাকুরী দেওয়ার জন্য দাঁড়ি কাটার শর্ত দেয় আড়ং কর্তৃপক্ষ। যদিও চাকুরীর সাথে দাড়ির কোনো সম্পর্ক নেই।
আসলে এদের সমস্যাটা দাড়ি কিংবা নিকাবে না। সমস্যাটা ইসলাম নিয়েই। এরা নিভৃতে এদেশে কু'ফফারদের কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
২০১৯ সালের মে-জুন নাগাদ আড়ং-এর উপর সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করেন তৎকালীন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিচালক। কিন্তু পরদিনই তাকে বদলি করে দেওয়া হল উক্ত পদ থেকে।
অর্থাৎ এই কোম্পানির পিছনে অন্য কোনো শক্তি কাজ করছে। কেনো জানি মনে হচ্ছে এতে দাদাবাবু'দের কোনো না কোনো হাত আছে। এসবের নেপথ্যে যে-ই থাকুক, আমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া চাই। তাদের প্রতি আমাদের বারাআত আরো দৃঢ় হওয়া চাই।




© Jibreel Nahyan ভাই

12/03/2021

শবে মিরাজ : আকিদা, আমল ও বিধান
এক.
রাসুল সা.-এর মিরাজ নিয়ে কোনো মতানৈক্য নেই। এটি সুসাব্যস্ত একটি বিষয়। কিন্তু এটি কবে ঘটেছে, এ নিয়ে বিস্তর মতানৈক্য রয়েছে। কারও মতে হিজরতের পাঁচ বছর পূর্বে, কারও মতে তিন বছর পূর্বে, কারও মতে দেড় বছর পূর্বে, কারও মতে এক বছর পূর্বে, কারও মতে ছয় মাস পূর্বে। অনুরূপ কোন মাসে হয়েছে, এ নিয়েও অনেক মত পাওয়া যায়। কারও মতে রবিউল আওয়ালে, কারও মতে রবিউল আখিরে, কারও মতে রজবে, কারও মতে রমজানে আর কারও মতে শাওয়ালে। এভাবে দিন বা তারিখ নিয়েও অনেক মত পাওয়া যায়। (ফাতহুল বারি : ৭/২০৩, প্রকাশনী : দারুল মারিফা, বৈরুত; আত-তাবসিরা, ইবনুল জাওজি : ২/৩৩-৩৪, প্রকাশনী : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, বৈরুত; লাতায়িফুল মাআরিফ : ১২১, প্রকাশনী : দারু ইবনি হাজাম; জাদুল মাআদ : ১/৫৮, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসালা, বৈরুত)
মূলত এগুলোর কোনোটির পক্ষেই প্রমাণযোগ্য কোনো বর্ণনা বা হাদিস পাওয়া যায় না। তাই নির্দিষ্টভাবে ২৭-এ রজবকে শবে মিরাজ মনে করার কোনো অবকাশ নেই। সুতরাং শবে মিরাজ যেহেতু নির্দিষ্টভাবে নির্ধারিতই নয়, তাই বিশেষ কোনো রাতকে শবে মিরাজ বানিয়ে তাতে বিশেষভাবে ইবাদত করা বিদআত বা দ্বীনের মধ্যে নব আবিষ্কার বলে বিবেচিত হবে। আর শরিয়তে বিদআত জঘন্যতম একটি গুনাহ ও প্রত্যাখ্যাত কর্ম।
দুই.
মিরাজ স্বশরীরে হয়েছিল নাকি স্বপ্নযোগে, সে ব্যাপারে মতভেদ আছে। তবে অধিকাংশ আলিমের মতে, রাসুল সা.-এর মিরাজ স্বশরীরে জাগ্রত অবস্থায় হয়েছিল। (সুরা বনি ইসরাইল : ১, ৬০; তাফসিরু ইবনি কাসির : ৫/৪০-৪১, প্রকাশনী : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, বৈরুত; সহিহুল বুখারি : ৫/৫৪, হা. নং ৩৮৮৮, প্রকাশনী : দারু তাওকিন নাজাত, বৈরুত; মুসতাদরাকুল হাকিম : ৩/৬৫, হা. নং ৪৪০৭, প্রকাশনী : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা, বৈরুত; মাআরিজুল কবুল : ৩/১০৬৭, প্রকাশনী : দারু ইবনিল কাইয়িম, দাম্মাম)
তিন.
শবে মিরাজের ব্যাপারে আমাদের সমাজে বিভিন্ন শ্রুত কথা প্রচলিত আছে। বক্তারাও এতে বিভিন্ন বিষয় অতিরঞ্জিত করে বলে বেড়ায়। তাই এ ব্যাপারে বিশুদ্ধ বর্ণনা জানতে আমরা সহিহ বুখারি ও মুসলিম থেকে দুটি বর্ণনা তুলে ধরছি, যেন সবাই সঠিকভাবে মিরাজের ঘটনা জানতে পারে।
ইমাম বুখারি রহ. নিজ সনদে বর্ণনা করেন :
‘আনাস বিন মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু জার রা. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি মক্কায় থাকাবস্থায় আমার গৃহের ছাদ উন্মুক্ত করা হলো। অতঃপর জিবরিল আ. অবতীর্ণ হয়ে আমার বক্ষ বিদীর্ণ করলেন। আর তা জমজমের পানি দ্বারা ধৌত করলেন। অতঃপর হিকমত ও ইমানে ভর্তি একটি সোনার পাত্র নিয়ে আসলেন এবং তা আমার বুকের মধ্যে ঢেলে দিয়ে বন্ধ করে দিলেন। অতঃপর হাত ধরে আমাকে দুনিয়ার আকাশের দিকে নিয়ে চললেন। পরে যখন দুনিয়ার আকাশে আসলাম, জিবরিল আ. আসমানের রক্ষককে বললেন, দরজা খোলো। আসমানের রক্ষক বললেন, কে আপনি? জিবরিল আ. বললেন, আমি জিবরিল। আকাশের রক্ষক বললেন, আপনার সঙ্গে কেউ রয়েছেন কি? জিবরিল আ. বললেন, হ্যাঁ, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রয়েছেন। অতঃপর রক্ষক বললেন, তাঁকে কি ডাকা হয়েছে? জিবরিল আ. বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর যখন আমাদের জন্য দুনিয়ার আসমান খুলে দেওয়া হলো এবং আমরা দুনিয়ার আসমানে প্রবেশ করলাম তখন দেখলাম, সেখানে এমন এক ব্যক্তি উপবিষ্ট রয়েছেন, যার ডান পাশে অনেক মানুষের আকৃতি রয়েছে এবং বাম পাশেও রয়েছে অনেক মানুষের আকৃতি। যখন তিনি ডান দিকে তাকাচ্ছেন হেসে উঠছেন, আর যখন বাম দিকে তাকাচ্ছেন কাঁদছেন। অতঃপর তিনি বললেন, স্বাগতম হে সৎ নবি ও সৎ সন্তান। আমি জিবরিল আ.