আলহামদুলিল্লাহ। সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।
Talimuddin academy sreemongal
Nearby schools & colleges
Zaria
Rajshahi Division
Quận, Ho Chi Minh City
Girga
Begusarai Bihar, Rajshahi Division
Baba Sahib Camp, Mehtar Lam
Alipur Janubi, punjab
Rajshahi Division
Pkp, Lakki Marwat
Ho Chi Minh City 70000
6943001
Habib Street, Lahore
Kampung Raja, Rajshahi Division
Rajshahi Division
عن عثمان بن عفان رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: خَيرُكُم من تعلَّمَ القرآنَ وعلَّمَهُ
Operating as usual
সীরাতুন নাবী. (সা.) বিষয়ক ও অন্যান্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ সমূহ
বর্তমান সময়ে সীরাত অধ্যয়নের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা
-- মাওলানা মুহাম্মাদ শীছ ইদরীস
https://www.alkawsar.com/bn/article/851/
সীরাত পাঠের প্রয়োজনীয়তা
-- মাওলানা আ.ব.ম সাইফুল ইসলাম
https://www.alkawsar.com/bn/article/1240/
ব্যক্তি ও সমাজ গঠনে সীরাতের ভূমিকা
-- মুহাম্মাদ ওবায়দুল্লাহ, মুহাম্মাদ সিফাতুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/1914/
সমাজ গঠনে সীরাতের ভূমিকা
-- মুহাম্মাদ সিফাতুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/1952/
https://www.alkawsar.com/bn/article/1969
সীরাত : মানব জীবনের সর্বোত্তম নমুনা
-- মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2055/
জালালুদ্দীন সুয়ূতী রাহ.-এর আলখাসাইসুল কুবরা : একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা
-- মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
https://www.alkawsar.com/bn/article/521/
রাসূলের আদর্শেই গড়ে উঠে উন্নত সমাজ
-- ড. সাঈদ আহমদ সিদ্দীকী
https://www.alkawsar.com/bn/article/527/
উসওয়ায়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম : যে আদর্শ শাশ্বত, সর্বজনীন
https://www.alkawsar.com/bn/article/2501/
পবিত্র সীরাতের সান্নিধ্য : কেন ও কীভাবে?
মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2822/
পবিত্র সীরাত : জীবন-পথের আসমানী আলোকবর্তিকা
মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2717/
মহানবী যখন এলেন
-- নাঈম আবু বকর
https://www.alkawsar.com/bn/article/1396/
আরবের চাঁদ
-- স্বামী লক্ষ্মণ প্রসাদ
https://www.alkawsar.com/bn/article/1393/
খোদার পরে তুমিই শ্রেষ্ঠ ...
-- ড. হাফেয মুহাম্মাদ ছানী
https://www.alkawsar.com/bn/article/1046/
আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
উম্মতের নাজাতই ছিল যাঁর ধ্যানজ্ঞান
মুহাম্মাদ আশিক বিল্লাহ তানভীর
https://www.alkawsar.com/bn/article/3049/
আল্লাহ রাববুল আলামীনের অশেষ নিয়ামত ও বিশেষ নিয়ামত
-- মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/522/
নবীজীর বাণীতে উপমা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
-- খন্দকার মনসুর আহমদ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2513/
খাতামুন নাবিয়্যীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
শ্রেষ্ঠত্ব ও কিছু বৈশিষ্ট্য
মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
https://www.alkawsar.com/bn/article/2859/
নবী-জীবনে সত্যবাদিতা
-- মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2167/
নবীজীর বিনয়
-- মুহাম্মাদ শাহাদাত সাকিব
https://www.alkawsar.com/bn/article/2331/
নবী-চরিত্রের একটুখানি পাঠ
-- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম
https://www.alkawsar.com/bn/article/2305/
নবীজীবনের একটি ঘটনা : নবীশিক্ষার একটি ঝলক
-- মুহাম্মাদ ফজলুল বারী
https://www.alkawsar.com/bn/article/552/
নবীজীর মেজবান
-- মুহাম্মদ আবদুল আলীম
https://www.alkawsar.com/bn/article/1534/
নবীজীর মহানুভবতা
-- শাহাদাত সাকিব
https://www.alkawsar.com/bn/article/2494/
বিদায় হজ্বের খুতবা : শাশ্বত মানবিক আদর্শের পয়গাম
-- মুহাম্মাদ আবরারুযযামান
https://www.alkawsar.com/bn/article/2624/
যে জীবন ও আদর্শের কোনো তুলনা নেই প্রসঙ্গ : প্রামাণিকতা - ৩
-- মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/690/
আলকুরআন : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনন্য মুজেযা
-- হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ.
https://www.alkawsar.com/bn/article/2287/
https://www.alkawsar.com/bn/article/2323/
আবু হুরায়রার থলে
-- আবু আহমাদ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2276/
মশকের পানি একটুও কমেনি
-- মুহাম্মাদ ফজলুল বারী
https://www.alkawsar.com/bn/article/2297/
মুষ্টি মুষ্টি দিল পাত্র ভরে নিল
-- আবু আহমাদ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2525/
কথা বলে ভুনা গোশত
-- আবু আহমাদ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2476/
চোখের সামনে ভেসে উঠল বাইতুল মাকদিস
-- আবু আহমাদ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2437/
আলো দিল লাঠি!
-- আবু উবাইদুল্লাহ হাম্মাদ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2062/
মেহরে নবুওয়ত
-- কাযী মুহাম্মাদ সুলায়মান সালমান মনসুরপুরী রাহ.
https://www.alkawsar.com/bn/article/1484/
https://www.alkawsar.com/bn/article/1460/
https://www.alkawsar.com/bn/article/1437/
https://www.alkawsar.com/bn/article/1416/
https://www.alkawsar.com/bn/article/1395/
https://www.alkawsar.com/bn/article/1368/
https://www.alkawsar.com/bn/article/704/
https://www.alkawsar.com/bn/article/678/
https://www.alkawsar.com/bn/article/659/
খতমে নবুওয়াত সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস
-- আব্দুল্লাহ মুযাক্কির
https://www.alkawsar.com/bn/article/2598/
তাহাফফুযে খতমে নবুওত ও কাদিয়ানী সম্প্রদায়
-- হযরত মাওলানা মুফতী আবুল কাসেম নোমানী
https://www.alkawsar.com/bn/article/2397/
রবিউল আউয়াল এলে...
