#পার্থিব কাজকে আখেরাতের কাজে পরিণত করুন
*মুফতি শাহেদুর রহমান শিবলি
মনে আছে তো, আপনার হায়াত কিন্তু ফুরিয়ে যাচ্ছে এবং আপনি দ্রুত মৃত্যুর দিকে ছুটে চলেছেন? সুতরাং অনন্তকালের প্রস্তুতি নিন এবং দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ও কর্ম পন্থা সংশোধনের মাধ্যমে পার্থিব কাজগুলোকে আখেরাতের কাজে পরিণত করার চেষ্টা করুন।
মনে করুন, আপনি ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, কৃষিকাজ কিংবা অন্য কোন মাধ্যমে আয় উপার্জন করছেন। যদি এই উপার্জন আপনি শরীয়তের সীমারেখা ঠিক রেখে করেন, এর মাধ্যমে হারাম থেকে বেঁচে থাকা, আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত হকসমূহ আদায় করা ও আল্লাহর পথে ব্যয় করার নিয়ত করেন, উপার্জনে এতটা নিমগ্নতার কারণে যদি নামায কিংবা অন্য কোন ফরয কাজে অবহেলা না করেন, প্রয়োজনীয় ইলম শিক্ষা করা ও দ্বীনের কাজ করার জন্য সময় বের করতে পারেন তাহলে আপনি নিজের উপার্জনকেও আখেরাতের কাজে পরিণত করলেন।
এভাবে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও কর্মপন্থা সংশোধনের মাধ্যমে প্রতিটি মোবাহ বা জায়েয কাজকে আমরা আখেরাতের কাছে পরিণত করতে পারি।
Markazul Afkar Al Islamia
دنیا میں ہوں دنیا کا طلبگار نہیں ہوں
بازار میں ہوں خریدار نہیں ہوں
Operating as usual
#সন্তানের শাসন
কচি বয়সের শাসন সেরা শাসন। ছেলেমেয়েদের যদি নিজেদের উপর ছেড়ে দেন আর তখন ওরা যদি একবার আজেবাজে স্বভাব নিয়ে বড় হয় তখন ওদের ঠিক করা খুব কঠিন।
এক কবি বলেছেন,
বাড়ন্ত শাখাকে চাইলে সোজা করলে সোজা হবে
কিন্তু কান্ডকে সোজা করা যায় না,
সন্তানকে ধীরে ধীরে শাসন করলে তা কাজ দেয়
বয়স হয়ে গেলে তা আর কাজ দেয় না।
দেখুন, ডাক্তারেরা যখন রোগীর চিকিৎসা করেন তারা তখন তার বয়স ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ওষুধ দেয়। সেরকম বাচ্চাদের শেখানোর বিষয়টাও তাদের উপযোগী হতে হবে। সেটা কাজে লাগছে কিনা তা অল্প বয়স থেকেই বুঝা যায়।
এক লোক একবার সুফিয়ান সাওরি রহ. কে বলেছিলেন, 'সালাত আদায় করে না বলে আমি আমার ছেলেমেয়েকে প্রহার করি।'
তিনি বললেন, 'আপনি বরং তাদেরকে সুখবর শুনিয়ে উৎসাহিত করুন।'
জুবাইদ আল-ইয়াফি রহ. তার ছেলেদের বলতেন, 'যে নামায আদায় করবে আমি তাকে পাঁচটা আখরোট দেব।'
ইবরাহিম ইবনে আদহাম রহ. বলতেন,' বাবা! হাদিস শেখো। একটা করে হাদিস শিখলে আমি তোমাকে এক দিরহাম করে দেব।' এরপর তার ছেলে হাদিসের অন্বেষণে নিমগ্ন হয় ।
আপনার সন্তান আপনার আমানত। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে, সে যেন অল্প বয়স থেকেই খারাপ বন্ধুবান্ধব এড়িয়ে চলে। তাকে ভালো ভালো আচরণ শেখাবেন।
শিশুরা শূন্য কলসির মতো। এখন যা দিবেন সে তাই নেবে। তাকে লাজুক স্বভাব, দানশীলতা ও মানুষের প্রতি সহমর্মিতা শেখাবেন। ছেলে হলে তাকে কারুকার্যবিহীন সাদা পোশাক পরাবেন। রংচং পোশাক পরতে চাইলে বলবেন, ওগুলো মেয়েদের পোশাক।
ওদেরকে আপনি ধার্মিক মানুষদের কাহিনী শুনাবেন। গানবাদ্য ও অর্থহীন কবিতা থেকে দূরে রাখবেন। এগুলো মনের ভিতরে বিষের বীজ রোপন করে। দানশীলতা, সাহসিকতা এবং এ জাতীয় সদগুণকে উদ্দীপ্ত করে এমন সব কবিতা পড়াবেন। যাতে তার মধ্যে এ জাতীয় স্বভাব গড়ে ওঠে।
ভুল করলে ওদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন না। বাচ্চার শিক্ষক কখনো যেন তাদের ভুলত্রুটি অন্যদের বলে না বেড়ায়। বাবা-মা হিসেবে আপনি কখনো লোকজনের সামনে তাদেরকে বকাঝকা ও মারধর করবেন না। অতিরিক্ত খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম থেকে ওদেরকে বারণ করবেন। সাধারণ খাবার-দাবার ও অল্প ঘুমে অভ্যস্ত করাবেন। এটা বেশি স্বাস্থ্যকর।
হাঁটাচলা, দৌড়াদৌড়ি ও এ জাতীয় শরীরচর্চা করতে বলবেন। অন্যের দিকে পিঠ ফেরানোর মতো অভদ্রতা থেকে শাসন করবেন। মানুষের সামনে মুখ না ঢেকে হাই তোলা, হাঁচি দেওয়া প্রভৃতি থেকে নিষেধ করবেন।
কোন খারাপ কাজ যদি তার মধ্যে চলে আসে তাহলে সেটা যাতে কোনভাবেই তার অভ্যাসে পরিণত না হয় সেজন্য সাধ্যমত চেষ্টা করবেন। কোমল আচরণে কাজ না হলে অল্প বিস্তর শাসন করবেন।
লুকমান হাকিম আ. বলেছিলেন, 'সন্তানকে শাসন করাটা বীজ বপনে সারের মতো কাজ করে।'
সন্তানের শিশুসুলভ দুষ্টামিকে সহ্য করে নিন। ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন, 'ছেলেদের মধ্যে দুষ্টামি স্বভাব বাচ্চার বুদ্ধিমত্তা বাড়ায়।' (মনের উপর লাগাম, ইবনুল জাওজি রহ., অনুবাদক: মাসুদ শরীফ; ঈষৎ সম্পাদিত)
মারকাযুল আফকার আল-ইসলামিয়া এই মূলনীতিতে বিশ্বাসী যে, ছাত্র উস্তাদের মুখাপেক্ষী, উস্তাদ ছাত্রের মুখাপেক্ষী নয়। উস্তাদের সম্মান ব্যতীত ইলম কখনো উপকারী হয় না।
মারকাযুল আফকার আল-ইসলামিয়া এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতে চায় যারা চাকরি কিংবা অর্থকে নয় বরং রবের পরিপূর্ণ গোলাম হওয়াকে নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য মনে করবে।
#কওমি মাদরাসার বৈশিষ্ট্য
*মুফতি শাহেদুর রহমান শিবলি
কওমি মাদ্রাসার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, তালিমের সঙ্গে সঙ্গে তারবিয়াহ এর প্রতি গুরুত্ব প্রদান । নিছক 'গবেষক' 'স্কলার' 'বক্তা' কিংবা 'চাকরিজীবী' তৈরি করা এসব প্রতিষ্ঠানের টার্গেট নয়।
এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান টার্গেট হলো, এমন কতিপয় খাঁটি দীনের খাদেম তৈরি করা যারা ইলম, আমল, আখলাক ও চিন্তা চেতনার ক্ষেত্রে হবে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন খাঁটি ওয়ারিশ। যাদেরকে দেখলে আল্লাহর কথা স্মরণ হবে, যাদের জীবন থেকে সুন্নাতে নববীর নুর বিচ্ছুরিত হবে, আখলাকে নববির সুবাস ছড়াবে।
বস্তুবাদী চিন্তার পরিবর্তে তারা সবকিছুকে ইমানি দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করবে। মাখলুকের পরিবর্তে খালেকের প্রতি তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে। প্রভুর প্রেম-ভালবাসায় তাদের হৃদয়-বাগান সজীব থাকবে। কাউকে ভালবাসবে তো আল্লাহর জন্য ভালবাসবে। কারো প্রতি বিদ্বেষ রাখলে তাও আল্লাহর জন্যই রাখবে।
বিদআত, শিরক ও হারাম থেকে তারা শত কিলোমিটার দূরে অবস্থান করবে। বাতিল এর সঙ্গে আপোষ করবে না । তুচ্ছ দুনিয়ার প্রতি তারা লালায়িত হবে না। আখেরাতই হবে তাদের আসল টার্গেট। জীবনের সর্বক্ষেত্রে দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করা তাদের জীবনের প্রধান কাজ। এমনই ছিলেন আমাদের আকাবিরে দেওবন্দ।
বর্তমানে ভালো মানের প্রতিষ্ঠানসমূহে তালিম ও যোগ্যতা অর্জনের মেহনত প্রচুর হচ্ছে। পরীক্ষায় ভালো নাম্বার করা ও জাতীয় বোর্ড পরীক্ষায় কিংবা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় মেধাস্থান দখল করার এক দুর্দান্ত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
যোগ্যতা অর্জনের জন্য পরীক্ষায় ভালো নাম্বার করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু ভয় ও আশঙ্কার বিষয় হল, পরীক্ষাই যখন দ্বীনি শিক্ষার মূল টার্গেটে পরিণত হয় এবং ছাত্র-শিক্ষক সকলের চিন্তার জগতকে কেবল 'পরীক্ষা' কিংবা 'প্রতিযোগিতা' নামক বস্তুটি গ্রাস করে নেয় তখন দ্বীনি মাদ্রাসার আসল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়। পরীক্ষা কিংবা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জনকারী ছাত্রটিও তখন হয় তাকওয়ার ভুবনের রিক্তহস্ত। ক্ষণস্থায়ী তুচ্ছ দুনিয়াই তার টার্গেটে পরিণত হয়। বিষয়টি নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত।
#উস্তাদ হিসেবে উস্তাদের সম্মান
হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলি থানবি রহ. বলেন, একদা আমি দারুল উলুম দেওবন্দের ছাত্রদেরকে উদ্দেশ্য করে বললাম, তোমরা উস্তাদের না সম্মান কর, না তাদের হক আদায়ের জন্য চেষ্টা-ফিকির কর।
অতঃপর আমি বললাম, হয়তো তোমরা মনে মনে একথা ভাবছ যে, আমরা তো শাইখুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদ হাসান সাহেবের যথেষ্ট সম্মান করে থাকি এবং তার খেদমত করে থাকি প্রচুর পরিমাণে।
কিন্তু একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখ, মাওলানার প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও খেদমত কি শুধুমাত্র তার উস্তাদ হওয়ার কারণে করে থাক নাকি তার বিশ্বজোড়া খ্যাতি ও সুনামের কারণে করে থাক?