-কে বললাম, কে এই ব্যক্তি? তিনি জবাব দিলেন, ইনি হচ্ছেন আদম আ.। আর তার ডানে বামে রয়েছে তাঁর সন্তানদের রুহ। তাদের মধ্যে ডান দিকের লোকেরা জান্নাতি আর বাম দিকের লোকেরা জাহান্নামি। ফলে তিনি যখন ডান দিকে তাকান তখন হাসেন আর যখন বাম দিকে তাকান তখন কাঁদেন। অতঃপর জিবরিল আ. আমাকে নিয়ে দ্বিতীয় আসমানে উঠলেন। অতঃপর তার রক্ষককে বললেন, দরজা খোলো। তখন এর রক্ষক প্রথম রক্ষকের মতোই প্রশ্ন করলেন। পরে দরজা খুলে দেওয়া হলো। আনাস রা. বলেন, আবু জার রা. উল্লেখ করেন যে, তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসমানসমূহে আদম আ., ইদরিস আ., মুসা আ., ইসা ও ইবরাহিম আ-কে দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু আবু জার রা. তাদের স্থানসমূহ নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। তবে এতটুকু উল্লেখ করেছেন যে, তিনি আদম আ.-কে দুনিয়ার আকাশে এবং ইবরাহিম আ.-কে ষষ্ঠ আসমানে পেয়েছেন। আনাস রা. বলেন, জিবরিল আ. যখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে নিয়ে ইদরিস আ.-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন তখন ইদরিস আ. বললেন, মারহাবা হে সৎ ভাই ও পুণ্যবান নবি। আমি বললাম, ইনি কে? জিবরিল আ. বললেন, ইনি হচ্ছেন ইদরিস আ.। অতঃপর আমি মুসা আ.-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় তিনি বললেন, মারহাবা হে সৎ নবি ও পুণ্যবান ভাই। আমি বললাম, ইনি কে? জিবরিল আ. বললেন, ইনি মুসা আ.। অতঃপর আমি ইসা আ.-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় তিনি বললেন, মারহাবা হে সৎ নবি ও পুণ্যবান ভাই। আমি বললাম, ইনি কে? জিবরিল আ. বললেন, ইনি হচ্ছেন ইসা আ.। অতঃপর আমি ইবরাহিম আ.-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করলে তিনি বললেন, মারহাবা হে পুণ্যবান নবি ও নেক সন্তান। আমি বললাম, ইনি কে? জিবরিল আ. বললেন, ইনি হচ্ছেন ইবরাহিম আ.। ইবনে শিহাব জুহরি রহ. বলেন, (বিখ্যাত তাবিয়ি) ইবনে হাজাম রহ. আমাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, ইবনে আব্বাস রা. ও আবু হাব্বা আনসারি রা. উভয়ে বলতেন, নবি সা. বলেছেন, এরপর আমাকে আরও উপরে উঠানো হলো। অতঃপর এমন এক সমতল স্থানে এসে আমি উপনীত হলাম, যেখানে আমি লেখার শব্দ শুনতে পাই। ইবনে হাজাম রহ. ও আনাস বিন মালিক রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, অতঃপর আল্লাহ আমার উম্মতের ওপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দেন। অতঃপর তা নিয়ে আমি ফিরে আসি। অবশেষে যখন মুসা আ.-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলাম তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা আপনার উম্মতের ওপর কী ফরজ করেছেন? আমি বললাম, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। তিনি বললেন, আপনি আপনার পালনকর্তার নিকট ফিরে যান। কেননা, আপনার উম্মত তা আদায় করতে পারবে না। আমি ফিরে গেলাম। আল্লাহ তাআলা কিছু অংশ কমিয়ে দিলেন। আমি মুসা আ.-এর নিকট পুনরায় গেলাম আর বললাম, আল্লাহ তাআলা কিছু অংশ কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেন, আপনি পুনরায় আপনার রবের নিকট ফিরে যান। কারণ, আপনার উম্মত এটিও আদায় করতে পারবে না। আমি ফিরে গেলাম। তখন আরও কিছু অংশ কমিয়ে দেওয়া হলো। আবারও মুসা আ.-এর নিকট গেলাম। এবারও তিনি বললেন, আপনি পুনরায় আপনার প্রতিপালকের নিকট যান। কারণ, আপনার উম্মত এটিও আদায় করতে সক্ষম হবে না। তখন আমি পুনরায় গেলাম, তখন আল্লাহ বললেন, এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই (নেকির দিক দিয়ে) পঞ্চাশ ওয়াক্তের নামাজ (বলে গণ্য হবে)। আর আমার কথার কোনো রদবদল হয় না। আমি পুনরায় মুসা আ.-এর নিকট আসলে তিনি আমাকে আবারও বললেন, আপনার প্রতিপালকের নিকট পুনরায় যান। আমি বললাম, পুনরায় আমার প্রতিপালকের নিকট যেতে আমি লজ্জাবোধ করছি। অতঃপর জিবরিল আ. আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন। আর তখন তা বিভিন্ন রঙে আবৃত ছিল, যার তাৎপর্য আমি অবগত ছিলাম না। অতঃপর আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হলে আমি দেখতে পেলাম যে, তাতে রয়েছে মুক্তোমালা আর তার মাটি হচ্ছে কস্তুরী।' (সহিহুল বুখারি : ১/৭৮-৭৯, হা. নং ৩৪৯, প্রকাশনী : দারু তাওকিন নাজাত, বৈরুত)