--মাওলানা মুহাম্মদ মনযুর নোমানী [রহ.]
https://www.alkawsar.com/bn/article/2503/
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি মুহাববত
-- খালেদ বেগ
https://www.alkawsar.com/bn/article/1500/
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম : যাঁকে ভালবাসা ছাড়া মুমিন হওয়া যায় না
https://www.alkawsar.com/bn/article/2467/
নবীজীর প্রতি ভালবাসা মুমিনের ঈমান : কিছু বর্ণনা, কিছু দৃষ্টান্ত
-- বাশীরুদ্দীন আদনান
https://www.alkawsar.com/bn/article/2471/
নবীর দরবারে উম্মতির নাযরানা
-- শায়েখ আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ ইবনে উমার [রহ.]
https://www.alkawsar.com/bn/article/2504/
প্রাণের চেয়ে প্রিয়
-- মাহমুদাতুর রহমান
https://www.alkawsar.com/bn/article/2634/
নবীজীর প্রতি ভালবাসার দাবি
--আসলাম শেখুপুরী
https://www.alkawsar.com/bn/article/2470/
নবীজীর প্রতি কৃতজ্ঞতা
নবীজীর প্রতি ভালবাসা
মাওলানা মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব
https://www.alkawsar.com/bn/article/3062/
তাঁকে ভালবাসি প্রাণের চেয়েও বেশি
মাওলানা মাসউদুযযামান
https://www.alkawsar.com/bn/article/2860/
নবীজীর প্রতি সাহাবায়ে কেরামের আনুগত্য
মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহমান
https://www.alkawsar.com/bn/article/3112/
তাঁরা নবীজীকে ভালবাসতেন প্রাণের চেয়েও বেশি
মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহমান
https://www.alkawsar.com/bn/article/3476/
নবীপ্রেমে উদ্দীপ্ত সাহাবা জীবনের পাঠ থেকে...
মুহাম্মাদ আশিক বিল্লাহ তানভীর
https://www.alkawsar.com/bn/article/3065/
সীরাত ও সুন্নাহ : সঠিক অন্বেষণ, সঠিক অনুসরণ
https://www.alkawsar.com/bn/article/2285/
নবী-আদর্শের অনুসরণে মর্মান্তিক অবহেলা : বড় বড় সুন্নত পরিত্যক্ত, বহু সুন্নত নিষ্প্রাণ, এরপরও ঈমান ও মুহববতের দাবি!
-- মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
https://www.alkawsar.com/bn/article/571/
https://www.alkawsar.com/bn/article/592/
https://www.alkawsar.com/bn/article/612/
https://www.alkawsar.com/bn/article/627/
একটি গর্হিত বিদআত ও মারাত্মক বিকৃতি : ইসলামে কি তৃতীয় কোনো ঈদ আছে
https://www.alkawsar.com/bn/article/579/
*****
নবী অবমাননা, নবীজীর নামে কটূক্তি
নবীর মর্যাদা, মর্যাদার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রিসালত-অবমাননার মূলে বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা
https://www.alkawsar.com/bn/article/353/
রাসূল-অবমাননা : সভ্যতার মুখোশধারীদের আসল চেহারা
https://www.alkawsar.com/bn/article/2716/
রাসূল-অবমাননা : হে মুসলিম! ইমানী শক্তি অর্জন কর
https://www.alkawsar.com/bn/article/732/
নবীজীর নামে কটূক্তি ও মুরতাদের শাস্তি কুরআন ও হাদীসের আলোকে একটি সরল উপস্থাপনা
-- মাওলানা মাহমুদ হাসান মাসরুর
https://www.alkawsar.com/bn/article/915/
নবী নামের প্রতি সম্মান ঈমানের অংশ
-- মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
https://www.alkawsar.com/bn/article/846/
বে দ না : হৃদয়ে রক্ত ঝরে
-- ওয়ারিস রব্বানী
https://www.alkawsar.com/bn/article/748/
শার্লির ধৃষ্টতা ও দুঃখ : গোড়ায় হাত দিন
-- মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/1261/
সা ম্প্র দা য়ি ক তা : ইসলাম বিরোধী সাম্প্রদায়িকতার চেনা-অচেনা মুখ
-- আবু তাশরীফ
https://www.alkawsar.com/bn/article/453/
ব্লাসফেমী কেন দরকার
-- মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ
https://www.alkawsar.com/bn/article/1206/
#সীরাতুন_নাবী_মাসিক_আলকাউসার
যুলহিজ্জাহ মাসের প্রথম দশকের ফযীলত ও আমল
মাওলানা শফীউদ্দিন হাফিজাহুল্লাহ- এর আলোচনা
নাযিমে তালিমাত, জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া ঢাকা
তালীমুদ্দীন একাডেমি শ্রীমঙ্গল।
গত ২৪ এ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রি:, রোজ শনিবার শ্রীমঙ্গল শহরের মৌলভীবাজার রোডস্থ আল-হেরা জামে মসজিদের অদূরে অবস্থিত আল-হেরা টাওয়ারে এই প্রতিষ্ঠানটির পথচলা শুরু হয়।
সর্বস্তরের মানুষের মাঝে প্রয়োজনীয় দ্বীনী শিক্ষার বিস্তার অতি জরুরি।
দ্বীনী জ্ঞানের অভাবে আকীদা-ইবাদত থেকে শুরু করে জীবনের সকল ক্ষেত্রেই বড় বড় ত্রুটি থেকে যায়, যা একজন মুসলিমের জীবনে থাকা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এ কারণে দ্বীনী মাদরাসার তালিবানে ইলমের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, সাধারণ শিক্ষিত ও নানা পেশায় নিয়োজিত মুসলিমেরাও কীভাবে প্রয়োজনীয় দ্বীনী জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এ বিষয়ে দরদী উলামায়ে কেরামের ফিকির ও মেহনত অব্যাহত ছিল, এখনো আছে।