একথা দিবালোকের মত স্পষ্ট যে, তোমরা তাকে শুধুমাত্র উস্তাদ হওয়ার কারণে সম্মান ও ভক্তি কর না । অন্যথায় এর কী কারণ যে, তোমরা অন্যান্য উস্তাদগনকে অনুরূধ শ্রদ্ধা, ভক্তি ও সম্মান কর না ? অথচ তারাওতো তোমাদের উস্তাদ। এতে বুঝা গেল যে, প্রসিদ্ধির কারণেই মাওলানার প্রতি তোমরা শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করছ, উস্তাদ হওয়ার কারণে নয়।
#আলেমের সম্মানের উপকারিতা
হযরত শেখ সাদী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি বুযুর্গানে দীনের মুখে শুনেছি, কেউ যদি কামনা করে যে, আমার ছেলে আলেম হোক তাহলে তার কর্তব্য হলো, সে আলেমদের খুব সম্মান করে যাবে, বেশি বেশি তাদের সেবাযত্নে নিজেকে নিয়োজিত রাখবে। এভাবে করতে থাকলে ছেলে যদি আলেম নাও হয় তবে নাতি অবশ্যই আলেম হবে। (আপবীতি, শাইখুল হাদিস যাকারিয়া কান্ধলবি রহ., খন্ড ২, পৃষ্ঠা-৭৪)
#যে গুনটি তালিবে ইলমের জন্য অপরিহার্য
আদাবুদ দুনিয়া ওয়াদ্দিন কিতাবে লিখা আছে, 'যে ব্যক্তি ইলম শিক্ষা করে তার জন্য জরুরি হলো, সে উস্তাদগণের সামনে নরম ও বিনয়ী থাকবে। কেউ এই গুণটি অর্জন করতে পারলে তার প্রচুর উপকার সাধিত হবে, অন্যথায় বহুবিধ কল্যাণ থেকে সে বঞ্চিত থাকবে।( আপবীতি, শাইখুল হাদিস যাকারিয়া কান্ধলবি রহ., খন্ড -২, পৃষ্ঠা-৭৫)
#ইলমের বরকত
উস্তাদের সাথে যে পরিমাণ মহব্বত হবে ইলমের মধ্যেও ঠিক সেই পরিমাণে বরকত হবে। মহান আল্লাহ তায়ালার সাধারণ নিয়ম এই যে, যে ছাত্রের প্রতি উস্তাদ রাযি খুশি নন তিনি তাকে ইলমে নববি দান করেন না। অভিজ্ঞতা দ্বারা জানা গেছে যে, শাগরেদের প্রতি উস্তাদের দিল যতোটুকু খুশি থাকে ইলমের মধ্যে ততটুকু বরকত লাভ হয়। (উস্তাদ-শাগরিদের হক, হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলি থানবি রহ., পৃষ্ঠা-২৬)
#উস্তাদের সম্মান
মাওলানা ইয়াকুব নানুতুবি রহ. বলেন,
ইলম ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে মাওলানা কাসেম নানুতুবি রহ.এর গভীর পান্ডিত্য অর্জনের পিছনে বিভিন্ন কারণ ছিল । তার মধ্যে একটি বড় কারণ এই ছিল যে, তিনি তার ওস্তাদ গণের প্রতি সীমাহীন সম্মান ও আদব বজায় রেখে চলতেন। যার প্রমাণ নিম্নোক্ত ঘটনা দ্বারা বুঝা যায়:
একদা থানা ভবন থেকে কোন এক সুইপার মাওলানা নানুতবী রহ. এর সাথে সাক্ষাৎ করতে আসলো। সে মাওলানার সাক্ষাৎ পেয়ে বললো,আমি থানাভবন বসবাস করি । এতোটুকু শুনতেই মাওলানা নানুতুবি সীমাহীন প্রভাবান্বিত হলেন। ফলে তিনি ওই সুইপার লোকটির সাথে এরূপ সৌজন্যমূলক আচরণ ও মেহমানদারি করলেন যা ভাষায় ব্যক্ত করা অসম্ভব।
তার একমাত্র কারণ ছিলো ,লোকটি থানাভবনের অধিবাসী ছিল, যে থানাভবন ছিল তার শাইখ হযরত হাজি এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কি রহ. এর বাসভূমি ।
এ সকল মহাপুরুষ তো উস্তাদগণের এলাকার অজ্ঞ ও মূর্খ লোকদেরকে এরূপ সম্মান করতেন কিন্তু আফসোস, বর্তমানে তো স্বয়ং উস্তাদগণকেও এরূপ সম্মান প্রদর্শন করা হয় না।(উস্তাদ শাগরেদের হক, হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবি রহ.)

তাহাজ্জুদ মিস হওয়ার কিংবা ফজরের সালাত কাযা হওয়ার কতিপয় কারণ:
মুফতি শাহেদুর রহমান শিবলি হাফিজাহুল্লাহ
১. রাত্রিবেলা অতিরিক্ত আহার করা।
রাত্রিবেলা অল্প আহার করলে রাত্রিশেষে তা হজম হয়ে যায় এবং শরীর হালকা পাতলা হয়। ফলে রাত্রি-জাগরণ সহজ হয়।
২. রাত্রিবেলা আহার করার সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়া।
রাত্রে আহারে সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মাগরিবের পরপর আহার সম্পন্ন করার নিয়ম ছিল। জাগতিক দৃষ্টিকোণ থেকে উন্নত বিশ্বের অনেক দেশে বর্তমানেও এই নিয়ম চালু আছে।
৩. অত্যধিক নরম ও আরামদায়ক বিছানায় শয়ন করা।
শক্ত বিছানায় শয়ন করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ এবং রাত্রি-জাগরণের ক্ষেত্রে সহায়ক।
৪. রাত্রিবেলা বিলম্বে ঘুমাতে যাওয়া।
ইশার পর যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং দুনিয়া ও আখেরাতের প্রচুর বরকত ও কল্যাণের কারণ হয়।
৫. অন্তরে ইমানি চেতনার অনুপস্থিতি ।
মুনাফিকের জন্য ফজরের সালাত অনেক ভারী ও কষ্টকর অনুভূত হয়। একজন লোকের অন্তরে ইমানি চেতনা কতটুকু বিদ্যমান রয়েছে তা ফজরের সালাতের জামাতে উপস্থিত হওয়ার দ্বারা অনেকটা অনুমান করা যায়।
৬. মহান আল্লাহর অসন্তুষ্টি
গুনাহ বা পাপাচারের কারণে মহান আল্লাহ যদি কারো প্রতি অসন্তুষ্ট থাকেন তাহলে সাধারণত তাহাজ্জুদ কিংবা ফজরের জামাতে উপস্থিত হওয়া তার ভাগ্যে জোটে না।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'য়ালা আমাদেরকে স্বীয় রহমতের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় দান করুন এবং তাহাজ্জুদ ও ফজরের সালাত নিয়মিত আদায় করার সৌভাগ্য নসিব করুন।
এডমিন,
Shafiq Jilany- শফিক জিলানী
পাঁচ, সাত, তেইশ
শিক্ষকতা জীবনের আট বছর শেষ হল। প্রথম চার বছর মেশকাত পর্যন্ত কদীম নেসাবের দুটি মাদরাসায়, আর পরবর্তী চার বছর মাদানী নেসাবের একটি মাদরাসায়। আমার শিক্ষকতার এই আট বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে যারা শিক্ষকতার অঙ্গনে নতুন পা রাখতে যাচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্যে কিছু আরজ করতে চাই।
১। মাদরাসায় শিক্ষকতার পেশাটা মিন ওয়াজহিন ইবাদত, মিন ওয়াজহিন মুআমালা। তাই নিয়োগের শুরুতেই আপনার সাথে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের যাবতীয় মুআমালাত তথা লেনদেনের বিষয়গুলো হাসিমুখে পরিষ্কার হয়ে নিন। শিক্ষকতার বাইরে মাদরাসার আনুসাঙ্গিক কোন দায়দায়িত্ব দিতে চাইলে তাও আলোচনার মাধ্যমে বুঝে নিন। আপনার প্রয়োজনীয় ছুটিছাটার বিষয়গুলো শুরুতেই সাফ করে নিন। তাছাড়া শিক্ষকতার বাইরে আনুসাঙ্গিক কোন পেশা যেমন, ইমামতি, লেখালেখি, টিউশনি ইত্যাদি গ্রহণের সুযোগ আছে কি-না তাও পরিষ্কার হয়ে নিন। এসব বিষয়ে অস্পষ্টতা রাখলে পরবর্তীতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে।