ইমাম মুসলিম রহ. নিজ সনদে বর্ণনা করেন :
‘আনাস বিন মালিক রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার জন্য বোরাক পাঠানো হলো। বোরাক গাধা থেকে বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট একটি সাদা রঙের জন্তু। যতদূর দৃষ্টি যায়, এক পদক্ষেপে সে ততদূর চলে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি এতে আরোহণ করলাম এবং বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত এসে পৌঁছলাম। তারপর অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কিরাম তাদের বাহনগুলো যে খুঁটির সাথে বাঁধতেন, আমি সে খুঁটির সাথে আমার বাহনটিও বাঁধলাম। তারপর মসজিদে প্রবেশ করলাম ও দুই রাকআত নামাজ আদায় করে বের হলাম। জিবরিল আ. একটি শরাবের পাত্র ও একটি দুধের পাত্র নিয়ে আমার কাছে এলেন। আমি দুধ গ্রহণ করলাম। জিবরিল আ. আমাকে বললেন, আপনি সঠিক স্বভাবকেই গ্রহণ করলেন। তারপর জিবরিল আ. আমাকে নিয়ে ঊর্ধ্বলোকে গেলেন এবং আসমান পর্যন্ত পৌছে দ্বার খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি জিবরিল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? বললেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ, পাঠানো হয়েছিল। অতঃপর আমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হলো। সেখানে আমি আদম আ.-এর দেখা পাই। তিনি আমাকে মুবারকবাদ জানালেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন। তারপর জিবরিল আ. আমাকে ঊর্ধ্বলোক নিয়ে চললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। জিজ্ঞেস করা হলো, তাকে কি আনতে পাঠানো হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ, পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হলো। সেখানে আমি দুই খালাত ভাই ইসা বিন মারইয়াম আ. ও ইয়াহইয়া বিন জাকারিয়া আ.-এর দেখা পেলাম। তাঁরা আমাকে মারহাবা বললেন, আমার জন্য কল্যাণের দুআ করলেন। তারপর জিবরিল আ. আমাকে নিয়ে ঊর্ধ্বলোকে চললেন এবং তৃতীয় আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরিল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হলো। সেখানে ইউসুফ আ.-এর দেখা পেলাম। সমুদয় সৌন্দর্যের অর্ধেক দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন। তারপর জিবরিল আ. আমাকে নিয়ে চতুর্থ আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরিল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হলো। সেখানে ইদরিস আ.-এর দেখা পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন। আল্লাহ তাআলা তার সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন, “আর আমি তাকে উন্নীত করেছি উচ্চ মর্যাদায়।” (সুরা আল-হাদিদ : ১৯)। তারপর জিবরিল আ. আমাকে নিয়ে পঞ্চম আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি কে? তিনি বললেন, জিবরিল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাঁকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, পাঠানো হয়েছিল। অতঃপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হলো। সেখানে হারুন আ.-এর দেখা পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন। তারপর জিবরিল আ. আমাকে নিয়ে ষষ্ঠ আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরিল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হলো। সেখানে মুসা আ.-এর দেখা পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দুআ করলেন। তারপর জিবরিল আ. সপ্তম আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরিল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ, পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেওয়া হলো। সেখানে ইবরাহিম আ.