এরই ধারাবাহিকতায় আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবানিতে মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে একটি নতুন ধারার দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। আলহামদু লিল্লাহ। আল্লাহ তাআলার মেহেরবানীতে এর শাখা প্রশাখা দিন দিন বেড়েই চলছে। আল্লাহ তাআলা তালিমুদ্দিন একাডেমী শ্রীমঙ্গল সহ সারা বাংলাদেশের সকল তালিমুদ্দিন একাডেমীকে ভরপুর মাকবুলিয়্যাত দান করেন। আমীন। সুম্মা আমীন।
মধুখালি ট্রাজেডি : উগ্র hiন্দুত্ববাদের মহড়া || মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ
--
দরজায় কড়া নাড়ছে ভীষণ বিপদ। গত ১৮ এপ্রিল মধুখালিতে সন্ধ্যা সাতটার দিকে কেবল সন্দেহের বশে পিটিয়ে হ*ত্যা করা হয় দুজন মুসলিম তরুণ-যুবককে। আহত করা হয় আরো কয়েকজনকে। তাদেরকে আক্রমণ করে প্রায় ২০০০ জন মানুষ। যাদের অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। মিডিয়ায় প্রথম দিকে ঘটনাটা না আসলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ ব্যাপারটা নিয়ে বেশ বড় রকমের শোরগোল ও প্রতিবাদ ওঠে। ঘটনার ৫ দিনের মাথায় সার্বিক পরিস্থিতি ও এ ঘটনায় আমাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে কথা বলছেন মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ হাফিজাহুল্লাহ
হাদীস শরীফে নফল রোযা : কিছু ফযীলত ও আদব
মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ
ইসলামে ইবাদতের গুরুত্ব অনেক। ঈমানের পরই ইবাদতের স্থান। ইসলাম যেহেতু আসমানী দ্বীন, মানবজাতির জন্য আসমানী নির্দেশনা তাই তার অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে । একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পূর্ণাঙ্গতা।
ইসলাম যেমন মানুষের হক সম্পর্কে নির্দেশনা দান করেছে তেমনি আল্লাহর হক সম্পর্কেও দান করেছে। শুধু নির্দেশনাই নয়, মানুষের হক ও আল্লাহর হকের বিস্তারিত বর্ণনাও দান করেছে।এরপর সেই হক আদায়ের পন্থা ও পদ্ধতিও নির্দেশ করেছে।
বস্তুর মোহে আক্রান্ত মানবজাতিকে আল্লাহর হক সম্পর্কে এবং সেই হক আদায়ের সঠিক পন্থা সম্পর্কে ইসলামই সচেতন করে, যা পূরণ করার মাধ্যমে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সক্ষম হয়।
এক অর্থে ইসলামের সকল বিধান পালন করা আল্লাহর হক। কারণ আল্লাহর আদেশ পালন বান্দার অপরিহার্য কর্তব্য। সেই সকল আদেশের মধ্যে যেমন রয়েছে ঈমান ও ইবাদত তেমনি রয়েছে মানুষের পারস্পরিক হক সংক্রান্ত বিধি-বিধান। এই উভয় প্রকারের বিধান পালন বান্দার উপর আল্লাহর হক হলেও বিশেষ তাৎপর্যের কারণে ঈমান, তাওহীদ, ইবাদত-বন্দেগীকে আল্লাহর হক শিরোনামে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়।
ইসলামে ইবাদতের স্থান অতি উচ্চে। সহীহ বুখারীর বিখ্যাত হাদীসে ইসলামের যে পাঁচটি স্তম্ভের কথা বলা হয়েছে তন্মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ঈমান আর পরের চারটি হচ্ছে চার ফরয ইবাদত- সালাত, যাকাত, সওম ও হজ¦। কাজেই ইবাদত-বন্দেগীর বিষয়ে যত্নবান হওয়া দ্বীনের অন্যতম মৌলিক চাহিদা।
ইবাদত-বন্দেগীর মধ্যেও দুটি প্রকার রয়েছে : এক. যা অবশ্য-পালনীয় আর দুই. যা ঐচ্ছিক। অবশ্য-পালনীয় ইবাদতসমূহের গুরুত্ব ঐচ্ছিক ইবাদতসমূহের চেয়ে বেশি। হাদীস শরীফে পরিষ্কার বর্ণিত হয়েছে, ‘বান্দা আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি নৈকট্য অর্জন করে ফরয ইবাদতের মাধ্যমে।’
তবে নফল ও ঐচ্ছিক ইবাদতের ফযীলতও এত বেশি যে, তা মুমিনকে উদ্দীপ্ত ও আগ্রহী করে তোলে। বর্তমান নিবন্ধে আমরা শুধু একটি ইবাদত- নফল রোযা সম্পর্কে কিছু আলোচনা করব।
হাদীস শরীফে নফল রোযার অনেক প্রকার ও অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও নফল রোযা রেখেছেন, উম্মতকেও এর ফযীলত শুনিয়েছেন। এখানে কিছু নফল রোযার বৃত্তান্ত তুলে ধরছি, যাতে যার পক্ষে যেটি সহজ হয়, আমল করতে পারেন।
১. শাওয়ালের ছয় রোযা।
হযরত আবু আইয়ূব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمّ أَتْبَعَهُ سِتّا مِنْ شَوّالٍ، كَانَ كَصِيَامِ الدّهْرِ.
যে মাহে রমযানের রোযা রাখল এরপর শাওয়ালে ছয়টি রোযা রাখল এটি তার জন্য সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য হবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৪
সহীহ মুসলিমের ভাষ্যকার ইমাম নববী রাহ. এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আমাদের মনীষীদের মতে, উত্তম হচ্ছে ঈদুল ফিতরের পরের ছয় দিন পরপর রোযাগুলো রাখা। তবে যদি বিরতি দিয়ে দিয়ে রাখে বা মাসের শেষে রাখে তাহলেও ‘রমাযানের পরে’ রোযা রাখার ফযীলত পাওয়া যাবে। কারণ সব ছুরতেই বলা যায়, ‘রমযানের পরে শাওয়ালের ছয় রোযা রেখেছে।’ -শরহু সহীহ মুসলিম, নববী
২. যিলহজের নয় দিনের রোযা, বিশেষত ইয়াওমে আরাফা বা নয় তারিখের রোযা
যিলহজের নয় দিনের রোযার বিষয়ে হাদীস শরীফে এসেছে-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَصُومُ تِسْعَ ذِي الْحِجّةِ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহজে¦র নয় দিন রোযা রাখতেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৪৩৭
আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السّنَةَ الّتِي قَبْلَهُ وَالسّنَةَ الّتِي بَعْدَهُ.