২। শিক্ষকতার শুরুতেই পারতপক্ষে দারুল ইকামার কোন দায়িত্ব নিতে যাবেন না। এটি আপনার শিক্ষকতার পেশাকে সূচনালগ্নেই বিষিয়ে তুলবে। কারণ দারুল ইকামার দায়িত্ব মানে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বিষয়ক দায়িত্ব। একজন নতুন শিক্ষক -যার এখন পর্যন্ত ছাত্রদের মাঝে কোন প্রভাব-প্রতিপত্তি সৃষ্টি হয় নি- তার পক্ষে এ দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়া খুবই চ্যালেঞ্জিং। তাছাড়া এ দায়িত্ব শুরু থেকেই ছাত্রদেরকে আপনার প্রতি আগ্রহী হওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
৩। আশপাশের বিভিন্নজনের কথায় প্রভাবিত হয়ে শুরুথেকেই মাদরাসার মুহতামিম ও নাযেম সাহেবকে প্রতিপক্ষ ভাববেন না। তাদের প্রতি ন্যায়সঙ্গতভাবে আন্তরিক থাকুন। তাদের কোন সমস্যার কথা মাদরাসার অন্য কোন উস্তাদের সাথে সমালোচনা না করে আন্তরিকভাবে সংশোধনের নিয়তে সরাসরি তাদেরকেই জানান।
৪। আন্তরিকতা ও ইখলাস ব্যতীত কওমি মাদরাসায় শিক্ষকতার পেশায় টিকে থাকা সম্ভব না। সবজায়গারই কিছু না কিছু সমস্যা-প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতা আছে। যেমনটা আছে আপনি ব্যক্তির মাঝে এবং আপনার ঘর-সংসার ও পরিবারের মাঝে। সুতরাং এগুলো বুঝার চেষ্টা করবেন এবং আন্তরিকভাবে এগুলো সমাধান ও মুকাবেলার ফিকির করবেন। মনে রাখবেন, আপনি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আন্তরিক হলে প্রতিষ্ঠানও আপনার প্রতি আন্তরিক হবে। পক্ষান্তরে আপনি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে প্রতিপক্ষ ভাবলে তারাও আপনাকে প্রতিপক্ষ ভাববে। এটাই স্বাভাবিক।
৫। প্রাথমিক অবস্থায় কখনই কর্তৃত্বপরায়ণ হতে যাবেন না। যোগ্য হলে আপনি এমনিতেই কর্তৃত্বের অধিকারী হবেন।
৬। ছাত্রদের মাঝে নিজের জনপ্রিয়তা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ করবেন না। ইখলাস ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করলে আপনার জনপ্রিয়তা এমনিতেই সৃষ্টি হয়ে যাবে।
৭। ছাত্রদের মাঝে অন্যান্য শিক্ষকের উপর নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহিরের চেষ্টা করবেন না। এতে আপনি প্রতিহিংসার শিকার হবেন।
৮। শিক্ষকদের কোন গ্রুপিং ও দলাদলির মাঝে যাবেন না। নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় থেকে নিজের মতো করে কাজ করে যাবেন।
৯। নিয়ম-কানুন, সুযোগ-সুবিধা ও ছাত্র সংখ্যা কোন বিষয়েই গ্রাম ও মফস্বলের ছোট পরিসরের মাদরাসাকে ঢাকা-চিটাগাংয়ের বড় বড় মাদরাসার সাথে তুলনা করতে যাবেন না। এতে আপনি বড় ধরনের হোঁচট খাবেন। প্রসিদ্ধ বড় বড় প্রতিটি মাদরাসা অনেক ত্যাগ-তীতিক্ষা ও সংগ্রাম করেই এ পর্যন্ত এসেছে। দারুল উলুম মাদানী নগরে এক সময় কাফিয়া, শরহে জামী জামাতে ৩-৫ জন করে ছাত্র ছিল।
১০। ছাত্রদেরকে ইকরাম করবেন, স্নেহ করবেন, প্রয়োজনে শাসন করবেন। কিন্তু তাদেরকে কখনই অপমান করতে যাবেন না। শাসন আর অপমান কখনও এক জিনিস না। একজন শিক্ষক তার ছাত্রকে শাসন করতে পারে, কিন্তু কখনই অপমান করতে পারে না। ছাত্রদের থেকে অনাকাঙ্খিত বেশিরভাগ বেয়াদবির ঘটনা এই অপমানের কারণেই ঘটে। ছাত্রদের শাসন করবেন নিজের ছোট ভাইয়ের চোখে, নিজের সন্তানের চোখে দেখে।
১১। ছাত্রদের ইসলাহ-তরবিয়তের চেয়ে নিজের ইসলাহ-তরবিয়তের দিকে বেশি মনোযোগ দিবেন। কারণ ছাত্ররা উস্তাদের প্রতিবিম্ব বা ছায়ামাত্র।
১২। নিজের ছাত্র যামানার কথা ভুলে যাবেন না। ছাত্রদের অসংলগ্ন যেকোন আচরণকে বেয়াদবি মনে করবেন না। ছাত্রদের অনেক অশোভনীয় আচরণ বয়সের প্রভাবজনিত কারণে হয়ে থাকে। এতে উস্তাদের প্রতি বেয়াদবির কথা ঘূর্ণাক্ষরেও মাথায় থাকে না।
১৩। উস্তাদের প্রতি ছাত্রদের হকের চেয়ে ছাত্রদের প্রতি উস্তাদের হকের কথা মাথায় বেশি রাখবেন। ভুলে যাবেন না, ছাত্ররা উস্তাদের হক নষ্ট করলে যেমন উস্তাদের বদদোয়া লাগে, তেমনিভাবে ছাত্রদের হক নষ্ট করলেও উস্তাদের উপর ছাত্রদের বদদোয়া লাগে। বদদোয়া শুধু উস্তাদদের কোন একক পাওয়ার নয়। উস্তাদের বদদোয়ায় ছাত্রের জীবন হালাক হয়, আর ছাত্রদের বদদোয়ায় উস্তাদের সন্তানদের জীবন হালাক হয়ে যায়। [এদেশের অনেক বড় বড় আলেমের সন্তানরা কেন অমানুষ থেকে গেল এ থেকে বুঝে নিন।]
১৪। নিজের বিশেষ কোন প্রতিভা বা যোগ্যতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সামনে তুলে ধরতে যাবেন না। হ্যাঁ, একান্ত প্রকাশ পেয়ে গেলে ইহসান ও ইনসাফের সমন্বয়ে সেটার বিনিয়োগ করবেন।
১৫। প্রতিষ্ঠানকে আপন মনে করে কাজ করবেন। যতদিন যেখানে থাকবেন ততদিন সেখানে তন-মন-ধন দিয়ে কাজ করবেন। নিছক চাকুরির মানসিকতা বাদ দিয়ে দ্বীনী যিম্মাদারী ও দ্বীনের খেদমতের মানসে কাজ করবেন। মাদরাসার তালাবা, আসাতেযা এবং দায়িত্বশীলদেরকে সবসময় দোয়ার মধ্যে স্মরণ রাখবেন। মাদরাসার তামাম যরুরিয়্যাত পূরণের জন্য দোয়া করবেন। মনে রাখবেন, আপনার রিজিকের ফায়সালা-বণ্টন সব আসমান থেকে হয়, যমিনে নয়।
১৬। কিতাবি কোন অস্পষ্টতা, দুর্বলতা দূরীকরণে পারতপক্ষে সহকর্মীদের সহযোগিতা না নিয়ে নিজের সহপাঠী বা উস্তাদদের সহযোগিতা গ্রহণ করবেন।
১৭। শিক্ষকতা জীবনের যেকোন সমস্যা ও ঝামেলা নিরসনে আপনার মুরুব্বি উস্তাদের শরণাপন্ন হোন, তাঁর পরামর্শ মুতাবেক কাজ কর।
(কপি পোস্ট: মাসিক আদর্শ নারী)
ইনশাআল্লাহ আগামীকাল ২৪/৬/২০২৩ ইং রোজ শনিবার আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত মারকাযুল আফকারে সাপ্তাহিক সপ্তম ইসলাহি মজলিস অনুষ্ঠিত হবে। এতে আশা করি আপনিও শরিক হবেন এবং অন্যদেরকেও দাওয়াত করে নিয়ে আসবেন ।
বি. দ্র. মহিলাদের জন্য পর্দা সহকারে আলোচনা শোনার সুব্যবস্থা রয়েছে।
#আজকের আলোচ্য বিষয়সমূহ
১. কুরবানির ইতিহাস ও শিক্ষা
আলোচক: মাওলানা ইলিয়াস বাঁশখালী হাফি.
২. কুরবানির মাসায়েল
আলোচক: মুফতি মনযুরুল হক হাফি.