-এর দেখা পেলাম। তিনি বাইতুল মামুরে পিঠ ঠেকিয়ে বসে ছিলেন। বাইতুল মামুরে প্রত্যেহ সত্তর হাজার ফেরেশতা তাওয়াফের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেন, যারা আর সেখানে পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ পান না। তারপর জিবরিল আ. আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে গেলেন। সে বৃক্ষের পাতাগুলো হাতির কানের ন্যায় আর ফলগুলো বড় বড় মটকার মত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সে বৃক্ষটিকে যখন আল্লাহর নির্দেশ থেকে কোনো নির্দেশ এসে আবৃত করে তখন তা পরিবর্তিত হয়ে যায়। সে সৌন্দর্যের বর্ণনা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে কারোর পক্ষে সম্ভব নয়। এরপর আল্লাহ তাআলা আমার ওপর যে প্রত্যাদেশ করার, তা করলেন। আমার ওপর দিনরাত মোট পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করলেন। এরপর আমি মুসা আ.-এর কাছে ফিরে আসলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনার প্রতিপালক আপনার ওপর কী ফরজ করেছেন? আমি বললাম, পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ। তিনি বললেন, আপনার প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান এবং তাঁর নিকট আরও সহজ করার আবেদন করুন। কেননা, আপনার উম্মত এ নির্দেশ পালনে সক্ষম হবে না। আমি বনি ইসরাইলকে পরীক্ষা করেছি এবং তাদের বিষয়ে আমি অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তখন আমি আবার প্রতিপালকের কাছে ফিরে গেলাম এবং বললাম, হে আমার রব, আমার উম্মতের জন্য এ হুকুম সহজ করে দিন। পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে দেওয়া হলো। তারপর মুসা আ.-এর নিকট ফিরে এসে বললাম, আমার থেকে পাঁচ ওয়াক্ত কমানো হয়েছে। তিনি বললেন, আপনার উম্মত এটাও পারবে না। আপনি ফিরে যান এবং আরও সহজ করার আবেদন করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এভাবে আমি একবার মুসা আ. ও একবার আল্লাহর মাঝে আসা-যাওয়া করতে থাকলাম। শেষে আল্লাহ তাআলা বললেন, হে মুহাম্মাদ, যাও দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নির্ধারণ করা হলো। প্রতি ওয়াক্ত নামাজে দশ ওয়াক্ত নামাজের সমান সাওয়াব রয়েছে। এভাবে (পাঁচ ওয়াক্ত হলো) পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের সমান। যে ব্যক্তি কোনো নেক কাজের নিয়ত করল এবং তা কাজে রূপায়িত করতে পারল না আমি তার জন্য একটি সাওয়াব লিখব; আর তা কাজে রূপায়িত করলে তার জন্য লিখব দশটি সাওয়াব। পক্ষান্তরে যে কোনো মন্দ কাজের নিয়ত করল; অথচ তা কাজে পরিণত করল না তার জন্য কোনো গুনাহ লিখা হয় না। আর তা কাজে পরিণত করলে তার ওপর শুধু একটি গুনাহ লিখা হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তারপর আমি মুসা আ.-এর নিকট নেমে এলাম এবং তাকে এ বিষয়ে অবহিত করলাম। তিনি তখন বললেন, প্রতিপালকের কাছে ফিরে যান এবং আরও সহজ করার প্রার্থনা করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ বিষয়টি নিয়ে বারবার আমি আমার প্রতিপালকের নিকট আসা-যাওয়া করেছি, এখন (এ আবেদন নিয়ে) পুনরায় যেতে লজ্জা হচ্ছে।' (সহিহু মুসলিম : ১/১৪৫-১৪৬, হা. নং ১৬২, প্রকাশনী : দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবিয়্যি, বৈরুত)
চার.
শবে মিরাজের জন্য কোনো আমলের কথা প্রমাণিত নয়। রাতে বিশেষ কোনো নামাজ, বিশেষ কোনো ইবাদত বা পরদিন বিশেষ রোজা; এসবের কোনোটিই শরিয়াসম্মত নয়। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর সাহাবায়ে কিরাম রা., তাবিয়িন রহ. ও আইম্মায়ে মুজতাহিদিন রহ; তাঁদের কারও থেকেই এ ব্যাপারে কোনো আমলের কথা বর্ণিত হয়নি। তাই শবে মিরাজের নামে বিশেষ কোনো ইবাদত করা সম্পূর্ণরূপে বিদআত বলে পরিগণিত হবে। (জাদুল মাআদ : ১/৫৮, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসাল, বৈরুত; আল-মানারুল মুনিফ : পৃ. নং ৯৬, প্রকাশনী : মাকতাবাতুল মাতবুআতির ইসলামিয়্যা, হালব; তাবয়িনুল আজব বিমা ওরাদা ফি শাহরি রজব : পৃ. নং ২৩; ফিকহুস সুন্নাহ : ১/৪৫৩, প্রকাশনী : দারুল কিতাবিল আরাবিয়্যি, বৈরুত)
এই হলো শবে মিরাজের ব্যাপারে আমাদের আকিদা ও করণীয়-বর্জনীয় বিষয়সমূহ। আল্লাহ আমাদের সঠিকটা বুঝার ও তা মেনে চলার তাওফিক দান করুন।