আরাফার দিনের রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা করি যে, (এর দ্বারা) বিগত বছরের এবং তার পরের বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪৯
সহীহ মুসলিমে হযরত আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত দীর্ঘ হাদীসেও এই ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। (দ্রষ্টব্য : সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬২)
৩. মুহাররম ও আশুরার রোযা
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ شَهْرُ اللهِ الْمُحَرّمُ وَأَفْضَلُ الصّلَاةِ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ صَلَاةُ اللّيْلِ.
রমযানের পর উত্তম রোযা হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর উত্তম নামায হচ্ছে রাতের নামায। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৩
হযরত আবু কাতাদা আনসারী রা. থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসে আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশুরার রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন-
يُكَفِّرُ السّنَةَ الْمَاضِيَةَ.
এই রোযা বিগত বছরের কাফফারা হয়ে যায়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬২
আশুরার রোযার বিষয়ে উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রা. বলেন-
كَانَتْ قُرَيْشٌ تَصُومُ عَاشُورَاءَ فِي الْجَاهِلِيّةِ، وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَصُومُهُ، فَلَمّا هَاجَرَ إِلَى الْمَدِينَةِ، صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ، فَلَمّا فُرِضَ شَهْرُ رَمَضَانَ قَالَ: مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ.
কুরাইশের লোকেরা জাহেলী যুগেও আশুরার রোযা রাখত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও রাখতেন। এরপর যখন হিজরত করে মদীনায় এলেন, তখন নিজেও এই রোযা রাখলেন অন্যদেরও রাখার আদেশ দিলেন। এরপর যখন রমযানের রোযা ফরয হল তখন বললেন-
مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ
যার ইচ্ছে সে তা (আশুরার রোযা) রাখতে পারে, যার ইচ্ছে না-ও রাখতে পারে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৫২; সহীহ বুখারী, হাদীস ২০০২
৪. শা‘বান মাসে নফল রোযা
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَصُومُ حَتّى نَقُولَ: لاَ يُفْطِرُ، وَيُفْطِرُ حَتّى نَقُولَ: لاَ يَصُومُ، فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلّا رَمَضَانَ، وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ.
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (অবিরাম) রোযা রাখতেন, যার কারণে আমরা বলতাম, আর বাদ দিবেন না। আবার (অবিরাম) রোযাহীনও থাকতেন, যার কারণে আমরা বলতাম, আর রাখবেন না। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমযান ছাড়া অন্য কোনো মাসে পুরো মাস রোযা রাখতে দেখিনি। তেমনি দেখিনি শা‘বানের চেয়ে বেশি অন্য কোনো মাসে রোযা রাখতে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯৬৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৫৬
৫. সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখা
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেছেন-
كَانَ النبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَتَحَرّى صَوْمَ الِاثْنَيْنِ وَالخَمِيسِ.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখার ইহতিমাম করতেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪৫
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
تُعْرَضُ الأَعْمَالُ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ وَالخَمِيسِ، فَأُحِبّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ.
সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমলসমূহ পেশ করা হয়। তো আমার পছন্দ, আমার আমল যেন পেশ করা হয় আমি রোযাদার অবস্থায় । -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪৭
৬. মাসে তিন রোযা
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
شَهْرُ الصَبْرِ وَثَلَاثَةُ أَيّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ صَوْمُ الدّهْرِ.
সবরের মাস (রমযান) ও প্রতি মাসে তিন দিন সারা বছর রোযার সমতুল্য। -সুনানে নাসায়ী ৪/২১৮, হাদীস ২৪০৮; মুসনাদে আহমাদ ২/২৬৩, হাদীস ৭৫৭৭
হযরত আবু যর গিফারী রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِذَا صُمْتَ مِنْ شَهْرٍ ثَلَاثًا، فَصُمْ ثَلَاثَ عَشْرَةَ، وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ، وَخَمْسَ عَشْرَة.
তুমি যদি মাসে তিন দিন রোযা রাখ তাহলে তের তারিখ, চৌদ্দ তারিখ ও পনের তারিখ রোযা রেখো। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২১৪৩৭; জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৬১; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ২৪২৪
ইবনে মাজাহর বর্ণনায় আছে-
فَأَنْزَلَ اللهُ عَزّ وَجَلّ تَصْدِيقَ ذَلِكَ فِي كِتَابِهِ: مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا فَالْيَوْم بِعَشْرَةِ أَيّامٍ.