৩. কুরবানি সংক্রান্ত প্রচলিত ভুলভ্রান্তি ও কুরবানির আধুনিক মাসায়েল
আলোচক: মুফতি শাহেদুর রহমান শিবলি হাফি.
বি.দ্র. মারকাযুল আফকারের পেজ থেকে সরাসরি লাইভ সম্প্রচার করা হবে। পেজের লিংক নিম্নে প্রদান করা হলো:
https://www.facebook.com/marakazulafkar/?mibextid=ZbWKwL
যাতায়াত: এয়ারপোর্ট হাজী ক্যাম্প থেকে দক্ষিনখান হয়ে দোবাদিয়া বাজারের উত্তরে খাদিজা ইসলাম জামে মসজিদ সংলগ্ন মারকাযুল আফকার আল ইসলামিয়া উত্তরখান ঢাকা।
Markazul Afkar Al Islamia
دنیا میں ہوں دنیا کا طلبگار نہیں ہوں
بازار میں ہوں خریدار نہیں ہوں

আদবের কমতি
-----------------------
মুফতি শাহেদুর রহমান শিবলি হাফিজাহুল্লাহ
কারো মধ্যে যখন আদব-আখলাকের কমতি দেখি তখন আমার ভীষণ রাগ হয়। কিন্তু পরক্ষণেই আবার ভাবি, আমার নিজের মধ্যে এ বিষয়টি অতীতে কতটুকু ছিল এবং বর্তমানে কতটুকু আছে । ভাবি, আমার ছোটদের কাছে আমি যে ধরনের আচরণ আশা করছি আমার বড়দের সঙ্গে আমি সেরকম আচরণ করতে পেরেছি কিনা। ভেবে ভীষণ লজ্জিত হই ।
আমার রব আমার রব এই অধমের প্রতি সীমাহীন অনুগ্রহ করেছেন। শৈশব কাল থেকেই একটি ইলমি পরিবেশে বেড়ে উঠার তৌফিক দান করেছেন। ছোটবেলা থেকে আল্লাহর রহমতে অনেক অধ্যয়নের তৌফিক অধমের হয়েছে। দরসি কিতাবাদির পাশাপাশি আকাবির ও আসলাফ এর লিখিত প্রচুর জীবন গঠনমূলক কিতাবাদির অধ্যয়নের সুযোগ হয়েছে। অনেক আল্লাহওয়ালা ব্যক্তিকে নিজের চোখে দেখার সৌভাগ্য নসিব হয়েছে। মহান আল্লাহর এত বড় অনুগ্রহ সত্ত্বেও স্বীয় অযোগ্যতার কারণে আদব-আখলাকের ছিটেফোঁটাও যেন আমি অর্জন করতে পারি। ভেবে ভীষণ লজ্জিত হই। আমি কিভাবে আদব-আখলাকের জন্য আমার ছাত্র কিংবা অধীনস্তদের করতে পারি?
এটা হল আমার মানসিক অবস্থা। তবে ছাত্র কিংবা অধীনস্তদের কল্যাণার্থে তাদেরকে আদব-আখলাক শিক্ষা দেওয়া উচিত এবং প্রয়োজনে কৃত্রিম রাগ দেখিয়ে হলেও তাদেরকে শাসন করা উচিত।
এডমিন,
Shafiq Jilany- শফিক জিলানী

ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসাপণ্য দিয়ে যাকাত আদায় করা
ব্যবসায়ী ভাইদের জন্য নগদ অর্থে যাকাত আদায় করা জরুরী নয়। বরং ব্যবসাপণ্য দিয়েও যাকাত আদায় করা যায়। এটি অনেক ক্ষেত্রে তাদের জন্য সহজ হয়। কিন্তু মাসআলা না জানার কারণে অনেকে ভাবেন, নগদ অর্থেই যাকাত আদায় করা জরুরি। ফলে কোন কোন ব্যবসায়ীর জন্য যাকাত আদায় করা কঠিন হয়ে যায়। বস্তুত মাসআলা না জানার কারণে অনেক লোক দীনের ওপর আমল করাকে কঠিন ও জটিল করে তুলে। তাই বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের সাথে সম্পর্ক রেখে দ্বীনের উপর আমল করা উচিত।
আপনি একজন ব্যবসায়ী। ধরুন,আজকে আপনার যাকাতবর্ষ পূর্ণ হল। যাকাতের হিসাব সহজে এভাবে করতে পারেন যে, আজকে যদি আপনি আপনার দোকানের সমুদয় পণ্য বিক্রয় করেন তাহলে কত টাকা বিক্রয় করবেন। আপনি স্থির করলেন যে, কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকায় আপনার দোকানের সমুদয় পণ্য আপনি বিক্রি করবেন। তাহলে আপনার উপর পঁচিশ হাজার টাকার পণ্য যাকাত হিসেবে আদায় করা ফরয।
আপনি চাইলে এই ২৫ হাজার টাকা নগদ অর্থ হিসেবেও আদায় করতে পারেন, অথবা ২৫ হাজার টাকার ব্যবসাপণ্য আদায় করতে পারেন। আপনার জন্য যেভাবে সহজ হয় সেভাবেই আদায় করুন।
এডমিন,
Shafiq Jilany- শফিক জিলানী
একজন মুহতামিম সাহেব তার অধীনে থাকা সাধারণ শিক্ষকদের যে বিষয়গুলির প্রতি খেয়াল রাখা খুবই প্রয়োজনঃ
১. হাদীয়াটা তার ফ্যামিলি নিয়ে মোটামুটি স্বাচ্ছন্দে চলার মত হওয়া।
২. শিক্ষক নিজে অথবা তার ফ্যামিলির কেউ অসুস্থতার সময় সহযোগিতা করা।
৩. যথা সম্ভব শিক্ষকদের জন্য তিন বেলা মানসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করা।
৪. মাঝে মাঝে তাদেরকে কিছু অতিরিক্ত হাদিয়া দেওয়া।
৫. একজন শিক্ষক যত কম যোগ্যতা সম্পন্ন হোক না কেন, ছাত্রদের সামনে কখনো তার প্রতি অসম্মান জনক আচরণ না করা।
৬. প্রতি মাসে নাস্তা এবং মোবাইলের জন্য সামান্য খরচ দেওয়া।
৭. যথাসম্ভব তাদের জন্য আরামদায়ক বিছানার ব্যবস্থা করা।
৮. মাঝে মাঝে তাদের পরিবারের হালত জিজ্ঞাসা করে অন্তত সান্তনা মূলক কিছু কথা বলা।
৯. যেহেতু তারা স্ত্রী সন্তান, পরিবার-পরিজন আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব সকলের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন সেহেতু তাদের মন খারাপ থাকাটা স্বাভাবিক। একজন মুহতামিম সাহেব তার মনকে যেকোনোভাবে আনন্দিত রাখার জন্য চেষ্টা করা।
১০. লেখাপড়া ঠিক মতো করানোর জন্য, মাদ্রাসার নিয়ম কানুন সঠিকভাবে মেনে চলার জন্য যত চাপ দেয়ার দিতে পারেন। কিন্তু উল্লিখিত বিষয়গুলির প্রতি খেয়াল রাখা মাদ্রাসা এবং ছাত্রদের কল্যাণের জন্য খুবই জরুরী।
লক্ষণীয় বিষয়,
একজন মুহতামিম সাহেব স্বাধীন হিসেবে যেকোনো কিছু করতে পারেন, স্ত্রী পুত্রের কাছে যখন তখন যেতে পারেন, খেতে পারেন, পিতা-মাতার মুখ যখন তখন দেখতে পারেন, সকল বিষয়েই ইচ্ছা অনুযায়ী চলতে পারেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু একজন সাধারণ শিক্ষক তিনি ঠিক মত স্ত্রী সন্তানের কাছে যেতে পারবেন না, পিতা-মাতার মুখ দেখতে পারবেন না, ফ্যামিলিতে কেউ অসুস্থ হইলে যখন তখন বাড়িতে যেতে পারবেন না, মনের ইচ্ছা অনুযায়ী কোন কিছু খেতে পারবেন না।
কারণ আসা-যাওয়া সহ মাসে তিনদিন ছুটি পেয়ে একজন মানুষ কি আর করতে পারবে। একজন মুহতামিম/কতৃপক্ষ তার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিবেন তাই সে মানতে বাধ্যও থাকেন।
অতএব একজন মুহতামিম সাহেব/কতৃপক্ষ যদি তার ব্যাপারে সদয় না হন, সুচিন্তা না করেন কিভাবে একজন সাধারণ শিক্ষক মনের আনন্দে পড়ালেখা করাবে?
বিধায় মুহতামিম সাহেব/কতৃপক্ষের উচিৎ, শিক্ষক ষ্টাফদের প্রতি সদয় থাকা,মুহতামিম সাহেব যত বেশি আমলদার হবেন তত বেশি মাদ্রাসার উন্নতি হবে, সমস্ত মুহতামিমদের উচিত, একজন হক্কানী বুযুর্গের সাথে সম্পর্ক রাখা, 🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏(কপি পোস্ট)
আহ! এখনকার মাদরাসার দায়িত্বশীলগণ যদি মুহতারাম মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দা.বা. এর মত চিন্তা করতেন_____!!
"ইলম অর্জন ও ব্যক্তিত্ব গঠনে খরচ করতে অভ্যস্ত হও"
মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দা.বা.