© Tarekuzzaman

11/03/2021

চোখের পানি যদি ফেলতে হলে একমাত্র আল্লাহর দরবারে ফেলুন। যিনি গুনে গুনে আপনার প্রতিটি চোখের পানির ফোঁটার মূল্য দিবেন।
অশান্তি হৃদয়ের প্রশান্তি পেতে তাঁর নিকটই হাত তুলুন, যিনি আপনার উত্তাল হৃদয়ে প্রশান্তি দিয়ে ভরে দিবেন।
আমরা অভিযোগ করি, আমাদের পাশে এমন কেউ থাকে না, যে আমাদের কেয়ার করবে, যার কাছে আমরা আমাদের ভালো লাগা,মন্দ লাগা, হৃদয়ের অব্যক্ত কথা গুলো ব্যক্ত করতে পারব!
কিন্তু আমরা ভুলে যাই,
মহাবিশ্বের অধিপতি আল্লাহর রব্বুল ইজ্জাত আমাদের সব আবদার, আপত্তি, অভাব,অভিযোগ শোনার জন্য সার্বক্ষণিক পাশে আছেন। এমনকি আল্লাহ তখন ও আমাদের জন্য অপেক্ষা করেন,আমাদের পাশে থাকেন যখন আমরা তাঁকে ভুলে যাই!
হে প্রিয় ভাই-বোন, আল্লাহকে ভালোবাসুন, তাঁর রহমতের উপর বিশ্বাস রাখুন আর তাঁর শাস্তিকে ভয় করুন।
তিনি আপনাকে হিফাযাত করবেন,তিনি আপনাকে কেয়ার করবেন আর তিনি আপনার জন্য সব সময় থাকবেন।
আল্লাহর রাসূল(ﷺ) বলেন,'' আল্লাহকে হিফাজাত কোরো, আল্লাহ তোমাকে হিফজাত করবেন। আল্লাহকে স্মরণ কোরো আল্লাহ তোমাকে স্মরণ করবেন। যখন কিছু চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই চাইবে। যখন কোন সাহায্যের দরকার হবে আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে।
জেনে রেখো, সারা পৃথিবীর সব সৃষ্টি যদি এক জায়গায় জড়ো হয় আর তোমার উপকার করতে চায়। আর আল্লাহ যদি তা লিখে না রাখেন, তাহলে সারা পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টি তোমার কোন উপকার করতে পারবেন না। আরা সারা দুনিয়ার সব সৃষ্টি একত্রিত হয়ে ও যদি তোমার কোন ক্ষতি করতে চায়।আর আল্লাহ যদি তা না চান তাহলে সারা দুনিয়া মিলে তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না! কলম তুলে নেওয়া হয়েছে আর কালী শুকিয়ে গেছে।''( সহীহ আত তিরমিযি)
প্রিয় ভাই বোন,আমাদের রব তিনি যাঁর হাতে সমস্ত কিছুর চাবিকাঠি। যিনি চাইলে কেউ আটকাতে পারবে না। আর যিনি না চাইলে কেউ দিতে পারবে না।
তিনি হচ্ছেন যিনি দিতে পারেন কোন উসিলায় কিংবা সরাসরি কোন মাধ্যম ছাড়াই। আর তিনি হাসাতে ও পারেন কাঁদাতে ও পারেন তিনি।
আপনার বুক ভরা কষ্টের কথা, মন খারাপের গল্পগুলো, আকাশের পানে চেয়ে ফেলা দীর্ঘশ্বাসের কথা আপনার রবকে বলুন। আপনার রব আপনাকে শোনার জন্য প্রস্তুত! ওয়াল্লাহি তিনি আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন, আপনি তাঁকে ডাকবেন, তাঁর কাছে চাইবেন,আপানার চাওয়া-পাওয়া,অভাব-অভিযোগ গুলো একমাত্র তাঁর কাছেই বলবেন।
আর এসব শোনার জন্য তিনি আপনার খুব কাছে,একেবারে নিকটেই রয়েছেন।
আল্লাহ আযযা ওয়া জাল বলেনঃ
'' আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে।''
(সূরা আল বাকারা( البقرة): ১৮৬)