অর্থাৎ আল্লাহর কিতাবে এর সমর্থন রয়েছে, যে নেক কাজ করবে সে তার দশ গুণ পাবে। তো এক দিন সমান সমান দশ দিন। (দ্র. সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৭০৮)
৭. এক দিন পর পর রোযা
এই সওমকে হাদীস শরীফে ‘সওমে দাউদ’ বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা.-এর একটি চমৎকার ঘটনা হাদীসের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। ঘটনাটি একদিকে যেমন ইসলামী শিক্ষার ব্যাপ্তি, সহজতা ও স্বাভাবিকতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, তেমনি সাহাবায়ে কেরামের ইবাদত-প্রিয়তা ও আখিরাতমুখিতারও এক অনুপম নমুনা।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. তাঁর নিজের ঘটনা বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন এবং বললেন, আমি কি শুনিনি যে, তুমি রাতভর নামায পড় আর দিনে রোযা রাখ? আমি বললাম, জী হাঁ! তিনি বললেন, এমনটা করো না। (নামাযে) দাঁড়াবে এবং ঘুমাবে, রোযা রাখবে এবং রোযা ছাড়াও থাকবে। কারণ তোমার শরীরেরও তোমার উপর হক আছে, তোমার চোখেরও তোমার উপর হক আছে, তোমার অভ্যাগতেরও তোমার উপর হক আছে এবং তোমার স্ত্রীরও তোমার উপর হক আছে। আর সম্ভবত তোমার আয়ু দীর্ঘ হবে। তোমার পক্ষে এ-ই যথেষ্ট যে, প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখবে, কারণ প্রত্যেক নেক আমলের পরিবর্তে আছে তার দশ গুণ। ফলে এটিই সারা বছরের রোযা হবে।
তিনি বলেন, কিন্তু আমি কাঠিন্য অন্বেষণ করলাম, ফলে আমার উপরও কাঠিন্য বর্তাল। আমি বললাম, আমি তো এতদ্ভিন্নেরও সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে প্রতি সপ্তাহে তিন রোযা রাখ।
আমি আরো কাঠিন্য অন্বেষণ করলাম, ফলে আমার উপর আরো কাঠিন্য বর্তাল। আমি বললাম, আমি তো এতদ্ভিন্নের সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে আল্লাহর নবী দাউদের (আলাইহি ওয়া আলা নাবিয়্যিনাস সালাতু ওয়াস সালাম) রোযা রাখ। আমি বললাম, আল্লাহর নবী দাউদের রোযা কী? তিনি বললেন, ‘নিসফুদ দাহর’। (অর্থাৎ একদিন পর একদিন রোযা রাখা।) -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৩৪
সহীহ বুখারীরই অন্য রেওয়ায়েতে আছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. যখন বৃদ্ধ হলেন তখন বলতেন-
يَا لَيْتَنِي قَبِلْتُ رُخْصَةَ النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ.
হায়! যদি আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রুখসত গ্রহণ করতাম। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯৭৫
এই হাদীস শরীফে যেমন এক দিন পর এক দিন- এভাবে রোযা রাখার বিষয়টি পাওয়া যায় তেমনি অন্যান্য হক ও করণীয় সম্পর্কে সচেতনতার বিষয়টিও পাওয়া যায়। সকল বিষয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে চলা কাম্য।
শারীরিক সুস্থতার দিকে মনোযোগী হওয়ার শিক্ষাও এই হাদীসের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। যখন নফল ইবাদতের ক্ষেত্রে শারীরিক সুস্থতা ও কর্মক্ষমতা রক্ষার নীতি অনুসরণীয় তাহলে অন্যায় ও গর্হিত কাজের মাধ্যমে সুস্থতা বিনষ্ট করার হুকুম কী হতে পারে তা খুব সহজেই অনুমেয়।
শারীরিক শক্তিও আল্লাহ তাআলার নিআমত এবং তা দুনিয়াতে মানুষকে অফুরন্ত পরিমাণে দেওয়া হয়নি। কাজেই এই নিআমতের ব্যাপারেও মানুষকে হিসেবী ও দায়িত্বশীল হতে হবে। একে সৎকর্মে ব্যয় করতে হবে এবং এর যত্ন নিতে হবে, যাতে যথাসম্ভব বেশি নেক আমলে একে ব্যয় করা যায়।
এই হাদীসে স্ত্রী-সন্তান ও অতিথি-অভ্যাগতদের হকের কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকেও সঠিক পন্থায় সময় দিতে হবে এবং তাদের হক আদায় করতে হবে।
এই হাদীসে দ্বীনী তা‘লীম-তারবিয়াতের ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মোবারক নীতিরও একটি দৃষ্টান্ত রয়েছে। তিনি উম্মতকে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়ে সচেতন করেছেন। কোনো একটি দিক বা একটি বিষয় যেন অন্য সকল দিক বা বিষয়ের উপর এমনভাবে প্রাধান্য বিস্তার না করে যে, অন্য বিষয়গুলো অবহেলিত হয়ে পড়ে- এটা খেয়াল রাখতে হবে। তেমনি অবকাশের বা ঐচ্ছিক ক্ষেত্রগুলোতে সহজ পন্থা অবলম্বনও হাদীস ও সুন্নাহর একটি মৌলিক শিক্ষা। এই নীতি নিজের ক্ষেত্রে এবং অধীনস্তদের ক্ষেত্রে অনুসরণ করা কাম্য।
নফল রোযার বিভিন্ন প্রকার ও তার ফযীলত সংক্রান্ত আলোচনাটি ইমাম আবু বকর আলআছরাম রাহ.-এর একটি বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ করতে চাই, যার মাধ্যমে নফল রোযাসমূহের বিভিন্ন প্রকারের তাৎপর্য যেমন বোঝা যাবে তেমনি নফল ও ফরযের মধ্যে একটি তুলনাও বোঝা যাবে, যা ভারসাম্যপূর্ণ চিন্তা ও আচরণের জন্য খুবই প্রয়োজন। আর যা শুধু নফল রোযা নয়, যে কোনো নফল ইবাদতের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
বিভিন্ন প্রকারের নফল রোযা যেমন, মাসে তিন দিন রোযা, আইয়ামে বীযের রোযা, শা‘বান মাসের রোযা ইত্যাদি বর্ণনার পর তিনি লেখেন-
وذلك أن أصل الفرض إنما هو الشهر المبارك الذي افترضه الله عز وجل، وأجمع أهل الإسلام على صومه، وكانت الفسحة فيما بعده للأمة، وكان الصوم بعده تطوعاً، وكانت الفضائل في بعضه أكثر منها في بعض، وكان من شاء استكثر من تلك الفضائل، ومن شاء استقل، ومن شاء تركها إلى غير حرج.
أما سمعت حديث طلحة بن عبيد الله في قول الأعرابي للنبي صلى الله عليه وسلم حين سأله عن الصوم فذكر شهر رمضان، فقال: هل علي غيره، قال: لا، إلا أن تطوع ثم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: لئن صدق ليدخلن الجنة وذلك عند قوله: والذي بعثك بالحق لا أزيد على هذا شيئاً ولا أنتقص منه.
ومثل حديث النبي صلى الله عليه وسلم في الرجل الذي قال: إني لأبغض فلاناً، فكان مما احتج به عليه: أنه لا يصوم إلا شهر رمضان، فقال النبي صلى الله عليه وسلم: قم، إن أدري لعله خيرٌ منك.
في أشباهٍ لهذا كثيرة.