‘বর্তমানে মাদরাসাগুলো জনগণের সাহায্য-সহযোগিতায় চলার যে পদ্ধতিটা দেখা যাচ্ছে, এটি মূলত আমাদের আকাবিরের তরিকার বিপরীত। দেওবন্দে কালেকশনের জন্য আলাদা মুহাসসিল আছে। এটি উস্তায-ছাত্রের কাজ নয়। আমাদের দেশে উস্তায-ছাত্রগণ এটি ব্যাপকভাবে আঞ্জাম দিয়ে থাকেন। কুরবানির সময় ছাত্রদের দিয়ে চামড়া কালেকশন করার বিষয়টি সবসময় আমাদের বিবেকে বাধে, আমাদের পীড়া দেয়। একই বাড়ির সামনে ছাত্র-উস্তায চামড়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন, ভিক্ষুকও দাঁড়িয়ে আছে গোশতের জন্য। বাড়িওয়ালা ভিক্ষুকদের ধমকাচ্ছেন, ছাত্র-শিক্ষকদেরও ধমকাচ্ছেন! এমনকি, বাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার ঘটনাও তো আমাদের সামনেই ঘটেছে। এমন দৃশ্য আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। এছাড়া আরও কত রকমের যে লাঞ্ছনাকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়, সেসব তো আমরা নিজের চোখেই দেখেছি। আবার অল্প সময়ে ভালো পরিমাণ অর্থ আয় হওয়াতে কমিটির লোকেরা এটি কোনভাবেই বন্ধ করতে সম্মত হয় না। তাছাড়া রমজান মাসে কালেকশনের জন্য শিক্ষকদের বাধ্য করার ব্যাপারটিও আমাদের মাদরাসাগুলোতে বিচিত্র নয়। কিন্তু সেই কালেকশন করতে গিয়ে তাদের মান-মর্যাদা ঠিক থাকবে কিনা তা যেন দেখার কেউ নেই।
হযরত থানভি রহ.-এর বক্তব্য ছিল, কোনো ছাত্র তো নয়ই, কোনো শিক্ষকও কালেকশন করতে যাবে না। এমনকি, এর জন্য যদি মাদরাসার সংখ্যা কমেও যায়, তো যাবে; তবু দীনের জন্য ভালো। তাই আমরা আমাদের এখানে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ছাত্র-উস্তায সবার সম্মানই যেন সুরক্ষিত থাকে। কালেকশনের জন্য তারা মানুষের বাড়ি বাড়ি যাবে না। চামড়ার কালেকশন করবে না। তেমনিভাবে উস্তাযগণও রমজানে জাকাত কালেকশনের জন্য রশিদবই নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করবে না। হ্যাঁ, নিজের সম্মান রক্ষা করে যেটুকু করা যায়, তা করবেন। পারলে করবেন, না পারলে করবেন না—কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। অর্থনৈতিক বিষয়টি সামনে রেখে আমরা তালিমগ্রহণে আকাবির ও আসলাফের যে চেতনা ও পদ্ধতি ছিল, সেটি ফিরিয়ে আনার চিন্তা করছি। অর্থাৎ ইলম শিক্ষার জন্য ছাত্র তার সাধ্যমতো খরচ করবে; যেমনটি সালাফের যামানায় ইলম হাসিলের যাবতীয় খরচ শিক্ষার্থী নিজে বহন করত। কারও কারও জীবনীতে তো এও পাওয়া যায় যে, বাবার রেখে যাওয়া বিপুল সম্পদের পুরোটাই ইলমের পথে ব্যয় করে দিয়েছেন। তাই আমাদের চিন্তা হলো, প্রতিষ্ঠান নয়, শিক্ষার্থী নিজেই নিজের খরচ বহন করবে।
সাধারণত আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ম হলো, নির্ধারিত নম্বর পেলে মাসিক প্রদেয় মওকুফ হয়ে যায়। কিন্তু আমরা এই ফিকির সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, মাসিক প্রদেয় ফ্রি হওয়ার সম্পর্ক থাকবে সামর্থ্যরে সঙ্গে, নম্বরের সঙ্গে নয়। আর নম্বর বিবেচ্য হবে কেবল ভর্তির ক্ষেত্রে। নম্বর পেলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে, নইলে পারবে না। এর অর্থ এই নয় যে, এখানে কেবল ধনীরাই সুযোগ পাবে, অন্যরা পাবে না। বরং ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবার জন্যই এখানে অবারিত সুযোগ থাকবে। তবে, প্রত্যেকেই সাধ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে। স্বচ্ছলতা নেই বলে যে সে কিছুই দেবে না, এমন যেন না হয়। যে যতটুকু পারবে ততটুকুই দেবে, বাকিটা প্রতিষ্ঠান বহন করবে। খরচ করতে অভ্যস্ত হওয়া যেমন ইলমের জন্য দরকার, তেমনই নিজের ব্যক্তিত্ব গঠনের জন্যও দরকার। এ অভ্যাস না থাকলে ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় না।
একজন লোক যত বড়ই হোক না কেন, যদি তার মাঝে অন্যকে দেওয়ার অভ্যাস গড়ে না উঠে, কেবল গ্রহণ করেই সন্তুষ্ট থাকে, তাহলে কোনদিনই তার মানসিকতা বড় হয় না। তার প্রতি মানুষের ভক্তি-শ্রদ্ধা জন্মায় না। মানুষ তাকে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখে না। সমাজে সে কোনও প্রভাব রাখতে পারে না, অর্থ-বিত্তের সামনে সে গলে যায়। এজন্য কেবল যোগ্যতাই যথেষ্ট নয়, যোগ্যতা ব্যবহারের জন্য এই ব্যক্তিত্বটুকুও অত্যন্ত জরুরি।’
ইনশাআল্লাহ আজ ১০/৬/২০২৩ ইং রোজ শনিবার আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত মারকাযুল আফকারে সাপ্তাহিক পঞ্চম ইসলাহি মজলিস অনুষ্ঠিত হবে। এতে আশা করি আপনিও শরিক হবেন এবং অন্যদেরকেও দাওয়াত করে নিয়ে আসবেন ।
যাতায়াত: এয়ারপোর্ট হাজী ক্যাম্প থেকে দক্ষিনখান হয়ে দোবাদিয়া বাজারের উত্তরে খাদিজা ইসলাম জামে মসজিদ সংলগ্ন মারকাযুল আফকার আল ইসলামিয়া উত্তরখান ঢাকা।
ইখতিলাফি মাসআলা শুধু একান্ত ও খাস মজলিসে আলোচনা করা যায়, এগুলো সাধারণ ও আম মানুষের মজলিসে আলোচনার বিষয় নয় ।(মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক হাফি.)
কোন যোগ্যতাসম্পন্ন হক্কানি আলেমের সাথে সম্পর্ক রাখা ব্যতীত নিজে নিজে বই পড়ে, লেকচার শুনে, কিংবা যেকোনো ব্যক্তির কথা শুনে বা আমল দেখে দীনের ওপর চলা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ইনশাআল্লাহ আজ ২০/৫/২০২৩ ইং রোজ শনিবার আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত মারকাযুল আফকারে সাপ্তাহিক চতুর্থ ইসলাহি মজলিস অনুষ্ঠিত হবে।
যাতায়াত: এয়ারপোর্ট হাজী ক্যাম্প থেকে দক্ষিনখান হয়ে দোবাদিয়া বাজারের উত্তরে খাদিজা ইসলাম জামে মসজিদ সংলগ্ন মারকাযুল আফকার আল ইসলামিয়া উত্তরখান ঢাকা।
মারকাযুল আফকার আল-ইসলামিয়া সুরের তুলনায় জ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
ইনশাআল্লাহ আগামীকাল ১৩/৫/২০২৩ ইং রোজ শনিবার আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত মারকাযুল আফকারে সাপ্তাহিক তৃতীয় ইসলাহি মজলিস অনুষ্ঠিত হবে।
যাতায়াত: এয়ারপোর্ট হাজী ক্যাম্প থেকে দক্ষিনখান হয়ে দোবাদিয়া বাজারের উত্তরে খাদিজা ইসলাম জামে মসজিদ সংলগ্ন মারকাযুল আফকার আল ইসলামিয়া উত্তরখান ঢাকা।
#ছাত্রদের জীবন গড়ার ৫টি মূলনীতি :
১. নামাযের গুরুত্ব
২. উস্তাদের আনুগত্য
৩. পিতা-মাতার সম্মান
৪. মিথ্যা কথা বর্জন
৫. সময়ের মূল্যায়ন
ইনশাআল্লাহ আজ ৬/৫/২০২৩ ইং রোজ শনিবার আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সাপ্তাহিক ইসলাহি প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হবে। স্থান: মারকাযুল আফকার আল ইসলামিয়া দোবাদিয়া উত্তরখান ঢাকা।

#মারকাযুল আফকার আল ইসলামিয়া উত্তরখান ঢাকা একমাত্র বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর উপর ভরসা করে। ইলমে দীনের অমর্যাদা করে এখানে কালেকশন করা হয় না এবং ছাত্রদের মাধ্যমেও কালেকশন করানো হয় না।
মারকাযুল আফকারে নুরানি, নাযেরা ও হিফযুল কুরআন বিভাগে ভর্তি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ভর্তি কিংবা যেকোনো প্রয়োজনে সরাসরি অথবা মোবাইল ফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
নিবেদক–
মুফতি শাহেদুর রহমান সন্দ্বীপি
পরিচালক, অত্র মাদ্রাসা।
সাবেক উস্তাযুল হাদিস-জামিয়াতুল মানহাল আল-কওমিয়া উত্তরা ঢাকা।
অফিস ঠিকানা:
খাদিজা ইসলাম জামে মসজিদ সংলগ্ন, দোবাদিয়া উত্তরপাড়া, উত্তরখান, ঢাকা ।
মোবাইল নম্বর, 01912-729557
মোবাইল নম্বর, 01889-093055
মোবাইল নাম্বার, 01856208920

#পড়ালেখার সঙ্গে সঙ্গে ইমান, আমল ও সুন্দর আখলাক শিখার জন্য আসুন মারকাযুল আফকার আল-ইসলামিয়াহ উত্তরখান ঢাকা'য়।
ভর্তি কিংবা যেকোনো প্রয়োজনে সরাসরি অথবা মোবাইল ফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
নিবেদক–
মুফতি শাহেদুর রহমান সন্দ্বীপি
পরিচালক, অত্র মাদ্রাসা।
সাবেক উস্তাযুল হাদিস-জামিয়াতুল মানহাল আল-কওমিয়া উত্তরা ঢাকা।
অফিস ঠিকানা:
খাদিজা ইসলাম জামে মসজিদ সংলগ্ন, দোবাদিয়া উত্তরপাড়া, উত্তরখান, ঢাকা ।
মোবাইল নম্বর, 01912-729557
মোবাইল নম্বর, 01889-093055
মোবাইল নাম্বার, 01856208920
কোথায় ভর্তি হবেন?