14/02/2021


08/02/2021

"ফিতনা ফাসাদের এই জামানায় ঈমান বাঁচানো কঠিনতম কাজ"
[ একটা যুবক দাড়ি রাখা শুরু করেছে, কিছুদিন পর দাড়ি একটু বড় হলো, তখন বললো -
'কিরে শিবিরের মতো দাড়ি যে, শিবিরে নাম দিলি নাকি?'
দাড়ি এখন আগের চেয়ে বড়, তখন বললো -
' কিরে জঙ্গি দের মতো দাড়ি যে, জঙ্গি গ্রুপে নাম দিলি নাকি? '
শিবির চিনলেন, জঙ্গি চিনলেন, শুধু নবী কে চিনলেন না ভাই... ]
পবিত্র কুরআনুল হাকিম ঘোষনা করেছে, কেয়ামত নিকটবর্তী। ইরশাদ হচ্ছে-
اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانشَقَّ الْقَمَرُ
কেয়ামত আসন্ন, চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে।
- ( সূরাহ আল ক্কামার, আয়াত-০১ )
The Hour (of Judgment) is nigh, and the moon is cleft asunder.
আমরা লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনার আলোকে কেয়ামতের আলামতগুলো একে একে প্রকাশও পেয়ে চলেছে। আমরা দেখছি, ফিতনা ফাসাদের বহুরূপী প্রকাশ আমাদের সামনে ক্রমশঃ অবারিত হচ্ছে। ঈমানের জমিনে চলছে প্রচণ্ড খড়া, অকল্পনীয় আকাল। ভয়াবহ এই সময়ের ব্যাপারেই হয়তো প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন যে,
" সকাল বেলা ঈমান নিয়ে ঘর থেকে মানুষ বেরিয়ে যাবে আর সন্ধ্যা বেলা ঈমানের বিনিময়ে দুনিয়া ক্রয় করে বেঈমান হয়ে ঘরে ফিরে আসবে "
পদের লোভ, অর্থ বিত্ত আর ক্ষমতার মোহ নীতি নৈতিকতাকে তো ধ্বংস করেই, মানুষের ঈমান পর্যন্ত বিপর্যস্ত করে দেয়, এসবের প্রতি অন্ধ প্রেম আর দুরন্ত টান মানুষকে বিধ্বস্ত বিধ্বংসী অমানুষে রূপান্তরিত করে দেয়, সাধারণ মানুষের কথা আর কি বলা যায়, আলেম উলামা, পীর, মাশায়েখের সোহবত সাহচর্য অবলম্বন করেও অনেকে এসবের সর্বগ্রাসী খপ্পর থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারেন না।
হাদিসে এসেছে, 'শেষ যুগে ঈমান ধরে রাখা হাতে জ্বলন্ত কয়লা হাতের মধ্যে ধরে রাখা হতে কঠিন হবে'। -তিরমিজি-২২৬০
সেই সময়টা কি এখনও অনেক দূরে ?
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের ঈমানের হেফাজত করুন। প্রত্যেক বাতিলকে বাতিল বলার সৎ সাহসে আমাদের হৃদয়কে পূর্ণ করুন, আমিন।
Courtesy: BinAziz