وإنما يرى أنه كره أن يجعل شيئاً من هذه الفضائل في الصوم معلومة فيلم بها الناس، فتكون كالشيء المفترض عليهم، فأخذ ببعضها في وقت، وأخذ ببعضها في آخر، وذكر لكل شيء فضيلة؛ لئلا يلزم شيء واحد بعينه كأنه لا يجوز غيره، فيكون بمنزلة الواجب، ففي صوم ثلاثٍ من كل شهر فضلٌ، فإن تعمد به البيض كان أفضل، وإن صامهن في غير البيض فقد أخذ بفضلٍ دون فضل، وكذلك سائر ما ذكرناه.
অর্থাৎ, এ বিষয়ে বাহ্যত বিভিন্ন ধরনের বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে। মূল ব্যাপারটি হচ্ছে, এক্ষেত্রে ফরয হচ্ছে শুধু মাহে রমযানের রোযা। এই রোযার বিষয়ে গোটা মুসলিম উম্মাহ একমত। এই ফরয রোযার পর অন্যান্য রোযা ঐচ্ছিক, যাতে উম্মাহর জন্য অবকাশ রয়েছে এবং এই রোযাগুলোর মধ্যে ফযীলতের তারতম্যও রয়েছে। কাজেই যার ইচ্ছা ঐ ফযীলত বেশি অর্জন করবে, যার ইচ্ছা কম অর্জন করবে। কেউ অর্জন না করলেও কোনো অসুবিধা নেই। ঐ বেদুঈনের হাদীস তো বিখ্যাত যাতে আছে যে, তিনি যখন রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের রোযার কথা বললেন তখন ঐ বেদুঈন সাহাবী বললেন, এছাড়া কি আমার উপর অপরিহার্য আরো কোনো রোযা আছে? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না। সাহাবী বললেন, ঐ সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য (দ্বীন) দিয়ে পাঠিয়েছেন আমি এর চেয়ে বাড়াবও না, কমাবও না। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে যদি সত্য বলে থাকে তাহলে অবশ্যই জান্নাতে যাবে।
তেমনি আরেক হাদীসে আছে যে, এক ব্যক্তি বলল, আমি অমুককে দেখতে পারি না। এরপর এর কারণ হিসেবে বলল, সে রমযানের রোযা ছাড়া আর কোনো রোযা রাখে না। তো আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
قم إن أرى لعله خير منك.
উঠে যাও, আমি জানি না হতে পারে সে তোমার চেয়ে ভালো। দ্র. -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৫/৪৫৫
এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ফযীলতের কাজগুলোর কোনো একটিকে এমনভাবে নির্ধারিত করে দেওয়া অপছন্দ করেছেন যে, লোকেরা এটাকে অবলম্বন করবে এবং তা ফরযের মতো হয়ে যাবে। কাজেই কখনো এই রোযা রেখেছেন, কখনো ঐ রোযা রেখেছেন এবং প্রত্যেকটিরই ফযীলত বয়ান করেছেন। যেন বিশেষ কোনোটি এমন না হয়ে দাঁড়ায় যে, এখানে অন্য কিছুর অবকাশ নেই, ফলে তা ওয়াজিবের মতো হয়ে যায়।
তো মাসের তিন রোযার ফযীলত রয়েছে। আর সেই তিন রোযা যদি হয় তের-চৌদ্দ-পনের তারিখ তাহলে আরো ভালো। তের-চৌদ্দ-পনের ছাড়া অন্য তারিখে রাখলেও এক ফযীলত পাওয়া যাবে। তেমনি অন্যান্য রোযা। -নাসিখুল হাদীসি ওয়া মানসূখুহু, ইমাম আবু বকর আল আছরাম পৃ. ১৭৬-১৭৮
ইমাম আবু বকর আলআছরাম রাহ. দ্বিতীয় যে হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়েছেন, তা মুসনাদে আহমাদে হযরত আবুত তুফাইল আমির ইবনে ওয়াছিলা আললাইছী রা.-এর ‘মুসনাদে’ মুরসাল সনদে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েত। পূর্ণ রেওয়ায়েতটি নিম্নরূপ :
এক ব্যক্তি কিছু লোকের পাশ দিয়ে গমন করছিলেন, যাবার সময় তিনি তাদের সালাম দিলেন, তারাও সালামের জবাব দিলেন। তাদের অতিক্রম করে যাওয়ার পর ঐ মজলিসের একজন বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এই লোকটির প্রতি আল্লাহর ওয়াস্তে বিদ্বেষ রাখি। উপস্থিত লোকেরা বললেন, ওয়াল্লাহ! তুমি একটা খুব মন্দ কথা বললে! আমরা অবশ্যই তাকে বিষয়টি জানিয়ে দিব। এরপর তারা তাদের একজনকে বললেন, এই যে অমুক! আপনি যান। সেই দূত গিয়ে গমনকারীকে ঐ ব্যক্তির কথাটি জানিয়ে দিলেন।
তিনি তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে বৃত্তান্ত জানালেন যে, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি মুসলমানদের একটি মজলিসের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম, যে মজলিসে অমুক ব্যক্তিও ছিলেন। আমি তাদের সালাম করি, তারা সালামের জবাব দেন। যখন তাদের অতিক্রম করে চলে আসি তখন তাদের একজন এসে আমাকে জানালেন যে, অমুক ব্যক্তি আমার সম্পর্কে বলেছে যে, আমি তার প্রতি আল্লাহর ওয়াস্তে বিদ্বেষ পোষণ করি। তো আপনি তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করুন, কেন তিনি আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাকলেন এবং অভিযোগকারী যা যা বলেছে তা তাকে জানালেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি তা স্বীকার করে বললেন, আল্লাহর রাসূল! আমি তা বলেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদ্বেষের কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, আমি তার প্রতিবেশী, তার সম্পর্কে অবগত। আল্লাহর কসম আমি তাকে এই ফরয নামায ছাড়া, যা ভালো-মন্দ সব লোকই পড়ে, আর কোনো নামায পড়তে দেখিনি। তখন প্রথমজন বললেন, ‘আল্লাহর রাসূল! তাকে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি কি কখনো আমাকে দেখেছেন, নামাযকে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বিলম্বিত করতে, কিংবা নামাযের অযুতে বা রুকু-সিজদায় ত্রুটি করতে।’
দ্বিতীয়জনকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে তিনি না-সূচক জবাব দিলেন। এরপর বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তাকে এই রমযান মাস ছাড়া, যে মাসের রোযা ভালো-মন্দ সব লোকই রাখে আর কোনো রোযা রাখতে দেখিনি।
প্রথমজন বললেন, ‘আল্লাহর রাসূল! তাকে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি কি আমাকে কখনো ফরয রোযা ভাঙ্গতে বা তার কোনো হক নষ্ট করতে দেখেছেন?’