------
পুনঃ লিখন: মাওলানা জাবের কাসেমী
বছরের সূচনাতে ছাত্ররা মাদরাসা নির্বাচনে হিমশিম খায়। কেউ কেউ উপযুক্ত মাদরাসায় থেকেও তার কদর করতে পারেনা৷ ফলে নেয়ামতের নাশুকরী করে। আবার কেউ কেউ অনুপযুক্ত প্রতিষ্ঠানে থেকে জীবন নষ্ট করে। তাদের জন্য রাহবারে মিল্লাত আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ. এর কিছু নির্দেশনা। আল্লামা কাসেমী বলেন, মাদরাসা নির্বাচনে চারটি বিষয়ের খেয়াল রাখা আবশ্যকীয়।
১. সোহবতে আহলে দিল
অর্থাৎ একজন ছাত্র যে প্রতিষ্ঠানে যাবে সেখানে যেন কমপক্ষে সে একজন আল্লাহ ওয়ালা ও নিসবত ওয়ালা বুযুর্গকে পায়৷ যার সোহবতে ছাত্রদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরিণ পরিবর্তন হয়৷ যার মাঝে দুনিয়ার উপর আখেরাতের ফিকির প্রাধান্য হয় ৷
২. তালিম ও তরবিয়ত
তালিম বলতে আমরা কী বুঝি? মাদরাসার পক্ষ থেকে প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক এভাবে শেষ পর্যন্ত যা পড়ানো হবে সেটা তালিম৷
আমার উস্তাজে মুহতারাম হযরত মাওলানা শায়খুল হাদীস যাকারিয়া রহ. বলেন, তালিম হল যে কোনো কিতাবকে উস্তাজ শুরু থেকে এই পন্থায় পড়াবে যে, বাকি কিতাব সে নিজেই ওই পন্থায় পড়ে শেষ করতে পারে ৷
তরবিয়ত বলতে কী বুঝি?
ছাত্রদেরকে নিজের মতের বিরুদ্ধে গেলেই বকাঝকা! আল্লাহ হেফাজত করুন ৷ তরবিয়ত বলতে ছাত্রের খেলাফে শরা আদত যেন ইবাদতে পরিবর্তন হয় উস্তাজের দিক নির্দেশনায়।
৩. যোগ্য উস্তাযের তত্বাবধায়ন গ্রহণ করা
অর্থাৎ যে মাদরাসায় ভর্তি হবে সেখানে যোগ্য উস্তাযের তত্বাবধানে চলার চেষ্টা করা ৷ প্রশ্ন হলো যোগ্য উস্তায কে? যার কমপক্ষে দুটি গুণ হবে-
ক. ছাত্র গঠনে তার অন্তরে ব্যথা ও দরদ থাকা ৷
খ. অধিক পরিমানে অধ্যায়ন থাকা এবং শাস্ত্রীয় অভিজ্ঞ হওয়া ৷ দরসে ছাত্রদের মেধা ও প্রয়োজন অনুপাতে আলোচনা পেশ করতে সক্ষম হওয়া ৷
৪. মুতালাআ৷
মাদরাসায় মুতালাআর খোরাক দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত কিতাবের ব্যবস্থা আছে কিনা খেয়াল করা৷
উপরোক্ত চারটি বিষয় যে প্রতিষ্ঠানে রয়েছে সে প্রতিষ্ঠানকে ছাত্ররা নিজের জন্য মুনাসিব মনে করতে পারে৷ চাই সে প্রতিষ্ঠান মফস্বলে হোক বা শহরে হোক৷ আর যে প্রতিষ্ঠানে উপরোক্ত ব্যবস্থা থাকার পর ও ছাত্ররা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে তারা আল্লাহ তায়ালার নিয়ামতের বে কদরি করে৷ আল্লাহ তায়ালা সকলকে নিয়ামতের কদর করার তাওফিক দান করুন৷
ভর্তি সংক্রান্ত ঘোষণা...
ঈদের ছুটি কাটিয়ে অনেকেই আপন কর্মস্থলে ফিরছেন। সন্তানকে মাদরাসায় দেওয়ার নিয়ত করেছেন৷ সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে ভর্তি করাবেন।
আমাদের মারকাযের ভর্তি কার্যক্রম দ্রুতই শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।
Markazul Afkar Al Islamia
ঈদের স্বরূপ ও উদযাপনের পদ্ধতি
-- মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
ঈদুল ফিতর-এর তাৎপর্য হল মাহে রমযান লাভ করা এবং রোযার তাওফীকপ্রাপ্ত হওয়ার উপর আনন্দ প্রকাশ করা। আর এই মহা নেয়ামতের উপর আল্লাহ তাআলার শোকরগোযারী ও তার বড়ত্ব বয়ান করাই হল এই আনন্দের মূলকথা। আনন্দ প্রকাশের পদ্ধতি শরীয়ত এই নির্ধারণ করেছে যে, গোসল করে পাক-সাফ হয়ে যাও। বেজোড় সংখ্যক খেজুর খাও কিংবা কোনো মিষ্টিদ্রব্য খাও। সদাকায়ে ফিতর আদায় কর। নিজের কাছে বিদ্যমান কাপড়গুলোর মধ্যে সর্বোত্তম কাপড় পরিধান কর, যা অবশ্যই পরিষ্কার হতে হবে। এরপর তাকবীর বলতে বলতে ঈদগাহের দিকে যাও। ইমামের পিছনে নামায আদায় কর এবং খুতবা শ্রবণ কর। ফেরার সময় সম্ভব হলে ভিন্ন রাস্তা দিয়ে ফিরে আস। আসা-যাওয়ার সময় এবং ঈদগাহে যাদের সঙ্গে সাক্ষাত হয় তাদেরকে সালাম কর। কারো সঙ্গে নতুন সাক্ষাত হলে মুসাফাহাও কর। একে অন্যকে কবুলিয়াতের দুআ দাও। এই সময় সাহাবায়ে কেরাম এই দুআ করতেন-
تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكُمْ
-ফাতহুল বারী ২/৫১৭
‘ঈদমোবারক’ বলে শুভকামনা প্রকাশ করা যদিও মুবাহ, কিন্তু তা একটি রসমের মতো হয়ে গিয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় যে, সালামের পরিবর্তে এই শব্দটাই ব্যবহার করা হয়। মোটকথা, এ সময়ের মাসনূন দুআ ওইটাই যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই হল ঈদুল ফিতরের দিন ঈদ উদযাপন করে আল্লাহ তাআলার শোকর আদায়ের পন্থা। এর বাইরে যে সব প্রচলিত বিষয় রয়েছে, যদি সেগুলোতে কোনো না-জায়েয বিষয় ও অশ্লীলতা না থাকে, তবে তা মোবাহ পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে। ওগুলো ঈদের মাসনূন আমল নয়। ওগুলোকে যদি মাসনূন মনে না করা হয় এবং এত গুরুত্ব না দেওয়া হয় যে, পরিত্যাগ করা দোষণীয়, তবে তাতে অসুবিধা নেই। অন্যথায় ওগুলো পরিত্যাজ্য বিষয়াদির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আর যেসব নাজায়েয ও অশ্লীল কার্যকলাপ সমাজে প্রচলিত রয়েছে সেগুলো সর্বাবস্থাতেই নাজায়েয, ঈদের বরকতময় দিবসে সেগুলোতে লিপ্ত হওয়া আরো মারাত্মক না-জায়েয বলে গণ্য হবে।
ঈদকে‘ওয়ীদ’ বানাবেন না
আরবী ভাষায় ‘ঈদ’ অর্থ আনন্দ আর ‘ওয়ীদ’ অর্থ অভিশাপ। আল্লাহর করুণা অভিশাপে পরিণত হয় নেয়ামতের বে কদরী করার দ্বারা কিংবা নেয়ামতের অপব্যবহার করার দ্বারা। ঈদ আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। প্রত্যেক জাতির ঈদ তথা উৎসব রয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে দু’টো ঈদ ( ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা) দান করেছেন।
বাহ্যত অনেকের মনে হতে পারে যে, এটাও অন্যান্য জাতির পর্ব-উৎসবের মতোই একটি উৎসবমাত্র, কিন্তু বাস্তবতা এই যে, ইসলামী ঈদ অন্যান্য জাতির পর্ব-উৎসব থেকে সব দিক থেকে স্বাতন্ত্রের অধিকারী। স্বরূপ ও তাৎপর্য এবং বিধান ও উদযাপন-পদ্ধতি সব দিক থেকে এতে ভিন্নতা রয়েছে। এ বিষয়টি সংক্ষিপ্ত আকারে আলকাউসারের অক্টোবর-নভেম্বর ’০৬ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
যদি ইসলামী ঈদকে শুধু একটি বার্ষিক উৎসব গণ্য করা হয় এবং অন্যান্য জাতির মতো ঈদের সঙ্গেও মনগড়া কার্যকলাপ যুক্ত করা হয় তবে নিঃসন্দেহে ঈদ ‘ওয়ীদ’-এ (অভিশাপে) রূপান্তরিত হবে। আমাদের সমাজে এখন ঈদ উপলক্ষে যে পন্থা-পদ্ধতি প্রচলিত তাতে ঈদ ‘ওয়ীদ’-এ (অভিশাপে) পরিণত হওয়ার মতো অনেক বিষয় বিদ্যমান। যথা :
১. ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য এই যে, রমযানের মতো মাস লাভ করা এবং রোযার মতো ইবাদতের তাওফীকপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় এবং তাঁর বড়ত্ব ও মহিমা বর্ণনা। কিন্তু এই ‘মুসলিম সমাজে’ হাজারো আল্লাহর বান্দা এমন পাওয়া যায় যাদের না রোযার গুরুত্ব আছে, না নামাযের, কিন্তু ঈদের ‘শোভাযাত্রায়’ তারা সবার চেয়ে অগ্রগামী। যদি ঈদের দিনই তাদের আত্মোপলব্ধি হয় এবং খালেস দিলে তওবা করে আহকামে শরীয়তের পাবন্দীর দিকে ফিরে আসা হয় তবে তো অতি উত্তম, অন্যথায় এদের স্বভাব-চরিত্রই এই যে, আকাইদ ও আ’মাল এবং ফরয-ওয়াজিবের কোনো মূল্য তাদের কাছে নেই,তারা নিজেদের মুসলমানিত্বের প্রমাণ শুধু এমন হাতেগোনা কিছু দিবসে প্রদান করতে আগ্রহী যেগুলোতে কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। আর সেগুলোর সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বলাবাহুল্য যে, এই মানসিকতা- সে দ্বীনী জ্ঞানশূন্যতার কারণে হোক বা বুদ্ধিবৃত্তিক (?) কারণে- অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা ইসলমের অত্যন্ত ভুল রূপায়ন। কোনো সন্দেহ নেই যে, এই ধরনের মানসিকতা আল্লাহ তাআলার অভিশাপকে ত্বরান্বিত করে। আল্লাহ তাআলাই আমাদের হেদায়েত ও হেফাযতের মালিক। তাঁর নিকটেই হেদায়েত ও হেফাযত প্রার্থনা করি।
২. রমযানের মর্যাদা ও পবিত্রতা বিনষ্ট করার মধ্যেও যাদের কোনো সংকোচ বোধ হয় না তাদেরকে ঈদগাহে উপস্থিত দেখা যায়। রমযান মাসে না সিনেমাহলগুলোর উপর কোনো নিয়ন্ত্রন, না ভিসিআর, ডিশ, পত্র-পত্রিকার অশ্লীল বিষয় ও পাতাগুলোর উপর কোনো নিয়ন্ত্রন। আর না প্রকাশ্যে পানাহার এবং হোটেল-রেস্তোরা, কফিশপ, রেস্ট হাউস ইত্যাদির বিলাসিতা ও অশ্লীলতার উপর কোনো বিধিনিষেধ। না রাষ্ট্রীয়ভাবে, না সামাজিকভাবে। আর না ওইসব লোকদের মধ্যে এতটুকু চক্ষুলজ্জা যে, যে মাসে বড় বড় শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় সে মাসে তো অন্তত নিজেদেরকে এবং নিজেদের অধীনস্থদেরকে অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখা কর্তব্য।
চিন্তার বিষয় এই যে, এইসব লোক কিন্তু ঈদগাহে উপস্থিত থাকে। ঈদগাহে উপস্থিত হওয়া যদি তওবার নিয়তে হয়, নিজেকে অপরাধী মনে করে হয় এবং ঈদের নেয়ামতের কদরদানীর জন্য হয় তবে তো খুবই উত্তম, কিন্তু বাহ্যিক অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হয় না; বরং শুধু একটা আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করাই উদ্দেশ্য বলে মনে হয়। বলাবাহুল্য যে, এই মানসিকতাও লা’নত ও অভিশাপের কারণ এবং ঈদকে ‘ওয়ীদে’ রূপান্তরিত করার মাধ্যম।
৩. ঈদ ইসলামের শিআর (নিদর্শন)। ঈদের দিনগুলো অত্যন্ত বরকতপূর্ণ। ইসলামে ‘শিআর’-এর প্রসঙ্গটি অত্যন্ত নাযুক ও সংবেদনশীল। বিশেষ বরকতপূর্ণ সময়গুলোর মর্যাদা বিনষ্ট করা অত্যন্ত ভয়াবহ। সামান্য চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারি যে, ঈদকে কেন্দ্র করে সিনেমাহলগুলোতে এবং বিভিন্ন টিভি-চ্যানেলে যে বিশেষ উদ্যোগ-আয়োজন গ্রহণ করা হয়ে থাকে- এটা কি এই ইসলামী নিদর্শনের প্রকাশ্য ও খোলাখুলি অমর্যাদা করা নয়? এসব বিষয়ের ব্যবস্থাপনা এবং প্রচার-প্রচারণায় যারা যেকোনোভাবে অংশগ্রহণ করে এবং যারা এসব অশ্লীল দৃশ্য অবলোকনের মাধ্যমে ঈদ-উৎসব উদযাপন করে তারা সবাই কি এই ‘শিআরে ইসলাম’-ইসলামের নিদর্শনের অমর্যাদার সঙ্গে জড়িত নয়? ভেবে দেখুন, অবশেষে এটা কি ঈদ থাকল না ওয়ীদে রূপান্তরিত হল?
৪. ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনের অমর্যাদার আরেকটি বিষয় নারীদের মধ্যে দেখা যায়। শহরে ও গ্রামে ঈদের দিনগুলোতে নারীরা বেপর্দা বের হয়। সৌন্দর্যের প্রদর্শনী করে রাস্তা-ঘাটে ঘুরতে থাকে। এ বাড়ি থেকে সে বাড়ি, এ জায়গা থেকে সে জায়গা ...।
পর্দাহীন যদি হতেই হয় তবুও অন্তত ইসলামী ঈদের দিনগুলোতে সংযত থাকা উচিত। নিজের উপর এতখানি অত্যাচার তো করা উচিত নয় যে, ইসলামী নিদর্শনগুলোরও অমর্যাদা করতে আরম্ভ করলেন! এই ঈদ তো পাশ্চাত্য সভ্যতা আমাদের প্রদান করেনি, এটা প্রদান করেছে ইসলাম। অতএব ইসলামের বিধান মোতাবেক তা উদযাপন করাই মুসলমানের কর্তব্য। পাশ্চাত্যের ফ্যাশন, পাশ্চাত্যের নগ্নতা ও অশ্লীলতাকে এর সঙ্গে সংযু্ক্ত করা কি মুসলমানের কাজ হতে পারে?
৫. ঈদকে‘ওয়ীদ’ ও অভিশাপ বানানোর আরেকটি রীতি আজকাল মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে এবং সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে। যেহেতু ধরে নেওয়া হয়েছে যে, ইসলামী ঈদ নিছক একটি উৎসব কিংবা এতে উৎসবের দিকটিই প্রধান তাই তা উদযাপনের জন্য সাজসজ্জার সীমাতিরিক্ত আয়োজনে ডুবে যেতে দেখা যায়। রমযানের শেষ দশক এ কাজেই বরবাদ হয়ে যায়। এই সময় দিন-রাত মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে প্রচন্ড ভিড় থাকে। পুরুষের চেয়ে নারীদের ভীড়ই বেশি, আর অধিকাংশই বেপর্দা। মজার বিষয় এই যে, এই কেনাকাটায় ওইসব লোকেরাই সবচেয়ে অগ্রগামী, যাদের না রয়েছে রোযা-তারাবীর চিন্তা, না রমযানের মর্যাদা রক্ষার অনুভূতি। তাদের তো প্রকৃতপক্ষে ঈদগাহেই উপস্থিত হওয়ার অধিকার থাকে না অথচ তারাই ঈদ-শপিংয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত। হাদীস শরীফে কুরবানী ঈদ সম্পর্কে এসেছে যে- ‘যার কুরবানী করার ইরাদা নেই সে যেন ঈদগাহে না আসে।’ কুরবানী, যা ওয়াজিব কিংবা (কোনো কোনো মাযহাব মতে) সুন্নতে মুয়াক্কাদা সেটা পরিত্যাগ করার কারণেই যখন এই ধমক দেওয়া হল যে, সে যেন ঈদগাহে না আসে তাহলে রোযার মতো ফরয বিধান যারা পরিত্যাগ করে তাদের কীভাবে ঈদগাহে হাজির হওয়ার অধিকার থাকে? হাঁ, কেউ যদি নিজেকে অপরাধী মনে করে অনুতপ্ত হয়ে ঈদগাহে উপস্থিত হয় তাহলে সেটা ভিন্ন কথা।
একটি শ্রেণী-মাশাআল্লাহ- রোযা রাখেন কিন্তু রমযানের শেষ দশকে তারাবী ছেড়ে তারাও ঈদ শপিংয়ের চক্করে ফেঁসে যান। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, রমযানে দিবসের করণীয় হল রোযা আর রাতের করণীয় তারাবী ও তাহাজ্জুদ। তারাবী হল সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এ থেকে বঞ্চিত থাকার অর্থ হল হাফেযের মুখ থেকে কুরআন মজীদ শ্রবণ করা থেকে বঞ্চিত থাকা। এটা কত বড় ক্ষতিগ্রস্ততা!