06/02/2021

" কুসংস্কার "
-রাদ মান

আসসালামু আলাইকুম, সাধারণত শহরাঞ্চল এ কুসংস্কার কে হাসিচ্ছল ভাবে দেখা হয়, মানে মজাচ্ছলে। কিন্তু গ্রামে?
সেখানে তো একদম ভিন্ন প্রেক্ষাপট দেখলে অবাক হবেন,
সেখানে কুসংস্কার এ অন্ধভাবে বিশ্বাস করা হয়,
এখন কথা হচ্ছে ইসলাম কি কুসংস্কার কে সমর্থন করে?
উত্তর হচ্ছে - জ্বী না, কখনোই না!
ইসলাম এসেছেই কুসংস্কার কে বিলুপ্ত করার জন্যে।

মানবজাতিকে সর্ববিধ অন্ধকার থেকে মুক্ত করার জন্যই কোরআনের আগমন।

মহান আল্লাহ কত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন,
" এটি সেই কিতাব যা আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি, যেন তুমি মানুষকে বের করে আন (অনেক) অন্ধকার থেকে এক আলোর দিকে।"
[সুরা ইবরাহিম (১৪) : ০১]

তাই আমাদের সব ধরনের কুসংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠে জীবন পরিচালনা করতে হবে। কুসংস্কারে বিশ্বাস ভীষণ পাপ ও ভ্রষ্টতার কারণ। কোরআনে এ সম্পর্কে উল্লেখ আছে,
‘পথভ্রষ্ট লোক আল্লাহর রহমত থেকে অনেক দূরে অবস্থান করবে।’

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন (অর্থ) রোগ লেগে যাওয়া, কুলক্ষণ, প্যাঁচা ও সফর-সবের কোনো বাস্তবতা নেই। (বোখারি : ৫৭৫৭; মুসলিম : ৫৭৪৩)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত দূরদর্শিতার সঙ্গে ঘোর অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন আরব সমাজে বিদ্যমান যাবতীয় কুসংস্কারের মূলে কুঠারাঘাত করে সে সমাজে ইসলামের জ্যোতি বিকীরণ করেন। তিনি নবুয়ত প্রাপ্তির আগেই যাবতীয় কুসংস্কার সমাজ থেকে কীভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন।

নবুয়ত প্রাপ্তির পর তিনি তার দাওয়াতি কাজের সূচনায় জাহেলি যুগের সব কুসংস্কারকে পরিহার করে এক আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও আনুগত্য প্রদর্শনের কথা বলেন। ফলে সমাজ থেকে ধীরে ধীরে কুসংস্কারের প্রভাব কমতে থাকে, এ অবস্থায় তিনি নবুয়ত প্রাপ্ত হয়ে ইসলামের প্রচার করতে থাকেন। আল্লাহ তায়ালা যাবতীয় কুসংস্কার থেকে মোমিনদের মুক্ত থাকার নির্দেশ দিয়ে ঘোষণা করেন,
‘হে মোমিনরা! মদ, জুয়া ও মূর্তিপূজার বেদি এবং ভাগ্য নির্ণয়কারী শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা এগুলো বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ (সুরা মায়িদা : ৯০)।

আলোকিত ধর্ম ইসলামের প্রধান শিক্ষা হলো ঈমান। ঈমানের বিপরীত হচ্ছে কুফর। ঈমান হচ্ছে আলো আর কুফর হচ্ছে অন্ধকার। সুতরাং কুফরের অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে হলে ঈমানের দিকে আসতে হবে। ঈমানের অন্যতম প্রধান বিষয় ‘তাওহিদ’। তাওহিদের বিপরীত বিষয়টি শিরক।

সুতরাং অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে হলে তাওহিদের আলোই গ্রহণ করতে হবে। আমাদের দেশে বহু কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। যেগুলোর প্রতি বিশ্বাস করা ঈমানের জন্য মারাত্মক হুমকি, এর মধ্যে কিছু কিছু তো স্পষ্ট শিরক এবং জাহেলিয়াত। ইসলাম যেসব মূলনীতিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে, তাওহিদ বা একত্ববাদই হচ্ছে তার মূলভিত্তি।
ইসলামে শিরক হচ্ছে একটি ভয়াবহ কবিরা গোনাহ। রব ও ইলাহ হিসেবে আল্লাহর সঙ্গে আর কাউকে শরিক সাব্যস্ত করার নামই শিরক। আর এই কুসংস্কারের মাধ্যমে মানুষ সরাসরি শিরকে লিপ্ত।

আমাদের সমাজের অনেক আলেম ও বিদ্বানরাও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা, না বুঝে, অলক্ষ্যে কিংবা মুসলিমদের আকিদা বিশ্বাসের মূল সার এই তাওহিদকে উপেক্ষা করে শিরকে নিমজ্জিত হচ্ছেন। মহান আল্লাহ বলেন, অনেক মানুষ আল্লাহর ওপর ঈমান আনার পরও তারা মুশরিক। (সুরা ইউসুফ : ১০৬)।