বিষয়টি জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি না-সূচক জবাব দিলেন। এরপর বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তাকে কখনো কোনো ভিক্ষুককে কিছু দিতে দেখিনি এবং এই ‘যাকাত’ ছাড়া, যা ভালো-মন্দ সব লোকই আদায় করে, আর কোনো ভালো কাজে সম্পদ খরচ করতে দেখিনি।
প্রথমজন বললেন, আল্লাহর রাসূল! তাকে জিজ্ঞাসা করুন, আমি কি কখনো যাকাতযোগ্য কোনো কিছু গোপন করেছি কিংবা যাকাত উসুলকারীদের সাথে টালবাহানা করেছি।
এবারও দ্বিতীয় জন না-সূচক জবাব দিলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে লক্ষ্য করে বললেন, যাও, আমি জানি না, হতে পারে সে তোমার চেয়ে ভালো।’ -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩৮০৩, ২৩৮০৪
এই বর্ণনার মৌলিক বিষয়গুলো অন্যান্য দলীলের দ্বারাও প্রমাণিত। এতে যেমন ফরয ইবাদতের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য প্রকাশিত হচ্ছে তেমনি নফল ইবাদতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘আদব’ও পাওয়া যাচ্ছে। আর তা হচ্ছে, নফল ইবাদতের কারণে অন্য কোনো মুসলিমের ব্যাপারে তাচ্ছিল্যের মনোভাব, এমনকি ‘ধর্মীয় বিদ্বেষ’ও পোষণের সুযোগ নেই। ধর্মীয় বিদ্বেষের ক্ষেত্র এটি নয়। আর কোনো মুসলিমকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা তো এমন গুনাহ, যা নফলের ছওয়াবের তুলনায় অনেক মারাত্মক। কাজেই নফল ইবাদতের অন্যতম দাবি ও আদব হচ্ছে, অন্যের প্রতি অবজ্ঞা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের মনোভাব থেকে পবিত্র হওয়া।
আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফীক দান করুন- আমীন।
(মাসিক আল কাউসার ডিসেম্বর ২০১৮ সংখ্যায় প্রকাশিত)
পূর্ব উল্লেখিত আয়াতে কারিমায়
আল্লাহ তাআলা মুত্তাকীদের মোট দশটি গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। এই দশটি গুণ যে অর্জন করেছে তাকে আল্লাহ সত্যবাদী বলে আখ্যা দিয়েছেন। অর্থাৎ সে ব্যক্তি তার জীবনে কথা ও কাজে আন্তরিকতার পরিচয় দিতে পেরেছে। অর্থাৎ সে যেমন নিষ্ঠার সঙ্গে আল্লাহ ও অন্যান্য জরুরি বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছে। ঠিক যেসব কাজ বাস্তবে করা প্রয়োজন তা সে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আঞ্জাম দিয়েছে।
এক. আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান আনা।
দুই. আখেরাতের প্রতি ঈমান আনা।
তিন. ফিরিশতাদের প্রতি ঈমান আনা।
চার. কিতাবের প্রতি ঈমান আনা।
পাঁচ. নবীদের প্রতি ঈমান আনা।
ছয়. সম্পদের প্রতি মনের টান থাকা সত্ত্বেও তা নিকটাত্মীয়, এতীম, মিসকীন, মুসাফির, যাঞ্চাকারী ও গোলাম আযাদের জন্য দান করা।
সাত. যথাযথভাবে নামায আদায় করা।
আট. যাকাত আদায় করা।
নয়. প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা।
দশ. দুঃখ-দুর্দশা ও সংঘাতের সময় ধৈর্য ধারণ করা।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
لَیْسَ الْبِرَّ اَنْ تُوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَ الْمَغْرِبِ وَ لٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ اٰمَنَ بِاللهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ الْمَلٰٓىِٕكَةِ وَ الْكِتٰبِ وَ النَّبِیّٖنَ
وَ اٰتَی الْمَالَ عَلٰی حُبِّهٖ ذَوِی الْقُرْبٰی وَ الْیَتٰمٰی وَ الْمَسٰكِیْنَ وَ ابْنَ السَّبِیْلِ وَ السَّآىِٕلِیْنَ وَ فِی الرِّقَابِ وَ اَقَامَ الصَّلٰوةَ وَ اٰتَی الزَّكٰوةَ
وَ الْمُوْفُوْنَ بِعَهْدِهِمْ اِذَا عٰهَدُوْا وَ الصّٰبِرِیْنَ فِی الْبَاْسَآءِ وَ الضَّرَّآءِ وَ حِیْنَ الْبَاْسِ اُولٰٓىِٕكَ الَّذِیْنَ صَدَقُوْا وَ اُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْمُتَّقُوْنَ.
পুণ্য তো কেবল এটাই নয় যে, তোমরা নিজেদের চেহারা পূর্ব বা পশ্চিম দিকে ফেরাবে; বরং পুণ্য হল (সেই ব্যক্তির কার্যাবলি) যে ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি, শেষ দিন ও ফিরিশতাদের প্রতি এবং (আল্লাহর) কিতাব ও নবীগণের প্রতি। আর আল্লাহর ভালবাসায় নিজ সম্পদ দান করে আত্মীয়-স্বজন, এতীম, মিসকীন, মুসাফির ও যাচ্ঞাকারীদেরকে এবং দাসমুক্তিতে এবং সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় এবং যারা কোনো প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূরণে যত্নবান থাকে এবং সঙ্কটে, কষ্টে ও যুদ্ধকালে ধৈর্যধারণ করে। এরাই তারা, যারা সত্যবাদী (নামে অভিহিত হওয়ার উপযুক্ত) এবং এরাই মুত্তাকী। -সূরা বাকারা (২) : ১৭
আজ তালীমুদ্দীন একাডেমি কুমিল্লার একজন বয়স্ক শিক্ষার্থী আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন।
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন।
আল্লাহ তায়ালা মরহুমের মাগফিরাত করেন।
দারাজা বুলন্দ করেন।
সন্তানসন্ততি ও আত্মীয়-স্বজনকে সবরে জামীল দান করেন। আমীন।
তালীমুদ্দীন একাডেমি কুমিল্লার উস্তাদগন মরহুমের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ছুটে গিয়েছে,
গোসল, জানাযা ও দাফনকাযে পাশে থেকেছে।
[গত কয়েকবছরে কুরআন শিখতে শিখতে, ইলম তলব করতে করতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ইন্তেকাল করে গিয়েছেন,
তাদের নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন
তালীমুদ্দীন একাডেমি কুমিল্লার সিনিয়র উস্তাদ মাওলানা সাজ্জাদ হোসাইন সাহেব]
জাযাকুমুল্লাহ।।
--------------------------------
কুরআনের শিক্ষার্থী অবস্থায় ইন্তেকাল
* মুস্তাফিজুর রহমান সাহেব। তালীমুদ্দীন একাডেমি কুমিল্লার একজন মুরুব্বী শিক্ষার্থী।
মাশাআল্লাহ খুবই নিয়মিত এবং মেহনতি ছাত্র ছিলেন। শান্ত-শিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন। উস্তাযদেরকে যথেষ্ট সম্মান করতেন।
কিছুদিন পূর্বে অনুষ্ঠিত হওয়া বার্ষিক পরীক্ষায় তিনি খুব উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনার সাথে অংশগ্রহণ করেছেন। বেশ গুরুত্ব সহকারে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। রেজাল্টও অনেক ভালো করেছেন।
কিন্তু রেজাল্ট পাবলিশড হওয়ার পূর্বেই আজ সকালে তিনি আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন।
বড়ই সৌভাগ্যের মৃত্যু। আজকে ফজরের নামাযও জামাতের সাথে আদায় করেছেন। কুরআনের ছাত্র অবস্থায় আল্লাহর দরবারে হাজির হয়েছেন।
তার চেহারাখানা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে।
আল্লাহ তাআলা তার এই মেহনতকে কবুল করেন। সব ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করেন।
এর পূর্বেও তালীমুদ্দীন একাডেমি কুমিল্লার কয়েকজন শিক্ষার্থী ইন্তিকাল করেছেন :
* আব্দুল আউয়াল সাহেব। বেশ মুরুব্বি ছিলেন। আমাদের আরেকজন শিক্ষার্থী প্রফেসর রাশেদ সাহেবের শ্বশুর।
ইন্তেকালের আগের দিনও বাদ মাগরিব ক্লাস করেছেন।
আজ থেকে তিন/চার বছর আগের কথা। আমার জানা মতে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি তালীমুদ্দীন একাডেমি কুমিল্লার ছাত্র অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।
* আবু তাহের সাহেব। আমাদের শিক্ষার্থী মুবারক হুসাইনের এর আব্বা।
তিনি বাদ মাগরিব নিয়মিত আসতেন। নিয়মতান্ত্রিকভাবে কায়দা শেষ করে কুরআন মাজিদের সবক নিয়েছিলেন।
করোনা কালিন সময়ে ইন্তেকাল করেছেন। ওনার ছোট ছেলে মুবারক হুসাইন এখনো তালীমুদ্দীনে আসে। মাশাআল্লাহ বেশ সুন্দরভাবে কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করে।
* বাদিউল আলম ভাই। টগবগে জোয়ান শিক্ষার্থী। রেইসকোর্স থেকে তারা বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে নিয়মিত পড়তে আসতেন। নিষ্ঠার সাথে মেহনত করতেন।
ইন্তেকালের আগের দিনও তালীমুদ্দীনে এসেছেন। বন্ধুরা জানিয়েছেন, ইন্তেকালের দিনও বাদ মাগরিব পড়তে আসার কথা ছিল।
মসজিদে আসর নামায আদায় করে বাসায় গিয়েছেন। বাসায় পৌঁছে তার খারাপ লাগছিল। শুয়ে পড়েছেন। সে অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।
এখন এ কয়জনের কথা মনে পড়ছে। তারা অত্যন্ত ভাগ্যবান ব্যক্তি ছিলেন। তাদের জীবনের শেষ সময়গুলো কেটেছে ইলমে দ্বীন শিক্ষা করার মধ্যে। তালিবে ইলম অবস্থায় আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন।
আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তালিবে ইলম অবস্থায় ইন্তেকালের মর্যাদা নসীব করেন। আমীন।
তালীমুদ্দীন একাডেমিগুলোর কোর্স- মেয়াদ নির্ধারিত না। এখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থী আমৃত্যু ইলমে দ্বীনের সাথে লেগে থাকবে। আমরা শিক্ষার্থীদেরকে সেভাবেই উৎসাহ দিয়ে থাকি।
মুদীর মুহতারাম মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সাহেব শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলে থাকেন : তালীমুদ্দীন একাডেমি হলো, আজীবনের চুক্তি। কুরআন শিখতে শিখতেই এবং দ্বীনের ইলম অর্জন করতে করতেই আমরা দুনিয়া থেকে যাব। কারণ শেখার কোন শেষ নেই।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে কবুল করুন। ইখলাসের সাথে দ্বীনের খেদমতকে লেগে থাকার তাওফীক দান করুন। সময়ের দ্বীনী চাহিদাগুলো পুরণ করতে পারার মতো হিম্মত দান করুন। আমীন।
-----------------
লিখেছেনঃ Abu Miqdad মাওলানা সাজ্জাদ হোসাইন সাহেব হাফিযাহুল্লাহ।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Location
Category
Contact the school
Telephone
Website
Address
Moulovibazar Road Sreemongal
Chittagong Division
Salahuddin Road, Feni Sadar, Feni
Chittagong Division, 3900
Feni Government Technical School & College -FGTSC Salauddin More, Feni. Phone: 0331-63071 Email: [email protected]