এরপর যখন নারীরা নির্লজ্জ বেপর্দা হয়ে মার্কেটগুলো দখল করে বসে আছে তখন পুরুষরা যদি তাদের ঈমানকে রক্ষা করার জন্য এবং দৃষ্টির হেফাযতের জন্য সংকল্পবদ্ধ হয়ে মার্কেটে ঘোরাঘুরি বর্জন করেন তাহলে কী অসুবিধা?
কিছু মানুষ এমনও আছেন যারা মাশাআল্লাহ রোযার সঙ্গে তারাবীরও পাবন্দী করেন এবং তারাবীতে খতমও করে থাকেন, কিন্তু তারা পনেরো বা বিশ রমযানের মধ্যেই খতম শেষ করে দেন এবং শেষ দশকে শুধু সূরা তারাবী পড়ে থাকেন, জামাতের সঙ্গে কিংবা একা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কুরআন খতম থেকে আগে ফারেগ হওয়ার উদ্দেশ্য থাকে বাইরে যাওয়া আসায় সুবিধা সৃষ্টি করা। অথচ গোটা রমযানের মধ্যে শেষ দশকের ফযীলতই সবচেয়ে বেশি। এজন্যই এতে ইতিকাফ এবং লায়লাতুল কদর তালাশ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সালাফে সালেহীন রমযানের প্রথম বিশ দিনের তুলনায় শেষ দশকে নামায, তেলাওয়াত এবং অন্যান্য ইবাদতে অনেক বেশি মেহনত করতেন। এজন্য শেষ দশকের রাতগুলো খুব বেশি করে আবাদ রাখা কর্তব্য। এই বরকতময় রাতগুলো কোনোভাবেই মার্কেটিংয়ের পিছনে নষ্ট করা উচিত নয়।
এখানে একটা বড় ভুল ধারণা এই যে, অধিকাংশ মানুষ ঈদের দিনের জন্য নতুন পোশাক পরিধান করা এবং অন্যদের পরিধান করানো বা হাদিয়া দেওয়াকে ঈদের অপরিহার্য অংশ মনে করে অথচ এই কথাটা একদম গোড়া থেকেই সঠিক নয় যে, ঈদের জন্য নতুন কাপড় মাসনূন; বরং দলীল দ্বারা শুধু এটুকু প্রমাণ হয় যে, নিজের কাছে বিদ্যমান কাপড়গুলোর মধ্যে উত্তম ও পরিষ্কার কাপড়টি পরিধান করবে।
كَانَ ابْنُ عُمَرَ يَلْبَسُ فِيْ الْعِيْدَيْنِ أَحْسَنَ ثِيَابِهِ
এক প্রস্থ উত্তম কাপড় বানিয়ে কিংবা ক্রয় করে তা জুমআ ও ঈদে পরিধান করাতে কোনো অসুবিধা নেই। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একটি উত্তম পোশাক ছিল যা তিনি জুমআ, ঈদে কিংবা বিভিন্ন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাত করার সময় পরিধান করতেন। -আসসুনানুল কুবরা বায়হাকী ৩/২৮০-২৮১; যাদুল মাআদ ১/৪২৫
মোটকথা, পরিষ্কার ধোয়া কাপড় যা বিদ্যমান কাপড়গুলোর মধ্যে যে কাপড়টি সবচেয়ে উত্তম তা ঈদের দিন পরিধান করা কাম্য। যদি ঘটনাক্রমে তা নতুনও হয় তাহলেও অসুবিধা নেই, কিন্তু প্রত্যেক ঈদের জন্য নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করাকে মাসনূন মনে করা একদম ঠিক নয় এবং এর ওপর শরীয়তের কোনো দলীলও বিদ্যমান নেই।
মুসলমানদের আর্থিক স্বচ্ছলতার যুগ অতীত হয়েছে (যখন তাদের দ্বীন ও ঈমানের হালতও বর্তমানের চেয়ে হাজার গুণ ভালো ছিল) কিন্তু ইতিহাস থেকে এটা প্রমাণ করা যায় না যে, তাদের কাছে রমযান ও ঈদুল ফিতর বিশেষ ব্যবসা-বাণিজ্যের মওসুম ছিল, যেখানে ঈদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ-আয়োজন থাকত। এখন তো বিষয়টি শুধু কাপড়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, নতুন কাপড়ের সঙ্গে চাই নতুন জুতো, মহিলাদের সাজসজ্জার সকল উপকরণ নতুন হওয়া চাই, বাচ্চাদের জন্যও সবকিছু নতুন হওয়া চাই। ঘরের আসবাবপত্র নতুন হওয়া চাই। পুরানো শুধু একটি বস্ত্তই, তা হচ্ছে ঈমান ও আমল। একে উন্নত ও নতুন করার কোনোই আয়োজন নেই। বলাবাহুল্য, মুসলিম সমাজের এটা এক দুর্ভাগ্যজনক চিত্র, যার নজির বিগত শতাব্দীগুলোতে পাওয়া যাবে না।
কেউ বলতে পারেন যে, ইসলামে জায়েয সাজসজ্জাকে বৈধ রাখা হয়েছে এবং ঈদের সময় তা পছন্দনীয়ও বটে? অবশ্যই পছন্দনীয় তবে একে সীমার মধ্যে রাখা হলে। মুবাহ সাজসজ্জার মধ্যেও বাড়াবাড়ি করা নিষেধ। এরপর এখানে আলোচনা শুধু সাজসজ্জা সম্পর্কেই নয়; বরং এতে সীমালঙ্ঘন করে রমযানের সবচেয়ে বরকতময় সময়গুলোকে বিনষ্ট করা সম্পর্কেও। প্রশ্ন এই যে, শরীয়তে এই প্রান্তিকতাও কি কাম্য ও পছন্দনীয়, নাউযুবিল্লাহ?! এরপর মুবাহ ও বৈধ সাজসজ্জাকে বাহানা বানিয়ে যারা অবৈধ সাজসজ্জার পেছনে পড়ে যায় তাদের কথা তো ভিন্নই!
মোটকথা, রমযনের শেষ দশক নিজেকে এবং নিজেদের পরিবার-পরিজনকে অন্যান্য ঝামেলা থেকে মুক্ত করে ইবাদতে নিমগ্ন করা উচিত। নফল নামায, তেলাওয়াত, যিকর ও দুআ ইত্যাদিতে মশগুল হওয়া কর্তব্য। নিজেও ইতিকাফ করার চেষ্টা করবে এবং ঘরের অন্যান্য লোকদেরকেও ইতিকাফের সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করবে। মহিলাদেরকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করবে। একই বছর সবার পক্ষে সম্ভব না হলে পালাক্রমে করার চেষ্টা করবে। আর দুই তিন দিনের নফল ইতিকাফ তো প্রতি রমযানে প্রত্যেকেই করতে পারেন।
আমাদের মনে রাখা উচিত যে, রমযানের শেষ দিনগুলো ঈদ-উদযাপনের প্রস্ত্ততি গ্রহণের জন্য নয়; বরং ঈমান ও আমলের তরক্কীর জন্য। আমরা যদি আমাদের কর্মের মাধ্যমে এর বিপরীত কিছু প্রমাণ করি তাহলে সেটা হবে ইসলামের অত্যন্ত ভুল রূপায়ন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাযত করুন ও সাহায্য করুন। আমীন।
[ মাসিক আলকাউসার » রমযান ১৪২৯ . সেপ্টেম্বর ২০০৮ ]
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Location
Category
Contact the school
Telephone
Website
Address
Dhaka
Dhaka, 1217
I am working as an Associate Professor of Marketing at the University of Dhaka, Bangladesh. Besides t
Sector-6, Uttara Model Town
Dhaka, 1230
RAJUK Uttara Model College(RUMC) is a co-educational Bangladeshi High school(Grade VI-XII) situated
Central Office: 48/1, South Mugdapara
Dhaka, 1214
অনুসন্ধিৎসু চক্র (Science Seekers Group) Anushandhitshu Chokro is one
78, Green Road (3rd Floor), Farmgate
Dhaka, 1205
The Official Page of Udvash Academic & Admission Care.
Campus 1/House#69/D/1, Road#6/A, Dhanmondi, Dhaka/1209. , , Campus 2/House#47, R
Dhaka, 1205,1230
British Standard School an emblem of excellence "Fun,friendship & Learning in a healthy ,natural en
3/1, Nobodip Bosak Lane, Luxmibazar
Dhaka, 1100
Anam Sir is teaching academic English since 1994 , when he was a student of 1st year honours.Now he
House No. 6/10, Block-F, Lalmatia (Satmosgid Road)
Dhaka, 1207
ACADEMIA was established in Dhaka in 2002. ACADEMIA is an English Medium School which offers education from Playgroup to A’ Level standard. ACADEMIA follows the Edexcel curriculum. www.academiabd.com
Sector-11, Uttara
Dhaka, 1230
Its an one stop resource for all IELTS materials.
Axis Education, Beyond
Dhaka
He is not only a very good Bangla teacher of O Level but also a good human being too