এছাড়া কিছু কিছু কুসংস্কার আছে যেগুলো বিবেকবিরোধী এবং রীতিমতো হাস্যকরও বটে।

কুসংস্কারজনিত অন্ধবিশ্বাসে পড়ে মানুষ নিজেদের ঈমানকে দুর্বল করে তুলছে। বস্তুত মুসলমানের জন্য আল্লাহর ওপর ভরসাই যথেষ্ট। ইসলামি শরিয়ত পরিপন্থি প্রচলিত এসব বর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের অবশ্যকর্তব্য। এছাড়া কুসংস্কার বন্ধের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো সবার ঈমানি দায়িত্ব। কুসংস্কার প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, বরং তা শুভ বলে মনে করা ভালো। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! শুভ লক্ষণ কী? তিনি বললেন, এরূপ অর্থবোধক কথা, যা তোমাদের কেউ শুনতে পায়।’ (বোখারি)।

রাসুল (সা.) জাহেলি যুগের সব কুপ্রথার বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছেন। বিদায় হজের ভাষণে তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘জাহেলি যুগের সব কুপ্রথা আমার পায়ের নিচে নিক্ষেপ করা হলো।’

যেহেতু সুন্দর ও মার্জিত বিষয়াদিই ইসলামে অনুমোদিত। অন্যদিকে অসত্য, অসুন্দর ও যাবতীয় কদর্যতা ইসলামে নিষিদ্ধ। মানুষের জীবনকে সুন্দর ও শৃঙ্খলাময় করার জন্য যত রকমের সহজ-সরল দিকনির্দেশনা ও পথ রয়েছে তার সব ইসলামে বিদ্যমান। এ কারণেই ইসলামকে মধ্যপন্থিদের ধর্ম বলা হয়। মানবতার বিরুদ্ধে যাবতীয় নিষ্ঠুরতা, অসহিষ্ণুতা ও ববর্রতার বিরুদ্ধে ইসলামই একমাত্র রক্ষাকবচ। তাই আমাদের সব ধরনের কুসংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠে জীবন পরিচালনা করতে হবে। কুসংস্কারে বিশ্বাস ভীষণ পাপ ও ভ্রষ্টতার কারণ। কোরআনে এ সম্পর্কে উল্লেখ আছে, ‘পথভ্রষ্ট লোক আল্লাহর রহমত থেকে অনেক দূরে অবস্থান করবে।’

তাই এসব কুসংস্কার সম্পুর্ন হারাম; এবং অনেক কুসংস্কার শির্ক ও শির্ক কি? শির্ক হচ্ছে আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার স্থাপন করা, তার সাথে কাউকে শরীক করা।

এখন প্রশ্ন আসতেই পারে " গ্রামে কিভাবে এগুলো থামানো যায়?"

জ্বী, যারা গ্রামে ওয়াজ-মাহফিল, ইসলামিক চেকচার দিয়ে থাকেন এবং প্রতিটি মসজিদ এর ইমাম চাইলে কুসংস্কার নিয়ে আলোচনা করতে পারে।..

এতে করে কুসংস্কার অনেকটা কমানো সম্ভব আমি মনে করি ইনশাআল্লাহ্‌।

আল্লাহ বলেন ‘যে ব্যক্তি জ্ঞান রাখে আর যে জ্ঞান রাখে না, তারা উভয় কি সমান হতে পারে?’ (সুরা আল-যুমার : ৯)।

তবে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের সঙ্গে মানসিক চিন্তাভবনারও পরিবর্তন ও প্রসার ঘটাতে হবে।
কারণ অনেক কুসংস্কার যেহেতু সামাজিকভাবে উৎপন্ন,
যা যুগ যুগ ধরে প্রবহমান, যা আমাদের পরিবার ও শিক্ষার মাধ্যমেই মনের মধ্যে গভীর রেখা ফেলে।
-রাদ মান করতে হবে শিক্ষা ও সামাজি ক সচেতনতার মাধ্যমে।

সূরা বনী-ইসরাঈল (الإسرا), আয়াত: ৮১

وقل جاء الحق وزهق الباطل إن الباطل كان زهوقا

উচ্চারণঃ ওয়া কুল জাআল হাক্কুওয়া ঝাহাকাল বা-তিলু ইন্নাল বা-তিলা কা-না ঝাহূকা-।

অর্থঃ বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল।

Want your school to be the top-listed School/college?

Assalamu ‘Alaykum

Welcome to the official page of Expounding Islam. In this page we would like to publish different kinds of Islamic contents in English/Bangla and spread it to all by you.

Telephone